অনেকেই তাঁকে বর্ণনা করেছেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারী’ হিসেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা প্রথম নারী হিসেবেও তিনি স্মরণীয়।

কালো জরাজীর্ণ জোব্বা পরা এক নারী প্রায়ই স্থানীয় বেকারি থেকে ভাঙা বিস্কুট কেনার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এগুলোর দাম ছিল খুবই কম। তা ছাড়া ফ্রি হিসেবে কুকুরটার জন্য একটা হাড় পাওয়া যায়। বাজার থেকে তিনি প্রতিটি জিনিস কিনতেন খুব দামাদামি করে। বরফ জমা ঠাণ্ডায়ও হিটার চালাতেন না, এমনকি ব্যবহার করতেন না গরম পানিও। কাপড়ের বেশি ময়লা অংশটুকু কচলে ধুয়ে ফেলতেন সাবানের খরচ বাঁচাতে। একদিন তাঁর ছেলে পড়ে গিয়ে হাঁটুতে আঘাত পেল। বিনা খরচে চিকিৎসা করানোর জন্য তাকে নিয়ে গেলেন দরিদ্রদের হাসপাতালে। কিন্তু আঘাতটা ছিল গুরুতর। তাই তাকে পরে ভালো ডাক্তারের কাছে নিতেই হলো। কিন্তু দেরি করায় শেষ পর্যন্ত ছেলেটির পা কেটে ফেলতে হয়। এই গল্পগুলো দরিদ্র কোনো অসহায় নারীর নয়, বরং আঠারো শতকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ধনী নারী হ্যাটি গ্রিনের।
অনেকেই তাঁকে বর্ণনা করেছেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ নারী’ হিসেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা প্রথম নারী হিসেবেও তিনি স্মরণীয়।
ব্যবসাবুদ্ধি
হ্যাটির ২১ বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যান। মেয়ের জন্য তিনি রেখে গিয়েছিলেন সাড়ে সাত মিলিয়ন ডলার। পরিবারের অন্যদের বিরোধিতা সত্ত্বেও এই অতুল সম্পদ আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় ওয়ার বন্ডে বিনিয়োগ করেন হ্যাটি এবং পরে বন্ডগুলো বিক্রি করে তুলে নেন প্রচুর মুনাফা। এক হিসাবে তাঁর ব্যবসানীতি ছিল খুবই সাধারণ। যখন কোনো শেয়ারের বা পণ্যের চাহিদা থাকত না, কেউ সেখানে বিনিয়োগ করতে চাইত না, তিনি সেখানে টাকা খাটাতেন এবং সময়-সুযোগমতো তুলে নিতেন চড়া লাভ। এভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করে মোটা অঙ্কের লাভ করেন হ্যাটি। তবে বিষয়টি শুনতে যত সহজ মনে হচ্ছে, কার্যক্ষেত্রে মোটেই তত সহজ ছিল না। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রতিটি ডলার অতি সতর্কভাবে বিনিয়োগ করতেন তিনি।
মিথ্যা মামলা
হ্যাটির কৃপণতা আর নীচতার আরেকটি উদাহরণ এই ঘটনা। ফুফু সিলভিয়া উইলে নিজের ২০ লাখ ডলারের বেশির ভাগই দান করে গিয়েছিলেন। এই উইলের বিরোধিতা করে মামলা করেন হ্যাটি। কোর্টে আরেকটি উইল উপস্থাপন করেন তিনি, যাতে লেখা ছিল, ফুফু সব সম্পদ দিয়ে গেছেন তাঁকে। সেই সঙ্গে উইলে আরো বলা ছিল, এই উইলের পর আর কোনো উইলের বৈধতা থাকবে না। মামলাটিতে স্বাভাবিকভাবেই হেরে যান হ্যাটি। আদালত রায় দেন, হ্যাটি উইলে ফুফুর স্বাক্ষর জাল করেছেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হলে আমেরিকা থেকে পালিয়ে লন্ডনে বহুদিন বসবাস করেছেন হ্যাটি গ্রিন।
https://www.facebook.com/WebExbdWebSolutions

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



