somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাবি সাংবাদিকতা বিভাগের 'গর্ভ' নাঈমুল ইসলাম খান

০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ৩:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাঈমুল ইসলাম খান এই ব্লগে একজন মহান আলোচিত-সমালোচিত ব্যক্তি! বাংলাদেশে সাংবাদিকতার জগতের তিনি নাকি একজন উজ্জল নক্ষত্র!! বিশেষ করে ওয়ান-ইলেভেনের পর তিনি দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি হয়ে ওঠেছেন!!! প্রায় প্রতিদিনই তাকে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখা যায়, জাতির উদ্দেশ্যে বয়ান করছেন!!!!

তাকে বিশেষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট সাংবাদিক হিসাবে এখন সবাই চেনেন। কিন্তু বিশেষ মহলটি কি তাকে চেনে? শুনলাম আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকরা তাকে নাকি নিজেদের একজন উজ্জল নক্ষত্র মনে করেন। সেখানে নাঈমুল ইসলাম খানের নতুনধারার সাংবাদিকতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সবক দেওয়া হয়! ঢাবির শিক্ষকরা যখন তাকে চেনেন না তাহলে বিশেষ মহল তাকে চিনবে কি করে?

এই লোকটাকে আমি কিছুটা চিনি। তাই তার সঙ্গে আপনার পরিচয় করিয়ে দিতে এই পোস্টের শরণাপন্ন হলাম। মহান নাঈমুল ইসলাম খানের কিছু কীর্তির বর্ণনা এখানে পাবেন।

১) আজকের কাগজে তিনি ছিলেন সম্পাদক। ওই পত্রিকা থেকে টাকা মারায় পত্রিকাটির মালিক কাজী শাহেদ তাকে '৯২ সালে ওই পত্রিকা থেকে বের করে দিয়েছিলেন। কিন্তু নাঈম তার সাংবাদিক বন্ধুদের বোঝাতে সমর্থ হয়েছিলেন যে কাজী শাহেদ ও তার পার্টনাররা তাদের সাংবাদিকতায় হস্তক্ষেপ করছেন। তাদের সত্য প্রকাশে বাঁধা দিচ্ছেন। তাই অধিকাংশ সাংবাদিক আজকের কাগজ ছেড়ে ভোরের কাগজে যোগ দেন।

২) ভোরের কাগজের উদ্যোক্তা ছিলেন মতিউর রহমান। কিন্তু জন্মের পর থেকেই ভোরের কাগজের টাকা মেরেছেন নাঈমুল ইসলাম খান ও তার বন্ধু তৃতীয় মাত্রা খ্যাত জিল্লুর রহমান। মতিউর রহমান নিজেদের বংশালের জমি বিক্রি, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ভোরের কাগজ বের করেছিলেন। একদিকে দৈনিক পত্রিকা বের করার জন্য প্রচুর অর্থ না থাকা, অন্যদিকে নাঈম গংদের লুটপাটে অতিষ্ট হয়ে পড়েছিলেন মতিউর রহমান। নিজে আর চালাতে পারবেন না বুঝতে পেরে জন্মের ৮ মাস পর পত্রিকাটি মতিউর রহমান বিক্রি করেন সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছে। আগের লুটপাটের সঙ্গে সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছ থেকে নাঈমুল ইসলাম খান ও জিল্লুর রহমান সম্ভবত ২২ লাখ টাকা আয় করেছিলেন। ওই টাকা নিয়ে কাগজপত্রে সই করে আবার মাস্তান দিয়ে মতিউর রহমানকে শাহবাগে ভোরের কাগজ অফিসে সাংবাদিকদের সামনে আটকে রেখেছিলেন নাঈম। কিন্তু ভোরের কাগজের অধিকাংশ সাংবাদিক এবার নাঈমের সঙ্গে থাকতে অস্বীকৃতি জানান। সে কাহিনী ভোরের কাগজের তখনকার যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন। আমি ওই ঘটনাপ্রবাহের একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম।

৩) এরপর বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর এনজিও বিসিজেডিসি পর্ব এবং বিদেশী ফান্ড। মার্কিন, ইউরোপীয় কোনো ফান্ডের অভাব তার ছিল না। এক পর্যায়ে বিদেশীরাও নাঈমের ধান্ধাবাজি ধরতে পারে এবং ফান্ড সরবরাহ কমিয়ে দেয়।

৪) নতুনধারা নামে একটি পত্রিকা করার নামে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেন নাঈম। এর প্রবাসী উদ্যোক্তা শেষ পর্যন্ত পালিয়ে বাঁচেন। পত্রিকাটি আলোর মুখ দেখেনি।

৫) স্ট্যামফোর্ড ও হান্নান কাহিনী। হান্নানও শেষ পর্যন্ত নাঈমকে তাড়িয়ে দেন। ইদানিংকালের এই ঘটনা অনেকে জানেন। তাই বিস্তারিত বলছি না।

৬) আমাদের সময়। এই কাহিনী এখন লোকজনের মুখে মুখে। প্রতিদিন পাঠক নাঈমের তেলেসমাতি দেখছে।

এই নাঈম নাকি ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের গর্ভ ?? একথা সত্য হলে তো ওই বিভাগ, এর শিক্ষক আর শিক্ষার্থীদের লজ্জার কথা। নাঈম আশির দশকে এই বিভাগের ছাত্র ছিল এটা কোনো গর্বের বিষয় হতে পারেনা। বরং আমি এই বিভাগের অনেক ভালো ছেলে-মেয়েকে এখন দাপটের সঙ্গে সাংবাদিকতা করতে দেখছি। তাদের জন্য আমার গর্ব হয়। নাঈমের জন্য আমার অবশ্য লজ্জা হবে না। কারণ ওই বিভাগে আমি পড়িনি বা তার কোনো দুনম্বরি কাজে কখনো যুক্ত ছিলাম না। কিন্তু ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকদের জন্য আমার করুণা হয়। এতো দৈণ্য তাদের?

আর নতুন ধারার সাংবাদিকতা? সেটা যখন আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ নিয়ে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করে তখন আমার হাসি পায়। এই পত্রিকাগুলো এক সময় নতুন পত্রিকা ছিল। নাঈমের সময়ে এগুলোতে রাজনৈতিক গালগপ্প লেখা হতো। যেটা এখন আমাদের সময়ে হয়। বরং মতিউর রহমান এবং তার টিম ভোরের কাগজকে ওই ধারা থেকে সরিয়ে একটি বস্তুনিষ্ঠ, দলনিরপেক্ষ পত্রিকা করেছিলেন। পরে সাবের হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগের এমপি হয়ে পত্রিকার ওই নীতি রক্ষা করতে চাননি। এ কারণে মতিউর রহমান ও তার বন্ধুরা ১৯৯৮ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ভোরের কাগজ ছেড়ে যান।

[নাঈমুল ইসলাম খান সম্পর্কে এই পোস্টটি ব্লগার সুতরাং-এর পোস্ট পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে লিখেছি। 'সুতরাং'-এর পোস্ট]
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩৬
৪৪টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×