এই যে শুনছ? হ্যাঁ তোমাকেই বলছি। কি? কি বললে ? আমি কে? আমাকে চিনতে পারেছ না? আমার সাখে তোমার কি সম্পর্ক? ওহ আমাকে চিনতে পারলে না? আমি ! আমি তোমার কে যেন হই? আহা! আমি ও তো ভূলে গেলাম । তুমি যেন আমার কে হও? যাক বাবা,বাচাঁ গেল।এই যে তুমি আমাকে চিনতে পারলে না অথবা আমি তোমাকে চিনতে পারলাম না।এতে করে দুজনেরই একটা সুবিধা হল।অযাচিত প্রশ্ন কিংবা অনাকাংক্ষিত অবস্থার সৃষ্টি হল না। দুজনই দুজনার কাছ হতে অনেক দূরে চলে যেতে পারলাম, অনেক তাড়াতাড়ি।
আসলেই কি দূরে চলে যেতে পারলাম?তুমি ও কি পারলে আমাকে দূরে ঠেলে দিতে?কি বললে? পেরেছ্! ঠিক আছে। একটা খেলা খেলি এসো। খেলাটা অনেকটা এরকম। ধর একটা দিনে আমাকে তোমার কত বার মনে পড়ে সেটা গুণে রাখবে। তারপর আমরা একটা হিসাব করব। ঠিক আছে?
কি জানি? এসব ফালতু জিনিস আমার একেবারেই ভালো লাগে ন্। আমি তো বলছি, তোমাকে আমি একদম ভূলে গেছি।আমি তোমার কথা আর একটি বারের জন্যেও মনে করতে চাই না।তোমার কথা আমি ভুলে গেছি । আচ্ছা ঠিক আছে। আমরা ঠিক ৩(তিন)মাস পর দেখা করব ঠিক এখানে।ঠিক চারটার সময়।
কি এসেছ?আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আসবেই না, আমাকে ভূলেই গেছ।যাক তাও ভাল তুমি যে আমাকে ভূলে গেছ এটা প্রমাণ করার জন্য তুমি এসেছ।অনেক দিন পর তোমাকে দেখে আমার যে কেমন লাগছে এটা আমি বলে বোঝাতে পারব না।যাই হোক তোমার গণণার কাগজটা দাও দেখি হিসাবটা আমি করে ফেলি। আচ্ছা দাড়াঁও তোমারটা থাক আগে আমার কাগজটা তোমাকে দেই। তুমি পড়ে দেখ।কি বললে ?তুমি আমার লেখা পড়বে না।এতটাই রাগ আমার উপর?আচ্ছা তাহলে আমিই পড়ে শুনাই।তুমি চোখ বন্ধ করে শুনতে থাক, তাহলে আমাকে তোমার দেখতে হবে না।
তাহলে শুরু করছি। দিনের শুরুটা করছি রাত ১২ টার পর থেকে। এরকম সময় আমি ঘুমিয়েই থাকি।তুমি হয়তো জেগেই থাক।তাই রাতের ঐ সময়টায় তোমাকে অতটা মনে পড়ে না।সমস্যা হয় একটু পর থেকে ।আমি যে তোমাকে পাশ বালিশ বানিয়ে ঘুমাই তাতো তুমি জান।অবশ্য এখন তো আর তোমাকে কাছে পাই না তাই ঘুমের মাঝেও ঐ সময়টাতে খুব বেশি অনুভব করি তোমাকে। ধর ১২ টা থেকে ভোর ৬ টা অর্থাৎ এই ৬ ঘন্টা তোমার কথা মনে হতেই থাকে।এরপরের সময় অর্থাৎ আমার অফিস যাবার সময়টা ৭টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত। আমাকে অফিস পাঠানোর তোড় জোড়, জামা প্রান্ট গুছানো কিংবা তাড়াহুড়া করে নাস্তা বানানো এবং গুছানোর ব্যস্ততার সময়টুকু আমি সর্ম্পূণ উপভোগ করতাম অর্থাৎ এই ১ ঘন্টা তুমি আমার অনুভূতিতেই রয়ে গেছ। ঐ সময়টাতেও তোমার কথা মনে পড়ে। তারপর ধর অফিসে যাবার পর তোমাকে SMS করা এবং তুমি অফিসে পৌছেঁছ কি না এটা জানার জন্য পরের ২ ঘন্টার কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।এবার ধর ১১ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অফিসের প্রচন্ড ব্যস্ততা, এর মাঝে ও তোমার কথা মনে পড়ে কি না তুমি জানতে চাও তাই না?সত্যি কথা বলতে কি এই সময় এর মধ্যে ১-২ টার মাঝে তোমাকে মনে পড়ে।তুমি-ই তো শিখিয়েছিলে যে তোমাকে খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিতে । ফলে এত দিন পরে ও অভ্যাসটা বদলায় নি বরং এখন আরো বেশি করে মনে পড়ে।বিকালের সময়টা তো থাকে বাসায় আসার আশায়। তোমার সাথে কথা না বললেও ঐ সময়টাতেও তোমাকে অনুভব করি। এরপর বাসায় আসা।এসেই তোমাকে খুজি জড়িয়ে ধরার আসায়।কিন্তু তুমি তো আমার কাছে এখন স্বপ্ন,কল্পনা কিংবা মরিচীকা। খুব বেশি অনুভব করি ঐ সময়। এরপর একসাথে টিভি দেখা কিংবা খুনসুটি সবই রয়ে গেছে যার যার জায়গায় আমার স্বত্তায়, আমার অনুভূতিতে কিন্তু তুমি এখন অনুপস্থিতি। আবার ঘুম , আবার একটি দিনের শুরূ আবার দিনের পূণরাবৃত্তি। কিছু কিছু বিশেয় কথা তো বাদ-ই দিলাম। সকাল শুরূর সময়টা কিংবা এক সাথে খেতে যাওয়ার কথাগুলো বলে নিজেকে আর কষ্ট দিতে চাই না।যাই হোক তুমি তো আমাকে ভূলেই গেছ কিংবা ভূলে যেতে চাও।আমিও তাই চাই তুমি আমাকে ভূলে যাও।আমার মত এমন একজন খারাপ মানুষকে না হয় নাই বা মনে রাখলে এতে জগৎ সংসারের কোন ক্ষতি তো আর হবে না।
তোমাকে মনে পড়া = ২০ঘন্টা /২৪ঘন্টা
= ৮৩%
কি ব্যাপার?এভাবে এমন অদ্ভূত ভংগিতে তাকিয়ে আছ কেন?জানি তুমি আমাকে একে বারেই পছন্দ কর না।তাই বলে এভাবে তাকাবে? তোমার কাগজটা আমায় দাও।তুমি তো আর পড়ে শুনাবে না আমি-ই পড়ি।
তোমাকে লিখতে আমার খুব খারাপ লাগছে।সাথে সাথে ঘৃণা ও হচ্ছে।যাই হোক তোমাকে আমি করুণা করেই লিখছি।তোমার কথা ভূলে যাবার চেষ্টা করলে ও মাঝে মাঝে মনে পড়ে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে।এই যেমন তোমার বিশ্রী হয়ে শোবার সময়, আমার গায়ের উপর পা তুলে মড়ার মত ঘুমাও।তোমার ঘাম আর তোমার গায়ের গন্ধে আমার ঘুম ভেঙ্গে যেত।তবু ও আমি সহ্য করতাম।এখন তোমার কথা মনে করে হাসি আর মজা পাই।এরপর সকালে আরামের ঘুম থেকে উঠে তোমার ফালতু কাজ গুলো করে দিতে হত।এখন সকালে তোমার কথা মনে করে হাসি আর মজা পাইএরপর আসি অফিসের কথায়।তোমার কথা পনে পড়ে ঐ সময় খুব বেশী কারণ মনে হয় যাক এই সময়টুকু ঐ ছেলেটার কাছ থেকে মুক্তি মিললো।ফোন করে না, কথাও বলবে না। অফিস থেকে আসার পর আবার সেই ঝামেলা্,জড়িয়ে ধরা, গায়ের গন্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি।এর পর থাকে টিভি দেখার সময়টুকু।ঐ সময়টা মোটামুটি ভালই থাকে কারণ আমার সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকে টিভিতে। অন্যদিকে আর খেয়াল থাকত না।এখন ।অবশ্য তোমার কথা মনে পড়ে।কি বিশ্রী ভংগিতে তুমি তাকিয়ে থাকতে টিভির দিকে।এরপর ঘুম। একটি দিন শেষ। আরেকটি এক-ইরকম দিনের মূচনা।ওহ্!বলতে ভূলেই গেছি, অন্য সময়গুলোতেও তোমার কথা মনে পড়ে।এই যেমন ধর Shopping করতে গেলে, তোমার কিপটে স্বভাবটা খুব বেশি মনে হয় আর খেতে গেলে অল্প খাবার নেওয়ার কথা না হয় বাদ-ই দিলাম। হাঃ হাঃ হাঃ!পড়লাম সবটা।কি দেখছ হাসছি কেন?জান?তোমার আর আমার লেখার মাঝে একটা মজার মিল আছে।আমাদের দুজনের মনে পড়ার ফলাফল সম্পূর্ণ এক।
তোমাকে মনে পড়া = ২০ঘন্ট/ ২৪ঘন্টা
= ৮৩%
কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত।হাঃ হাঃ হাঃ…………একি তুমি কাদঁছ?তোমার চোখে পানি কেন?আমার দুদর্শা দেখখে আমি কিছুই মনে করি নি।সব মানুষতো আর সুখী হয় না।চীর জীবন ,চীরকাল ধরে নাও আমিও ঐ কাতারের লোক।যে সারা জীবন ভালবাসার কাঙাল হয়ে থাকবে কিন্তু ভালবাসা পাবে না।
এ কি? এটা আবার কি?কাগজ!কি কাগজ?লেখা। তোমার লেখার বাকি অংশ। ও আচ্ছা। থাক আর নাই বা পড়লাম।কি বললে পড়তেই হবে।আচ্ছা ঠিক আচ্ছে পড়ছি। আগের চিঠিট না হয় বাদ-ই দাও। এই চিঠিটাই পড়।
তোমাকে মনে পড়া বা না পড়ায় আমার কিছু যায় আসে না। আমি চাই তুমি সব সময় আমার পাশে থাক। তোমার ঐ বিশ্রী মুখতাই না হয় আমি দেখি বেশি করে। হিসাব টা একটু অন্যভাবে দেই।
তোমাকে মনে পড়া = ২৪ঘন্টা/ ২৪ঘন্টা
= ১০০%
তোমার জন্য আমার সবটুকু ভালোবাসা আর এটা বুঝেছি এই তিন মাসে বিচ্ছেদের মাধ্যমে। আমার হাতটা কখনো ছাড়বে না বল?হাতে হাতে রেখে পার করতে চাই বাকি জীবনটা।কি? ধরবে তো আমার হাত?
মধুর তিক্ততায় ভরে গেল সমস্ত মনটা।কি জানি স্বপ্ন দেখলাম নাকি!নিজেকে একটু চিমটি কেটে দেখি।একি ? চিমটিতে ব্যাথা লাগছে না কেন?ঠিক আছে,আমি চিমটি কাটতেই থাকব যতক্ষণ ব্যাথা না লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৫৯