জলের হৃদয়
অবশেষে মেঘজমা হলো,টানা কয়েকদিন
আকাশের গোমড়া মুখের মন খারাপ
করা চাহনি,অতঃপর
আকাশভাঙা ঝুম বৃষ্টি...
রাতের ট্রেনের কু ঝিক ঝিক আর
বৃষ্টির রিমঝিম ধ্বনির সমান্তরাল
পথচলায় পথিক
হয়ে ছুটে চলেছি প্রিয়মুখগুলোর
কাছে...
বিস্তৃত ফসলের
মাঠ,তরুলতা পত্রপল্লব,ডানাম
েলা পাখিগুলো আজ অলস
দেহে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছে প্রকৃতির
কাছে,বৃষ্টির সুরের ঝংকারে তন্ময়
হয়ে শুনছে সে সুর আর
ঐকতানে গুনগুনিয়ে তাল মেলাচ্ছে,তন্দ্র
াচ্ছন্নতা আর অগভীর
হালকা ঝিমুনীতে বুদ
হয়ে এতদিনের অবসন্ন আর ক্লান্তিময়
মূহুর্তের যবনিকা টানছে...
আজ ভিজবো সবাই,,হাসের
ছানাগুলো দৌড়ে মায়ের অধরে আশ্রয়
নিবেনা,লজ্জাবতীর পাতাগুলো আর
লজ্জায় মুখ লুকাবেনা আজ,সকল
জীর্নতা,রোগশোক আর
জড়তাকে পেছনে ফেলে সপে দিবে প্রকৃতির
তপস্যা আর আশীর্বাদ বৃষ্টির
কাছে সকল আবাল বৃদ্ধ বনিতা...
জানালায় শুন্য অনিমেষ চাহনি চেয়ে রয়
দিগন্তের
দিকে উদাস নয়নে,সোদা মাটির সফেদ
গন্ধ,বৃষ্টির জল জানালার
জং ধরা লোহায় মিশে পাগলকরা এক
গন্ধের আর্দ্রতায় আর বাদল দিনের
প্রথম কদম ফুলের মনমাতানো
গন্ধের মাদকতায় মনে করিয়ে দেয়
অবশেষে আমার প্রিয় ঋতু
বর্ষা বুঝি এল
বলে,আকাশে মেঘের ঘনঘটা আর অবিরাম
বারিধারায় মন শুধু ছোটে চলে কৈশোরের
সেই বাধভাঙা দিনগুলোয়.স্কুল ব্যাগ
কাধে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে অন্তহীন
পথচলা,খেলাচ্ছলে কত
ভাসিয়েছি কাগজের নৌকা আর
চেয়ে থাকতাম তার পথচলা দৃষ্টিহীন
সীমানায়,ঝরের দিনে আম কুড়ানো আর
অসীম নিলীমানন্দে রঙধনুর কত রঙ
দেখেছি বন্ধুরা মিলে,,
চিড়া মুড়ি আর কাঠালের
বিচি ভাজা বৈকালিক আড্ডার সেই
শৈল্পিক রুপের কথা মনে করে আজও
অন্তরালে চোখদুটো হয়ে যায়
ঝাপসা,চলে আসে একফোঁটা জল,,,
হে বরষা শুনতে কি পাও?...সত্যিই
অপরুপ অতুলনীয় তুমি..জন্মেছিলাম
একদা তোমারই
কোলে,তাই ভিজব আজ তোমার ই
গানে,তোমার হাত
ছুয়ে ভিজে যাই আজ মহাকাব্যের
সৃষ্টিতে...!