হ্যা আমি মধ্যবিত্ত আমার প্রেম করার যোগ্যতা নেই।
আমারও ইচ্ছে হয় প্রেম করার। কারও সাথে মনের কথা শেয়ার করার। যখন লেকের পাশ দিয়ে যাই দেখি অনেক কপোত-কপোতী হাত ধরাধরি করে বসে আছে। আমারও ইচ্ছা হয় আমিও এমন কারও হাত ধরে বসে গল্প করি, বাদাম খাই।
কিন্তু যখন মনে করি সেইদিন গুলির কথা......
যখন আমার মা নিজের জন্যে ঈদে শাড়ি না নিয়ে আমার জন্যে শার্ট কিনে দিয়েছিলেন। যেন আমি মনের আনন্দে ঈদ পালন করতে পারি।
বাবা নিজের পুরনো ছেঁড়া পাঞ্জাবী ধুয়ে ইস্ত্রি করে পরে ঈদের নামাজ পড়তে যেতেন। তার নিজের নতুন পাঞ্জাবী কেনার সামর্থ্য ছিলনা। কারন আমি ঈদের দিন সেমাই খেতে চেয়েছিলাম। তার কাছে ২ টা পথ খোলা ছিল। হয় তাকে তার পাঞ্জাবী কিনতে হবে নয়তো তিনি আমার জন্যে সেমাই কিনবেন। তিনি আমার ইচ্ছা পুরনের জন্য তার পাঞ্জাবী না কিনে আমার জন্য সেমাই কিনেছিলেন।
এটা তো গেল সেই অনেক আগের কথা। এখন আমি কিশোর। মাঝে বেশ কয়েক বছর চলে গেছে। কিন্তু আমাদের অবস্থা এখনও পরিবর্তন হয়নি। আমরা এখনও মধ্যবিত্তই রয়েগেছি। এখনও বাবা মা আমার জন্যে অনেক কিছু করে চলেছেন। আমার হাতে ১০০ টাকা তুলে দেয়ার জন্য তিনি অফিস থেকে বাসায় রিকশায় না এসে বাসে করে আসেন। কখনও কখনও হেটেও বাড়ি ফিরেন।
আর মায়ের কথা নাই বা বললাম। তিনি প্রতিদিন বাজারের টাকা থেকে ১ টাকা ২ টাকা বাচিয়ে আমার হাতে তুলে দিয়ে বলেন, বাবু এই টাকাটা রাখ। তোর যা ভাল লাগে কিছু খেয়ে নিস। আমার তখন চোখ দিয়ে শুধু পানি বের হয়। কিছু বলতে পারিনা।
সব সময় ভাবি তারা আমার জন্যে এত কিছু করছেন। আমি কি তাদের জন্য .০০০১ পারসেন্টও করতে পারব?
তাই আমি সব সময় আমার কাজ নিয়ে থাকি। আমি যেন জীবনে সফল হয়ে আমার বাবা-মার দায়িত্ব নিতে পারি। ছোট বেলায় তারা যেমন আমার সব চাহিদা পূরণ করেছেন তাদের ইচ্ছা গুলিকে বিসর্জন দিয়ে।
তাইতো প্রেম করতে ভয় হয়।
যদি প্রেম করতে গিয়ে আমি আমার লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাই।
হ্যা আমি মধ্যবিত্ত আমার প্রেম করার যোগ্যতা নেই।
বিশেষ দৃষ্টব্যঃ এই লেখাটা সেই সব ছেলেদের জন্য যাদের প্রেমের পথে ২-১ পা এগিয়ে পিছিয়ে আসতে হয়। লেখাটি তাদেরকে প্রেমে নিরুৎসাহিত করার জন্য নয় কিন্তু নিঃসন্দেহে জীবন পথে উৎসাহিত করার জন্য।