somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোড়া মাঠের স্নান….. ২

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মনে হচ্ছিলো আজও এই রোদের মধ্যে বুঝি হেঁটেই যেতে হবে/আগে হাঁটতে অনেক ভালো লাগতো/ছোট্ট মেঘের ব্যাগটা কাধেঁ নিয়ে অনেক দুর পর্যন্ত হাঁটতে পারতো/একটুও ক্লান্তি লাগতো না নুপুরের/রোদে মুখ টকটকে লাল হয়ে উঠতো/তবুও মজা লাগতো-মেঘও মজা পেত/
রাস্তায় দাড়িয়ে ঝালমুড়ি , আইসক্রিম খাওয়া চলতো/কখনও বা কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানে ঢুকে যেত/মেঘ কিনতো নানা ডিজাইনের রাবার ,কার্টার,রং বেরঙের পেনছিল . খেলনা গাড়ি আর পোকেমন র্কাড/

নুপুর মেঘের ছোটো খাটো বায়না গুলো খুশী মনে পুরন করে নিজেই মনে মনে ভীষন খুশি হয়ে উঠতো/ সময় বয়ে যেত এলোমেলো ভাবে/নুপুর জানতে চাইতো না কতটা সময় কেটে গেল এলোমেলো ভাবে/ তাই ঘড়ি দেখতো না সে/

বাসায় জবাবদেহী আর কি ! সেই তো একই/দেরীর কারন রাস্তায় জ্যাম, রিক্সা পাওয়া যাচ্ছিল না ইত্যাদি / এসব তো আর মিথ্যা না, সত্যি সত্যি / এসব বলে প্রতিদিনই পার পেয়ে যেত নুপুর/আর ওর এই যে দেরী করে বাসায় ফেরা এসব নিয়ে কারো তেমন মাথা ব্যথাও যে নেই তা জানে নুপুর/ওর জন্য যে কেউ চিন্তায় অস্থির থাকবে না তাও জানে/ তাই কিছুটা সময় নিজেকে দিত/মেঘের ছোট্ট হাত ধরে বেড়ানোটা তার দারুন লাগতো/মনে হত না আর শেষ হোক এই পুড়ে যাওযা সময়টুকু/নুপুর মনে মনে চাইতো মেঘ আরো বায়না ধরুক, এটা সেটা আবদার করুক/

যখন অনেক বেশী দুপুর হতো তখন ঘেমে নেয়ে লাল টুকটুকে মেঘ আর নুপুর ১৭/৫ এর তিন তলার কলিংবেলে হাত রাখতো/

নুপুরের ঐ বাসাটাকে কেন যেন মধ্যযুগের নির্যাতনের সেল মনে হয়/ সকাল হতে না হতেই এক বজ্রকন্ঠের আওয়াজধারিনীর গলার আওয়াজের শব্দে ভাড়াটিয়া আর আশেপাশের ঘুমন্ত অন্যসব বাড়ির লোকজনের ঘুম ভাংগে/ নুপুর মনে মনে ওনাকে আনওয়ান্টেড আ্যার্লাম ডাকে/
’সব মুনাফিক, কাফের ,নামাজ নাই কিছু নাই শুধু শুইয়া থাকে/”
এই সবরা হচ্ছে নুপুর আর সুরমা/ মেজ বউ আর ছোট বউয়ের জন্য সবচেয়ে বড় এবং ভালো যে জাহান্নাম তা নাকি দাউ দাউ করে জ্বলছে/
প্রতিদিন শ্বাশুড়ির সাথে একই কথা বিড়বিড় করে বলতে বলতে বিছানা ছাড়ে নুপুর/নামাজের জায়নামাজে দাড়িয়ে মেঘের জন্য দোয়া করে নুপুর/

তারপর শুরু হয় নুপুরের সারাদিনের নাচ/

ঝমঝম শব্দে থালাবাসনের সাথে চলে নুপুরের মুদ্রা শেখা/
শ্বশুর শ্বাশুড়ির সকালের নাস্তা শেষ হয় সকাল আটটার মধ্যে/তখনও সুরমা আর নুপুরের শোবার ঘরের দরজা ভেজানো থাকে/স্বপন আর কবির তখনও ঘুমায় কোন এক বেহেস্তের সুখ স্বপ্নে/
ছোট্ট মেঘ যখন পটিতে বসে বসে হাগু দিতে দিতে কার্টুন দেখে তখনও ঘুম ভাংগে না কবিরের/ঘুমের বেলায় কবির অনেক সচেতন/হাজার আওয়াজেও তার সকালের ঘুম নষ্ট হয় না/
সব কাজ গুছিয়ে মেঘের ছোট্ট হাত ধরে নুপুর যখন ঘর থেকে বের হত শ্বাশুড়ি আম্মা পেছন থেকে বলে উঠতেন, ‘আইজকা যেন আবার জামে পইড়ো না- কাম কাইজ সব পইড়া আছে, তোমার শ্বশুরকে একটার মধ্যে খাওন দেয়া লাগবো/’
নুপুর মাথা নাড়ে কি নাড়ে না বোঝা না গেলেও শ্বাশুড়ি আম্মা আর কিছু বলেন না/ নুপুরও আর কোনো কথা না বলে পা বাড়ায/
মেঘ কোলে উঠার বায়না ধরলে –ওকে কোলে নিয়ে নেমে যায় নুপুর/খোলা আর তাজা সকালের বাতাস নুপুরের মনটাকে হঠাৎই সুন্দর করে দেয়/
সকালের রাস্তায় রিক্সা না পেয়ে মন খারাপ হয় না নুপুরের/বরং মনে মনে খুশী হয়/দেরী হয়ে গেলে বেশী বেশী মিথ্যা কথা বলা লাগবে না/এমনিতেই জন্মগত ভাবে জাহান্নামের বাসিন্দা , তারপর যদি প্রতিদিন মিথ্যা কথা বলতে হয় তা হলে তো সর্বনাশ/শ্বাশুড়িআম্মার কথা মত জাহান্নামেও জায়গা হবে না/
প্রচন্ড শব্দে গাড়ির ছুটে আসার শব্দে আতঁকে উঠে নুপুর/
একটা বিকট আওয়াজ আশেপাশের সব আওয়াজের গলা চেপে ধরলো/
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×