somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নন্দন নন্দিনী তুমি--৯

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত এখন কয়টা কে জানে ? থানায় এসেছি অনেকক্ষন /সন্ধা পেরিয়ে এখন যুবক রাত / আর যাই হোক একটা জিনিস ভেবে ভালো লাগছে যে ,কোনো এক উছিলায় থানা দেখা হইলো/
যে রুমটায় আমাকে রাখা হইছে তা বেশী বড় না / তবে একদম মুরগীর খোয়ার যাকে বলে তার চেয়ে রুমটা একটু বড়/ আরও কয়েকজন আছে এখানে আরো আগে থেকেই/ডানদিকের কোনাটায় এক বুড়া চাচা প্রচন্ড বেগে কাশতেছে/ সে তার আশে পাশে ছোট একটা পুকুর বানিয়ে অনবরত খকখক করেই যাচ্ছে/ এবার মনে হয় বড় বাথরুমও হয়ে যাবে/ এমনিতেই তীক্ষ্ন একটা ঝাঝাঁলো গন্ধ চারপাশে তীব্র থেকে তীব্রতরও হচ্ছে/ বড় জনের আকস্মিক আগমনে কি যে হবে কে জানে ! তবে সে সম্ভাবনা এখন প্রবল খেকে প্রবলতর হচ্ছে/ বুড়ো মানুষটা কুজো হয়ে মাঝে মাঝে লোহার গরাদের কাছে যাচ্ছে , ফ্যাঁসফেঁসে গলায় বলার চেষ্টা করছে-
বাবা গো আমারে পায়খানায় যাইবার দাও/ পরিস্কার অমু/নাপাক শরীরে নামাজ অয় না /
অফিসার তার কথা শুনছে বলে মনে হয় না/ সে অনবরত ফোনে কথা বলছে /কখনও সদ্য প্রেমে পড়ুয়াদের মত , কখনও অভিমানী প্রেমিকের মত / বুঝাই যায় স্ত্রীর সাথে না , বান্ধবী হবে/
আচ্ছা দেখাই যাক না , বান্ধবী না ষ্ত্রী ! কোনটা ঠিক !
এই যে শুনছেন স্যার, শুনছেন, এই চাচা আপনাকে কিছু বলছে /
বেশ জোরেই বললাম/ অফিসার চমকে তাকাল/ আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে থেকেই ওপাশের জন কে বলল ,
রাগ করো না গো , একটু পরেই তোমাকে ফোন করছি /
ঠাস্ করে রিসিভার নামিয়ে রেখে গরাদের কাছে উঠে এল সে/
কি সমস্যা ?
সমস্যা আমার না, এই চাচার /
তাতে আপনার কি ?
আমি মনে মনে একটু জয়ের আনন্দ উপভোগ করলাম / আমার হাসি , আমার চেহারা সুরুত তাকে আপনি বলে সম্মোধন করতে বাধ্য করেছে এবং ভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে/
আমার আবার কি ? আমার কিছু না /সমস্যা একটা অন্যের প্রস্রাবে বেশীক্ষন দাড়িয়ে বা শুয়ে থাকা যায় না/ নিজে প্রস্রাব করে সারারাত বড় আরামে ঘুমিয়ে থাকা যায়/ স্যার আপনার বা ভাবীর কি এই রোগ আছে নাকি ?
আরো অপ্রস্তুত হয়ে গেল সে / আমি আরো উল্লাসে মেনে মনে নেচে উঠলাম/ ওনাকে আরেকটু নাড়া দেয়ার জন্য বললাম,
ওনাকে পায়খানায় না যেতে দিলে আপনার বান্ধবী একটু পর পায়খানার গন্ধ টেলিফোনে পাবে/
বলে নিজেই হো হো করে হেসে উঠলাম/ কনফিউজিং ! কনফিউজিং !
অফিসার চোখ সুরু করে একটু তাকিয়ে থেকে বলল ,
বেশী স্মার্ট ? অপেক্ষা করো , ডলা মাষ্টার আইলেই বুঝবা থানা কিতা জিনিস !
একজনকে ডেকে বলল বুড়া চাচাকে নিয়ে যাবার জন্য/
অফিসার যেয়ে নিজের চেয়ারে বসে বিরক্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো/
ডলা মাষ্টার কি পদ্ধতিতে আমাকে ডলা দিবে মনে হয় তারই বায়স্কোপ দেখছে মনে মনে/হঠাৎ হেসে ফেললাম/ আমার হাসি দেখে তার চোয়াল অনেকখানি ঝুলে পড়লো/ কিন্ত বড়ই বিরক্ত এবং ছানাবড়া র্ধৈয্শীল চোখে তাকিয়ে রইলেন/
সে এখন ও কোনো গালিগালাজ করেনি/ আমার চেহারার জন্য যে আমার সাথেই করেনি তা না , কারো সাথেই করেনি/
তবে ভবিষ্যতের কথা বলা যায় না/ কারন আমার জানা মতে পুলিশ ভাইয়েরা প্রথমে গালি গালাজের উপর প্রশিক্ষন নেন, তারপর চড় থাপ্পর , লাথ্থি গুতা এসবের উপর প্রশিক্ষন নেন/ এ ছাড়াও আরো কত বিষয়ের উপর বিশেষ ডিগ্রী নেন তা যদি বলা শুরু করি তো আমার হাসি মোহময় হাসি আর কোনো কাজে আসবে না/
পুলিশ অফিসার তখনও আমাকে দেখছে , তার চাহনী আমাকে ডলা মাষ্টারের ব্যাপারটা সিরিয়াসলি ভাবনায় ফেলে দিলো/
আমি নিজের মত করে চারপাশটাকে বদলাতে চাইলাম/
ট্রান্সফার করলাম নিজের চিন্তাকে /
কেমন আছে মা?
জানি হাসপাতালে সে / জ্ঞান কি ফিরেছে ? মায়ের এই অচেতন থাকা আর হঠাৎ জ্ঞান ফেরাটা একদম অন্য রকম একটা সময় / মা তখন আজব আজব কান্ড করে/ জ্ঞান ফিরেই সে অন্য অলকা দেবী হয়ে যায়/ কখনও সে তার ছোট বেলায় ফিরে যায় , কখনও সুর করে আগডুম বাগডুম পড়ে, কখনও মৃত মাকে খোজে আবার বিচিত্র সব খাবারের বায়না ধরে ঘ্যান ঘ্যান করে কান্না করে/ একবার তো র্নাসকে ডেকে বলল কাঁঠালের বিঁচির সাথে চ্যাপা শুটকির ভর্তা করে দিতে /
মোর্শেদা বেশী করে রসুন পেয়াজ আর শুকনা মরিচ দিয়া বানাবি , কাজির ভাত যেন গরমই থাকে /
নতুন নাম আর দায়িত্ব পাওয়া র্নাস কে ভ্যবচ্যাকা খেয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আবারও রাগ করে মা/
যা ... খাম্মার মত দাড়াইয়া আছস কেন? জ্ঞান ফিরে মা কখনও নিজেকে মতির মা, কখনও রাহেলা বুয়া, কখনও পিঠা ভাজুনি সদরুন বিবি ভাবে নিজেকে/ অভির কথা তার কখনই মনে পড়ে না /
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×