somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আরিফ রুবেল
জীবন বৈচিত্রময়। জীবনের বিচিত্র সব গল্প বলতে পারাটা একটা গুন আর সবার সেই গুনটা থাকে না। গল্প বলার অদ্ভুত গুনটা অর্জনের জন্য সাধনার দরকার। যদিও সবার জীবন সাধনার অনুমতি দেয় না, তবুও সুযোগ পেলেই কেউ কেউ সাধনায় বসে যায়। আমিও সেই সব সাধকদের একজন হতে চাই।

চলমান ভারত বর্জন কি সাম্প্রদায়ীক রূপ নেবে ?

২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ও কতিপয় সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট ভারতের বিরুদ্ধে এক ধরণের যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন। এই যুদ্ধ গুলি-বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ নয় এবং এতে হতাহতের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আপাত দৃষ্টিতে অহিংস এই যুদ্ধের নাম ‘বর্জন’ বা ‘বয়কট’।

বাংলাদেশে যারা সরকার তথা আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনীতির সাথে যুক্ত বা সমর্থন করেন তাদের মধ্যে একটা বহুল প্রচলিত বক্তব্য হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কারণে বাংলাদেশে বিগত নির্বাচন ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারেনি। মানে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এই যাত্রায় কথিত ‘স্যাংশন’ থেকে বাচিয়ে আওয়ামী লীগের ‘ডামি’ বনাম ‘আওয়ামি’ নির্বাচনকে একটা আন্তর্জাতিক গ্রহনযোগ্যতা এনে দিয়েছে।

ফলে তাদের দৃষ্টিতে ভারত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসর কিংবা ভাইস ভার্সা। এখন এরা ঠিক করেছে আওয়ামী লীগকে কোনঠাসা করতে হলে বাংলাদেশে ভারতকে কোনঠাসা করতে হবে। সেই কোনঠাসা করতে তারা প্রাথমিকভাবে ভারতের ব্রান্ড ও ভারতে উৎপাদিত পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। আশা করা যায় ধাপে ধাপে এই বর্জন আরো রাজনৈতিক রূপ নেবে কারণ প্রথম দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সেরকম সংযুক্তি না থাকলেও এখন কিন্তু আস্তে আস্তে দলগুলো আড়মোড়া ভেঙ্গে নিজেদের বক্তব্য দলীয় বা ব্যাক্তিগত অবস্থান জানান দিচ্ছেন।

দুই

আপনি যদি মুক্তবাজার অর্থনীতি মানেন তাহলে বাজার হতে হবে উন্মুক্ত। কিন্তু বড়ই আফসোস আমাদের কিংবা ভারতের বাজার সেই অর্থে উন্মুক্ত না। বরং ভারত প্রায়শই নানান নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের রক্তচোষা ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার সুযোগ করে দেয় এবং ক্রেতা হিসেবে আমরা বিপদে পড়ি। এখানে অনেকে কৃষকের লাভের কথা বলবেন কিন্তু বাস্তবে কৃষক সেই অর্থে লাভবান হয় না। লাভের টাকা ঘুরে ফিরে বৃহত পুজিপতি আর ফরিয়া-মহাজনদের পকেটে যায়।

যাই হোক, আমি মনে করি পণ্য বর্জনকে যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে হয় তাহলে সেটা যেন অবশ্যই এজেন্ডাভিত্তিক হয়। এখানে যেটা হয়েছে প্রাথমিকভাবে সরকারবিরোধীদের মধ্যে থেকে এই বর্জনের ডাক আসলেও যে সময়টায় এসেছে সেই সময়টায় (জানুয়ারী, ২০২৪) প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি কিছুটা বিভ্রান্ত, কিছুটা হতাশাগ্রস্ত এবং আপাদমস্তক দিক নির্দেশনাহীন অবস্থায় ছিল কারণ তখন পর্যন্ত এর অধিকাংশ নেতা কর্মীই কারান্তরীন অথবা পলাতক ছিল। ফলে, রাজনৈতিকভাবে তাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়াটা প্রায় অসম্ভব ছিল। এখনও যে তারা খুব একটা গুছিয়ে উঠেছে ব্যাপারটা এমন না। যদিও মার্চ মাসে এসে তারা কিছুটা গুছিয়ে উঠেছে এবং অনেকটা প্রকাশ্যেই এই আন্দোলনকে সমর্থন ও সংহতি জানাচ্ছেন।

ভারতের সাথে আমাদের এজেন্ডা কিন্তু শুধুমাত্র আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ নয় ভারতের সাথে আমাদের অনেকগুলো অমিমাংসিত ইস্যু আছে যেগুলোও বেশি বেশি করে আলোচনায় আসা উচিত বলে মনে করি। যার মধ্যে প্রথমেই আসবে সীমান্তে অবৈধ হত্যাকাণ্ড, আসবে অভিন্ন নদীর সুষম পানি বন্টন, আসবে চোরাচালান বিশেষ করে মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার প্রতিরোধে সমন্বিত পদক্ষেপ ইত্যাদি।

এই ইস্যুগুলোকে জনগণের এজেন্ডা করতে হলে তো এগুলো নিয়ে ন্যারেটিভ তৈরি করতে হবে। যে কাজটা করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা কর্মীদের। যেটা এখন পর্যন্ত সেই অর্থে শক্তিশালী হিসেবে আমার কাছে দৃশ্যমান নয়। বরং বিগত এক সপ্তাহে প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকার পক্ষের লোকজন এটা বার বার করে বলার চেষ্টা করছেন যে এই বর্জন কোন কাজে আসছে না।

আবার এই ন্যারেটিভ বয়ানের সপক্ষে যখনই আপনি পাবলিকলি কোন কিছু বলতে যাবেন তখন কাকতালীয়ভাবে যারা এর বিরোধীতা করবে এদের মধ্যে ধর্মীয় দিক থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটা সক্রিয় উপস্থিতি দেখা যায়। এই হিন্দুদের সবাই যে বাংলাদেশের হিন্দু তা না সোশ্যাল মিডিয়ার আইডিগুলো চেক করলে দেখা যাবে এর অধিকাংশই ওপার বাংলার বিজেপি আইটি সেলের সদস্য। কিন্তু এর বাইরে খুব সামান্য সংখ্যায় এক দল উগ্র সাম্প্রদায়ীক হিন্দুদের দেখা কিন্তু পাওয়া যাবে যারা হিন্দুত্ববাদী ঝান্ডাধারী এবং নানান রকম উসকানীমূলক কথা বার্তা বলে পরিবেশ গরম করার চেষ্টা করবে। যারা থাকে বাংলাদেশে হয়ত বাংলাদেশের নাগরিকও কিন্তু কথা শুনলে মনে হবে ভারত এদের আসল দেশ আর মোদী এদের নেতা। এর বাইরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বেশির ভাগের হয়ত এটা নিয়ে মাথা ব্যাথাই নেই। আমি ইচ্ছা করেই ভারতপন্থী লীগারদের কথা এড়িয়ে গেলাম কারণ তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুযায়ী তারা এই কর্মসূচিকে আক্রমন করবেন এটাই স্বাভাবিক। আমার এই ব্লগেও তাদের সুস্থ উপস্থিতিকে আমি সাদর সম্ভাশন জানাই।

তিন

তবে মাথা ব্যাথা না থাকলেও এক ধরনের আতংক কিন্তু আমাদের হিন্দু ভাইদের মধ্যে আছে। কারণ এই পণ্য বর্জন আন্দোলনটা জাতীয়তাবাদী ঘরানার হলেও এর নেতৃত্ব নিতে সাম্প্রদায়ীক গোষ্ঠী অত্যন্ত সক্রিয়। ফলে, ভারতের আধিপত্যবাদী আচরণের সাথে ব্যক্তি হিন্দুর আচরণকে এক করে ফেলার একটা অপচেষ্টা কিন্তু শুরু থেকেই আছে।

তাছারা কেউ কেউ সন্দেহ করছেন এই বর্জনকে কেন্দ্র করে ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি্র অপচেষ্টাও হতে পারে। ফলে ভারত বর্জন যদি কোনভাবে হিন্দু হঠাও বা হিন্দু বর্জনে থেকে হিন্দু নিধনে রুপ নেয় তাহলে এই কথা অনায়াসেই বলা যায় যে উদ্দেশ্য নিয়ে যারাই এই আন্দোলন শুরু থেকে সমর্থন দিচ্ছেন সেটা নিংসন্দেহে বিফল হবে।

আমার অনুরোধ থাকবে নীরবে যারা ভারতের পণ্য বর্জন করছিলেন তারা যেন এটাকে অহিংসই থাকতে দেন। এমনকি রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি এটাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সহিংশ রুপ দিতেও চায় তারা যেন সচেতনভাবে সেই উসকানি এড়িয়ে যান। কারণ এটা মনে রাখতে হবে যে এই আওয়ামী লীগ সরকারকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন কিন্তু ভারতের রাষ্ট্রযন্ত্র করছে এবং এটা তাদের বৈদেশিক নীতির অংশ। চাপ দিয়ে কিছু আদায় করতে হলে ভারতের ক্ষমতাসীনদের দিতে হবে যাতে তারা তাদের একচোখা পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসে। একই সাথে মনে রাখতে হবে এটার সাথে সাধারণ ভারতীয় নাগরিক কিংবা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন সম্পর্ক নাই। বরং এরাও নানানভাবে নানান ফরম্যাটে দুই দেশের রাষ্ট্রযন্ত্র ও ক্ষমতাসীনদের জুলুমের শিকার। ফলে এক অর্থে যে মজলুমরা জুলুমের প্রতিবাদে নীরব বর্জনের ডাক দিয়েছেন এরা তাদের ভাই, তাদের কমরেড!

শেষ কথা

পণ্য বর্জনে আসলে কোন কাজ হয় কি না কিংবা এটা আসলে কত দিন চলবে এটা সময়ই বলে দেবে। রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা করল তখন অনেকেই বলেছিল রাশিয়া সাত দিনের মাথা কিয়েভের রাস্তায় জেলেনেস্কির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখনও ইউক্রেনের অর্ধেক জায়গা দখল করতে রাশিয়া ব্যর্থ হয়েছে উল্টো রাশিয়ার ক্ষয়ক্ষতিও কিন্তু কম হয়নি। আসলে মানুষ ভাবে এক হয় আরেক!

তবে এই পণ্য বর্জন যে কিছুটা হলেও ধাক্কা দিয়েছে সেটা কিন্তু আচ করা যায়। আরো কিছু দিন গেলে আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে তবে এই বর্জন শুধু পণ্যে আটকে রাখলে হবে না। যদি সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মসূচি যেমন রোডমার্চ, লংমার্চ, পথসভা, দূতাবাস ঘেরাওয়ের দিকে যায় তাহলে হয়ত কিছু হলেও হতে পারে। তবে এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য করার সময় আসেনি। বিএনপি কিংবা সম্মিলিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কোমড়ে সেই জোড় এখনও অবশিষ্ট আছে কি না সেটাও একটা বিবেচনার বিষয়।

আর কথায় আছে,

খাবু লা তু মাহালু কা
মাহালু তো খাবু লা কা


মানে খাবেন না যখন মাখালেন কেন? আর মাখালেন যখন খাবেন না কেন ?

রাজনীতিতে এই উক্তিটা স্মরনে রাখা কিন্তু অত্যন্ত জরুরী। তাই যে বা যারাই এক ধাপ এগিয়ে চিন্তা করবেন তার বা তাদের অবশ্যই দায়িত্ব নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। মাঝ রাস্তায় জনগণ আর কর্মীদের কারাগারে রেখে ঘরে গিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকলে চলবে না। যদি খেতে না পারেন শুধু শুধু পাবলিককে উসকানি না দেয়াই উত্তম কারণ জনগণ তাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৩৬
২৩টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×