আবু গারীব কারাগার থেকে প্রকাশিত নির্যাতিত বোন ফাতেমার চিঠি-
'পরম করুনাময় আল্লাহ তা’য়ালার নামে, (হে মুহাম্মদ) তুমি বলো, আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তিনি কারোই মুখাপেী নন। তাঁর থেকে কেউ জন্ম নেয়নি, আর তিনিও কারো থেকে জন্ম গ্রহন করেননি। আর তাঁর সমতুল্য দ্বিতীয় কেউই নেই।' (সুরা-১১২, আল এখলাস, আল কোরআন)
আমি আল্লাহ তা’য়ালার গ্রন্থ হতে এই পবিত্র সূরাটি উল্লেখ করছি কারণ এর দারুন প্রভাব পড়েছে আমার উপর এবং আপনাদের সবার উপরেও যা বিশ্বাসীদের হৃদয়ে এক প্রকার ভয় ও শ্রদ্ধা মিশ্রিত বোধের জন্ম দেবে।
আমার ভাই মুজাহিদীন আল্লাহর পথে আছে। আপনাদের আমি কি বলবো? তবু বলছি, আমাদের জরায়ু বানর ও শুকর জাতীয় লম্পটদের সন্তানে ভর্তি হয়ে আছে। যারা আমাদের বলাৎকার করেছে। অথবা (আমি) আপনাদের বলতে পারি যে, তারা আমাদের দেহকে বিকৃত করেছে। আমাদের মুখমন্ডলকে ঝলসে দিয়েছে এবং আমাদের ঘাড়ে ঝোলানো কোরআনের ছোট্ট কপিটি অযথা ছিঁড়ে ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছে। আল্লাহ অতি মহান, আপনারা কি আমাদের পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পারছেন না ? এটা সত্য,আপনারা জানেন না আমাদের সাথে কি ঘটেছে ? আমরা আপনাদের বোন। আল্লাহ হিসাব নিকাশের সময় ভবিষ্যতে এ সম্পর্কে আপনাদের জিজ্ঞেস করবে।
আল্লাহর কসম কারাগারে আসা পর্যন্ত আমাদের এমন কোন রাত কাটেনি যে রাতে বানর ও শুকর জাতীয় অমানুষরা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েনি। তারা তাদের পূর্ণ স্বাদ মিটিয়ে নিস্তেজ না হওয়া অবধি আমাদের দেহকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করতে থাকে।
আমরা তারাই, যারা আল্লাহর ভয়ে আমাদের কুমারিত্বকে সব সময় পাহারা দিয়ে রেখেছিলাম। আল্লাহকে ভয় করুন। আমাদের মেরে ফেলুন। আমাদের ধ্বংস করে দিন। তাদের আনন্দ উপকরণ হিসাবে ধর্ষণ করার জন্য আমাদের রেখে যাবেন না। এভাবে সর্বশক্তিমান আল্লাহর মহাকৃতিত্বকে মর্যাদাসম্পন্ন করা হবে। আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। তাদের কামান ও উড়োজাহাজগুলোকে বাইরে রেখে আসুন। আবু গারীব কারাগারে আমাদের কাছে আসুন। আমি আপনাদের ধর্ম বোন। তারা আমায় একদিন নয়বারেরও বেশী ধর্ষন করেছে। আপনারা কি অনুধাবন করতে পারছেন? চিন্তা করুন, আপনাদের একজন বোন ধর্ষিত হচ্ছে।
আপনারা কেন ভাবতে পারেন না যে, আমি আপনাদের বোন। আমার সাথে আরো ১৩ জন মেয়ে আছে। তারা আমাদের পোষাকগুলো নিয়ে নিয়েছে। আমাদের কাপড় পড়তে দেয় না। আমাদের মধ্যের একজন মেয়ে আত্মহত্যার প্রতিজ্ঞা করেছে। তাই আমি এই চিঠিটি লিখছি। সে নৃশংসভাবে ধর্ষিত হয়েছে।একজন সৈনিক তাকে ধর্ষনের পর তার বুক ও উরুতে আঘাত করেছে। সে অবিশ্বাস্য অত্যাচারের দ্বারা তাকে ভোগ করেছে। মেয়েটি তার মাথা জেলের দেয়ালের সাথে আঘাত করতে লাগলো, যতন না তার মৃত্যু হয়। মেয়েটি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। যদিও ইসলামে আত্মহত্যা নিষিদ্ধ। কিন্তু আমি মেয়েটিকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আশা করছি, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। কারণ আল্লাহ সবার প্রতি অসীম দয়ালু। ভাই,আপনাদের আবারও বলছি, আল্লাহকে ভয় করুন।আমাদের মেরে ফেলুন, তাহলেই আমরা হয়তো শান্তি পাবো। সাহায্য করুন। সাহায্য করুন। সাহায্য করুন।
কি বলব?কিছুই বলার নেই মেয়েদের মত চোখের পানি ফেলা ছাড়া
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৫