somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাজ্জালের সময় পৃথিবীর অবস্থা ও মুসলিমদের করণীয় -৪র্থ পর্ব

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্বাস্থ্যখাত নিয়ে দাজ্জালি চক্রান্ত

স্বাস্থ্যপেশা একটি অতিশয় সম্মানজনক পেশা। কিন্তু এই পেশার দৃষ্টান্ত হল তরবারির মতো। তরবারি যদি আল্লাহভক্ত মানুষের হাতে থাকে, তাহলে সমগ্র মানবতার জন্য রহমতের কাজ দেয় এবং মানবতাকে সমস্ত ক্ষতিকর ব্যাধি থেকে রক্ষা করে। কিন্তু এই তরবারি যদি ধর্মহীন ও আল্লাহর শত্রুর হাতে চলে যায়, তা হলে মানবতার ধ্বংসের কারণ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য পেশাটিও আজ ঠিক অনুরূপ হয়ে গেছে।

কিছু আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্যকে মিডিয়ার মাধ্যমে এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যেন এগুলো আকাশ থেকে অবতীর্ণ ওহী যে, এই সংস্থাটির কোন কথা ভুল হতে পারে না। অথচ আমরা কখনও কি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এই সব সংস্থার হর্তা কর্তা কারা? এদের ফান্ড কারা জোগাড় দেয়? এর মূল লক্ষ্য কি? মানবতার সেবা, না অন্য কিছু?

এসকল সংস্থা অনেক ক্ষেত্রেই দাজ্জালের জন্য অনেক পথ সুগম করে দিচ্ছে। হাদিসে আছে, যদি কারও উট মরে যায়, তখন দাজ্জাল তার মৃত উটটির মতো একটি উট তৈরি করে দিবে। এই ঘটনাটিকে সে এক গ্রাম্য ব্যক্তিকে দেখাবে। এটি জাদুর মাধ্যমেও হতে পারে, আবার জেনেটিক ক্লোনিং এর মাধ্যমেও হতে পারে।

যদিও হাদিসে একথার উল্লেখ আছে যে, দাজ্জালের আদেশে শয়তান গ্রাম্য লোকটির পিতামাতার আকৃতিতে এসে হাজির হবে, তথাপি এ বক্তব্যের কারণে জেনেটিক ক্লোনিং পদ্ধতির প্রয়োগকেও প্রত্যাখ্যান করা যায় না। কারণ, কুরআন ও হাদিসে ‘শয়তান’ শব্দটি মানুষের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক বলেছেনঃ

“অনুরূপভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু স্থির করেছি – মানুষ শয়তান ও জীন শয়তান”। (সূরা আন’আম, আয়াত ১১২)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হে আবুজর, তুমি মানুষ ও জীন শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছ কি? উত্তরে আবুজর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, শয়তান কি মানুষের মধ্য থেকেও হয়ে থাকে? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, মানুষ শয়তানের অনিষ্টতা জীন শয়তানের চেয়ে বেশি হয়।

পশুর ক্লোনিং এ সফলতা পাওয়ার পরে, পাশ্চাত্যের গবেষণাগারগুলোতে মানব ক্লোনিং বিষয়ে নানা রকম গবেষণা চলছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক গবেষণাটি হল এমন একটি মানুষ তৈরি করা, যেটি শক্তিতে অপরাজেয় এবং মেধায় অদ্বিতীয় প্রমাণিত হবে।

এই একই খাতের অপর একটি অধ্যায় হচ্ছে জীবাণু অস্ত্র বা রাসায়নিক অস্ত্র। ইহুদীরা ইতিমধ্যে প্যালেস্টাইনের গাজাতে এর ব্যবহার করেছে।

অথচ দাজ্জালের সাথে এই ইহুদীদের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

“সত্তর হাজার ইহুদি দাজ্জালের পিছনে থাকবে, যাদের গাঁয়ে তারজানি চাদর জড়ানো থাকবে (তারজানি চাদরও তায়লাসানের মতো সবুজ চাদরকে বলা হয়)। অনন্তর জুমার দিন ফজর নামাজের সময় যখন নামাজের ইকামাত হয়ে যাবে, তখন যেইমাত্র মাহদি মুসল্লিদের পানে তাকাবেন, অমনি তিনি দেখতে পাবেন, ঈসা ইবনে মারিয়ম আকাশ থেকে নেমে এসেছেন। তার পরিধানে দুটি কাপড় থাকবে। মাথার চুলগুলো এমন চমকদার হবে যে, মনে হবে তার মাথা থেকে পানির ফোঁটা ঝরছে।“

একথা শুনে আবু হুরায়রা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি তার কাছে যাই, তা হলে আমি তার সঙ্গে মু’আনাকা করব কি? উত্তরে রাসুল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

“শোনো আবু হুরায়রা, তার এই আগমন প্রথমবারের মতো হবে না। তার সঙ্গে তুমি এমন প্রভাবদীপ্ত অবস্থায় মিলিত হবে, যেমনটি মৃত্যুর ভয়ে মানুষ আতঙ্কিত হয়। তিনি মানুষকে জান্নাতের মর্যাদা ও স্তরের সুসংবাদ প্রদান করবেন। এবার আমিরুল মুমিনীন তাকে বলবে, আপনি সামনে এগিয়ে আসুন এবং লোকদেরকে নামাজ পড়ান। উত্তরে ঈসা বলবে, নামাজের ইকামত আপনার জন্য হেয়েছে। কাজেই ইমামতও আপনিই করুন। এভাবে ঈসা ইবনে মারিয়াম তার পেছনে নামাজ আদায় করবে”।

(আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ১১১০)

দাজ্জালের সহচর এই ইহুদীদের চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে হাদিসে পরিষ্কার বর্ণনা এসেছে।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“মুসলমানরা ইহুদীদের সাথে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। মুসলমানরা ইহুদীদের হত্যা করবে। এমনকি ইহুদীরা পাথর ও গাছের আড়ালে লুকাবে। তখন পাথর ও গাছ বলবে, হে আল্লাহর বান্দা, এই যে আমার পেছনে এক ইহুদি লুকিয়ে আছে; তুমি এসে ওকে হত্যা করো। তবে ‘গারকাদ’ বলবে না। কেননা, সেটি ইহুদীদের গাছ”।

(সুনানে মুসলিম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২৩৯)

ইহুদীদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহ জড় পদার্থগুলোকেও বাকশক্তি দান করবেন। তারাও ইহুদীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। ইসরাইল যখন গোলান পর্বতমালায় দখল প্রতিষ্ঠা করেছে, তখন থেকেই তারা ওখানে ‘গারকাদ’ বৃক্ষ লাগাতে শুরু করেছে। এছাড়াও তারা স্থানে স্থানে এই গাছটি রোপণ করছে। সম্ভবত এই গাছের সঙ্গে তাদের বিশেষ কোন সম্পর্ক আছে।

এই রাসায়নিক অস্ত্রের সর্বশেষ ব্যবহার করেছে সিরিয়ার বর্তমান শাসক বাশার আল আসাদ গত ২১ শে আগস্ট ২০১৩ সালে। আর সেই রাসায়নিক অস্ত্রটি সে ব্যবহার করেছে দামেস্কের আলগুতা শহরে। উল্লেখ্য রাসায়নিক অস্ত্রের প্রয়োগকারী এই ‘শাসক’ যে আরব গোত্রের এবং প্রয়োগের স্থান ‘আলগুতা’ হাদিসের বর্ণনা হিসাবে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থের বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়, রাসূল (সাঃ) এর বর্ণিত "মালহামা" (মহাযুদ্ধ), যেই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিবেন ইমাম মেহেদী (আঃ) এর আগ দিয়ে সিরিয়ার শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে "কালব্যিয়া" গোত্র হতে। তার সহচরদের মধ্যেও "কালব্যিয়া" বা "কাল্ব” গোত্রের লোক বেশি হবে। মানুষের রক্ত ঝরানো তাদের বিশেষ অভ্যাসে পরিণত হবে। যে লোকই বিরোধিতা করবে, তাকেই হত্যা করা হবে। এমনকি গর্ভস্থিত সন্তানদের পর্যন্ত হত্যা করবে। শুরুর দিকে তারা ন্যায়পরায়ণ শাসক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে, পরে যখন শক্তি ও ক্ষমতা পাকাপোক্ত হয়ে যাবে, তারা অত্যাচার-অবিচার ও অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়বে। অর্থাৎ প্রথমে তাদেরকে মুসলমানদের মাঝে মহান নেতা বা হিরো হিসাবে উপস্থাপন করা হবে, কিন্তু পরে তাদের আসল রূপ প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। যখন হারাম শরীফে ইমাম মেহেদী (আঃ) এর আগমনের খবর প্রকাশ পাবে তখন এই শাসক ইমাম মেহেদী (আঃ) এর বিরুদ্ধে একটি বাহিনী প্রেরণ করবে যা মদিনার নিকট বায়দা নামক স্থানে এসে ভূগর্ভে ধ্বসে যাবে। এরপর এই সিরিয়া ও ইরাক হতেই মুজাহিদরা এসে তাঁর নিকট বায়াত হবে। ইমাম মেহেদী যখন এই মুজাহিদদের নিয়ে সিরিয়ার দিকে যাত্রা করবেন, তখন এই শাসকের অন্য এক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করবেন এবং তাদেরকে পরাজিত করবেন। এই যুদ্ধটি “কাল্ব যুদ্ধ” নামে হাদিসে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হযরত মেহেদী (আঃ) তারবিয়া হ্রদের কাছে এই শাসককে হত্যা করবেন।

১৯৬৬ সালে ক্ষমতায় আসা এই আল আসাদ পরিবারও "কালব্যিয়া" বা "কাল্ব" গোত্রের। তারা শিয়াদের যে শাখার অনুসারী অর্থাৎ “নুসাইরিয়া”/ “আলাভি”/ “আলাওয়াতি” রাও “কালব্যিয়া" বা "কাল্ব" গোত্রের। এই আসাদদের অনুগত ও অনুসারী প্রশাসনিক ও সামরিক বাহিনীর বেশির ভাগই ‘নুসাইরিয়া’/ ‘আলাভি’ তথা "কালব্যিয়া" বা “কাল্ব" গোত্রের। ইসরাইল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠের কারণে বেশির ভাগ মুসলিমরা এদেরকে হিরো মনে করে। আজ ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে তাদের আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে। আজ তারা “আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআ” দের সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত।

রাসায়নিক অস্ত্রের স্বীকার সিরিয়ার দামেস্কের “আল গুতা" নামক স্থানটি রাসূল (সাঃ) এর বর্ণিত "মালহামা" (মহাযুদ্ধে) একটি বড় ভূমিকা রাখবে, যেই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিবেন ইমাম মেহেদী (আঃ)। হযরত আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“মহাযুদ্ধের সময় মুসলমানদের তাঁবু (ফিল্ড হেডকোয়ার্টার) হবে শামের সর্বোন্নত নগরী দামেস্কের সন্নিকটস্থ আলগুতা নামক স্থানে”।

(সুনানে আবি দাউদ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১১; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৩২; আল মুগনী, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৬৯)

আলগুতা সিরিয়ায় রাজধানী দামেস্ক থেকে পূর্ব দিকে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি অঞ্চল। এখানকার মওসুম সাধারণ উষ্ণ থাকে। তাপমাত্রা জুলাইয়ে সর্বনিম্ন ১৬.৫ এবং সর্বোচ্চ ৪০.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। জানুয়ারীতে থাকে সর্বনিম্ন ৯.৩ ডিগ্রী আর সর্বোচ্চ ১৬.৫ ডিগ্রী।

মহাযুদ্ধের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দামেস্কের সন্নিকটস্থ আলগুতা নামক স্থানে ইমাম মাহদী (আঃ) এর হাতে থাকবে। যাহোক, এসব বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ইহুদীদের চিন্তা চেতনায় তাদেরই অর্থায়নে মুসলিম দেশগুলোতে স্বাস্থ্যখাতের অধীনে আরেকটি যে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে তা হল ‘পরিবার পরিকল্পনা’। এর দ্বারা যত না পরিবার পরিকল্পনা হচ্ছে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে এই উপকরণগুলো ব্যবহার করে ব্যভিচার ও অশ্লীলতার প্রসারে।

গোটা দুনিয়াতে মোট ইহুদীদের সংখ্যা অত্যন্ত কম। মূর্তিপূজারী ও খ্রিস্টানদেরকে তাদেরই সতীর্থ এই ইহুদীরা এই পরিবার পরিকল্পনার উপকরণের মাধ্যমে তাদের বংশধারাকে ধ্বংস করিয়েছে। আজ পাশ্চাত্যে মৃত্যুর হারের তুলনায় জন্মের হার কম। তারপর এই পন্থাটি এখন দারিদ্রের ধোঁয়া তুলে মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োগ করেছে এবং হাজার হাজার ডলার ব্যয় করছে।

বর্তমানে মুসলমান ডাক্তারদের কর্তব্য হলো, আপনারা জাতিকে সেই সকল অপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করুন, আন্তর্জাতিক কুফরি শক্তির ষড়যন্ত্রের ফলে জাতি যার শিকার। যদিও বর্তমানে সময়টি এমন যে, সত্য বললে আগুন আর মিথ্যার সামনে মাথা নত করলে ডলারের বৃষ্টি বর্ষিত হয়, তথাপি কারও যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের উপর পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস থাকে যে, দাজ্জালের সামনে যেটি আগুন হিসাবে পরিদৃশ্য হবে, সেটিই মূলত শীতল পানি হবে, তা হলে মুসলমান ডাক্তারদের সে পথটিই অবলম্বন করা দরকার, যেটি তাদের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হবে। আমাদেরকে সব সময়ের জন্য স্মরণ রাখতে হবে, সত্য বলার অপরাধে যে আগুন বর্ষিত হয়, এগুলোই আসলে ফুলবাগান। আর মিথ্যার কাছে মাথানত করার কারণে যে ডলারের বৃষ্টি বর্ষিত হয়, এগুলোই মূলত আগুন।

‘বিশ্বভ্রাতৃত্ব’, ‘বিশ্বনিরাপত্তা’ ও ‘জাতিগত বন্ধুত্ব’ – শব্দের আড়ালে দাজ্জালি ষড়যন্ত্র

‘বিশ্বভ্রাতৃত্ব’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য ইহুদী ভ্রাতৃত্ব কিংবা তাদের সহযোগী-সমর্থক। ইহুদী বিরোধী কোন জাতি-গোষ্ঠী বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের আওতাভুক্ত নয়। বরং তারা মানবীয় ভ্রাতৃত্বের বহির্ভূত, যারা কিনা মানবতার জন্য হুমকি। ভিন্ন শব্দে ‘আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষ’। তাই যখন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, “অমুক ভূখণ্ডের বর্তমানের পরিস্থিতিতে বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব উদ্বিগ্ন”, তখন একথার দ্বারা উদ্দেশ্য হয়, এসব অঞ্চলে ইহুদী স্বার্থ হুমকির সম্মুখীন, সে জন্য ইহুদী ভ্রাতৃত্ব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

‘বিশ্ব নিরাপত্তা’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য এমন একটি জগত, যেখানে ইহুদীদের পরিকল্পনার বিস্তৃততর ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা ও হাইকেলে সুলাইমানির নির্মাণে কোন শক্তি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। এই নিরাপত্তা অর্জনেরই লক্ষ্যে খোরাসানকে (বর্তমান আফগানিস্তান) রক্তের সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নিরাপত্তার সন্ধানেই ইরাকের নিস্পাপ শিশুদের জীবনগুলোকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই সেই শান্তি মিশন, যার গতি এখন ভারতীয় উপমহাদেশের দিকে মোড় নিয়েছে এবং এখানকার মুসলিম ভূখণ্ডগুলোকে বাধ্য করছে, যেন তারা নিজেদেরকে মূর্তিপূজারীদের সম্মুখে নত করে দিয়ে তাদের আত্মমর্যাদা ও ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত মূর্তিপূজারীদের উপর ছেড়ে দেয়।

একটি প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে যে, শুধু মুসলিম ভূখণ্ডগুলোকেই নিরস্ত্র করা হচ্ছে কেন? অথচ ইহুদি/খ্রিস্টান/মূর্তিপূজারী ভূখণ্ডগুলোকে সবদিক থেকে অস্ত্রসজ্জিত করা হচ্ছে? উত্তর হল, ইহুদি/খ্রিস্টান/মূর্তিপূজারী ভূখণ্ডগুলো অস্ত্রসজ্জিত হওয়া ‘বিশ্ব নিরাপত্তা’ এর জন্য জরুরী আর মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর অস্ত্রসমৃদ্ধ থাকা ‘বিশ্বশান্তি’ এর জন্য হুমকি।

এছাড়াও আরও বহু পরিভাষা আছে, যেগুলো ইহুদীরা বিশেষ অর্থে ব্যবহার করে থাকে। যেমন- ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার, বিশ্বশান্তি, সন্ত্রাসবাদ, সুবিচার, সমঅধিকার, লিঙ্গবৈষম্য, নারী স্বাধীনতা ইত্যাদি। এসব পরিভাষার মর্ম বুঝতে আমাদেরকে ইহুদীদের পরিকল্পনাসমূহ জানতে হবে। অন্যথায়, কিয়ামত পর্যন্ত আমরা শান্তি, নিরাপত্তা ও জাতীয় পরিভাষাসমূহের কান্না কাঁদতেই থাকব।

যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ইহুদী পরিভাষাগুলো না বুঝব, ততক্ষন পর্যন্ত আমাদের বুঝে আসবে না যে, ইহুদী মদদপুষ্ট পশ্চিমা শক্তিগুলো তাদের কাছে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের স্তুপ তৈরি করে চলেছে আর মুসলিম শক্তিগুলোর হাত থেকে সবকিছু ছিনিয়ে নিচ্ছে। পূর্ব তিমুরকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম অধ্যুষিত ভূখণ্ড ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা করে খৃষ্টানপ্রধান স্বাধীন ভূখণ্ডে পরিণত করা হচ্ছে আর ফিলিস্তিন কাশ্মীর আরাকানের ক্ষেত্রে ইহুদী আর মূর্তিপূজারীদের মদদ দিচ্ছে। একজন ইহুদীর মৃত্যুতে সমগ্র বিশ্ব মিডিয়া চিৎকার করে উঠছে আর মুসলিম উম্মাহর রক্ত দ্বারা নদী সাগরকে লাল করা হলেও কারও মানবাধিকারের কথা মনে পড়ে না।

‘জাতিগত বন্ধুত্ব’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী অমুসলিম রাষ্ট্রের উপর পূর্ণ আস্থা আনিয়ে ভৌগলিক নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করে তোলা। সুতরাং এখন আর তোমার আধুনিক অস্ত্রের কোন দরকার নেই। কাজেই এখন থেকে তুমি তোমার অর্থনীতিতে উন্নতি সাধনের প্রতি মনোনিবেশ করো এবং রাষ্ট্রকে অস্ত্রমুক্ত করে সেনাবাহিনীকে ‘পুতুল’ বানিয়ে রাখো। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে জাতিগত প্রেম-বন্ধুত্ব আর সাংস্কৃতিক বিনিময়ের রাগ প্রচারের উদ্দেশ্য এছাড়া আর কিছুই নয় যে, আমাদের মুসলিম যুবকদেরকে এই সকল অমুসলিমদের চুলের বেণীর বন্দি বানিয়ে দেওয়া।

কোন কোন মুসলিম ভূখণ্ডের তথাকথিত সুশীল সমাজ বলছে, আরব দেশগুলো যখন ইসরাইলকে মেনে নিয়েছে, তখন আমরা কেন ফিলিস্তিনের ব্যাথায় কাতর হব যে, তাদেরকে আমাদের শত্রু বানিয়ে রাখব? এরা দেশের সেই মুনাফিক শ্রেণী, যারা প্রতি যুগে নিজ ভূখণ্ড আর ধর্মের কপালে লাঞ্ছনার তিলক এঁটে দিয়েছে, ডলারের বাজারে নিজেদের মান সম্ভ্রম, আত্মমর্যাদা ও বিবেক বুদ্ধি নিলাম করেছে।

এই স্পর্শকাতর পরিস্থিতিকে সামনে রেখে ভূখণ্ড ও ধর্মের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষাকে দৃঢ় করার কাজে আরও আন্তরিক ও সচেতন হওয়া দরকার এবং বন্ধু নির্ণয়ের কাজটি নিজ ভূখণ্ড ও ধর্মের স্বার্থকে সামনে রেখে করা দরকার – অন্য কারও স্বার্থকে সামনে রেখে নয়। কারণ, বীরোচিত ইতিহাসের ধারক ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন এই মুসলিম জাতি সব সময় আপন রব এবং নিজ তরবারিধারী বাহুর উপরই ভরসা রাখে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×