somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর কতজনকে কোপালে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হবে?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রবাদে আছে চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী। অর্থাৎ চোরকে যতই ধর্মের কাহিনী শুনানো হোক না কেনো, সে চুরি করবেই। অবাক করা ব্যপার হলো, আজকাল চোরই আমাদেরকে ধর্মের কাহিনী শুনাচ্ছে। সন্ত্রাসী নিজেই সন্ত্রাস বিরোধী বুলি আওড়াচ্ছে। জঙ্গি নিজেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে!!

সিলেটে ছাত্রীকে কোপানো ছাত্রলীগ নেতা বদরুল এর জ্বলন্ত উদাহরন। যে কিনা নিজে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিজেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে!! উপরের ছবিতে আমরা তাই দেখতে পাচ্ছি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকান্ডের এমন জ্বলন্ত উদাহরণগুলোর পরিমান এত বেশি যে, অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে এর এক দশমাংশ থাকলেই তারা ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়ে যেতো।

খুন, ছিনতাই, রাহাজানি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ছাত্রী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি-দখলবাজিসহ এমন কোনো জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ড নেই যা ছাত্রলীগের দ্বারা সংগঠিত হয়নি। মায়ের পেটের অপরিণত শিশু পর্যন্ত তাদের হিংস্রতার হাত থেকে রেহাই পায়নি।

প্রশ্ন হলো, আর কত অপকর্ম করলে বা কতজনকে কোপালে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হবে? বিশ্বজিৎ কিংবা খাদিজার মত আর কতজনকে প্রকাশ্যে লাইভ কোপালে টকশোজীবিগন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলবেন?

জাফর স্যার ছাত্রলীগ নামক আগাছাকে তার কাছে পাঠিয়ে দিতে বলেছেন, তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর দিয়ে নাকি তিনি ফূলগাছে পরিণত করবেন। এই বুঝি তার ফুলগাছের নমুনা?? বদরুল তো তার কাছেই ছিলো, তার প্রতিষ্ঠানেরই ছাত্র!! ফুলের চারার নাম করে গাঁজার চাষ করেছিলো জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রলীগ নেতা। জাফর স্যারের ফুল গাছের রহস্যও কি তাহলে এমনই??

জাফর স্যাররা আর কতিপয় নিকৃষ্ট মিডিয়ার অযাচিত প্রশ্রয় পেয়ে ছাত্রলীগ আজ এক দানব সংগঠনের পরিণত হয়েছে। জাফর স্যারদের ফিল্টারে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ নগণ্য বখাটেপনা হয়ে ধরা দেয়। আর বাংলানিউজের মত কিছু নিকৃষ্ট মিডিয়ায় ছাত্রলীগের চাপাতির কোপ হয়ে যায় বখাটের কোপ!! অথচ অন্য ছাত্রসংগঠনের হাতের সামান্য প্লাষ্টিকের পাইপ তাদের চোখে ভয়ংকর পাইপগান হয়ে ধরা দেয়!!



বদরুল আলম শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহসম্পাদকের মত এত বড় নেতা হওয়া স্বত্বেও তারা তাকে বখাটে হিসেবে উপস্থাপন করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। অথচ বিরোধী কোনো ছাত্রসংগঠনের বেলায় সংগঠনের সাথে দূরতম কোনো সংশ্লিষ্টতাকেও তারা ফলাও করে প্রচার করে!! নিষিদ্ধের দাবিতে হাঁকডাক শুরু করে। অথচ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের এক দশমাংশও বাংলাদেশের কোনো ছাত্রসংগঠন করেনি।

নারীবাদিরাও আজ নিশ্চুপ!!! একজন নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে কোপানোর পরও তাদেরকে সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছেনা!! ইডেন কলেজের সাধারন ছাত্রীদেরকে ছাত্রলীগ তাদের নেতাদের মনোবাসনার জন্য উপঢৌকন হিসেবে পাঠালেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, বর্ষবরনের দিনে ছাত্রলীগ নারীর শ্লীলতা হানি করলেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করলেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদেরকে নামাজ পড়া কিংবা হিজাব পড়তে বাধা দিয়ে নারীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, রাস্তায় প্রকাশ্যে নারীকে কোপালেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে!!

কিন্তু যেখানেই ধর্মের কোনো সংশ্লিষ্টতা তারা পাবে, কিংবা হিজাব পড়তে বাধ্য করার সংবাদ পাবে, কিংবা মেয়েদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার সংবাদ পাবে সেখানেই তাদের চেতনা হুড়মুড় করে জেগে উঠে। ইসলাম প্রচারকারী সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবিতে তারা চেঁচামেচি করেন। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ত্রাস, খুনি, ধর্ষক, নারীর শ্লীলতা হরণকারী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি তারা একটিবারও তুলেননি।

এখনো সময় আছে। আমরা আশা করি নারী জাতির স্বাধীনতা, সতিত্ব ও নিরাপত্তার হুমকী ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে নারীবাদি এবং টকশো বক্তারা এখনই সোচ্চার হবেন। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলবেন।

জঙ্গি ছাত্রলীগকে এখনই না থামালে, তাদের সন্ত্রাস কিংবা চাপাতির কোপ থেকে আপনি কিংবা আপনার সন্তানকেও রক্ষা করতে পারবেন না। কারন ইসলামী নামধারী জঙ্গিরা একটি নির্দিষ্ট কারনে এবং শুধুমাত্র পুরুষদের উপর চাপাতি চালালেও ছাত্রলীগের জঙ্গিদের চাপাতি কোনো কারন, কোনো সময় কিংবা নারী পুরুষের ধার ধারেনা।

সুতরাং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত করতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৪০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×