somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরিচিতা(২য় পর্ব)

০১ লা মার্চ, ২০১০ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Click This Link (আগের পর্ব)

***
চট্টগ্রামে বিআরটিসি স্ট্যাণ্ডে বাস থামে।বাস চেঞ্জ করতে হবে,তাই আমরা বাস থেকে নেমে পড়ি।খেয়াল করিনি মেয়েটি কই গেল।কে যেন বলল কিছুটা সময় লাগবে।সেজন্য ঠিক করলাম ব্রেকফাস্ট করে ফেলি।সবাই মিলে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম।সকাল সকাল তেমন কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।ভাজি আর পরোটা খেলাম।সাথে চা।ততক্ষণে কেউ কছু বলল না মেয়েটিকে নিয়ে।যাক বাবা ভুলে গেছে সবাই,বাচলাম।
খেয়েদেয়ে আমরা ফিরলাম বাস কাউন্টারে।আমাদের জন্য বাস রেডি করা আছে।অনেকে নেমে গেছে এখানে।যাত্রী কম তাই একটু ছোট বাস দেয়া হয়েছে,তবে আগের টার চেয়ে বেশ জাকজমকপূর্ণ।এখানে আর সিট নিয়ে ঝামেলা হবে না।যে যার মত বসতে পারব।আমি এবার ঠক করলাম পিছনে গিয়ে বসব।গিয়ে বসলামও তাই।একা একা যাব।
হঠাত মেয়েটার কথা মনে পড়ল।এক সাথে আসলাম পুরোটা পথ।মেয়েটা নেমে গেল।আহ,বেশ সুন্দর ছিল মেয়েটা।মনে হয় মেয়েটার বাড়ি চট্টগ্রামে।
আমি বসে আছি।বাস ছাড়ার টাইম পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ছাড়ছে না।আমি সুপারভাইজারকে ডেকে বললাম, “কেন বাস ছাড়তে দেরী হচ্ছে”?
সে বলল যে এক জন এখনো বাকি।
“ও আচ্ছা”।
আমি ঝিমাতে শুরু করছি,এমন সময় দেখি বাসের দরজা দিয়ে কেউ উঠছে।যাক বাস ছাড়বে এখন তাহলে।
আরে সেই মেয়েটি যে!আমি হঠাত চমকে উঠি। তার মানে মেয়েটি আমাদের সাথেই যাচ্ছে।“ওয়াও”,মনে মনে বলে উঠি।মেয়েটি পিছনের দিকে আসছে।আমি কল্পনা করি,সে আমার পাশেই বসবে।
আমাকে অবাক করে দিয়ে সে আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে, “আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি”।
আমি বাধ্যগতের মত মাথা ঝাকিয়ে সম্মতি দেই।আমার পাশে বসে।এইবার আমি জানালার পাশে আর ও ভেতরের দিকে।আমরা দুজনেই নিজের মাঝে কিছুটা দূরত্ম বজাই রাখি।
বাস যাচ্ছে।ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে।কী এক অপরূপ সময়।চিকন রাস্তা দিয়ে খুব দ্রুত বাস যাচ্ছে।আকা বাকা পথ।শা শা শব্দ করে ছুটছে আমাদের ছোট্ট বাসটা।আমি বাইরে দেখতে থাকি।
রাস্তার পাশেই সারি সারি গাছ।ভোরের আলো পেয়ে পাখিরা বের হতে শুরু করছে।কতদিন সকালে ঘুম থেকে উঠি না,পাখি দেখিনা,পাখির কলকাকলী শুনি না।বেশ ভাল লাগতে থাকে আমার।
মাসুদ ক্যামেরা বের করে ছবি তুলতে থাকে।এক এক করে সে সবার ছবি তোলে।আমার ছবি তোলার সময় মেয়েটা সরে যায় আমার পাশ থেকে।সে ছবি তুলবে না।
আমি তো আর জোর করতে পারিনা।মাসুদ শুধু আমার ছবি তোলে।তারপর সে জানালা খুলে বাইরের গাছপালা,রাস্তা,পাখপাখালির ছবি তুলতে থাকে।
মেয়েটা আমার পাশে আবার বসে।
দুজনেই চুপচাপ।আমি কথা বলতে চাই তার সাথে,কিন্তু কোন টপিক পাচ্ছি না।
কিছুক্ষন পর জিজ্ঞেস করি সাহস করে, “আচ্ছা কই যাবেন আপনি?”
“জি, আমাকে কিছু বললেন?”
“হুম।বলেছি যে আপনি কই যাবেন?”
“বাস যতদূর যায় ততদূর যাব”।
“বাসতো যাবে কক্সবাজার”।
“তাহলে কক্সবাজারই যাব”।
“ঘুরতে যাচ্ছেন?”
“না,ভাত খেতে যাচ্ছি”।বলেই হেসে ফেলে।
কিছুক্ষণ থেমে বলে,“কক্সবাজার সবাইতো ওই একটা কাজেই আসে নাকি।আমিও ঘুরতে আসছি।“
“একা?”
“কেন আর কাউকে দেখছেন নাকি আমার সাথে?”
“না, তা দেখিনি”।
“তাহলে আমি একাই যাচ্ছি”।
“ও”।
না,মেয়েটা খুব কাঠখোট্টা টাইপের।আমি ভাবি।
বাস তখন দুলাহাজরা সাফারি পার্কের সামনে।আমি তাকে ডেকে বলি দেখতে।রাস্তা থেকে অবশ্য দেখা যায় না।সে ট্রাই করে দেখার, দেখতে পারে না।
আমাকে জিজ্ঞেস করে, “আপনি কি আগে দেখেছেন সাফারী পার্ক?”
“হ্যা,দেখেছি”।
“কবে আসছিলেন?”
“ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে,কলেজ থেকে সাত দিনের ট্যুরে আনছিল আমাদের।তখন এই এলাকার সবকিছু দেখাইছে আমাদের।প্রাই চার বছর আগের কথা।তারপর আর আসা হয়নি”।
“ও আচ্ছা।তার মানে আপনি…..”সে আঙ্গুলে কি যেন হিসেব করে।“আপনি আমার চেয়ে বড়।কারন আমি এইবার ইন্টার দিয়েছি”।
“তাই নাকি!ভাল কথা।তো তোমাদের তো এখন ভর্তি পরীক্ষা চলার কথা আমার যতদূর ধারনা”।
“হুম,ঠিকই বলেছেন।আমার ভর্তি পরীক্ষা শেষ”।
“ও তাই ঘুরতে বের হয়েছ?তা একা কেন?একটা মেয়ে একা আসা কি ঠিক বল?”
“সে এক বিশাল কাহিনী”।
“কি কাহিনী বলা যাবে?”
“বুঝতে পারছি না বলব কি বলব না”।
“প্রবলেম থাকলে বলার দরকার নাই”।
“না,ঠিক প্রবলেম না।তবে ….তবে কিছু না।বলতে কোন সমস্যা নাই”।
একটু থমে আবার শুরু কর, “আমার ছোট বেলা থেকেই টার্গেট বুয়েটে পড়ব।আর বাবা মার ইচ্ছা তাদের মেয়ে ডাক্তার হোক”।
“তো আমার বাবা আমাকে ঢাকায় নিয়ে এসে একটা মেডিক্যাল ভর্তি কোচিংয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়ে যায়।আমি সেখানে ক্লাস করিনি।আমি বুয়েট অ্যাডমিশন কোচিং করি।তারা কেউ জানত না।বলিনি।জানলে আমাকে ঢাকা থেকে নিয়ে যেত”।
“এভাবে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত চলে।পরীক্ষার দিন তাদের বলি যা আমি ভর্তি ফর্মই তুলি নি।তারা খুব হতাশ হয়ে যায়।খুব রেগে যায়,ক্ষেপে যায় আমার উপর।তারপরেও কিছু করার নাই দেখে থেমে থাকে”।
“আমি খুব ভয় পেয়ে যাই।যদি বুয়েট চান্স না পাই তাহলে”!
“আমার ভয় দিন দিন বাড়তে থাকে।বুয়েট পরীক্ষা যতই এগোতে থাকে আমার ভয় ততই বাড়তে থাকে।ভয়ে আমি কছু খেতে পারতাম না।আমার জ্বর আসে পরীক্ষার আগের দিনে।পরীক্ষা ভাল হয় না।তারপরেরটা বুঝতে মনে হয় আর কষ্ট হচ্ছে না আপনার?”বলে সে আমার দিকে তাকায়।
আমি দেখি মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে।কাদো কাদো চোখ।আমি মাথা ঝাকাই।কিছু বলি না।
“তারপর ঢাক ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা দিলাম।বুয়েট হল না,এটা না হলে আর পড়বই না ঠিক করেছিলাম।হল এখানে।পজিশন ভালই হয়েছে”।
“কিন্তু বাবা মার কাছে কী জবাব দেব।জানেন তারা না খুব কষ্ট পেয়েছে।বাবা মাকে খুব বকা দিয়েছে এই জন্য নাকি যে আমি তার লাই পেয়ে পেয়ে এরকম করার সাহস পেয়েছি”।
“মা কাল সকালে ফোন করে খুব কান্না কাটি করল।আমার এত খারাপ লাগলো।বুঝতে পারছিলাম না কী করব”।
“জানেন একবার না ভাবছিলাম সুইসাইড করব।পরে হেসে ফেলি,এত সুন্দর একটা জীবন নষ্ট হয়ে যাবে বলে।পরে আবার ভাবলাম না।বাড়ি ফিরে যাব,পড়ব না আর।তাও সায় দিল না আমার মন”।
“সবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম,ঢাবিতেই পড়ব।ভাল কিছু করে দেখাব যে সব জায়গা থেকেই ভাল কিছু করা যায়”।
“কিন্তু মনটা খুব খারাপ ছিল।বিকেল বেলাতেই ঠিক্ করলাম কোথাও থেকে ঘুরে আসি।যা ভাবা তাই কাজ।বের হলাম সন্ধ্যে বেলা।তার পর এই যে দেখতে পাচ্ছেন এখানে”।শেষ করে মেয়েটা।
আমি খেয়াল করি মেয়েটা চোখ মুছতেছে।কাদছে।
আমার খারাপ লাগে তার জন্য।কেন খারাপ লাগে বুঝতে পারি না।
আমি জিজ্ঞেস করি, “নাম কি তোমার?”
“পুনম”।
আমি মনে মনে ভাবি খুব সুন্দর নাম।তবে আমার এক ফ্রেণ্ড আছে,যার নাম পুনম।ও হিন্দু।তার মানে এও হিন্দু হতে পারে।
***
বাস কক্সবাজার স্ট্যাণ্ডে পৌছালো।আমরা নমলাম না।আমরা নামব কলাতলীতে।নামটা আমার আগে থেকেই জানা ছিল।
মিনিট পাচেক পরে সেখানে বাস এসে থামল।আমরা নামলাম একে একে।সবাই ঠিকমত দেখে নিলাম যারযার জিনিসপত্র ঠিক আছে কিনা।তারপর সবাই জড়হলাম একজায়গায়।আগে হোটেলে রুম ঠিক করতে হবে।আশেপাশে তাকাতে থাকি সবাই।কোনটাতে থাকব তা ভাবতে থাকি।
কবির প্রস্তাব করল সমুদ্রের কাছাকছি কোনটাতে রুম নিতে।রেজা বলল, “ভাড়া বেশি”।এটাও আসলে ঠিক।বেশি টাকায় থাকা যাবে না।তাহলে আর ঘোরা হবে না,খাওয়া হবে না-খালি থাকাই হবে।
তারপর সবাই মিলে মোটামুটি একটা হোটেলে উঠলাম।বাইর থেকে সেরকম মনে না হলেও ভেতরটা বেশ বলতে হয়।ছাদে গেলে নাকি সমুদ্র দেখা যায়।তাহলে তো হয়েই গেল।
আমরা সবাই মিলে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।একটু পর বের হব।
বসে বসে টিভি দেখছি।মিলু কনুই দিয়ে পিঠে একটা ঠেলা দিল।বলল, “তোর পাখি কোন হোটেলে উঠল রে?”
আমার এতক্ষণ মনেই পড়েনি তার কথা।মানে পুনমের কথা।
আমি তাড়াতাড়ি করে বের হয়ে পড়লাম কোন উত্তর না দিয়ে।বেচারি একা একা আসছে।কোন হোটেলে উঠেছে কে জানে।অথবা আদৌ পেয়েছে কিনা।
আমারই ভুল হয়ে গেছে।তাকে একটা ভাল হোটেলে তুলে দেয়া উচিত ছিল।কই পাব এখন তাকে।আমি রাস্তায় আসি।
দেখি মেয়েটি একা একা বসে আছে রাস্তার পাশের একটা কাঠের বেঞ্চে।খুব অসহায় লাগছে তাকে দেখে।আমি তার সামনে গিয়ে দাড়াই।আমাকে সে খেয়ালই করে না।চুপচাপ বসে আছে।আশেপাশে আর কিছু নাই,মানে ব্যাগ-ট্যাগ কিছু নাই।তাহলে কি সে কিছু আনেনি?
আমি ডাক দেই, “পুনম”।
আমার ডাক শুনে সে আমার দিকে তাকায়।“ও আপনি”।
“হুম আমি।কই উঠেছ?”আমি জিজ্ঞেস করি।
“আমি কোথাও উঠিনি।জানিওনা কই থাকব”।
“মানে?”
“মানে হল আমি থাকব কই জানিনা।আমি আজ সারাদিন সমুদ্র দেখব,সমুদ্রের পাশে বসে থাকব।তারপর রাতের বাসে ফিরে যাব ঢাকা।তাই থাকা নিয়ে তেমন কিছু ভাবছি না”।
“ও আচ্ছা”।আমি চলে আসতে থাকি।হঠাত মনে হল আমার ফোন নাম্বার দিয়ে আসি।আমি আবার তার কাছে আসি।
“কিছু বলবেন আপনি?”
“না মানে…তুমি আমার কন্টাক্ট নাম্বার টা রাখ।যদি কোন দরকার হয় আমাকে কল দিও”।
“কিন্তু আমি তো আমার ফোন নিয়ে আসিনি”।
“ফোন নিয়ে আসনি কেন?”
“ইচ্ছে করে আনিনি।আনতে ইচ্ছে করল না তাই আনিনি”।
“তোমার মা-বাবা টেনসন করবে না?”
“করলে করবে”।রাগ ঝাড়ে সে।
“না কাজটা তুমি ঠিক করনি।তাদেরকে এখন তোমার জানানো উচিত যে তুমি কোথায় আছ”।বলেই আমি আমার সেট তার দিকে এগিয়ে দেই।
সে ছট করে আমার হাত থেকে সেট নিয়ে কয়েকটা নাম্বার চাপল।কিছুক্ষণ পর কথা বলতে শুরু করল।আমি বুঝতে পারলাম তার মায়ের সাথে কথা হচ্ছে।আমি দূরে সরে আসলাম।
যখন বুঝলাম কথা শেষ তখন ফিরে এসে দেখি সে কাদছে।“মাকে মিথ্যা বলেছি।বলেছি যে আমরা বান্ধবিরা মিলে ঘুরতে আসছি”।
“এই কাজটাও তুমি ঠিক করলা না কিন্তু।সত্য বলা উচিত ছিল”।
“তাহলে যে মা বকা দিত”।
“দিলে দিত।আচ্ছা তুমি কি বলছ যে কবে ফিরে যাবা?”
“না, তা বলিনি”।
“তাহলে এক কাজ কর দুই একদিন এখানে থেকে যাও।ভাল লাগবে দেখ”।
“কিন্তু থাকব কই?আমি তো টাকা পয়সা তেমন আনিনি।আর কাপড় চোপড় ও আনিনি এক দিন থাকব বলে”।
আমি আর কিছু বলিনা।বলি, “তাহলে চলে যাও আজ রাতেই”।
তারপর “ভাল থাক” বলে ফিরে আসি।আসার সময় একবার মনে হল আমাদের সাথে তো একটা মেয়ে আছেই,দেখি তার সাথে মেয়েটার কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা।কিন্তু কেউ রাজি হবে কিনা কে জানে এই অপরিচিত মেয়ে সাথে নিতে।
আমি রুমে আসি।এসে দেখি সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে রেডি হয়ে।বাইরে গিয়েছিলাম বলে একটা বিশাল ঝাড়ি খেলাম।এই মুহুর্তে মেয়েটার কথা তুলব কিনা ভাবছি।না ভেবে লাভ নাই।কেউ রাজি হবে না আমি সিওর।তারপরেও দেখি একবার চেষ্টা করে।
আমি সবাইকে বললাম সবকিছু।প্রথম ঝাড়িটা দিল ইমরান। “ফাজলামি পাইছিস!কোত্থেকে এক মাইয়া পাইছোস আর আমাগো লগে নিতে চাইতাছোস।যা ভাগ”।
তারপর মাসুদ।“তোর ইচ্ছা হলে তুই ওই মেয়ের সাথে থাক আমাদের কোন প্রবলেম নাই,বুঝলি?”এভাবে সবাই বানালো আমাকে সেইমত।
সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় সুমন বলল, “দেখ মেয়েটা তোকে বোকা বানাইছে।ভুয়া পরিচয় দিয়ে ,সুন্দর কাহিণী বলে তোরে ভুলাইছে।তুই তারে নিয়ে আয় দেখবি সবকিছু নিয়ে পালাইছে।”
আমার তখন নিজেরে খুব গাধা মনে হল।আসলেই তো এই কথাটা আমার মাথায় আসেনি।আমি কি না বুঝে আমাদের সর্বনাশ করতে যাচ্ছিলাম।না না,এই মেয়েকে সাথে রেখে আমাদের ট্যুরটা মাটি করতে চাই না।
আমরা সবাই মিলে বীচে গেলাম।সবাই মিলে দে ভো দৌড়।সবাই চীতকার চেচামেচি করছি।ভিজছি ইচ্ছে মত।দুইটা ক্যামেরা।এক এক করে সবার ছবি তোলা হচ্ছে।এক জন গিয়ে বাকি সবার ছবি তুলছে।
লিয়া বলল, “সবার একটা গ্রুপ ছবি তুলে ভাল হত না?”
সবাই “হ্যা” বলে উঠি।
আশেপাশে কেউ আছে কিনা খুজতে থাকি সবাই।কাছেই সারি সারি ছাতা আর চৌকি দেখা যাচ্ছে।কবিরকে পাঠানো হয় একজনকে ডেকে আনার জন্য।
কবির ফিরে আসল যাকে নিয়ে তা আর নাই বললাম।বুঝতেই পারছেন নিশ্চই।পুনমকে এনেছে।
সবাই আমার দিকে তাকাতে লাগল।পুনমকে ক্যামেরা দিয়ে আসল আমাদের ক্যামেরাম্যান ছবিপাগল মাসুদ।সে আমাদের ছবি তুলে চলে যেতে লাগল।আমার খুব খারাপ লাগল তার অসহায়ত্ম দেখে।
আমি পিছন পিছন দৌড়ে যাই।ডাক দেই।সে থামে।আমি হাপিয়ে উঠেছি।বালুতে বসে পড়ি।সেও আমার দেখাদেখি বসে পড়ে।“আচ্ছা তোমার ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার রোল কত?”
সে আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন আমি তাকে খুব কঠিন কোন প্রশ্ন করেছি।“ও বুঝেছি।আপনি আসলে বিশ্বাস করননি আমার কথা তাই যাচাই করে দেখছেন”।
আমি খুব লজ্জা পেয়ে যাই।ছি,মেয়েটা কী ভাবল!
“আসলে ঠিক তা না।আমি আসলে তোমার পজিশন জেনে বলে দিতাম তুমি কোন সাবজেক্ট পাবা”।
“থাক্ আর কথা ঘুরাতে হবে না।আমি বুঝছি তো”।বলেই সে নিচু হয়ে বালুতে কি যেন লিখল।যাবার সময় বলে গেল,”আমার রোল”।
আমি চোরের মত মোবাইল ফোনে তা সেভ করে নিলাম মুছে যাবার আগেই।
নিজেকে খুব ছোট মনে হতে লাগল।বিশেষ করে বিশাল সমুদ্রের কাছে।
আমি ফিরে গেলাম সবার মাঝে।আমি ইউনিএইড কোচিং এর মনির ভাইকে ফোন দিলাম।রোল নাম্বারটা বললাম।দেখার জন্য সত্য কিনা।
কিছুক্ষণ পর মনির ভাইয়ের ম্যাসেজ পেলাম।সত্য।পুনম অধিকারী।পজিশনটা বললাম না।৪৫০ থেকে ৫০০ এর মাঝে ছিল।
আমি ফিরে তাকাই পিছনে।না কোথাও তাকে দেখা যাচ্ছে না।জানিনা কই যে গেল!


চলবে................
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১০ সকাল ৯:৪৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×