somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১৯৪৮ সালের ইসরাইল -ফিলিস্তিন ভাগ : সমস্যার সূত্রপাত যেভাবে ???

১৭ ই মে, ২০২১ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জাতিসংঘের করা ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ভাগের মানচিত্র

ইসরাইল -ফিলিস্তিন সংঘর্ষ এখন যে পর্যায়ে গিয়ে উপনীত হয়েছে তাতে সম্ভবত আর কয়েক বছরের মধ্যেই ফিলিস্তিন নামক রাষ্ট্র এবং অঞ্চলকে ইসরাইল পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে দেবে। ফিলিস্তিনের আয়তন ছোট হতে হতে এখন এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে ফিলিস্তিন কে এখন অনেক কষ্ট করে ম্যাপ এ খুঁজে নিতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে গুগল ম্যাপ আমাদের এমনটাই জানান দিচ্ছে। সংঘাত ৭৩ বছর অতিক্রম করে ৭৪তম বার্ষিকী তে গিয়ে উপনীত হল। প্রায় শত বর্ষের কাছাকাছি এই লড়াই এ ফিলিস্তিন শুধু নির্যাতিত হয়েছে , তার আয়তন কমেছে আর ক্রমাগত মার্ খেয়েই যাচ্ছে অদ্যাবধি। তাদের প্রজন্ম এই সংঘাত দেখেই বড় হচ্ছে। কিন্তু , আমাদের জানা দরকার কেন ফিলিস্তিনিরা সংঘাতে এলো ??? কোথায় থেকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ??? এই দীর্ঘমেয়াদি সংঘর্ষের পটভূমি কি ???

১৯৪৭ সালের দিকে যুক্তরাজ্য ইসরাইল -ফিলিস্তিন সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের দ্বারস্থ হয়েছিল। তখন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসে ইহুদি ও মুসলিম প্রধান এলাকা গুলো চিহ্নিত করে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন নামে দুই রাষ্ট্রের প্রস্তাব করা হয়। এই বন্টন থেকেই মূল সমস্যার সূত্রপাত যা এখনো চলমান। কি ছিল এই বন্টন নীতিতে ??

উইকিপিডিয়ার " United Nations Partition Plan for Palestine" এর "Proposed partition" অংশে এভাবেই বন্টন প্রক্রিয়া কে সংক্ষেপে বর্ণনা করা আছে -------------
"The land allocated to the Arab State in the final plan included about 43% of Mandatory Palestine and consisted of all of the highlands, except for Jerusalem, plus one-third of the coastline. The highlands contain the major aquifers of Palestine, which supplied water to the coastal cities of central Palestine, including Tel Aviv.[citation needed] The Jewish State allocated to the Jews, who constituted a third of the population and owned about 7% of the land, was to receive 56% of Mandatory Palestine, a slightly larger area to accommodate the increasing numbers of Jews who would immigrate there"

উইকিপেডিয়া এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী , ১৯৪৫ সালের গণনা অনুযায়ী অবিভক্ত ফিলিস্তিন অঞ্চলে মোট জনসংখ্যা ছিল ১ ,৮ ৪ ৫,০০০ জন। এর মধ্যে মুসলিম তথা আরব প্রধান অঞ্চল গুলোতে মুসলমান জনসংখ্যার পরিমান ছিল ৭,২৫ , ০০০ জন , আর ইহুদি ছিল মাত্র ১০, ০০০ জন। অর্থাৎ মুসলিম প্রধান অঞ্চল গুলোতে ৯৯ % ছিল মুসলিম আর মাত্র ১ % ছিল ইহুদি। অন্য দিকে , ইহুদি প্রধান অঞ্চল গুলোতে , ইহুদি জনসংখ্যার পরিমান ছিল , ৪,৯৮ , ০০০ জন (৫ ৫ %) এবং মুসলিম জনসংখ্যার পরিমান ছিল ৪, ০ ৭ , ০০০ জন (৪৫%)। দেখা যাচ্ছে , তৎকালীন অবিভক্ত ফিলিস্তিনের ইহুদি প্রধান অঞ্চলগুলোতেও ব্যাপক পরিমানে মুসলিম অধিবাসী বাস করতো এমনকি সংখ্যার দিক থেকে তারা ছিল ইহুদিদের কাছাকাছি , আর মুসলিম প্রধান এলাকা গুলোতে ইহুদি লোকজন ছিলোনা বললেই চলে। সেই হিসেবে টোটাল ১ ,৮ ৪ ৫,০০০ জনজনসংখ্যার মধ্যে মুসলমান ছিল ১১ , ৩২ ,০০০ জন এবং ইহুদি ছিল ৫,০৮, ০০০ জন। সুতরাং মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬২ জন ছিল মুসলিম এবং শতকরা ২৭ জন ছিল ইহুদি , এবং বাকিরা ছিল আন্তর্জাতিক নাগরিক ও ব্রিটিশ সেনা ও সংশ্লিষ্ট নাগরিক ও প্রশাসক।

কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে জাতিসংঘ ফিলিস্তিন অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৬২% মুসলিম অধিবাসীকে দিলো ৪৩ শতাংশ ভূমি এবং ২৭% ইহুদি অধিবাসীদের দিলো ৫৬ শতাংশ ভূমি !!!!

এখন কথা হচ্ছে ৬ ২ % মুসলিম অধিবাসীকে মোট ভূমির ৪৩ শতাংশ এবং ২৭ % ইহুদি অধিবাসীকে মোট ভূমির ৫৬ শতাংশ প্রদান কখনো যুক্তিযুক্ত হতে পারে কিনা ??? কিসের ভিত্তিতে জাতিসংঘ এই বন্টন করলো যা কিনা একটি দীর্ঘ মেয়াদি সংঘাতের সূতিকাগার তার ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত জাতিসংঘ এড়িয়েই গেছে। কেবলমাত্র হলোকাস্টের ইহুদি নিধনযজ্ঞের একটা আবেগ কে সামনে রেখে এভাবে একটা বিশাল অধিবাসীকে তাদের নিজ আবাস এবং ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা কি কখনো ন্যায়বিচার হতে পারে ???
সমস্যার মূল কারণ এই পক্ষপাতদুষ্ট বন্টন। আর সমাধান কেবলমাত্র ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি ফেরত প্রদানের মাধ্যমেই সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২১ রাত ১০:৪৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×