somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেমে পড়ার ওষুধ খেলাম?

০৮ ই মার্চ, ২০০৭ ভোর ৬:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলায় রূপ কথায় পড়েছি, রানীর মনে বড় দু:খ, রাজা তাকে ভালোবাসে না। তখন, কোন এক আশ্চর্য দেবদূত এসে বিশেষ কোন মন্ত্র পড়া আপেল দেয়, যা খেয়ে রাজা রানীর প্রেমে হাবুডুবু। ঢাকার রাস্তায়ও তো কত বিজ্ঞাপন, 'স্বামী/স্ত্রী বশীকরণ' করার জন্য পানি পড়া! শ্রেক-এ ওই ভিলেনটা, শ্রেকের বউ ভাগাতে চাইছিল প্রেমে পড়ার বিশেষ ওষুধ দিয়ে। যুগে যুগে মানুষের মাথায় এই আইডিয়া চলে এসেছে... একটা কিছু খাইয়ে যদি প্রেমে বশীভূত করা যেত, আহা!

সাইকোলজি ফ্যাকালটিতে সারা বছরই বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। ওগুলোতে সাবজেক্ট হিসেবে অংশগ্রহন করলে কখনও টাকা পাওয়া যায়, কখনও পরীক্ষায় বোনাস নম্বর পাওয়া যায়, কখনও স্রেফ রিসার্চের পদ্ধতি সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়। পরীক্ষায় বোনাস নম্বরের লোভে সাইকোলজির এক্সপেরিমেন্টগুলোর উপর চোখ বুলাচ্ছিলাম, তখনই দেখলাম বিজ্ঞাপনগুলো। ওরা দাবী করছে, 'লাভ পোশন' বা প্রেমে পড়ার ওষুধ খাওয়াবে সাবজেক্টদের, তারপরে তাদের পরিবর্তন নিয়ে নীরিক্ষা চালাবে!

আমি তো পুরা পাংখা! লাভ পোশন হিসেবে যাকে দাবী করেছে তা নিয়ে একটু রিসার্চ করলাম। 'অক্সিটসিন' নামের হরমোনটা মেয়েদের শরীরে পাওয়া যায় মার্তৃত্বের সময়। সে এক জাদুকরী ব্যাপার! একটু ভাবলে বুঝা যায় মাতর্ৃত্বের মত একটা দীর্ঘস্থায়ী শারিরীক (অন্তত: তিন বছরের মামলা) এবং মানসিক কষ্টকর ব্যাপারের মধ্য দিয়ে একবার যাওয়ার পরে একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আর যেতে চাওয়ার কথা না। এই অভিজ্ঞতার কথা জানার পরে মা হতে চাওয়ার কথা না। অথচ প্রতিটা মেয়ে, সব জেনে শুনেও মা হতে চায়। একবারেই ক্ষান্ত থাকে না, বার বার হতে চায়। মার্তৃত্বের অনুভূতিটা ঘৃণা করে না, বরং ভালবাসে। এর জন্য অনেকাংশে দায়ী এই অক্সিটসিন। অক্সিটসিন, যাকে বলে 'মায়াভাব' জাগিয়ে দেয়, খারাপ আর কষ্টকর স্মৃতি ভুলিয়ে দেয় (এই জন্যই কি মেয়েরা প্রেমের ছ্যাঁকা ছেলেদের চেয়ে ভালো হজম করে? জানি না।), ভালবাসিয়ে দেয় আশে পাশের মানুষদের।

অক্সিটসিন একটা বড় ফ্যাক্টর, কেন পিতর্ৃত্বের ভাব ঠিক মার্তৃত্বের ভাবের মত প্রগাঢ় না। আয়েশা আপু মেডিসিনে পড়ছে, ও বলছিল কিছু পরিসংখ্যানের কথা। অস্ট্রেলিয়ায় সন্তান জন্মানোর সময় প্রচুর সন্তানের বাবা নিজের ভালোবাসার মানুষটার হাত ধরে থাকতে চায়, কষ্ট যা করার দু'জন এক সাথেই করব এই বাসনায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ছেলেগুলোর অর্ধেকেরও বেশি কিছুক্ষনের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায়, ভালোবাসার মানুষটাকে তড়পাতে দেখা সহ্য করতে পারে না বলে। ছেলেরা একই কষ্ট চোখের দেখাও সহ্য করতে পারে না, অথচ মায়েরা, কি আশ্চর্য প্রক্রিয়ায় পুরো কষ্টটা নিজেরা সহ্য করে তারপরে বেমালুম ভুলে বসে থাকে। আগ্রহ ভরে আরও একবার একই কষ্ট চায় নিজের করে। তারপরে আরও একবার! কোন এক ভয়াবহ শারিরীক ত্রুটির জন্য যদি মায়ের শরীরে অক্সিটসিন তৈরি না হয়, তাহলে সন্তানের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় না ওভাবে। অনেক মা তার যাবতীয় দুর্ভোগের জন্য সন্তানকে দাবী করে এক সময় সন্তানকে ঘৃণা করা শুরু করে। এরকম খবরে আসে, মায়েরা নবজাতককে নিজ হাতে হত্যা করেছে। অনেক সময় এই শারিরীক ত্রুটির জন্যই। সব জেনে অনেক বার আলহামদুলিল্লাহ বলতে ইচ্ছা হয়!

আমার ধারণা বাঙালী মেয়েদের মধ্যে আল্লাহ বাড়াবাড়ি রকমের অক্সিটসিন ঢেলে দিয়েছে!

যাই হোক, মহা আগ্রহ নিয়ে এক্সপেরিমেন্টে নাম লিখালাম। তবে এক্সপেরিমেন্ট প্রসিজার শুনে একটু দমে গেলাম। প্রথমে আসল 'প্রেমে পড়ার ওষুধ' [গাঢ়]বা[/গাঢ়] একটা ভেজাইল্যা ওষুধ খাওয়ানো হবে। তারপরে ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হবে। ওই শক খাইতে খাইতে কম্পিউটারে কতগুলা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে । আমি কই, যাহ আমার লাগবো না প্রেমে পড়ার ওষুধ। ন্যাচারালি যা প্রডিউসড হচ্ছে তাই সই। কিন্তু আমাকে ভুজং ভাজং দিয়ে কি করে যেন রাজি করে ফেলল । তারপরের ঘটনা অতি করুণ, আমাকে কি একটা খাওয়াইলো বটে, তারপরে চেয়ারের সাথে বেঁধে ইলেক্ট্রিক শকও দিল (আম্মাআআ)। আসলে বান্ধে নাই, শকটা খুব অল্প পরিমানের ছিল, কেবল শকের ভয়ে হার্টবিট বেড়ে যাওয়াটা দেখতে চাইছিল ওরা। আল্লাহ জানে কেন?

সেটা কথা না। কথা হচ্ছে গিয়ে, আমি বুঝতে পারছি না আমাকে কোনটা খাইয়েছে। মীরার ধারণা আমাকে উলটাটা খাইয়েছে। কারণ বাসায় ফিরে ওকে বকা ঝকা করেছি, বুকে জড়িয়ে ধরি নি । আমারও সন্দেহ হচ্ছে আমাকে ভেজালটা খাইয়েছে, এখনও কারও দ্্বারা 'বশীভূত' হই নি
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×