আমরা কেন চোখের জল ফেলি এ প্রশ্ন মনে বারবার জেগেছে, অনেকবার বোঝার চেষ্টা করেছি মাত্র, শেষে না বুঝে বোঝার চেষ্টা ছেড়ে দিয়েছি।
কেউবা বলবেন আমরা চোখের জল ফেলি অবস্থার প্রেক্ষিতে, কেউ বলবেন ইমোশনাল আউটবার্স্ট। কেউ কাঁদছে প্রিয়জনের বিয়োগ ব্যাথায়, কেউবা নিজের জীবনের ব্যর্থতায়। কখনও আমরা কাঁদি বৌ হারালে, কখনওবা মা হারালে। কখনও প্রেমিকা-প্রেমিক বিচ্ছেদ কান্নার সাগর বানিয়ে ছাড়ে।
এত গেল দুঃখ-ব্যাথা-বেদনার কান্না! সেই কান্নাকে কি বলব যা অনেক মধুর স্মৃতির ভিড়ে মাতাল করেও কাঁদায়। ভাল করে ভেবে-চিন্তে এই কান্নার হিসেব মেলানোর চেষ্টা করেছি; পারিনি।
আমারই এক বন্ধুর জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে প্রথম সংসার বসানোর তাগিদে প্রথম ফ্ল্যাটে পা রাখার নীরব কান্না দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। সে কান্না দুঃখের নয় আনন্দের নয়; তা শুধুই বিজয়ীর কান্না, সমর্পনের কান্না।
আবার দেখেছি নিশ্চিত মৃত্যুপথযাত্রীর কান্না যা ঝরে পড়ে তার অন্তর থেকে। কিকরে ভোলা যায় সেই সকল মরণেরও ফাঁদ পেরিয়ে জয়ী হওয়া মনের অন্তরকান্নার কথা !!! আমরা সকলেই বাঁচতে চাই তা সে বাঁচা যতই যন্ত্রণাময় হোক। বাঁচার মধ্যেই সেই নিশ্চিত মৃত্যুর বীজ লুকিয়ে আছে জেনেও আমরা বাঁচতে চাই।
কবিগুরুর কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি ..... গানটির ভিন্ন ভিন্ন মানে আমরা মানুষ নির্বিশেষে করি। আমার বারবার মনে হয় কৃষ্ণকলি কোনোও নারী নয়, কৃষ্ণকলিই সেই ঘনঘোর মৃত্যু যার ফাঁক দিয়ে জীবন নামের একফালি আলো কালোহরিণ চোখের আদলে দেখা যায়। সেই কালোহরিণ চোখের মাঝে জলতো আসবেই, সৃষ্টির বীজ আনার কারনেই আসবে।
এই কথাগুলো আমার নিজেরই অনেকসময় ধাঁধা লাগলেও বিশ্বাস করুন আমি দেখেছি, দেখেছি কান্না চোখে-মুখে-শরীরে! দেখেছি সমগ্র সত্তায় !
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৩