somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বগা লেক রহস্য ও অতৃপ্ত আত্মা

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষের জীবনে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা পাল্টে দেয় তার জীবনের পুরো দৃশ্যপটকে কিন্তু সেই ঘটনার কোনো যৌক্তিক বা লোকিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। পুরো জীবনটাতেই সেই ঘটনার গভীর আঁচ থেকে যায়। এটি স্রেফ কোন রংচটা গল্পের অবতারণা নয়। এটি এমন এক অদ্ভূত, সত্যিই অদ্ভূত অভিজ্ঞতা যা আমার সঙ্গে ঘটেছিল। আজ সেই ঘটনার অবতারণা করতে চলেছি।
১ ফ্রেব্রুয়ারী ১৯৯৭। কিছুদিন যাবৎ কি সব অদ্ভূত স্বপ্ন দেখছি! কী দেখছি তা বলতে পারব না। সারাদিনের অফিস শেষে দীর্ঘ ক্লান্তি নিয়ে অঘোরে ঘুমিয়ে অচেতন অবস্থায় কী দেখছি তা ঠিক ঠাওর করতে পারছি না। তবে কিছু একটা বিভীষিকা অচেতন ঘোরের মধ্যে ঘটে চলেছে তা নিশ্চিত ছিলাম। ঘুমে থেকে ওঠেই মাথাট চিনচিন করে ওঠে। মনে হয় ভারি কিছু একটা মাথার উপরে চেপে বসে আছে। ঘুম ভাঙ্গার পর শরীর অনেকটা চাঙ্গা হবার কথা কিন্তু সেখানে ক্লান্তি আর অবসাদ যেন দেহ, মনের মাঝে আরও জেকে বসে। সত্যিই অদ্ভূত। এই রকম অভিজ্ঞতা ইতিপূর্বে কখনো হয়নি। স্ত্রী-সন্তান দু’সপ্তাহ যাবৎ ঢাকার বাইরে আছে। ওদের আসতে আরও সপ্তাহ দু’য়েক লাগবে। সুতরাং এ বিষয়টি যে কারও সাথে শেয়ার করব তারও কোনো সুযোগ ছিল না। ঢাকা শহরে আত্মীয়-স্বজন বা শুভাকাঙ্খি বলতে তেমন কেউ নেই। যারা আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগও তেমন হয় না। আর যাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হয় স্রেফ কাজের প্রয়োজনে। ঢাকা শহরে বন্ধু বলতে শান্তুনু। আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ঢাকা কলেজে পড়াকালীন সময়ে ওর সাথে পরিচয় হয় আমার। সহজ, সরল অগম্ভীর এক আমুদের প্রকৃতির মানুষ শান্তুনু। সদ্যপ্রাপ্ত বিবাহিত যুবক ও। এবার ঈদের ছুটিতে বউকে নিয়ে শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে। তাই ওর সাথে বিষয়টি শেয়ার করাও সম্ভব নয়। দীর্ঘ অফিসের কাজের চাপে ঈদের ছুটিটা পর্যন্ত ঠিকমতো উপভোগ করা হয়ে ওঠেনা। প্রাইভেট কোম্পানীগুলোর এই এক জ্বালা। ৮ ঘন্টার ডিউটি শেষে গিয়ে ১২ ঘন্টায় ঠেকে। আর ঈদ, পূজা, পার্বন, সরকারী ছুটিতেও চলে অফিস। তা আর কি করার! বেঁচে থাকার জন্যতো স্ট্রাগলের কোনো বিকল্প নেই। এদিকে ঘরেও কিছুতেই একাকী মন বসছে না। এবার ঈদে অফিসের কাজের চাপ কম থাকায় এক সপ্তাহের ছুটি পেয়ে গিয়েছিলাম। বহুদিন এই রকম একটা শুভক্ষণের অপেক্ষায় ছিলাম। পাশাপাশি এক অপার্থিব অমোঘ মোহনীয় শক্তি আমায় ডেকে নিয়ে যাচ্ছিল এক অনিশ্চিত পথে। তাই আর সাত পাঁচ না ভেবে ব্যাগপত্র গুছিয়ে রওয়ানা দিলাম প্রকৃতির এক অপার্থিব সৌন্দর্য্যমন্ডিত বগা লেকের উদ্দেশ্যে। সঙ্গে নিলাম শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কিছু কাপড়চোপড়, ঔষুধপত্র, আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র আর ডাইরিটা।

ঢাকা থেকে রাত ১১টার গাড়িতে বান্দরবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। সারারাত বাসে প্রায় বসে বসেই কাটালাম। কোনোভাবেই ঘুম আসছিল না। গত কয়দিনের দুস্বপ্ন আর এতদিন পরে দূরে কোথাও একাকী বেড়াতে যাওয়ার আনন্দ দুটোই ঝাঁক বেধে বসেছিল মাথায়। তাই আর সারারাত ঘুমের সাথে দেখা হলো না। খুব ভোরে বাস এসে পৌঁছলো বান্দরবনে। বান্দারবন শহর থেকে চাঁদের গাড়িতে মেঘের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম রুমার-এর পথে। চাঁদের গাড়ী বলতে অনেকে ভুল বুঝতে পারেন আবার অনেকে এই শব্দটির সাথে ইতিমধ্যে পরিচিত। বান্দরবনে পর্যটকদের চলাচলের জন্য মাঝারি আকারের এক ধরনের জিপ গাড়িকে মূলত চাঁদের গাড়ি বলা হয়। রিমার যাবার পথে চারপাশে এত ঘন কালো মেঘ যে সামনে পিছনে, ডানে-বামে মেঘ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কুয়াশা আর মেঘের আবরণের মধ্যে যে বিস্তর পাথ্যর্ক বুঝতে পারলাম। বান্দারবন শহর থেকে রুমার প্রায় ৪৩ কিলোমিটারের পথ। রুমার পৌছে আলোর মুখের দেখা পেলাম। উচু পাহাড়ের ঢিবিতে উঠে দেখতে পেলাম ধবধবে সাদা মেঘের আস্তরে ঢাকা পাহাড়, গাছ আর গিরিখাত। রুমার ছাড়িয়ে ২ কি.মি পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম নীলগিরিতে। এই পথে পেছনে ফিরে তাকালে মনে হয় পেছনের রাস্তাগুলো কিছুক্ষণ পর পর যেন অদৃশ্যের মতো পাহাড়ের ঢালে হারিয়ে যাচ্ছে । সত্যিই এটি ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। রুমা বাজার পৌছানোর পর অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিলাম যেগুলো ঢাকা থেকে নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। কেননা এরপরে আর কোনো বাজার পাওয়া যাবে না।

রুমা বাজার অতিক্রম করে আবারো চাঁদের গাড়িতে ওঠে রওয়ানা দিলাম বগা লেকের উদ্দেশ্যে। পথের অবস্থা বলতে একেবারেই যাচ্ছে তাই। উঁচুনিচু অসমতল মাটির পথ। মাঝে মধ্যে রয়েছে উচু মাচার উপর তৈরি পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দু’একটি ঘর। পাহাড়ের গা আর গিরিখাতের শূণ্যতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে এপাড়-ওপাড় বেড়াচ্ছে মেঘমালা। সত্যিই অ্যামেজিং! দীর্ঘ সময় পর চাঁদের গাড়ি এসে পৌঁছল সেই কাঙ্খিত বগা লেকে। বান্দারবন থেকে বগা লেক পৌঁছতে প্রায় সন্ধা নেমে এলো। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৪০০ ফিট ওপরে অবস্থিত বগা লেক। বগালেকের সৌন্দয্য সত্যিই অপার্থিব। লেকের দুই পাশ ঘেরা উচু উচু পাহাড় বিস্তীর্ণ সবুজায়নে ঘেরা। আকাশচুম্বি সারি সারি গাছ লেকের দু’ধার দিয়ে। লেক আর পাহাড়ের এক অপরূপ মেরুবন্ধন। পাহাড়ের উচু ঢিবি থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম এক অপার্থিব মনোরম চির সবুজে আচ্ছাদিত বিস্তীর্ণ জল ভূমিকে। বগালেক স্বচ্ছ নিটল জলে পূর্ণ। উপরের উন্মুক্ত সন্ধ্যার আকাশের বাদামি আভাযুক্ত রং যেন বগা লেকের স্বচ্চ নিটল পানিতে এক রহস্যের অবতারণ করেছে। কথিত আছে, এই বগা লেকের পানিতে প্রতিবছরই মানুষ মারা যায়। মাঝে মধ্যে শুভ্র নিল আলো দেখা যায় লেকের আশে পাশে। অনেকে নাকি রাতের বেলায় একটি অল্পবয়স্ক মেয়েকে লেকের আশে পাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছে। পাহাড় থেকে কয়েক মিটার উপরে অবস্থিত কাঠের সিড়ি বিশিষ্ট পর্যটকদের থাকার জন্য ছোট ছোট ট্রাভেলার হাট। একটি ঘর থেকে অন্য ঘরের ব্যবধানও যথেষ্ট। সেই ঘরগুলোর খোলা বারান্দায় বসে নাকি একসঙ্গে দেখা যায় সবুজ বনানীতে ঘেরা পাহাড় আর নিরব বিস্তীর্ণ লেক। উন্মুক্ত খোলা আকাশ এবং মধু চন্দ্রিমা। কিছুক্ষণ বগালেক এবং আশেপাশের অপার্থিক এবং অন্যন্য সৌন্দর্য্য উপভোগ করলাম। সারারাত বাসে বসে বসে জেগে থাকা আর এই দীর্ঘ পথ ভ্রমণের কারণে শরীর অনেকটা পরিশ্রান্ত হয়ে উঠেছিল। অন্যদিকে সন্ধ্যার অন্ধকারও ঘনিয়ে আসছিল। তাই আর দেরি না করে রুমের চাবি নিয়ে উঠে গেলাম সেই উচু ঢিবির উপর নির্মিত “ট্রাভেলার হাটে”।

কাঠের তৈরি নির্মিত ঘরগুলো নজর কারবার মতো। নিচ থেকে উপরের দিকে তাকলে মনে হয় ওয়াচ টাওয়ার। ভিজিটরদের বগা লেকের পুরো ভিউটা একবারে দেখার জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে নির্মিত হয়েছে এই ট্রাভেলার হাট গুলো। দীর্ঘ কাঠের সিড়ির হাতল ধরে ধীরে ধীরে মালপত্রগুলো নিয়ে কোনরকমে উঠে এলাম এই বিশেষ ট্রাভেলার হাটে। চাবি দিয়ে দরজার হাতলে চাপ দেওয়ার সাথে সাথেই ঘ্যাট শব্দ করে খুলে গেল শক্ত কাঠের দরজা। কোনোরকমে ব্যাগপত্র রুমের মধ্যে ফেললাম। একটু জিরিয়ে নিয়ে কয়েকবার দীর্ঘ নিশ্বাস নিলাম। ব্যাগপত্র খাটের কাছে রেখে দিয়ে ওয়াশ রুমে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে চট করে ট্রাউজার আর টিশাটর্টা পড়ে নিলাম। এরপর বিছনায় বালিশে মাথা দিয়ে হারিয়ে গেলাম কালসন্ধ্যার অঘোর ঘুমে। দীর্ঘক্লান্তির ফলে দেহ মনে প্রবল অবসাদ এসেছিল। ঘুমিয়ে কোনো স্বপ্ন দেখেছি কিনা ঠিক মনে নেই।

ঘুম যখন ভাঙল তখন আশে পাশে তাকিয়ে দেখলাম গভীর অন্ধকার। বাহিরে থেকে শুধু প্রচন্ডরকম ভারি বর্ষনের শব্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে বৃষ্টির প্রবাহ আর দমকা হাওয়া যেন ঘরটিকে নিশ্বেষ করে দিতে চাইছে। ইলেকট্রিসিটির কোনো ব্যবস্থা ছিল না ট্রাভেলার হাটে। যখন ঘুমিয়েছিলাম তখন দিনের আলো সামান্য অবশিষ্ট ছিল। তাই আর অতিরিক্ত কোনো আলোর প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এখন ঘন কালো অন্ধাকারে আচ্ছন্ন পুরো ঘরটি। কোনো রকমে ঘরের গভীর অন্ধকারের মধ্যে হাতড়ে খাটের পাশে রাখা ব্যাগটি খুঁজে পেলাম। ব্যাগ থেকে মোমাবাতিটা বের করে শার্টের পকেটে রাখা দেয়াশলাইটা দিয়ে জ্বালিয়ে দিলাম। কিন্তু এই নিকষ কালো অন্ধাকার ঘরের মধ্যে মোমবাতির আলোটাকে অনেক তুচ্ছ মনে হচ্ছিল। মোমবাতিটাকে কর্ণারের টিবিলের উপর রাখলাম। হাত ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি রাত তিনটে। অনেকটা অবাক হলাম। গতরাত থেকে ধকলতো আর কম যায়নি। পরিশ্রান্ত থাকার কারণে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি আর কতক্ষণ ঘুমলাম তার কিছুই মনে করতে পারছি না। এখন এই অন্ধকার রাতে আমার একমাত্র ভরসা মোমবাতির আলো। মোমবাতির ক্ষীন আলোটাকে কর্ণারের টেবিলটাসহ ঘরের মাঝে রাখা চেয়ারের সামনে নিয়ে আসলাম। আর আমি চেয়ারে গা এলিয়ে বসে পড়লাম। লক্ষ করলাম টেবিলে রাখা মোমবাতির ক্ষীণ আলোটা যেন এই অন্ধকার কুটিরের মধ্যে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছিল। পুরো ঘর জুড়ে তমাসাচ্ছন্ন অন্ধকার যেন মোমবাতির ক্ষীণ আলোকে গিলে ফেলতে চাইছিল। ভাবছিলাম পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা এই বন্য রাতে সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ২৪০০ ফিট উপরে একা এক নির্জন অন্ধকার ঘরে বসে আছি আমি। বাইরে প্রবলতাপে বয়ে চলেছে বাতাশ আর সাথে মুষুলধারে বর্ষন। ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ চমকাছে। কাঠের দেয়াল আর ছাদে উন্মত্তের মতো গুঙ্গিয়ে চলেছে বৃষ্টি। কী এক অদ্ভূতুরে পরিবেশ।

হঠাৎ ভাবলাম বারান্দায় দরজাটা সামান্য খুলে দেখার চেষ্টা করি বাইরের অবস্থা। মোমবাতি হাতে এগিয়ে গেলাম বারান্দার দরজার দিকে। দরজার হাতলটা সামান্য নাড়তেই বাতাশ আর বৃষ্টির এক আর্কস্মিক যাপটায় ঘ্যাক করে কাঠের দরজাটা পুরোপুরি খুলে গেল। মনে হল বৃষ্টি জল যেন গা ভেদ করে পাজরের হাড়ের ভেতরে ঢুকে গেল। দপ করে নিভে গেল হাতের মোমবাতির অস্পষ্ট আলো। সাথে সাথে পাহাড়ের চূড়োয় শুভ্র নীলাভ এক ভয়ার্ত বজ্রপাত। তার সাথে খোলা দরজা দিয়ে এক অস্পষ্ট ছায়া মূর্তি যেন ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল মূহুর্তেই। হঠাৎ আমার দেহ মন ভয়ে আতঙ্কে আতকে উঠল। মনে হল যেন আমার প্রাণপাখি এখনি উড়ে পালাবে। বারান্দার বৃষ্টি জল ঘরের কিছু অংশকে পুরোপুরি ভিজিয়ে দিয়েছে। সাথে সাথে ভিজে গেছে পুরো দেহ। পরনের জামা-কাপড়, হাতের মোমবাতি, পকেটের দেয়াশলাইও মনে হচ্ছে পুরোপুরি ভিজে গেছে। বহুবার চেষ্টা সত্ত্বেও আলো জ্বালানো সম্ভব হলো না। এমন সময় হঠাৎ সপাট শব্দে বারান্দার কাঠের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। পরক্ষণেই যেন অন্ধকারের মিলিয়ে গেল পুরো ঘরটি। মূহুর্তেই আমার শিড়দাড়া বেয়ে যেন ভয়ের শিহরণ খেলে গেল। বারান্দার দরজা বহুবার চেষ্টা করেও আর খুলতে পারলাম না। মনে হলো এক অপার্থিব শক্তি দরজার হাতলটি শক্ত হস্তে ধরে রয়েছে।

অন্ধকারের সমুদ্র ঠেলে দৌড়ে গেলাম মূল দরজার দিকে সেটিও মনে হচ্ছে কেউ আটকে ধরে আছে বা বাইরে থেকে লক করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমিতো ভেতরেই ছিলাম তাহলে কে দরজাকে আটকে ধরে রয়েছে? দ্বিগবিদিক জ্ঞান শূণ্য হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল অন্ধকারের সমুদ্র যেন পুরো ঘরকে গ্রাস করে ফেলেছে। আমার সমগ্র দেহ, সমগ্র অস্তিত্ব যেন অন্ধকার কৃষ্ণ গহ্বর গিলে ফেলছে। নিজেকে এবং অন্ধকারের মধ্যে কোনো পাথর্ক্য করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল আমিই অন্ধকার আর অন্ধকারই আমি। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ভয়ে আতঙ্গে এই প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যেও আমার শরীর বেয়ে তরতর করে ঘাম ঝরছিল। গলা মনে হয় শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে কোন এক অদৃশ্য শক্তি আমার গলা আটকে ধরে আছে। প্রচন্ড তেষ্টায় যেন আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। দৌঁড়ে ছুটে গেলাম টেবিলের কাছে জল আনতে। কিন্তু পুরো টেবিল হাতিয়ে দেখলাম জলের গ্লাস নেই। হঠাৎ অন্ধকারের মধ্যে শুনতে পেলাম ঘরের ভেতের কেউ যেন জলের গ্লাসে ঢক ঢক করে জল খাচ্ছে। কি করব বুঝে ঊঠতে পারছিলাম না। শুধু গভীর আতঙ্কগ্রস্থ পাগলের মতো অন্ধকার ঘরে কোনো অদৃশ্য অশীরির জল খাওয়ার শব্দ শুনছিলাম । কিছুক্ষণ পরে সেই শব্দ যেন থেমে গেল। মূহুর্তেই কাঁচের গ্লাস যেন মেঝেতে পড়ার শব্দ পেলাম। দ্রুত মেঝে হাতিয়ে পানির গ্লাস খোঁজার চেষ্টা করলাম। গ্লাস হাতে পেয়ে ঢক ঢক করে গিলতে শুরু করলাম। জীবনে পানি খাওয়ার অভিজ্ঞতাতো আর কম হয়নি। কিন্তু এ কোন রকমের পানি। তীব্র গন্ধ যুক্ত আঠালো এক বৃশ্রী রকমের পানি। মনে হচ্ছিল এতো পানি নয় এতো মানুষের রক্ত। মূহুর্তের মধ্যে প্রচন্ডবেগে ভেতর থেকে বমি বেরিয়ে আসল। মনে হলো পেটের ভিতর থেকে নাড়ি-ভুরি সব বেরিয়ে আসবে। প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছিল। কষ্টে বারবার কুঁকিয়ে উঠছিলাম।

কিছুক্ষন পর ঘরের কোণ থেকে বাচ্চা মেয়ের কণ্ঠে এক অদ্ভূত ধরনের গানের সুর ভেসে আসল। যার শব্দ-অর্থ কিছুই আমি বুঝতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল মা যেমন ছোট বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানির গান শোানায় ঠিক তেমন এক ধরনের সুর। এই সুরের মধ্যে কেমন যেন এক মোহনিয়তা রয়েছে। মনে হচ্ছিল এই সুরে সুরে আমার মস্তিস্ক যেন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। আর আমি ক্রমশই ঘুমের কোলে ঢলে পড়ছি। সামনের চিত্র, গানের শব্দ সবকিছুই অষ্পষ্ট থেকে অস্পষ্টতর হতে লাগল। তারপর আর কিছুই মনে নেই।ঘুমের ঘোরে অচেতন অবস্থায় এক অদ্ভূত স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। দেখলাম একটি উপজাতি পরিবার স্বামী, স্ত্রী আর ছোট্ট একটি মেয়ে। হঠাৎ সেই পুরুষ লোকটি স্ত্রী’র পরকিয়ার জের ধরে ঘুমন্ত স্ত্রী কন্যা সন্তানকে নির্মম ভাবে হত্য করে। প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় দু’জনের হাত পা মুখ বেঁধে ফেলে। পরে ধারালো ছুরি দিয়ে দু’জনের বুক থেকে পেটের পুরো অংশ ছিড়ে ফেলে। স্ত্রী-কন্যা বহুচেষ্টার পরও বাঁচতে অসমর্থ হয়। পরে গভীর রাতে মাটি খুঁড়ে ওদের লাশকে এই ঘরের নিচেই চাপ দেওয়া হয়। স্বপ্নের মধ্যেই অনুভব করছিলাম ভয়ে আমার শরীর থরথর করে কাঁপছিল।

আকস্মাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আমি বুঝতে পারলাম কিছুক্ষণ পূর্বে ঘরের কোণ থেকে শিশু কণ্ঠে যে গানের সুর ভেসে আসছিল তা নিশ্চয় সেই মৃত অশরিরী শিশুটির। ঘুম ভাঙ্গার পরে দেখলাম পেটের মধ্যে অহস্য রকম যন্ত্রণা হচ্ছে। পেটের ব্যাথায় বাববার গুঙ্গিয়ে উঠছিলাম। ঘরের মধ্যে এখন কোন গানের শব্দ আর নেই। কোন রকমে মেঝেতে পা ছিঁচড়ে ছিঁচড়ে মেঝেতে হাতিয়ে মোমবাতিটা খুজে বেড়াচ্ছি। হঠাৎ হাতের মধ্যে মানুষের দেহের মতো কিছু একটা অনুভব করলাম। মূহুর্তেই মধ্যে আমার পুরো শরীরে একটা বিদ্যুতের ঝলকানি খেলে গেল। ঠান্ডা ররফের মতো শরীর। মৃত মানুষের শরীর ফ্রিজিং করে রাখলে যে রকম হয় ঠিক তেমন। কিন্তু গায়ে হাত দেয়ার সাথে সাথে দেহের মধ্যে কোন বিকার বা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম না। হাতটা নিচ থেকে উপরে উঠতেই মনে হলো পেটের নিচের অংশটা পুরোপুরি মাংসহীন। নাড়ী-ভুরি আর তাজা আঠালো রক্ত মনে হলো আমার হাতে লেগে গেল। মূহুর্তেই গায়ের মধ্যে কেমন এক অসহ্য অনূভুতি আর বিদ্যুতের চমক খেলে গেল। পেছন ফেরার চেষ্টা করতে চিত হয়ে চেয়ার টেবিলের উপরে ধরমড়িয়ে পড়লাম। চেয়ারটা একটা বিকট শব্দ করে মেঝের উপর পড়ে গেল। কিন্তু বাইরের প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির শব্দের জন্য শব্দটা বোধ করি বেশি দূর পৌঁছুতে পারেনি। মাথার পেছনটায় মনে হয় প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। মাথা আর কানের মধ্যে ঝিঝি ঢাকার মতো অনবরত শব্দ হতে লাগল। মনে হলো মতিস্ক যেন ধীরে ধীরে অচল হয়ে যাচ্ছে। গলার সাথে সাথে পুরো মস্তিঙ্কও যেন শুকনো কাঠের মতো শুকিয়ে গেছে। মস্তিঙ্ককে জড়ো পদার্থ বৈ আর কিছু মনে হচ্ছিল না।

হঠাৎ কানের মধ্যে ভেসে এলো একটি ছোট্ট মেয়ের রাগান্বিত গোঙ্গানির শব্দ। মনে হচ্ছে ক্রোধে ফেটে পড়ছে। পুরো ঘরের দেয়াল জুড়ে সেই গোগাঙ্গির শব্দের যেন পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। বারংবার সেই ভয়ার্ত ক্রোধান্বিত কণ্ঠস্বর কাঠের দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হতে লাগল। কী করব বুঝতে পারছি না। ভয়ে, ব্যাথায় আমি সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত। উঠে দাড়াবার চেষ্টা করাই বৃথা। বহুবার চেষ্টা করেও মুখ থেকে একটি শব্দ বের করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল এক অদৃশ্য শক্তি আমার টুটি চেপে ধরে আছে। ভয়ে আর্তনাদ করার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছি। একবার ভাবছিলাম এক দৌড়ে গিয়ে প্রচন্ড ধাক্কা দিয়ে দরজাটা খুলে ফেলব। আবার ভাবছিলাম উঠে দাড়ানোর সময়ে সেই অশরীরি যদি আমার পথ রুদ্ধ করে দাড়ায়। পরক্ষণেই ভাবলাম এক দৌড় দিয়ে বারান্দার দরজা খুলে সোজা লেকের পানিতে ঝাঁপ দিবো। আমার মন-মস্তিঙ্ক দুটোই অসাড়ের মতো পড়ে আছে। আমি দিগ্বিদিক জ্ঞান শূণ্য পাগলের মতো কী সব চিন্তা করছি। একটু পরে স্পষ্ট শুনতে পেলাম মেঝেতে পায়ের শব্দ হচ্ছে। কেউ যেন ঘরের মধ্যে অনবরত হেটে বেড়াচ্ছে। ভয়ে আমার মেঝের মধ্যে সেঁধিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলো। ভাবলাম যদি আমি এই মেঝের মধ্যে সেধিয়ে যাই তবে ওর থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবো। মনে হচ্ছিল পুরো দেহটাকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে নিয়ে ফেলি। কিছুক্ষণ পর পায়চারির শব্দ থেমে গেল। কিছুসময় ঘরের ভেতর শুনশান নিরবতা। শুধুমাত্র বাইরের দমকা হাওয়া আর বৃষ্টির শব্দ তখনও অনবরত হয়ে চলছিল।

ক্ষণিকবাদে কানে ভেসে আসল অল্পবয়স্ক মেয়ের কান্নার শব্দ। কান্নার শব্দ ধীরে ধীরে বাড়ছিল। এমন করুণ আর বিভৎস কান্না যার কোনো ইয়ত্তা এই পৃথিবীতে নেই। এক অপার্থিক, অলৌকিক, নিদারুণ, বিভৎস ভয়স্কর কান্না যা শুনে আমার হৃদপিন্ড অনবরত উল্কার বেগে লাফিয়ে চলছিল। মনে হচ্ছিল হৃদপিন্ডটি এখনি আমার মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসবে। ধীরে ধীরে সে শব্দ বিকট থেকে বিকটতর হতে লাগল। মনে হলো একজন নয়। শত শত হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি ছোট ছোট মেয়েরা অবিরাম কেঁদে চলেছে। তাদের কণ্ঠস্বরগুলো মনো হচ্ছিল ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে। তাদের বিকট শব্দে আমার শ্রবণেন্দিয় যেন বধির হওয়ার উপক্রম হলো। কিছুক্ষণ পরে আবার শুনশান নিরবতা। আমি ভয়ে আতঙ্গে পাগলপ্রায় মৃত্যের মতো মেঝেতে শুয়ে আছি। আমার ভিতর বাহির দেহ প্রাণ মস্তিঙ্ক সকল কিছুই যেন অসাড়, মৃত। নিজেকে মেঝের উপরে পড়ে থাকা জড়োবস্তুর মতো মনে হচ্ছিল। আমি একজন শিক্ষিত বিজ্ঞানমনস্ক ছেলে। ভূত-প্রেত, অশরীরি গল্প কাহিনীকে আমি সবসময়ই ঠাট্ট-বিদ্রুপ করেছি। শেষে কিনা আমার সঙ্গেই এইরূপ ঘটনা ঘটে চলেছে যার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী আমি নিজেই।

এই সব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ আবার মেঝেতে পায়ের শব্দটা যেন প্রকট হল। আমি স্পষ্ট মেঝেতে পায়ের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। কিছুক্ষণ পরে হাসির শব্দ কানে আসতে শুরু করলো। ক্ষীণ হাসির শব্দটা ক্রমশই উৎকট অট্টহাসির রূপ নিল। এখন মনে হলো একজন নয় দু’জনের হাসির শব্দ। অল্প বয়স্ক মেয়ের সঙ্গে শুরু হলো মধ্য বয়স্ক নারীর হাসি। একজনের হাসি থামতে না থামতেই অন্য জনের হাসি শুরু হচ্ছে। এভাবে হাসি চলতে থাকলো। ধীরে ধীরে সেই অট্ট হাসি বিকট হাসিতে পরিণত হলো। হাসির শব্দে মনে হচ্ছিল পুরো ঘর, দরজা, জানালা, মেঝে সমস্ত কিছু বিদীর্ণ হয়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর অনুভব করলাম হাসির প্রচন্ড শব্দে মেঝে, আসবাবপত্রসহ পুরো ঘর ভূকম্পনের মতো কাঁপতে শুরু করলো। মনে হলো পুরো ঘরটি কাত হয়ে ভেঙ্গে পড়বে লেকের পানিতে।

হঠাৎ প্রচন্ড ভয়ের মাঝেও আমার মধ্যে সম্ভিত ফিরে এলো। কোথা থেকে যেন এক মুষ্ঠি শক্তি নিজের মাঝে খুঁজে পেলাম। নিজের সমস্ত নিথর দেহের মধ্যে যেন পুনরায় শক্তির সঞ্চার হলো। শরীরের পুরো শক্তি দিয়ে দৌড়ে দরজা ধাক্কা দেওয়ার প্রয়াস করলাম কিন্ত অন্ধাকরের মধ্যে কোথায় ধাক্কা দিয়েছি বলতে পারবো না। মনে হলো শক্ত কাঠের দেয়ালের সাথে প্রচন্ড আগাত পেয়ে আমি জ্ঞানশূণ্য অবস্থায় মেঝেতে পড়ে গেলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই।

জ্ঞান ফেরার পর শুনলাম রাতের খাবার দেওয়ার জন্য একজন এসেছিল। দরজা না খোলায় চলে গিয়েছিল। পরের দিন সকালে নাস্তা দেওয়ার জন্য একজন ডাকতে এসেছিল কিন্তু দরজা না খোলাতে সেও চলে গিয়েছিল। ভেবেছিল আমি হয়তো বেশি বেলা পর্যন্ত ঘুমাই। তাই তারা কিছু মনে করিনি। কিন্তু দুপুরে খাবার নিয়ে এসে যখন কোনো সাড়া পেল না। তখন সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানায়। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ এসে অনেক ডাকাডাকির পর সাড়া না পেয়ে দরজার খিল ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকে দেখে আমি রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পরে আছি। মাথায় গভীর আঘাতের চিহ্ন। জ্ঞান ফিরে না আসায় প্রাথমিক চিকিৎসা সেরে আমাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বগালেকে এন্ট্রি দেয়ার সময় যে ঠিকানা দিয়েছিলাম সেখানে খোঁজ লাগিয়ে তারা আমার পরিবারের কাছে খবর জানায়। খবর পেয়ে নাকি আমি স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের অনেকেই আমাকে দেখতে ঢাকা হাসপাতালে আসে।

যেদিন জ্ঞান ফিরে সেদিন আমি নিজেকে ঢাকা হাসপাতালের বিছানায় আবিস্কার করলাম। শুনতে পারলাম আমি নাকি দীর্ঘ ৯ মাস কোমায় ছিলাম এবং আমার মস্তিঙ্কে নাকি বড়ো ধরনের অপারেশন হয়েছে। এর কিছুদিন পর ডাক্তাররা আমাকে হাসপাতাল থেকে রিলিস দিল। দীর্ঘদিন যে চাকুরিটা করেছিলাম সেটি হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে বাড়িতে দীর্ঘদিন বসে ছিলাম। অন্ধকার আমার মোটেই সহ্য হতো না। রাতের বেলায় একা ঘুমতে পারতাম না। দিনের বেলায়ও ঘরে লাইট জ্বেলে রাখতাম। মাঝে মধ্যে ভয় পেয়ে বিকট চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে উঠতাম।

সে অনেক আগেকার কথা। এখন আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। নাতি-নাতিনির মুখ দেখেছি। ছেলে ইউ.এস.এ-এর ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। এতো বয়স হয়েছে কিন্তু সেইদিনের সেই বিভীষিকাময় দিনের কথা এখনো মনে পড়লে আতকে উঠি। তাই সেই দিনের বিভৎস স্মৃতিগুলোর কথা না লিখে পাড়লাম না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৫০
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×