
সোনা মিয়ার জায়গা মতো খুঁজলি হইছে। যখন তখন চুলকানি শুরু হয়ে যায়। বড়ই জ্বালাতনে আছেন তিনি। এই যেমন এখন; এক হাতে বাসের হ্যান্ডেল, আরেক হাতে ব্যাগটা নিয়ে ঝুইলা আছেন। কিন্তু মরার চুলকানির কী সেই খবর আছে?
এটাতো না হয় কোনোভাবে চুলকে নিবেন, কিন্তু সেদিন যে ক্লাসে লেকচার দেয়ার সময় শুরু হইল! বড়ই বিব্রতকর পরিস্থিতি। সামনের সারিতে বসা ফর্সা গোলগাল মেয়েটাকে ভালো লাগে তার। সে এখন হা কইরা তাকিয়ে আছে তার দিকে। এইসময় তিনি ক্যামনে চুলকাইবেন?
বহুত হইছে। এই যন্ত্রণা আর সহ্য করার মানে হয় না। সোনা মিয়া ঠিক কইরা রাখছেন আজকেই নিউমার্কেটের মোড় থেকে পাগলা মলম কিনবেন একটা। বহুত গ্যাঁজানি শুনছেন তাদের। এইবার সত্যিকারের টেস্ট নেয়ার মওকা আইছে।
রাতের দিকে সোনা মিয়া পাগলা মলম কিনে খুশী খুশী মনে ঘরে ফিরলেন। কিন্তু ঘরে ঢুকেই তার মাথা ঘুরে গেল। পুরো ঘরে মনে হইল ঝড় বয়ে গেছে। জিনিশপাতি সব লন্ডভন্ড। তিনি ভয় পাইয়া তার অতি আদরের জানপাখিরে ঢাকতে লাগলেন। কিছু কী হইছে তার? ঘরের এ হাল হইলো ক্যাম্নে?
খুঁজতে খুঁজতে টেবিলের উপর রাখা চিরকুটের দিকে নজর গেল তার। তার জানপাখির হাতের লেখা। "তোর মতো একটা লুচ্চা বদমাশের সাথে ঘর করা আমার পক্ষে সম্ভব না।" সোনা মিয়া স্তব্দ হয়ে গেলেন। ভেবে চিন্তে কোনো কূল কিনারা পাইলেন না তিনি। ফোনও ঢুকতেছে না জানপাখির ফোনে। ভেবে চিন্তে তিনি এইবার ফেইসবুকে লগ-ইন করলেন। জানপাখির আবার চব্বিশ ঘন্টা অনলাইনে থাকার বাতিক আছে। এখন কি আছে সে অনলাইনে?
ফেইসবুকে ঢুকেই জীবনের সবচেয়ে বড় শকটা পাইলেন তিনি। শ খানেক মেসেজ, নোটিফিকেশনে ভরে আছে ফীড। ঘটনা কী? আজকে তো তার জন্মদিনও না। ঘটনা কী তা একটু পরই টের পাইলেন। সবাই একটা ভিডিওর লিঙ্ক পাঠাইছে তারে। ফেইসবুকে নতুন ভাইরাল হওয়া জিনিশ।
ভিডিওতে দেখা যাইতেছে বাসে দাঁড়ায়া এক লোক তার জায়গামতো হাতাইতেছে। খুবই অশ্লীল ভঙ্গি। তার পাশেই আবার বসা একটা মেয়ে। আর ভিডিওর ক্যাপশন দেয়া আছে, "এই শুওরটাকে চিনে রাখুন। মেয়ে দেখলেই তিনি আর সামলাইতে পারেন না। এগুলার সো* কাইটা কুত্তারে খাওয়ানো উচিৎ..."। পুরোটা দেখার আগেই সোনা মিয়া অজ্ঞান হয়া গেলেন, কারণ ভিডিওর লোকটার চেহারাযে হুবুহু তার মতো।
সোনা মিয়া দেখে যেতে পারলেন না, কত বিশাল সেলিব্রেটি হয়া গ্যাছেন তিনি। কত হাজার হাজারবার শেয়ার হইছে তার চুলকানির ভিডিও। আমাদের পক্ষেও জানা সম্ভব হইলো না, এই নিয়ে সোনা মিয়ার অনুভূতি কী। কারণ পরদিনই সোনা মিয়ার লাশ পাওয়া গ্যাছে। সিলিঙের সাথে ঝুলানো। আর পাওয়া গেছে একটা সুইসাইড নোট,
'আমারে গোসল করানোর সময় দেইখা নিস হারামজাদারা। এইটা কোন চুলকানি ছিল।'
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




