somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুষারের দেশে আনন্দের এক একটা দিন.................২২তম পর্ব।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কোন এক একাকী বিকেলে.....ফেলে আসা সময় গুলোর সাথে, ফেলে আসা স্মৃতি জড়ানো গাছ, বেঞ্চ, সেই ল্যম্পপোষ্ট.....সব কিছুকেই যেন কোন এক বোতলে বন্দি করে রাখবার চেষ্টায়, ধরে রাখলাম ক্যমেরার আলো আধারীর খেলায়। আলাদিনের ভূতের মতো। যেন চাইলেই সামনে এসে দাড়াবে, আবার সবার অলক্ষ্যে থেকে যাবে আমার সাথে সব সময়। কিন্তু চাইলেই কি হয়? ফিরে কি পাবো এই দিন গুলোকে, ভালোবাসাগুলোকে?





বেশ কবছর আগে, এই শহরটাতে এসে ছিলাম। চলতে শুরু করেছিলাম একটা একটা করে নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে। বুনে ছিলাম একটা জাল, সুতোর সাথে জড়িয়ে নতুন নতুন সম্পর্ক।

কখোনবা বাঁধণ গুলো শুরুতেই আলগা ছিল, কোন কোনটা আবার শুরুতে আলগা থাকলেও পরে জুড়ে গেছে নিজের অজান্তেই। কোনটা আবার পাতলা সূতোর হালকা জট হয়ে জড়ি্যে ছিল, বুঝতে পারিনি, নতুবা লক্ষ্য করিনি। তাই তো আমার অগোচরে কবে ফোঁসকে গেছে জানতেও পারিনি। আজ হিসাবের খাতা খুলতে বসে, মনে হলো দেনা-পাওনার হাজারো কঠিন হিসাবের পরও থেকে গেছে অনেক না মেলানো দেনা। জীবনের দাড়িপাল্লায় কৃতজ্ঞতার বোঝাটা অনেক ভারী ঠেকছে তাই।

এতোদিন কেবল মনে হতো, এই সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর সাথে বুঝি কোন বাঁধন নেই, আমি যেন মুক্ত। কারোর কোন দেনা আমার কাঁধে নেই। তাই তো চলতাম নিজের মতো করে, গুরুত্ব দিইনি কারোর কোন ভাবনার, পারতপক্ষে নেইনি কারোর সাহায্য। ভেবে ছিলাম, আমার বুঝি কোন পিছুটান নেই এদের প্রতি। মায়াও ছিলনা কোন। কোনদিন ভাবিনি, দিনের শেষে তুষার গলা পানি ছাড়া আমার সাথে যে কেও জড়িয়ে গিয়েছে, এসেছে আমার নীরে আমারই সাথে।

আমাকে ভুল প্রমান করলো, আমারই মনটা। আজ কেন জানি মনে হচ্ছে, ছোট্ট এই শহরটা ছাড়াও বুঝি অনেক কিছুই আমার মনে স্থান করে নিয়েছে, জড়িয়ে গেছে আমার সাথে। আমার এই দিনগুলো বুঝি এতো সুন্দর হতো না, যদিনা এই জালের একটা একটা বাঁধন একটা একটা রং নিয়ে রংধনু না বানাতো, আমার ছোট ছোট ঘটনাগুলোতে।

সব ঘটনার পেছনে পেয়ে যাই নতুন নতুন মুখ, নতুন কোন বাঁধন। কেওবা প্রদীপ হাতে আলোকিত করেছে আমার অন্ধকার পথটা, কেওবা দিনের আলোয় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ছোট নালা পাড় হতে। কারোর অভিনয়েই হয়তো ভালো হয়ে গিয়ে ছিল, কোন মন খারাপের সন্ধ্যা। কখোনবা কষ্ট দিয়ে জাগিয়ে দিয়েছে, আমার নিজের মাঝে লুকিয়ে থাকা অজানা আমাকে, তার কাছেই আমি বেশি কৃতজ্ঞ, তার জন্যই আজ আমি জানি আমি কতটুকু পারি। তাদের জন্যই আমি জানি, আমার ক্ষমতার শেষ সীমানায়, কে দাড়িয়ে ছিল ছোট ডিঙ্গি নিয়ে আমার অপারগতার সমুদ্র পাড়ি দেবার সময়।

আজ কাটতে যেয়ে মনে হলো, অনেক বাঁধন ছিল দৃষ্টি অগোচরে। অনেক সুতো শক্ত মনে হলেও, টান দেবার আগেই ছিড়ে গেল। কোনটা আবার এমন ভাবে জড়িয়ে গেছে, খুলতে গেলে বুঝি বা আমার খুটিটাই নড়ে যায়? নানা রংয়ের এই বাঁধনগুলোই আমার জীবনটাকে করেছে, সুন্দর।

হয়তো কাগজের গায়ে কোন কালির আচড় দিয়ে কিংবা জন্মসূত্রে অধিকার প্রাপ্ত হয়ে গড়ে ওঠেনি বলেই আজ বড্ড বেশি কৃতজ্ঞ, এই তুষারের দেশে বোণা ভালোবাসার জালটা কাছে। তাই তো এতোদিন কাটতে চাইলে, মন সয় দিচ্ছিল ছিল না। কিন্তু তারপরও কাটতে শুরু করলাম একটা একটা সুতো, মুক্ত করতে শুরু করলাম নিজেকে কয়েক বছরে গড়ে তোলা জালটা থেকে।

কাটা সুতো সৃষ্টি করবে অনেক শুন্যতার, তবু থেকে যাবে অদৃশ্য বাধঁন। হয়তো এদের মনে পরবেনা , হয়তো পরবে কোন দিন আমার না থাকাতে।

নিজের হাতে গড়া, একটা একটা ইটের যে বিশাল ইমারত দাড়িয়ে ছিল এতোদিন আমার নামটা নিয়ে, আজ তার একটা একটা ইট খুলে বিলীন করে দেবার আশায় নামলাম পথে। একদিন যে পথ ছিল অচেনা, আজ তার কাছ থেকে চেনা সবকিছুকে স্মৃটির পাতায় বন্দী করে দেবার চেষ্টার শুরু।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:২৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×