অনেক ছোটবেলায় একদিন স্যার বলেন, পৃথিবীতে আবিষ্কারের শেষ নাই। যুগে যুগে অনেক কিছু আবিষ্কার হয়েছে এবং হতেই থাকবে। তোমাদেরও আবিষ্কার করতে হবে। মাথা খাটাতে হবে। কোনটা করলে কি হতে পারে এসব চিন্তা করতে হবে। তাহলেই একদিন না একদিন কিছু আবিষ্কার করতে পারবে।
এটা শোনার পর থেকেই মাথায় পোকা নড়াচড়া শুরু করে কিছু না কিছু নতুন করতেই হবে! সেই পোকা আজ পর্যন্ত মাথায় নড়েই যাচ্ছে।
সেই আবিষ্কারের পোকায় আমি বহুত ঘটনা ঘটায় ফেলেছি আজ পর্যন্ত! যা এখনো চলছেই!
ঘটনা-০১ঃ তখন আমি ক্লাস টু কি থ্রি তে পড়ি। স্যারের কাছ থেকে সে কথা শোনার পরই মাথায় অবিরত পোকা নড়তো। কি আবিষ্কার করা যায়। একবার ফ্যানের দিকে তাকাই, আরেকবার তাকাই লাইটের দিকে। চারিদিকে তাকাই আর ভাবি ধুর! সবই তো আবিষ্কার হয়ে গেছে! নতুন কিছুই তো নাই আর। সব আবিষ্কার শেষ! কিন্তু মাথায় আবিষ্কারের পোকা তো আর স্থির হয় নাহ!
রাত তখন গভীর । সবাই ঘুমাচ্ছে আর আমার মাথায় তখনও অনেক চিন্তা। ঘুম আসছে নাহ! এমন সময় কিছু একটা মাথায় চলে আসলো! হ্যা আবিষ্কার করার বোধহয় কিছু একটা পাইছি! বিশাল একটা প্রশ্ন তৈরী হলো। যেই কথা সেই কাজ। মাঠে নেমে গেলাম রাতেই। সময় খুব কম। আমি দ্রুত এটা আবিষ্কার করে সবাই কে না বললে অন্য কেউ বের করে ফেলবে! স্যার জগদীশ বসুর বেলায় তাই হয়েছিলো নাকি! উনার রেডিও আবিষ্কার নাকি জি মার্কনী চুরি করে নিয়েছিলেন। যাইহোক অতো ভাবার সময় নাই। আজ রাতেই আমি কিছু করে ফেলবো। গুটি গুটি পায়ে হেটে গেলাম রান্না ঘরের দিকে। তখনোই পা কাঁপছে! ফ্রিজ খুললাম খুব আস্তে করে! থর থর করে কাঁপছে হাতও! নাহ ভয় পেলে চলবে নাহ! ভয় কে করতে হবে জয়। সাহস নিয়ে এক বুক নিশ্বাস নিয়ে ফ্রিজ থেকে দুইটা ডিম বের করলাম। এবার দুইটা খালি বাটি নিয়ে একটায় পানি ভরে মাঝে ডিম রাখলাম আরেকটা খালি বাটিতে তেল ভরেই ডিম রাখলাম। এবার ডিপ ফ্রিজ খুলে দুইটা বাটিই সুন্দর করে রেখে দিলাম। টার্গেট নিলাম ২ ঘন্টা পর দেখবো কি হয়! আর নিজেকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম, যদি অতিরিক্ত গরম পানিতে ডিম সিদ্ধ হয় তবে অতিরিক্ত ঠান্ডাতেও ডিমের কিছু না কিছু তো হবেই! আর এটা যদি সফল হয় তাহলেই পৃথিবীর শ্রেষ্ট স্বাদের ডিম এটাই হবে! হু হা হা হা!!!!
এবার অপেক্ষার পালা শুরু ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত বাজে আড়াইটা। অপেক্ষা করতে করতে বিছানায় চলে গেলাম। একটু হেলান দিলাম বিছানায়, আর একটু পর কি মনে করে শুয়ে পড়লাম, ২ ঘন্টা পর উঠে দেখবো! শোয়ার সাথে সাথেই আমি ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম!
সকালে শুনতে পাচ্ছি বাইরে অনেক চেঁচামেচি। সেটা যে আমার পরম শ্রদ্ধেয় মাতার গলা চিনতে ভুল হলো নাহ! কিছু বুঝতে না পারলে পারলেও ডিম ডিম শব্দটা শুনতে পাচ্ছিলাম। তখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বাজে ৮ টা! বুঝলাম, সাম থিং ইজ রং! তখন ডিমের কথাও আমি একদম ভুলে গেছি! তাই সব কিছু নাহ বুঝার ভান করে চোখ বন্ধ করে রাখলাম। কিন্তু কিচ্ছুক্ষণ পরই যখন আবিষ্কারের কথা মনে পরল! তখনই আম্মু আমার রুমে এসে সুন্দর করে বলল, বাবা আসো তোমার ডিম ভাজি দিয়ে নাস্তা করে নাও! চোখ খললাম, তবে বাকিটুকু ইতিহাস........!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২