somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণমাধ্যম ও নারী - সিনেমা পর্ব

০১ লা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিনেমার নাম "অভিমান", নায়িকা টিভির সফল নিউজ প্রেজেন্টার। সেটেল ম্যারেজে বিশ্বাসী নায়িকা অপেক্ষা করছিলো পারিবারিকভাবে দেখাশুনা হওয়ার মাধ্যমে বিয়ে হোক। তাই হলো। শ্বশুর বাড়ির মানুষতো মহা খুশি এমন গুণবতী, সেলিব্রিটি বউ পেয়ে। বৌ-ভাতের পরদিনই নায়িকার লাইভ শো থাকায় তার বাসর রাতেও স্বামীকে বাড়তি কোন রোমান্টিক সিনে মজে থাকতে দেখা না যাওয়ায় সত্যি মারাত্নক অবাক হয়েছিলাম! কারণ এমনটা তো স্বাভাবিক না! দরজা বন্ধ হবে তারপরই শুরু হবে লিলা খেলা। যাইহোক পরদিন সকালে বউ মন্ত্রীর লাইভ সাক্ষাতকার নিবেন সুতরাং তাকে যেতে হবে টিভি সেন্টারে, শ্বাশুড়ী এমন আদর যত্ন করছিলো যে সত্যিই আমি জেলাস ছিলাম। দীর্ঘশ্বাস আটকে রেখে অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করছিলো পরের কাহিনীর জন্য, কেননা পরের থ্রিল, এ্যাকশান যে খুব শিগগীর শুরু হবে! নায়িকা মানে নতুন সেলিব্রেটি বউকে তার স্বামী নিজে গাড়ী (সম্ভবত হ্যারিয়ার হবে) চালিয়ে দিয়ে আসেন। এবং কথা থাকে যে বউ অফিসের পরে বাইরে আরেক জায়গায় যাবেন (কেন, কি কারণে, ঠিক কোথায় যাবে এটা জানতে না পেরে বিরক্তই ছিলাম!) সেখান থেকে তার স্বামী তাকে নিয়ে যাবেন।
সময়টা ছিলো বিশিষ্ট নারীবাদী একজন লেখিকার অন্যদেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দিনের পর দিন থাকা নিয়ে সে দেশে সৃষ্টি রাজনৈতিক নৈরাজ্য নিয়ে। এবং দাঙ্গায় সেখানে একপর্যায়ে সরকার কার্ফু চালু করতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় বউটি সেই দাঙ্গায় আটকে যায়। এবং ঘটনাক্রমে এক মহান ছিনতাইকারীর ক্ষপ্পরে পরে তার আস্তানায় রাত কাটাতে বাধ্য হয়। পরদিন বউ যখন তার সেই মহান রক্ষাকত্যা ছিনতাইকারীকে সাথে নিয়ে শ্বশুরবাড়ীর সবার সাথে পরিচয় করাতে যান তখনই ঘটে আসল বিপত্তি। আমি কারো সাথে রাত তিনটার সময় দেখা করতে গেলে আপনারা্ও নির্ঘাত বলবেন যে, আরজু পনির চরিত্র খারাপ তাই না?! ঘটনা ভয়ানক আকার ধারণ করলে বউ ব্লেড দিয়ে তার হাতের শিরা কেটে আত্নহত্যার চেষ্টা করলেও মহানুভব ডাক্তাররা তাকে বাঁচাতে সক্ষম হন। এবং ততক্ষণে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ীর মানুষ বউয়ের লেখা চিঠি পড়ে নিজেদের ভুল বুঝতে পারলেও সেই আভিমানী বউ আর ফিরে আসে নি।

সাধারণত আমাদের দেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বেশিরভাগ দর্শক হলেন নিম্নবিত্ত শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষ। কিন্তু এসব চলচ্চিত্রে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাতে মনে হয় একজন কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর একমাত্র কাজ হচ্ছে প্রেমে পড়া । তাকে লেখাপড়া করতে হয় না, লাইব্রেরি ওয়ার্ক করতে হয় না, এমনকি পরীক্ষা নিয়েও দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এখানে নারীর ভুমিকা হলো নায়কের চারপাশে নাচগান করা, অসহায় হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া, নির্যাতিত হওয়া (সিনেমার নাম মনে নেই আলেকজান্ডার বো আর মুনমুন মুল চরিত্রে, যেখানে মযুরীরর কাজই ছিলো রেপ হওয়া), নায়ক বা কোন পুরুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা ইত্যাদি। সাধারণত মূল ঘটনায় নিয়ন্ত্রকের ভুমিকায় নারীকে দেখা যায় না। একসময়ের সিনেমার পদা কাঁপানো নারীকুল শিরোমনি শ্রদ্ধেয় "শাবানা"-র কাজই ছিলো স্বামী, শাশুড়ি, ননদদের হাতে নির্যাতিত হয়ে অবহেলিত লাঞ্ছিত জীবন যাপন করতে। স্বামী মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বাসায় ফিরলেও শাবানা ম্যাডাম সেই মাতাল স্বামীর ঘাম মুছে "ওগো" "হ্যাঁগো" বলে স্বামীর পায়ের জুতা খুলে দিতে। একটা গান মনে পড়ে গেল এক্ষেত্রে


এদেশের মূলধারার চলচ্চিত্রে নারী মূখ্য নয়, গৌণ মাত্র। অথচ চলচ্চিত্রের মতো একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম নারীর ইতিবাচক ইমেজ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে। আর তাই এদেশের যে সব নারী কর্মক্ষেত্রে , সংসারে সর্বত্র সামাজিক অর্থিনৈতিক- সাংস্কৃতিক অবদান রেখে চলছেন - তাদের জীবন সংগ্রাম , সাফল্য ও বঞ্চনার চিত্রায়ণ হওয়া প্রয়োজন চলচ্চেত্রের মতো একটি শক্তিশালী গণমাধ্যমে, সমাজ জীবনে যার প্রভাব খুব বেশি।

প্রথম প্রকাশ:
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:২০
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×