MRP পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে অনেকই বুঝতে পারেন না এখন করনীয় কি? অনেক ব্লগে লেখা আছে যে MRP পাসপোর্ট করতে হলে নতুন করে আবার ৪ পেজের ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হয়, রিনিউ বলে নাকি কোন কথাই নেই। তারা যখন সেই আর্টিকেল গুলো লিখেছিল তখন হয়তো সেরকমই ছিল অবস্থা, কিন্তু এখন অবস্থা পাল্টেছে।
এখন খুব সহজেই পাসপোর্ট রিনিউ করা যায়… এর জন্য যা যা করতে হবে সেগুলো নিচে বর্ণনা করলামঃ-
প্রথমেই আপনার পুরনো পাসপোর্টটি হাতে নিয়ে দেখুন এটির মেয়াদ শেষ হবে কবে? এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পাসপোর্টের রিনিউ ফি জমা দেয়ার ক্ষেত্রে। যদি এর মেয়াদ শেষের দিকে থাকে তাহলে আপনার পাসপোর্ট তাহলে ৩৪৫০ টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা দিন। আর যদি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়ে থাকে কিন্তু মেয়াদ উর্ত্তিণ তারিখ হতে টাকা জমার তারিখ ১ বছরের মধ্যে হয় তাহলে আরও ৩৪৫০ টাকার সাথে আরও ৩৪৫ টাকা যোগ করে জমা দিন, যদি ২ বছর হয় তাহলে ৩৪৫০+৩৪৫+৩৪৫ টাকা জমা দিন। মানে মেয়াদ শেষ হবার পরে প্রতি বছরের জন্য ৩৪৫ টাকা হারে অতিরিক্ত টাকা জমা দিতে হবে।
বিঃদ্রঃ পাসপোর্টের টাকা সোনালী ব্যাংক সহ ঢাকা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকের যেকোন শাখায় জমা দেয়া যাবে। ( প্রিমিয়ার ব্যাংকের লোকজনের সার্ভিস বেশ ভাল। ওনারাই পাসপোর্ট দেখে কত টাকা লাগবে তার হিসেব করে জানিয়ে দেয় যা খুব কম ব্যাংকই করে। )
টাকা জমা দেয়া হয়ে গেলে পেমেন্ট স্লিপের ২ কপি ফটোকপি করে নিজের কাছে রাখুন। পরে লাগতে পারে। এবার আসল কপিটা থেকে পাসপোর্টে অফিসের অংশ লেখা অংশটি আলাদা করে ফেলুন আপনার অংশ থেকে। এর সাথে সাথে পুরাতন পাসপোর্টের ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কিংবা স্মার্ট কার্ডের ও জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি করে রাখুন।
এবার নিচের লিংক থেকে ফরমটি ডাউনলোড করুন।
https://goo.gl/2zYtb5
ডাউনলোড হয়ে গেলে একটা পেপারের এপিট-ওপিট এ ফরমটি প্রিন্ট করুন। এই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আলাদা আলাদা করে প্রিন্ট করেন তাহলে পাসপোর্ট অফিসে জমা নেবেনা।
প্রিন্ট হয়ে গেলে এবার ফরমটি পূরণ করুন। যদি কোন কিছু পরিবর্তন করতে চান (নাম, স্থায়ী ঠিকানা, বাবা/মা এর নাম বাদে) তাহলে নিচে “চাহিত সংশোধন” এর মাঝে তা উল্লেখ করুন। যেমন বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে চাইলে
পাসপোর্টে বর্তমানে প্রদর্শিত তথ্যের জায়গায় লিখুন বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন আর পরিবর্তিত / সংশোধিত তথ্যের ঘরে বর্তমান ঠিকানা লিখুন। ( এর জন্য আপনার বর্তমান ঠিকানার কোন Utility Bill এর কপি ফটোকপি লাগবে।)
ছবি / সিগনেচার পরিবর্তন করতে চাইলে সেটা উল্লেখ করতে হবে।
আর শুধু মাত্র রিনিউ করার জন্য কিছু করতে হবেনা। ঐ টেবিলটি ফাঁকা রাখুন।
এবার পেছনের অংশে সংযুক্তির স্থানে আপনার যা যা সংযুক্তি করছের ফরমের সাথে তা তা লিখুন।
আমি পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, পাসপোর্ট রিনিউ রশিদ ও জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি লিখেছিলাম।
সব ঠিকঠাক ভাবে পূরণ হয়ে গেলে এবার ফরমটির ১ম পেজের ওপরে আপনার হাতের বামপাশে যেখানে “ডি.আই.পি ফরম-২” লেখা আছে সেখানে আঠা দিয়ে আপনার পাসপোর্ট অফিসের জন্য আলাদা করে রাখা পেমেন্ট রশিদের অংশটি ভালভাবে সেঁটে দিন।
এরপর ফরমটির সাথে যা যা সংযুক্তির কথা লিখেছেন সেগুলোর ফটোকপি ফরমটির সাথে পিন মেরে সংযুক্ত করে দিন।
এবার ফরমটি বার বার চেক করুন। সব ঠিক থাকলে এটি নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে চলে যান।
যাবার সময় অবশ্যই স্ট্যাপ্লার, আঠা, সব কাগজপত্রের আলাদা একটা কপি, একটা খালি ফরম অবশ্যই নিতে ভুলবেন না। যদিও ছবি লাগবে না, তারপরও দু এক কপি ছবি সাথে করে নিয়ে যাবেন। যদি দরকার হয় যাতে সেদিন ফেরত আসতে না হয়। ও ভালকথা, পুরাতন পাসপোর্টটি জমা দেয়ার দিন ও ডেলিভারীর আনার দিন নেয়ার কথা ভুলবেন না।
পাসপোর্ট অফিসে বাকি কাজ সারতে আপনাকে ১-২ ঘন্টা ব্যয় করতে হবে। তবে লাইনে দাড়ানোর আগে জেনে নিবেন সেটা নতুন পাসপোর্টের লাইন নাকি রিনিউ এর। সবচাইতে ভাল হবে আর্মি অফিসার যখন যেখানে যেতে বলবে সেটা ভালভাবে শুনে কনফার্ম হয়ে গেলে। সব কাজ শেষ হলে আপনাকে ডেলিভারী স্লিপ দেবে। মোবাইলে SMS আসলে তারপর পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।
এরপরও কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে করতে পারেন। যদি জানা থাকে আপনাকেও জানাবো।
ধন্যবাদ :-)
~~ আনন্দধারা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:১৬