somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুলেল প্রান্তর...যশোরে গেলে রঙিন এ অঞ্চল ঘুরে আসা যায় সহজেই। নিয়ে আসা যায় রঙিন কিছু অভিজ্ঞতা।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাঁদার খেতে বসন্ত যেন এখনই এসে গেছে

খেত জুড়ে গ্ল্যাডিওলাস

ফাগুন এল বলে। ফাগুনের প্রথম দিনটা এখন ভালোই বোঝা যায় নাগরিক জীবনে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই; চলতি পথে, অফিস-আদালতে মেয়েদের ছেলেদের পোশাক-আশাক বরণ করে নেয় বসন্তের প্রথম দিনটাকে। আর মেয়েদের চুলে অনিবার্য হয়ে ওঠে ফুল।
বসন্তবরণের কয়েক দিন পরই একুশে ফেব্রুয়ারি। শহীদ মিনারের বেদি ভরে ওঠে ফুলে ফুলে। প্রভাতফেরিতে সবার হাতে হাতে ফুল। এত মানুষ এত ফুল—বসন্ত বলে কথা।
এত ফুলের জোগান আসে কোত্থেকে? বড় একটা জোগান আসে যশোর অঞ্চল থেকে। এ কথা জানা ছিল। তাই আমাদের চারজনের দলটি অনেক দিন পর যখন যশোর ঘোরার সিদ্ধান্ত নিল, তখন ঢাকাতেই আহমেদ হাসান বললেন, ফুলের চাষ যেখানে হয়, সেখানে যাব। এর আগে ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় যশোর থেকে কেশবপুর হয়ে আমরা যাই সাগরদাঁড়ি—মধুকবির বাড়ি। ২৫ জানুয়ারি মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মদিন উপলক্ষে এর আগে-পিছে সাত দিন ধরে চলে মধুমেলা। না গেলে বোঝা যাবে না। মধুসূদনের বাবা রাজনারায়ণ দত্তের ভিটেবাড়ি ঘিরে কপোতাক্ষ নদের তীরে এ যেন এক মহাযজ্ঞ। লোকজ মেলা, মধুসূদন নিয়ে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে লাখো মানুষের ভিড়। মধুমেলা দেখে ফিরতে ফিরতে রাত ১০টা।
আমাদের দলে বিশ্বজিৎ মুনশী আর জাবেদ সুলতানের আগ্রহ ফুলের পাইকারি বাজার মানে আড়ত নিয়ে। প্রথম আলোর যশোর প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম জানালেন, সকাল সাতটার মধ্যেই যেতে হবে ফুলের বাজার দেখতে। জায়গাটা ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী। বিখ্যাত সেই যশোর রোডের ওপরেই।

গদখালিতে ফুলের পাইকারি বাজার

যশোর থেকে বেনাপোলের দিকে যে সড়কটি গেছে, সেটা এমনিতে সুন্দর। প্রাচীন সব গাছ ছায়া বিছিয়ে আছে সড়কময়। তবে এখন কিছুটা পত্রহীন। এই সড়কে ১৮ কিলোমিটার গেলেই গদখালী বাজার। সড়কের ওপর ভোর থেকেই বসে ফুলের আড়ত। এখান থেকেই ফুল যায় ঢাকার খামারবাড়ীর পাইকারি বাজারে। আগে যেত শাহবাগে। সাইকেল, রিকশা, নছিমন, ভ্যান-রিকশা—নানা যানবাহনে আশপাশের ফুলখেত থেকে সব রকম ফুল আসে এই বাজারে। ২৮ জানুয়ারি বাজারে দেখা গেল কয়েক রডের গ্ল্যাডিওলাস, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ, জিপসি আর জারবারা। সবই এখানে প্রতি শ বা প্রতি হাজার হিসাবে বিক্রি হয়। পুরো বাজার ফুলে ফুলে রঙিন আর সৌরভে ভরা। মহাসড়কের ওপর শাকসবজির বাজার হয়তো চোখে পড়ে, কিন্তু ফুলেল বাজার আছে এই গদখালীতে। জানা গেল, মেহেরপুরের মুজিবনগরে গাঁদা ফুলের এমন বাজার নাকি আছে।

সতেজ জারবারা

গদখালীর ফুল ব্যবসায়ী মো. সুজন রেজা জানালেন, প্রতিদিন ৮ থেকে ২০ লাখ টাকার ফুল কেনাবেচা হয়। সব ফুলচাষি এখন প্রস্তুত হচ্ছেন একুশে ফেব্রুয়ারি আর তার আগের পয়লা বসন্তের জন্য। ওই দিনগুলোর জন্য ফুল সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সবাই।
বাজার দেখা হলো। ফুলের খেত দেখতে হবে এবার।
দু-তিন কিলোমিটার এগিয়েই মহাসড়ক থেকে দেখা গেল বাসন্তী রঙের খেত। গাঁদার চাষ হচ্ছে সেখানে কয়েক বিঘা জমিতে। জানা গেল, গদখালী বাজার ঘেঁষে বাঁ দিকে যে সড়কটা গেছে, সেটা ধরে গেলে আরও অনেক ফুলেল জমি পাওয়া যাবে। আমরা তাই চললাম পানিসারা গ্রামের দিকে। একের পর এক গোলাপ, গ্ল্যাডিওলাস খেত। মনে হলো, ক্যালেন্ডারে দেখা বিদেশের পুষ্পভরা কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বুঝি চলে এসেছি। রঙিন সব ফুল ফুটেছে প্রতিটি খেতে। পাওয়া গেল এস এন ফ্লোরিটেকের জারবারা ফুলের নার্সারি। নার্সারির স্বত্বাধিকারী শের আলী সরদার জানালেন, জারবারার একেকটা গাছ পাঁচ বছর বাঁচে। এর মধ্যে অনেকবারই ফুল সংগ্রহ করা যায়। ভারতের পুনে থেকে প্রতিটি চারা তিনি কিনে এনেছেন ১০০ রুপি করে। তারপর গ্রিন হাউস বানিয়ে ফোটাচ্ছেন জারবারা ফুল। লাল, বেগুনি, নীল, সাদা, হলুদ, কমলা—কী রঙের জারবারা নেই এই নার্সারিতে! গদখালী থেকে পানিসারা কয়েক কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশজুড়েই পুষ্পভরা খেত। যশোরে গেলে রঙিন এ অঞ্চল ঘুরে আসা যায় সহজেই। নিয়ে আসা যায় রঙিন কিছু অভিজ্ঞতা।
প্রথম আলো
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×