সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট ইস্যুতে আমরা তুরস্ককে ইসরাইলের কট্টর বিরোধী অবস্থানে দেখছি। বিশেষ করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলকে ধুয়ে মুছে একদম গুষ্টি উদ্ধার করে ছাড়েন। কিন্তু আদতে কি তুরস্ক এতটাই ইসরাইল বিরোধী ??? তুরস্ক কি অতীতে কখনো ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরাইলের প্রতি মারমূখী ছিল কিংবা কূটনৈতিক কোনো সমাধান কিংবা শান্তি আলোচলায় ভূমিকা রেখেছিলো ???
আবার , ইসরাইলের সাথে তুরস্কের সম্পর্কটাই বা কেমন ??? চলুন তুরস্ক ইসরাইলের কতটা শত্রু আর ফিলিস্তিনের কতটা বন্ধু তার একটা খতিয়ান দেখা যাক ------
১। তুরস্ক হচ্ছে প্রথম দিকের সেই ইসলামিক দেশ যারা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তুরস্ক এবং ইসরাইল উভয় দেশে উভয়ের দূতাবাস এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ আছে।
২। তুরস্ক কিন্তু NATO জোটের কঠোর সমালোচক। কিন্তু আমরা এই তুরস্কই প্রথম ইসলামিক দেশ হিসেবে NATO জোটভুক্ত হয়েছিল।
৩। তুরস্ক হচ্ছে সেই ইসরাইল বিরোধী দেশ যাদের খোদ ইসরাইলের সাথে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমান ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি !!!!
৪। তুরস্কের সাথে ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক ও প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে।
৫। তুরস্ক ISIS এর সাথে মিলেমিশে ইরাকের তেল চুরি করে অবৈধভাবে ইসরাইলের কাছে বিক্রি করেছে (যে ব্যাবসায় এরদোগানের জামাই মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইনকাম করেছে )
৬। তুরস্কের সাথে ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের চুক্তি রয়েছে এবং এই চুক্তির অধীন দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ঘনিষ্টভাবে কাজ করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে , এতো ভালো কূটনৈতিক ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থাকার পর কি করে তুরস্ক ইসরাইলের বিপক্ষে নিজেকে ফিলিস্তিনের এতো ভালো বন্ধু হিসেবে নিজেকে জাহির করতে পারে !!! এটা কি স্রেফ মায়াকান্না নাকি এই ধরণের পলিসির পেছনে এরদোগানের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে ??? কারণ তুরস্ককে আমরা কখনোই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থানে পাইনি। বরংচ , সাইপ্রাসে নৃশংস হত্যাকান্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে তুরস্কের বিরুদ্ধে । আমাদের দেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলাকালীন সময়েও তুরস্ক এর বিরোধিতা করেছে , এমনকি যুদ্ধপরাধের বিচারে দোষী সাব্যস্তদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পর তুরস্ক আমাদের দেশ থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত প্রত্যাহার করেছিল। বর্তমান সময়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধাচরণ তুরস্কের একটা স্টান্টবাজি ছাড়া আর কিছু না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ১২:১১