সাম্প্রদায়িক/অসাম্প্রয়াদ্য--- নহে মুসলমান নহে হিন্দু-- আমরা গর্বিত বাঙ্গালীঃ
গত কিছুদিন আগে ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখলাম—যাতে উনি জনৈক নেত্রীর হাত শক্তিশালী করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছেন।খটকা লাগলো--- জীবনের ২৪ টি বছর বাংলাদেশে পার করে দিলাম--- কোথাও তোঁ দেখিনি সাম্প্রদায়িক শব্দ!! তাহলে----অসাম্প্রদায়িক হল কোনদিন থেকে?
আজ একটা পিটিশন ইনভাইটেশন দেখলাম--- ইউনাইটেড স্টেট্স এর মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যা লঘুরা তাদের ঈদকে রাষ্ট্রীয় ছুটির আওাতায় আনার আবেদন করছে--- মাইন্ড ইট আমি বলেছি সংখ্যা লঘু।।
যিনি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছেন এবং আমি কটাই দুজনেই বাস করি যে দেশে তার নাম হল ইউনাইটেড কিংডম।। উনি হিন্দু আর আমি মুসলিম অন্তত তাই বিশ্বাস করি---
আমি ইদের দিন সকালের জামাত পড়ে হন্তদন্ত দৌড়ে কাজে যাই—উনি দুর্গা পুজা বা সরস্বতী পুজায় কি ঘরে বসে থাকেন?? না উনিও ডিনামাইট পিছনে নিয়ে কাজে যান--- ইউকে সংখ্যালঘু বলতে আমরাই—আর ক্রিস্টিয়ানরা সংখ্যাগুরু।।
যেখানে মুসলিমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মানুসারী (পরিসংখ্যান তাই বলে), পবিত্র দিনে কাজে যাই ---সরকারী ছুটি নাই ---সেখানে ক্রিস্টমাস এর জন্যে ১০ দিনের মত ছুটি দেয়। আর ইস্টার হলিডের কথা নাই বা বললাম--- সবচেয়ে সিভিলাইজড দেশ অথচ সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের এই উন্নাসিকতা কে কি সাম্প্রদায়িক বলা যায়না???
ইউনাইটেড স্টেট্স এ একই অবস্থা--- সংখ্যালঘুদের রাষ্ট্রীয় ভাবে কুনো ধর্মীও ছুটি নেই-।
আসি পাশের দেশ ভারতে---আমাদের বড় ভ্রাতা---মোট জনসংখ্যার ১৩.৪% হল গিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়--- অথচ সেখানেও কোন রাষ্ট্রীয় ভাবে ধর্মীও ছুটি নেই কপাল পুড়া মুসলমানদের।। নাই তোঁ নাই উলটো মুসলমানদের ধর্মীও রীতিনীতিকে রাষ্ট্রীয় ভাবে দলিত নিষ্পেষিত করা হচ্ছে। এক দেশের গালি আর এক দেশের বুলি—এক ধর্মের মাতা আরেক ধর্মের ত্যাগ— এই ধর্মীও সাম্যবাদের সুক্ষ বিষয়কে যদি তারা সম্মান করতে পারেনা তাহলে কি আপনি তাদের অসাম্প্রদায়িক বলবেন??
মজার কথা—প্রকাশ্যেই আপনারা এই দেশটাকে অসাম্প্রদায়িক বলে নিজের দেশকে সাম্প্রদায়িক বলে অপমান করেন।।
বাংলাদেশ--- ৯০ % মুসলিমের দেশ—সত্যি কি তাই?? পরিসংখ্যান তোঁ তাই বলে—বাকিরা ভিন্য ধর্মাবলম্বী, অর্থাৎ সঙ্খালঘু।। এবার দেখেন গণেশ কিভাবে উলটে যাচ্ছে—বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে সংখ্যালঘু বলতে কোন শব্দের বাস্তব প্র্যাকটিস নেই— রাষ্ট্রীয় ভাবে বলুন আর সামাজিক ভাবেই বলুন--- ঈদ, পুজা, পার্বণ জন্মাষ্টমী, বৌদ্ধ পূর্ণিমা , বড়দিন কিসের ছুটি নেই?? দেশের সর্ব সেবা পদাধিকারী প্রত্যেক ধর্মাবলম্বীর ধর্মীও আচারে উপস্থিত হয়ে একাত্মতা পোষণ করেন--- আপনি আমি সেই দেশের নাগরিক—আপনার গরব করা উচিত।। তারপর ও কি সাম্প্রদায়িক বলবেন?? ৯০ % মুসলিমের দেশের সংবিধানে স্বভাবতই মুসলিম আধিক্য থাকবে—যেভাবে সংসদে সরকার দলের থাকে।। এটা নিয়ে তালগোল পাঁকালে বলবো আপনারা বগলের নিচে রশুন নিয়ে ঘুরেন।।
ভারতের আগ্রাসী সংস্কৃতি সহ অন্য সবকিছু বাংলাদেশ দখল করে ফেলেছে-- তবে একটা জিনিষ দখল করতে পারেনি এখনো---তা হল ধর্মীও সম্প্রিতি ও সৌহার্দবোধ -- - ৯২ তে যখন বাল সেনারা বাবরী মসজিদ গুড়িয়ে দিল তখন পাশের দেশ এ এর প্রভাব পড়বে এটাই কি স্বাভাবিক ছিলনা??---যেখানে সবকিছুর প্রভাব পড়ে-- অথচ হল উল্টোটা-- কোথাও তো শুনিনি হিন্দু মন্দিরে হামলা চালাতে-- মনে পড়ে--ঐ সময় দুর্গাপূজায় মালনিতে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেবির মণ্ডপের উচ্ছিষ্ট কলা খেয়েছিলাম--সে কি আনন্দ হিন্দু বন্ধুদের সাথে !! দু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলে হতেও পারে- তবে এর জন্যে রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক বলা কি সমীচীন --??।। অথবা সমসাময়িক কিছু ভিডিও চিত্র দেখা যাচ্ছে যেখানে সংখ্যাগুরু হিন্দু দ্বারা সংখ্যালঘু মুসলমানদের বেঁধে নির্যাতন করা হচ্ছে-- কই এর প্রভাবে বাংলাদেশে ''সংখ্যা গুরু দ্বারা সংখ্যা লঘূ '' এরকম ভিডিও তো দেখা যায়নি !!
পাছে সংখ্যালঘুদের একটা ভয় কাজ করে-- ধর্মীও রাজনৈতিক দল গুলো যেভাবে মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে তারা আবার ক্ষমতায় না চলে যায়!!--- ভাউ--- একটু স্টাডি করেন-- ইসলামের ইতিহাসে যান-- দেখবেন মুসলিম খালিফাদের সময় সংখ্যালঘুদের নিয়ে এমন সৌহার্দ পূর্ণ স্টেট ছিল যে আপনার হিংসে হবে কেন যে এই প্রজন্মে জন্ম নিলাম--- তাই বলছি ইসলামী দলগুলো নিয়ে চিন্তা করবেন না--- হ্যাঁ যদি সঠিক ইসলামী দল হয়ে থাকে।।
তারপরেও বলেবন—জানি কেন—নাস্তিক/মুক্তমনা ইস্যুতে—এটা সাম্প্রদায়িক অসাম্প্রদায়িকতার বাইরের বিষয়--- আপনি মুক্তমনা হলেন—নাস্তিক—তাই বলে অন্য একজনের ধরমানুভুতিতে আঘাত করে যাবেন—এটা কোন ধরনের মতবাদ। স্বভাবতই সঙ্ঘাত আসবে। আর সঙ্ঘাত তোঁ হিন্দু বৌদ্ধদের সাথে নয়—যারা আঘাত করছে তাদেরই বিরুদ্ধে।
সাম্প্রদায়িক/অসাম্প্রদায়িক বলার আগে অন্তত এর সংজ্ঞা টা পড়বেন আশা করি।।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯