মনের অদ্ভূত কেমিস্ট্রির ব্যাখ্যা কি আমার জানা নেই। যে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার জন্য তাপ দরকার, চাপ দরকার। সরাসরি। মনের সাথে লাগোয়া শরীরের কেমিস্ট্রিটা কি অদ্ভূত দেখ, বাহ্যিক, চোখে দেখা যাওয়া পার্থিব কোন তাপ চাপ ছাড়াই অ্যাড্রানালিনের কাজ বেড়ে যায়, রক্তনালীগুলো হিম সিম খায় ওভারলোড সামলাতে।
যে কখনও প্রেমে পড়ে নি, সে এর কি বুঝবে বল? যার মা নেই, জন্মাব্দি কখনও মায়ের বুকে শোয় নি, সে কি মা কথাটা ভাবতেই নরম আলোতে অন্ত:করণ ভরে ওঠে কেন, কেন চোখের দু'কোণে জল জমে উঠে তা বুঝবে?
তাই বলি, আমার এ ভালবাসার অর্থ তুই বুঝবি না। শুনতে শুনতে হাই চাপবি, কিন্তু এটাই সত্যি। আমার জীবনের চূড়ান্ত এবং সবচেয়ে বড় সত্যি।
অভিযোগ করিস ইরুকাস হয়ে উড়তে চাওয়া আয়নার হয়ে? সে আয়নার তুই কি জানিস? আয়না পেয়েছি জীবনে অনেক। কিন্তু তার বেশির ভাগই আংশিক প্রতিবিম্ব দেয়। গাড়ির কাঁচের সামনে দাঁড়ালে দেখবি নিজেকে কেমন চ্যাপ্টা মনে হয়। পানির সামনে দাঁড়া, কাজ চলবে তবু নিজেকে পুরোপুরি দেখতে পাবি না।
এই একটাই আমার ত্রুটিহীন আয়না। রূপার প্রলেপ উঠে নেই একটুও। সেই আয়নার দিকে তাকিয়ে পরিপূর্ণ নিজেকে দেখেছি। দেখেছি, বাদামী চোখগুলোতে চূড়ান্ত সৌন্দর্য পাওয়ার দুরন্ত নেশা, তীব্র আকাঙ্খা।
দেখেছি সেই একই ভালবাসা, যে ভালবাসা আমার জীবনের আর সব সত্যকে হার মানিয়ে দেয়।
ভালবাসি অনস্বীকার্য, পরম সত্য, পরম সৌন্দর্যের আধার একক সত্ত্বাকে। আমার ভালোবাসা আমাকে আলো দিয়ে জীবনের রঙ দেখিয়ে দেয়। বৃষ্টি দিয়ে নতুন করে বাঁচতে শিখায়। শীতল পৃথিবীতে আশার উষ্ণতা দেয়। ভালবাসা স্বার্থপর? জানি তো, নইলে এই ভালোবাসার উপরে আর কিছুকে ঠাঁই দিতে জানি না কেন?
এই ভালবাসা আমার মন ছুঁয়েছে, আমার সারা শরীরে ভালবাসার স্পর্শ। প্রতিটা কোষ, অনু পরমাণুতে সেই সৌন্দর্য স্পর্শ, ভালবাসার সৃষ্টিশীল পবিত্র স্পর্শ। এই ভালবাসাকে কি করে অস্বীকার করি বল? এ যে আমার জন্য খুব বাস্তব, খুব বেশি।
আর সব সত্য এর কাছে অনুজ্জ্বল। মিনমিনে।
জানিস, আয়নাটায় আমি একই ভালবাসার প্রতিবিম্ব দেখি। তাই আমি শঙ্কাহীন হতে শিখছি। পথ না হারানোর প্রতিজ্ঞা নিতে শিখছি। আমি হতাশা শব্দটা মুছে ফেলা শিখছি। আমি অন্ধকারকে আলোকিত করতে শিখছি। আমার চলার পথ, অনাদি, অনন্তকালের পথ। আমাকে এই ছোট্ট জীবনের ফুরিয়ে যেতে নেয়া পথের হিসেবে চললে হয় না রে, আমার ছোট্ট মাথায় ভাবনা রাখতে হয় সেই অফুরন্ত পথের। বুঝবি না তুই জানি, কিন্তু এই পথে এক সঙ্গীকে ভীষণ রকমের চাই। যাকে পেতে হলে, ভালবাসার শিকলে নিজেকে জড়িয়ে নিতে হবেই, অস্বীকার করা যাবে না ক্ষনিকের জন্যেও। আর এক সঙ্গী, আমার ত্রুটিহীন আয়নাকেও পেলে ভালো লাগবে। কিন্তু প্রথম সঙ্গীর কাছে সে মূল্যহীন। প্রথম সঙ্গীকে হারিয়ে দ্্বিতীয় জনকে চাইতে পারি না রে।
চাইও না।
এ শুধু আমার নিজের তৈরি নিয়ম না রে, এ আমাদের নিয়ম। আয়নাটা তোকে ধার দিব (একটু স্পেশাল ঘটনা ঘটবে। নিজের প্রতিচ্ছবি দেখবি না
)। গভীর ভাবে তাকিয়ে দেখিস তুই এই একই ভালবাসার আলো দেখতে পাবি।সময়ের আবর্তে পিছনে আর অনেক দূরে চলে যাওয়া সে তোকে এখনও ভাবায়। বিষণ্ন করে ফেলে, আনন্দিত করে। আর আমার এই ভালবাসা, তার চেয়ে বেশি লক্ষগুণ বেশি বাস্তবতা নিয়ে ছুঁয়ে থাকে আমাকে প্রতিক্ষণ।
বুঝতে চেয়ে অবুঝ হোস। হেলায় রক্তাক্ত করিস। অথচ বুঝবি যে না, সে তো আমি জানি!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



