somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আলো আর আধাঁর

১৬ ই মে, ২০০৮ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘুম থেকে উঠেই সুসংবাদটি শুনতে পেল সুমন।তার মা-ই তাকে সংবাদটি দিল।আন্তর্জাতিক ছবি প্রদর্শনীতে তার তোলা ছবি প্রথম স্থান অধিকার করেছে।অনেক দিন আগে সুমনের মামা তাকে জন্মদিনে একটি ক্যামেরা উপহার দিয়েছিল।তার পর থেকেই সুমনের ছবি তোলা শুরু।প্রদর্শনীর কথা শুনে কিছু না ভেবেই তার তোলা সবচাইতে ভাল ছবিটি পাঠিয়ে দিয়েছিল সে।সারাটা দিন বন্ধুদের সাথে অনেক সুন্দর কাটল সুমনের।রাতে শোবার সময় ছবিটির কথা মনে পড়ে গেল সুমনের।ছবিটি ছিল একটি বৃদ্ধার।বেশ কিছু দিন আগে সে গিয়েছিল তার গ্রামের বাড়ীতে।বিকাল বেলা সে ঘুরতে বেরিয়ে ছিল। সাথে ছিল তার প্রিয় ক্যামেরাটি।উজ্দেশ্য বিহীন ভাবে হাটতে হাটতে সে চলে এসেছিল একটি কুড়ে ঘরের সামনে। সেখানে দেখতে পেল একজন বৃদ্ধা অদ্ভুত ভংগিতে দরজার সামনে বসে আছে।চোখে মুখে খেলা করছে এক অদ্ভুত বিষন্নতা।প্রায় ডুবে যাওয়া সূর্যের রক্তিম আভা , জানালা দিয়ে ঢুকে পড়া মায়াময় অপার্থিব আলো আর বৃদ্ধার রহস্যময়তা ছবি তোলার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।সুমন আর দেরি করলনা।দৃশ্য টিকে ক্যামেরা বন্দী করে ফেললো সে।আর সে ছবিটি-ই আজ তার কাজের স্বীকৃতি দিল।হটাৎ করে বৃদ্ধাটির কথা খুব বেশি মনে পড়ল সুমনের।

পরদিন বৃদ্ধাটির সংগে দেখা করবার জন্য সুমন রওনা দিল গ্রামের বাড়ীর উদ্দেশ্যে।বিকাল বেলা মামাতো ভাইয়ের সাথে হাটতে হাটতে বৃদ্ধাটির বাড়ীতে পৌছাল তারা।যেতে যেতে শুনল বৃদ্ধাটির করুন কাহীনি।তিনি থাকতেন তার একমাত্র ছেলের সাথে। বেশ কিছু দিন আগে তার ছেলেটি মারা যায় এক অজানা রোগে।সন্তান হারা মা এখন পাগল প্রায়। সারাদিন বসে থাকে আর কি যেন ভাবে। কারো সাথেই কথা বলেননা তিনি।এভাবে কথা বলতে বলতে তারা চলে আসল কুড়ে ঘরটির সামনে।সেখানে তারা দেখতে পেল আরেকটি করুন দৃশ্য।বৃদ্ধাটি আজ বসে আছে ঘরের ভেতর।সামনে একটি খাবার শূন্য থালা। বৃদ্ধাটি এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে থালাটির দিকে।তার চোখে এক অদ্ভুত অভিব্যক্তি লক্ষ করল সুমন।বৃদ্ধাটি হটাৎ তাদের দিকে তাকাল, তাকাল সুমনের কাধে ঝোলানো ক্যামেরাটির দিকে। কিছু না ভেবেই বৃদ্ধাটি একটু মুচকি হাসল। হাসিটি অবশ্য কাঁটা হয়ে বিধল সুমনের কাছে।মনে হল বৃদ্ধাটি যেন তাকেই উপহাস করছে।যেন বলছে "তোমরা আমাদের দুঃখ দূর্দশা কে পুঁজি করে পন্য করোনা। আমাদের কষ্টগুলো আমাদের জীবনের-ই প্রতিচ্ছবি।এ গুলো তোমরা বুঝবেনা।আমাদেরকে সহানুভূতি না জানাও, আমাদের কষ্ট গুলোকে অন্যের আনন্দের কারন করোনা।" সুমনের ভাবনায় ছেদ পড়ল বৃদ্ধাটির নড়াচড়ায়। আগের থেকে আরো শুকিয়ে গেছে বৃদ্ধাটি।'শূন্য থালা আর রূগ্ন দেহ ' আজ চমৎকার একটি প্লট সুমনের কাছে।আজকের ছবিটা আরো আবেদন মূলক হতে পারে।সুমন আবার তাকায় বৃদ্ধাটির দিকে। এবার সে লজ্জা পায়, আর কিছুই ভাবতে পারলনা সুমন।

কিছু কথা : আমার এ লেখাটি লেখা হয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০২ এর ভেতরে।লেখাটি পাঠিয়েছিলাম একটি পত্রিকায়, কিন্তু ছাপা হয়নি। তার পর থেকে আর কোথাও পাঠানো হয়নি।বেশ কয়েক দিন থেকে লেখাটি খুজছি কিন্তু কোথাও পেলাম না।অবশেষে আবার লিখতে বসলাম। জানিনা কত টুকু মিল আছে আগের লেখাটির সাথে।
সামহ্যয়ার-কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:২৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×