somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অজান্তার সমুদ্র বিলাস

০২ রা মে, ২০০৭ বিকাল ৪:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তুমি তো জানো,আগে কখনো সমুদ্র দেখিনি আমি।তাই কক্সবাজার যখন গিয়ে পৌঁছালাম আমি ছিলাম ভয়াবহ উত্তেজিত।শুধু একা আমিই নই,অন্য যারা
আগে সমুদ্র দেখেনি তারা সবাই।

আমরা পৌঁছেছি ২৫ ফেব্র“য়ারী সকাল ১০:০০টায়।নাস্তা করতে করতে বেজে গেল
১০:৩০টা।বারবার মনে হচ্ছিল কী দরকার নাস্তা করার!

অবশেষে আমাদের ট্যুর গাইড তারেক ভাই এসে বললেন,চল।

পেটের মধ্যে একটা গুড়গুড়ে অনুভূতি আর বুক ঢিপঢিপ নিয়ে সম্মোহিতের মতন
হাঁটতে শুরু করলাম।কিছুদূর যেতেই সামনে ঝাউগাছ,তারপর শোঁ শোঁ শব্দ আর
তারপর.....................অবশেষে সমুদ্রের সামনে.............।
কিন্তু বিশ্বাস কর,আমি হতাশ হয়েছিলাম।এই.......এই সমুদ্র...............!
আমি এরকম ভাবিনি,আমি এরকম স্বপ্ন দেখিনি।
আর সবার সাথে এগিয়ে গেলাম।
তারপর সোজা পানিতে।লাফালাফি,দাপাদাপিতে কোন দিক দিয়ে যে ১:৩০টা বেজে
গেছে টের পাইনি।

বিকেলে প্ল্যান হল হিমছড়িতে যাওয়া।আগে যারা এসেছিল,তাদের কাছে শুনলাম দেখার কিছু নাই।শুধু পাহাড় বেয়ে ওঠা ছাড়া।যেতে আর এতটুকু ইচ্ছে ছিল না,বরং
মেয়েরা সবাই বার্মিজ মার্কেটে যেতেই বেশি আগ্রহী ।কিন্তু দলের সবাইকে একসাথে
থাকতে হবে।গেলাম হিমছড়ি.................পাহাড়ে উঠলাম।হ্যাঁ,এখানে ভাল লাগছিল।কারণ জায়গাটা সুন্দর।একদিকে পাহাড় আর একদিকে সমুদ্র।সূর্যাস্তের একটু আগে গিয়েছিলাম আমরা।সোনালী আলোয় সোনা হয়ে ছিল চারদিক।ছবি তুললাম একগাদা।

কে যেন বলল পাহাড়ের উপর থেকে সূর্যাস্ত দেখতে বেশি সুন্দর।কিন্তু আমি বললাম সৈকতে বসে দেখব।তারপর আর কি যত দ্রুত সম্ভব নেমে গেলাম..............সোজা সৈকতে।সূর্য ডুবে যাচ্ছে,সূর্যকে হাতের তালুতে নিয়ে ছবি তুলতে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ল।আমিও তুলেছি।কিন্তু জানো,আমার ভাল লাগছিল না।কিছুই ভাল লাগছিল না।কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল না।অন্যদের কাছ থেকে দূরে সরে গেলাম।
জায়গাটা ফাঁকা,আমরা ছিলাম একেকটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতন।সবাই একসাথে কিন্তু কেউ কারো সাথে না।

কী য়ে মনে হল হাঁটতে শুরু করলাম।সাগর গর্জন করে চলেছে,একেকটা ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে পায়ে,ভিজিয়ে দিচ্ছে পায়ের পাতা আর একটু একটু করে ডুবিয়ে দিচ্ছে আমাকে।কোথায়?
আমি জানি না।তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না কেমন লাগছিল তখন আমার।
নিজেকে কী যে একা লাগছিল।মনে হচ্ছিল কোথাও বুঝি কেউ নাই,আমি একা........
বুকের ভেতর কী য়ে হাহাকার,যেন দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে যাচ্ছে,গুড়িয়ে যাচ্ছে।তুমি জানো,নিজেকে কখনো এতটা অসহায় মনে হয়নি আমার।
কতণ ঐভাবে হেঁটেছিলাম জানি না।অনেকণ পরে শুনলাম কেউ চিৎকার করছে।
চিৎকার করছিল আমার এক বন্ধু,ডাকছিল আমাকে।কিন্তু ওটা যে আমারই নাম এটা বুঝতেই আমার অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিল।ফিরতে হবে এখন.........
চুপচাপ হেঁটে যাচ্ছি বাসের দিকে।এক ফ্রেন্ড এসে বলল,তোমার মন খারাপ?
কোনরকমে মাথা নাড়লাম,না।ও কিছুণ চুপ করে থেকে আবার বলল,তুমি কি কাঁদবা নাকি এখন?
জানি না তারপর কী হল।যেন ভেতরে কোন একটা সুইচ অন হয়ে গেল,কেঁদে উঠলাম হু হু করে।মুন এসে হাত ধরে নিয়ে গেল বাসে।আসার পথে আধাঘন্টা সময় আমি শুধু কেঁদেছি।যেন বুকের ভেতর যত কষ্ট,যত ােভ সব নিংড়ে বের করে দেবো।
তুমি জানো সোহেল ভাল গায়।সোহেল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ গান গেয়েছিল ঐ আধাঘন্টা।একটার পর একটা.........
কারণ সবারই তখন একই অবস্থা।
কী যে হল........কী যে হল.............

সবাই বলেছিল সমুদ্র নাকি বারবার ডাকে।তখন টের পাইনি কিন্তু এখন বুঝি,সমুদ্র ডাকছে..............ডাকছে..........ডাকছে..............
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হত্যাকাণ্ড বন্ধে কেন ম্যাজিক জানা জরুরি ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৪৪


জাতি হিসাবে আমরা বড়োই অভাগা। ইতিহাসের মঞ্চে রাজা বদল হয়, কিন্তু চিত্রনাট্য বদল হয় না। এক রাজা যায়, আরেক রাজা আসে; কিন্তু পর্দার পেছনের কলকাঠি নাড়া সেই একই হাত।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডোডোরা আমার পোষ্টে এসে আমাকে ভৎসনা করেন।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৬



ব্লগ এখন নিস্তব্ধ, মাঝে মাঝে ১/২টা পোষ্ট আসে, মৃতের মতো পড়ে থাকে, সামনের পাতা থেকে পেছনে পাতায় যায় না। তবে, আমার পোষ্টগুলো সেইদিক থেকে কিছুটা সুখী,... ...বাকিটুকু পড়ুন

৪–৫ আগস্ট : রাষ্ট্রক্ষমতার মুখোশ খুলে দেওয়া রাত ও দিন

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০১

৪–৫ আগস্ট : রাষ্ট্রক্ষমতার মুখোশ খুলে দেওয়া রাত ও দিন

৪ আগস্ট রাত — আশ্বাসের আড়ালে ছদ্ম-অভ্যুত্থানের নীরব নকশা
৪ আগস্ট সন্ধ্যায় কোটা-আন্দোলনের বিশৃঙ্খলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যখন রাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা,... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে এমপি হওয়ার মতো ১ জন মানুষও নেই

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪



দলগুলোতে মানুষই নেই, আছে হনুমান।

আমেরিকায় যদি ট্রাম্প ক্ষমতায় না'আসতো, বাংলাদেশে হ্যাঁ/না ভোট দিয়ে ইউনুসকে দেশের প্রেসিডেন্ট করে, দেশ চালাতো প্রাক্তন মিলিটারী অফিসারেরা ও বর্তমান জামাতী অফিসারা মিলে। দুতাবাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

=চলো দেখি সূর্য উদয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫০


শীত কুয়াশা ফুটো করে,
সূর্য যখন উঠে নীলে
দেয় ছড়িয়ে সোনা আলো,
দেখলে মনে শান্তি মিলে।

একটি সকাল ফের পেয়ে যাই
নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচি সুখে,
পাই প্রেরণা সূর্যের কাছে
আলোর শক্তি তুলি বুকে।

দেখবে নাকি আমার সাথে
রোজ বিহানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×