somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! - ৫

১৯ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, এর আগে একটি গল্প লেখার সময়েই আমার মাথায় আসে, আমি তো অনেকের অনেক যৌনবাস্তবতা ও যৌনফ্যান্টাসির কাহিনী জানি। সেগুলির সাথে লেখকসুলভ একটু কল্পনার নুড়ি পাথর মিলিয়ে দিলেই তো গল্পের ইমারত গড়ে উঠতে পারে। সুতরাং শুরু করলাম যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! সিরিজের গল্পগুলি লেখা। এই সিরিজের অধীনে যে গল্পগুলি আসবে সবই আমাদের যৌনতা নিয়ে। বিভিন্ন কোণ থেকে আমি যৌনতাকে দেখার চেষ্টা করেছি। পরোক্ষে মনোস্তাত্বিক বিশ্লেষণের চেষ্টাও ছিল। বরং বিশ্লেষণ না বলে বিশ্লেষণসহায়ক ইঙ্গিত বলতেই আমি স্বস্তি বোধ করব। কোনো কোনো গল্প থেকে আপনি সচেতনতার বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন। কিন্তু যারা রসময় গুপ্তের কাহিনী পড়তে চান তারা নিঃসন্দেহে হতাশ হবেন। যৌনতার রগরগে বর্ণনা নেই। যতটুকু এসেছে তা কাহিনীর প্রয়োজনে। প্রায় প্রতিটি গল্পই বাস্তবতার নিরিখে লেখা। চলেন তবে শুরু করা যাকঃ-



এয়ারপোর্ট স্টেশন থেকে, তিল ধারণের ঠাঁই নেই, অথচ আরও কয়েকজন যাত্রী উঠলে চারদিকের চাপের পরিমাণ বাড়ল আরো। আমার নট নড়ন চড়ন অবস্থা। দম বন্ধ বন্ধ লাগছে। আমি একটু মোটার দিকে হলেও মোটকু নই মোটেই। কিন্তু লোকের গাদাগাদিতে চারদিকের চাপাচাপিতে এখন মোটা মানুষের মতোই হাঁসফাঁস করছি। বরং বলা ভাল অল্প পানিতে আটকে পড়া মাছের মতোই খাবি খাচ্ছি। তার উপরে শুরু হল একটা দামড়া লোকের অসভ্যতা - ডানদিক থেকে তার কনুই এসে বাসের প্রতিটি ঝাঁকুনির সাথে সাথে আমার ডান স্তনে বারবার গুতা দিচ্ছে। আমি কোনোদিকেই নড়তে পারছি না। অসভ্য কনুইয়ের গুতা আমাকে হজম করে যেতে হচ্ছে। লোকটার মুখের দিকে তাকালাম। পাথরের মুখ। কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। যেন চারপাশে কী হচ্ছে, কী ঘটছে কিংবা কোথায় সে আছে বা যাচ্ছে কোনো কিছুতেই তার আগ্রহ নেই। নিঃসন্দেহে শালা একটা পাক্কা অভিনেতা। চেষ্টা করলাম একটু ঘুরে দাঁড়াতে কিন্তু এক সুতা পরিমাণও ঘুরতে পারলাম না। বরং বাম পাশ থেকে ধমক খেলাম – এতো মুচড়ামুচড়ি হরছুইন ক্যা? ইকটু সোজা হইরা খাড়ুইন নি।

প্রচণ্ড ভিড়ের গাড়িতে বাধ্য হয়েই উঠতে হল। নিয়মিতই উঠতে হয়। উপায় থাকে না কোনো। প্রায় প্রতিদিনই আমার দুটি স্তন পিষ্ট হয় ভিড়ে। নিরুচ্চারে সয়ে যেতে হয়। প্রতিদিন বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না। ফোটে না বলেই প্রতিদিনই ভিতরে ভিতরে ক্ষয়ে যেতে হয়। ক্ষয়ে যেতে যেতে আমি কি একদিন অক্ষয় হয়ে উঠব না? সপাটে একটা থাবড়া দেওয়ার সাহস কি কখনো পাব না?

কখনো নিতম্বে হাতের চাপ, রানের চাপ; পেটে-পিঠে বেয়াদব আঙ্গুলের আরশোলা হয়ে ওঠা, এবং ঘাড়ের কাছে কারো অসহ্য গরম নিঃশ্বাস! মনেহয় যেন কামুক শুয়ারের ঘোঁতঘোঁত! আমাকে যেন কোনো শুয়ারের খামারে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমার গা ঘিনঘিন করে। বমি-বমি লাগে। নির্ঘাত আমি একদিন শুয়ারগুলির গায়ে বমি করে দেব।

কোনোমতে পাদানিতে একটা পা রাখার পরপরই ঠেলাধাক্কার চোটে আজ কখন যে ভিতরে উঠতে পেরেছিলাম আল্লাহ মালুম। এই যে একটু দাঁড়াতে পেরেছি এটাই ভাগ্য। অফিস যাওয়ার এই সময়টাতে প্রতিদিনই আমাকে দুঃসহ এই লড়াইটা লড়তে হয়। আবার ফেরার সময়েও একই লড়াই। প্রতিদিন বাসায় ফিরে ব্যাগটাকে ছুঁড়ে ফেলে চিৎকার, চেঁচামেচি করিঃ চাকরির কপালে ঝাড়ু। আর যাব না। দুদিন পরে গিয়া রিজাইন দিয়াসবো। আর সহ্য হয় না। তার চেয়ে মা-মেয়ে মিলে ভিক্ষা করা অনেক ভালো।

মা এখন আর বুঝাতে আসে না। প্রথম প্রথম বুঝাতে এসে খুব ঝাড়ি খেত। কান্নাকাটি করত। এখন একা একা গজগজ করি। একা একা কাঁদি। মা নিরাপদ দূরত্বে ভয়ে ভয়ে থাকেন আমি চাকরিটা ছেড়ে দিলে পথেই যে দাঁড়াতে হবে এতে তার কোনো সন্দেহ নেই। নেই আমারও। তাই প্রতিদিন ভোরে মা যখন জাগিয়ে দেয়, আগের দিনের কথাগুলি অকাট্য রাখার বিলাসিতা কোনোদিনই দেখাতে পারি না। ধাওয়া খাওয়া কুকুরের মতো ছুটতে থাকি। ছুটতে ছুটতে কাছের স্টেশন। কোনোদিন বি.আর.টি.সি, কোনোদিন তিন নম্বর, কিংবা গাজিপুর, কাপাসিয়া থেকে ছেড়ে আসা ডাইরেক্ট বাস যেগুলি পথিমধ্যে লোকালে পরিণত হয় – যেটি আগে পাই উঠে পড়ি। মানে ওঠার চেষ্টা করি। চেষ্টা মানে যুদ্ধ – ছেড়ে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনী।

সে যুদ্ধে জিতলে উঠতে পারি। হারলে কে-কে আমার পরে এসেও উঠে গেছে সেটা দেখে নিয়ে ঈর্ষায় জ্বলতে থাকি আর পরের বাসের জন্য অপেক্ষাই। এবং আমার আশেপাশে আরও অনেক ঈর্ষান্বিত মুখ দেখে সান্ত্বনা খুঁজে পাই।

বাসের ভিতরে ওঠার পরেই লোকাল বাসগুলোতে চালকের দিকে মুখ করে দাঁড়ানোর জন্য সামনের দিকে ধরার একটি রড থাকে। আজকের এই লক্করঝক্কর মার্কা বাসটিতে সেটি নেই। আমার সামনে একটি ছেলে দাঁড়নো। বারবার ছেলেটির পিঠে হাতের ঠেস রেখে ভারসাম্য বজায় রাখতে হচ্ছে। অস্বস্তি লাগলেও উপায় নেই। তবুও যতটা সম্ভব ছেলেটাকে না ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু আমার হেনস্তার শেষ রইল না যখন বাসটি বিমান বন্দর স্টেশনে হঠাৎ ব্রেক কষে থেমে পড়ল। ছেলেটার পিঠে আর হাত রাখার সময় পেলাম না। সরাসরি বুকে-পিঠে সংঘর্ষ! খুব লজ্জা-লজ্জা লাগছিল। ইস ছেলেটা না জানি কী ভাবল।

অল্প বয়সী একটি ছেলে। এখনো হয়ত নির্লজ্জ, বেহায়া, বেশরম হতে পারে নি। আমার দিকে একবারও ফিরে না তাকিয়ে আমাকে আরও অধিক বিব্রত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিল। তার এই উদারতাটুকু গাদাগাদির বাসটিতে গরমে-ঘামে, মানুষের চাপে সিদ্ধ হওয়া আমার কাছে স্বস্তির শীতল বাতাস হয়ে এল। নিরুচ্চারে বললামঃ ছেলে, আমি কিন্তু তোমাদেরকেই ভালোবাসি। তোমার এই ভদ্রতা, সৌজন্য; আমার প্রতি তোমার এই মমতা ... ছেলে, আমার মন ছুঁয়েছে।

একটু পরেই শ্যাওরাতে ছেলেটি তার সকল সৌজন্য, মমতা, গায়ের সবুজ ঘ্রাণ নিয়ে নেমে গেলে আমি বর্বরকুলে একা হয়ে পড়লাম। আমার চোখ কি একটু ছলছল করে উঠল? মনের প্রাঙ্গণ কি একটু ভেজাভেজা ঠেকল না? ছেলে, তুমি ভালো থেকো। ভালো থেকো।

বাসের গতি কমে যাওয়ার প্রভাবে স্বয়ংকৃত ঝুঁকে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে একটা লোক আমার বুকে হালকা আঙুল ছুঁয়ে দিলে আমার তন্ময়ভাবটা কেটে গেল। বুঝতে পারলাম হারামিটা আমাকে অনেক জ্বালাবে। চারদিকে তাকালাম। একটাও মানবোচিত মুখ আমার নজরে পড়ল না। সব শুয়ার, কুকুর, বদমাশ। একমাত্র মানুষটি আগেই নেমে গেছে। আঁকড়ে ধরার আর কেউ নেই। কিছু নেই।

আজকের ড্রাইভারটাও ভাল নয়। বেপরোয়াভাবে চালাচ্ছে। হুটহাট লেন বদলাচ্ছে। ভারসাম্য রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। দু’পা একটু ছড়িয়ে দাঁড়াতে পারলে ভারসাম্য রাখা কিছুটা সহজ হত। কিন্তু পা ছড়ানোর জায়গা কোথায়?
বনানীর রেলক্রসিংয়ে এসে আবার কড়া ব্রেক। আমি সামনের দিকে পড়ে যাচ্ছি। দুইটা হাত চট করে সামনে থেকে আমার পতন ঠেকালো। দুইটা হাতের চাপ আমার বুকের উপর! আমাকে ঠেকালো। একে কি ঠেকানো বলে?

একটা লোক হুমড়ি খেয়ে পড়েছে আমার পিঠের উপর তার হাতও খুঁজছে আমার গভীর গোপন। এই অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে আমাদেরকে আর কতকাল যেতে হবে? আমি কি প্রতিবাদ করব? ঘুরে দাঁড়াব? প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত করব?

গতমাসে এমনি এক ভিড়ের বাসে টের পেলাম একটা লোক তার সামনের দিকটা দিয়ে আমার নিতম্বে সুযোগ পেলেই চাপ দিচ্ছে। আমি চেষ্টা করলাম একটু চেপে যেতে। কিন্তু এত... এত... গাদাগাদি, চাপতে গেলেই আরেকজনের শরীরের সাথে আমার স্তনদ্বয়ের লেপ্টে যাওয়ার সহজ সম্ভাবনা তৈরি হয়। সুতরাং শরীর শক্ত করে দাঁড়িয়ে রইলাম। বর্বর লোকটা সুযোগের উপযুক্ত ব্যবহারে কোনোই ত্রুটি রাখল না। তার নরম পুরুষাঙ্গের ঘনঘন ঘিনঘিনে ছোঁয়া লাগছিল আমার নিতম্বে। মনেহচ্ছিল যেন একটা কেঁচো কিলবিল করছে। প্রতিটা স্পর্শে আমি কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম। আর হারামিটা বাসের প্রতিটা দুলুনির সুযোগ নিতে লাগল অকাতরে। নরম শিশ্ন শক্ত হয়ে নিয়মিত খোঁচা মারতে লাগল প্রতিটি দুলুনির সাথে সাথে। জঘন্য! আমি আর সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করলামঃ
এইযে, সইরা দাঁড়ান। এমন গা ঘেঁইষা দাঁড়াইছেন ক্যান?
লোকটা উল্টা পাট নিলঃ আমি দাঁড়াইছি না আপনে আইসা আমার কোলের মধ্যে ঢুইকা পড়ছেন। ভিড়ের বাসে একটু ছোঁয়াছুঁয়ি হইবেই। সহ্য না হইলে প্রাইভেট কিন্না লন।

আমি আর কিছুই বলতে পারি নি। কীইবা বলার ছিল। আমি কি বলতে পারতামঃ আরে বদমাশ বেটা, তোর ইয়েটা সরা। না পারতাম না। আমরা অতটা নিঃসংকোচ হতে পারি না বলেই সহ্য করি। আমাদের সহ্যের আরেক নাম লজ্জা! আরেক নাম সংকোচ! আরেক নাম ভয়!

সবাই অসভ্যটারই পক্ষ নিলঃ কী করবেন আপা, একটু কষ্ট কইরা চাইপাচুইপা চইলা যান। ভিড়ের বাসে গায়ে গা একটু লাগেই।

সুতরাং কুত্তা লোকটা অবাধ লাইসেন্স পেয়ে গেল। কুত্তামির মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিল। আরো বেশরম, বেপরোয়া হল। আর আমি ওর লিঙ্গকে কেটেকেটে কুটিকুটি... কেটেকেটে কুচিকুচি... ঘিচিঘিচি... ঘিজিঘিজি... কুটিকুচিঘিচিঘিজি......

আমার সমস্ত দেহমন রাগে ঘেন্নায় রি-রি করছিল। একটা লোক নেমে যাওয়াতে আমি একটু চেপে যেতে পারলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে লোকটার দিকে আড়ে একটু তাকালাম। মনেহল আমি জায়গা পেয়ে যাওয়াতে বদমাশটা বেশ হতাশ হয়ে পড়েছে । চোখাচোখি হয়ে গেল। চোখ দিয়ে যেন ঘিনঘিনে, কুৎসিত লালা ঝরছিল। নিজেকে কোনোভাবেই আর সামলাতে পারলাম না। প্রচণ্ড আক্রোশে বামহাতের তর্জনি ও মধ্যমা ওর দুই চোখের মধ্য ঢুকিয়ে দিলাম। কুত্তাটা ঘেউ করতে চাইলেও যন্ত্রণায় কুইকুই করতে লাগল। আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়লাম। লোকজন জিজ্ঞেস করতে লাগল, কেন আমি এমন করলাম?

কেন? চট করে বদমাশটার লুঙ্গি টেনে খুলে ফেললাম। লোকজন আমার কাণ্ড দেখে হতবাক হয়ে গেল। আমি ইঙ্গিত করলাম উৎসাহী লোকদেরকে। তারা কুত্তাটার ভেজা লিঙ্গ দেখে কী বুঝল জানি না। সমস্বরে বললঃ ঠিকই আছে।

কী ঠিক আছে? জনতার উচ্চারণ বড় ঘোলাটে। ঘোলা জলের আড়ালে মাছ না সাপ বোঝা দুরুহ। দুরুহতার অর্থোদ্ধারের সময় কিংবা মন কোনোটাই তখন আমার ছিল না। মাথায় শুধু প্রতিশোধ! প্রতিশোধ! ব্যাগের ভিতর থেকে ব্লেড বের করে মাত্র একটা পোচ। ছিটকে ছিটকে রক্ত এসে আমার মুখ ভিজিয়ে দিল। ছিটকে ছিটকে আর্তচিৎকার বেরিয়ে এসে আমার দুকান জুরালো। আর কাটা লিঙ্গটি আমার হাতের মুঠোয় ধড়ফড় ধড়ফড় করতে থাকলে মুহূর্তে বাসটি জনশূন্য হয়ে পড়ল। চারদিকে ডাইনি ডাইনি রব। শুধু একজন বয়স্কা মহিলা ছুটে এসে আমাকে চুমু খেলেন। তার চোখে হাজার বছরের বঞ্চনার, প্রতিশোধের আগুন জ্বলতে দেখলাম।

যে লোকটা হুমড়ি খেয়ে পড়েছে আমার পিঠের উপর তার হাত খুঁজছে আমার গভীর-গোপন। এই অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে আমাদেরকে আর কতকাল যেতে হবে? আমি কি প্রতিবাদ করব? ঘুরে দাঁড়াব? প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত করব?

মাঝেমাঝেই আমি অদ্ভুত সব চিন্তা করি। মাঝেমাঝেই মনেহয়, মুখের ভিতরের দাঁতগুলির মতোই মেয়েদের জরায়ুতেও যদি দুইপাটি দাঁত থাকত। যাকে পছন্দ হবে না কিংবা যে জোর করতে আসবে ... তার শোচনীয় পরিণতির কথা ভেবে আমার খুব হাসি পায়। কিংবা কচ্ছপ যেমন মাথাটা লুকিয়ে ফেলে সে রকম কোনো কিছু অথবা শামুক-ঝিনুকের মতো শক্ত খোলসের কোনো ব্যবস্থা কিংবা সজারুর কাঁটার মতো এক ঝাঁক কাঁটা যদি থাকত নারীর অবলম্বন তাহলে গাদাগাদির এই বাসে আমার অসহায় স্তনযুগল আজ ভর্তা হত না। অনিচ্ছুক আমার বুকে কেউ হাত দিতে এলেই সাথে সাথে একটি শক্ত খোলসে ঢেকে যেত আমার স্তন কিংবা এক ঝাঁক বুকারু কাঁটা বিদ্ধ করে দিত অসভ্য আঙ্গুল।
কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। সুতরাং যা করার আমাকেই করতে হবে। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললামঃ একটা চরম শিক্ষা দিতে হবে! চরম শিক্ষা!

ব্যাগ থেকে আমার ধারাল কেচিটা বের করলাম। তারপর – ঘ্যাচ!!! তারপর ছিটকে ছিটকে রক্ত! ছিটকে ছিটকে আর্তচিৎকার! ডাইনি!ডাইনি! হুড়াহুড়ি। তারপর একজন বয়স্কা মহিলার আনন্দিত আগমন। তার চোখে হাজার বছরের বঞ্চনার ইতিহাস।

গুলিস্তান! গুলিস্তান! আপা গুলিস্তান আইসা পড়ছে তো। নামবেন না?
আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ধারাল কেচিটা গুছিয়ে রেখে বাস থেকে নামলাম। কেচিটাই এখন আমার বন্ধু। আমার আশ্রয়। আমার নির্ভরতার চাদর। এই কেচিটা আছে বলেই আমি চাকরিটা ছাড়ছি না, পথে নামছি না কিংবা হারছি না। কিংবা বলছি না আর পারছি না। যদিও প্রতিদিন বাসায় ফিরে ব্যাগটা দড়াম করে ছুঁড়ে ফেলি। মাকে টেনশনে ফেলতে চাকরি ছাড়ার হুমকি দেই। পৃথিবীতে এই একটি মাত্র সুখ আমার; একটি মাত্র সুখের আশ্লেষঃ আমার মায়ের টেনশন!
---------------

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, অনেক দিন পরে ব্লগে গল্প দেওয়ার সুযোগ হল। আসলে লেখারই সময় হয় না।
আমি আমার লেখার অকপট সমালোচনা পছন্দ করি। বলা চলে প্রশংসার চেয়ে তীব্র সমালোচনাই আমার বেশি প্রিয়। আমি তাতে নিজের লেখা শুধরানোর সু্যোগ পাই। অতএব নিঃসঙ্কোচে অকপট হবেন এটাই সবার কাছে আমার প্রত্যাশা।
সবার প্রতি শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:২৬
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×