somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কর্ম ও ধর্ম

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাধারণ অর্থে ধর্ম বলতে কোন কিছুকে ধারণ বা পোষণ করাকে বোঝায়। কেউ কেউ আবার একে অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
পৃথিবীতে ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সহ যত রকমের ধর্ম প্রতিষ্ঠিত রয়েছে সব ধর্মের মূল কথা একটিই- সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাস ও ধরায় শান্তি প্রতিষ্ঠা। কোন ধর্মেই হানাহানির উল্লেখ আছে বলে আজ পর্যন্ত আমি শুনিনি। এসব ধর্মাবলম্বী মানুষেরা সর্বশক্তিমান স্রষ্টার ইবাদাত বা আরাধনা করে পরকালে মুক্তি প্রাপ্তির চেষ্টা করে।
স্রষ্টার নৈকট্য লাভের আশা করতে হলে আগে তাঁর সৃষ্টির নিকট নিজেকে পৌঁছাতে হবে। মানুষ যেমন শিল্পীর আঁকা ছবি দেখে তার প্রসংশা করে তেমনি স্রষ্টার প্রশংসা করতে হবে তাঁর সৃষ্টি দেখে। স্রষ্টাকে পাবার রাস্তা স্রষ্টা নিজেই বাতলে দেবেন। এসব কথা আপনাদের জানা। এবার মূল কথায় আসি।
স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভালবাসতে গেলে আপনার আরেকটি যে ধর্মের প্রকাশ পাবে তাহল আপনার মানবধর্ম। মানুষ সহ জাগতিক সকল সৃষ্টিকে ভালবাসাকে যদি মানব ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করি তাহলে এই মানবধর্ম যে আপনার পোষণ করা ধর্মেই নিহিত তা স্পষ্ট বোঝা যায়। কেননা সৃষ্টিকে ভালোবাসা মানেই স্রষ্টাকে ভালবাসা।
ধারণকৃত ধর্মকে পালন করা অবশ্য কর্তব্য কিন্তু ধর্মে অন্ধ হওয়াটা অপরাধ। যেকোন অনিষ্ট নিমিষেই ঘটে যেতে পারে এই অন্ধতার কারনে যা ধর্মের মধ্যে নিষিদ্ধ। ধর্মের প্রতি এই অন্ধতা মানুষকে বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ধর্ম মানুষকে মুক্তি দেয়।
প্রকৃতপক্ষে মানুষের কর্মই তার ধর্ম। ধর্মকে প্রকৃতরূপে ধারণ করতে গেলে মোহকে ত্যাগ করতে হয় আর কর্তব্যকে জগতের সামনে পেশ করতে হয়। ধর্মান্ধতা মোহ সৃষ্টি করে আর কর্ম মোহকে ত্যাগ করতে সাহায্য করে। মানুষ যদি নিজের কর্মকে ত্যাগ করে তবে সে মোহাবিষ্ট হয়ে ধর্ম থেকে দূরে সরে যায়। ইচ্ছায় অনিচ্ছায় যেকোন অনিষ্ট ঘটে যেতে পারে তার দ্বারা। মানুষ তখনই কর্মকে ত্যাগ করে যখন সে ব্যাক্তিগত ধর্মে মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ে। কর্মত্যাগী মানুষ সর্বদাই অন্ধের মতো শুধু সত্যকে হাতরে বেড়ায় কিন্তু নাগাল পায়না, আলেয়াকে আলো মনে করে আর কুহেলিকাকে সত্য বলে মেনে নেয়। ব্যাক্তিগত ধর্ম ব্যাক্তির পক্ষে মঙ্গলময় হতে পারে কিন্তু জগতের জন্য নয়। জগতের জন্য জাগতিক কর্ম সম্পাদন করতে হয় আর সে জন্য কখনো কখনো ব্যাক্তিগত ধর্মের বাহিরেও বিচরণ করতে হয়। কর্মকে ধর্মজ্ঞান করার আগে জগতের ওপর তার প্রভাবকে বিবেচনায় আনাও কর্তব্য বলে ধরে নেওয়া উচিত। মহাভারতের কুরু বংশের ধ্বংসের জন্য না দায়ী দুর্যোধন নাতো তার মামা শকুনি। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের জন্য দায়ী ভীষ্ম, দ্রোণাচার্য আর কর্ণের ধর্মান্ধতা ও তাদের ব্যাক্তিগত ধর্মের পালন। মোহাবিষ্ট এসব কর্মত্যাগী ব্যাক্তিদের জন্যই মহাধ্বংসের আয়োজন হয়েছিল।
সুতরাং, ধর্মের প্রতি মানুষের যে দুর্বলতা রয়েছে তাকে অন্ধতায় পরিণত না করে মুক্তি লাভের উপায় খুঁজে ধর্মকে যথাযথভাবে ধারণ করাকে কর্তব্যজ্ঞান করাই শ্রেয়। তাই ব্যাক্তিগত কর্মের পরিবর্তে জাগতিক কর্মকে ধর্মজ্ঞান করলে হয়তো ধরার বুকেই আমরা স্বর্গসুখ অনুভব করতে পারব।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৫৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×