somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপি'র হরতাল পূণর্বার, কথিত জাতীয় স্বার্থে - কিন্তু ধারাবাহিকতা কি বলে?

২৪ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দুই বার সরকার গঠন করা, বর্তমান বাংলার প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কর্তৃক নতুন করে আগামী ৩০ নভেম্বর'১০ দেশের বিদ্যমান সমস্যা সংকট নিরসনের দাবিতে হরতাল আহবান করা হয়েছে। যেহেতু হরতাল সরকারের অন্যায়, শোষণ কিংবা দুর্নীতি তুলে ধরে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার একটি অন্যতম রাজনৈতিক মাধ্যম, সেহেতু হরতালের বিরোধী আমি নই। কিন্তু বর্তমান সময়ে হরতালের হালচাল নিয়ে কিছু ভাবনা না লিখে পারছিনা।
আমি হরতাল সম্পর্কিত আম্র একান্ত সামাজিক ভাবনাগুলো শেয়ার করার পাশাপাশি পুর্ববর্তী কিছু সংশ্লিষ্ট বিষয় তুলে ধরে কিছু প্রশ্ন রাখব সুধী সচেতন সমাজের কাছে।
দেশে বিদ্যমান গ্যাস সংকট, বিদ্যুত সংকট, গার্মেন্টস শিল্প কারখানা বন্ধ, এবং দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতি ইত্যাদি নানা সমস্যা সমস্যা সমাধানের দাবিতে বিএনপি এই হরতাল ডেকেছে বলে তাদের সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন। জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং অধিকার বিষয়ক ইস্যুতে হরতাল ডেকেছেবলে বিএনপির সচেতনতাকে ধন্যবাদ দেয়ার পাশাপাশি তাদের চরিত্রগত কিছু দিক তুলে ধরে আগামী হরতাল সমর্কে আমার প্রশ্নসমূহ উল্লেখ করছি।
প্রথমেই বলি দ্রব্য মুল্যের উর্ধ্বগতি বিষয়ে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসীন হবার পর ঠিক এই প্রক্রিয়ায় বরং আনুপাতিক হারে কোন কোন সময় বর্তমানের চাইতেও বেশি হারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি লক্ষ করা গেছে। বিএনপির আমলেও বর্তমান সরকারের মত সিন্ডিকেট এর প্রভাব ছিল অত্যাধিক মাত্রায়। এবং অধিকাংশ সিন্ডিকেট সরকার দলীয় এমপি/মন্ত্রীদের নিয়ন্ত্রনে ছিল।
প্রশ্ন -১ : আসলেই কি তারা দ্রব্যমুল্য কমুক, তা চায়?
পাঁচ বছর মেয়াদি দুই বার ক্ষমতায় আসলেও বিদ্যুত সমস্যার সমাধানে কোন উদ্যোগ নিয়েছিলো কি? তাদের সময়ে লোডশেডিং এর মাত্রা কোন অংশে কম ছিলনা। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের মত তারাও বেসরকারিভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করতে চেয়েছিল।
গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ করার কারন তারা দেখিয়েছে; যেন গার্মেন্টস শ্রমিকের দুঃখে তারা অতি কাতর। কিন্তু ২০০৩ সালে, বিএনপি যখন ক্ষমতায়, নারায়নগঞ্জে ন্যয্য মজুরির দাবি সহ বিভিন্ন দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা পুরো একদিন অবরধ করে রেখেছিল শহর। তখন গার্মেন্টস শিল্প সম্পর্কিত বিএনপির ভাবনা কোথায় ছিল? এছাড়াও মাত্র ৩/৪ মাস আগে সংঘঠিত গার্মেন্টস শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে বিএনপির কোনপ্রকার রাজনৈতিক দায়িত্ব চোখে পড়েনি।
প্রশ্ন-২ : তাহলে আজ হঠাত করে এহেন ভাবনা কি আসলেই জনগনের স্বার্থে?
তাছাড়া কারখানা বন্ধের কথা তারা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তাদের ক্ষমতা থাকাকালীন সময়েই এশিয়ার বিখ্যাত পাটকল ‘আদমজী’ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।আদমজী বন্ধের ফলশ্রুতিতে প্রায় ৩০০০০ শ্রমিক তাদের পরিবার সহ পড়েছিল দুর্বিষহ বিপাকে। ঠিক যেমনভাবে আওয়ামীলীগএর আমলে বন্ধ হয়েছিল চট্টগ্রামের ইস্পাত কারখানা।
প্রশ্ন-৩: কোথায় তখন বিএনপির শিল্প বান্ধবতা?
গ্যাস সংকট এর কথা বলে আজ বিএনপি জল ঘোলা করা ছাড়া আর কিছুই করছে বলে মনে হচ্ছেনা। কেননা ২০০৫ সালে ‘তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুত-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’ গ্যাস রক্ষার দাবিতে ঢাকা থেকে বিবিয়ানা পর্যন্ত লং মার্চ করেছিল যখন তারা ক্ষমতায় বসেই দেশের গ্যাস সম্পদ বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিতে চাইছিল। এছাড়াও কিছুদিন আগেও বর্তমান মহাজোট সরকারের অনুরূপ চক্রান্তের প্রতিবাদে জাতীয় কমিটি হরতাল পালন করেছে। এতোদিন পরে বিএনপির মনে হল?! গত ২৪-৩০ অক্টোবর দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ কয়লা রক্ষার দাবিতে ‘তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুত-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’ আহুত ঢাকা থেকে ফুলবাড়ি পর্যন্ত লং মার্চ হয়ে গেল, কিন্তু কয়লা রক্ষার দাবিতে কি বিএনপি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে??? করবে কিভাবে? তারাই তো এশিয়া এনার্জি নামক ঐ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছিল।
প্রশ্ন-৪ : আসলেই কি জাতীয় সম্পদ তারা রক্ষা করতে চায়?
এছাড়াও তাদের আমলেই টিপাই বাঁধের চুক্তি হয়েছিল যার কারনে ২০০৫ সালে সিলেট থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত বাসদ লং মার্চ করেছিল। সাম্প্রতিক সময়েও তারা একি ইস্যুতে (যখন এই সরকার আবার বিএনপির কাজের পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছিল) পদযাত্রা করে। কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বল্লেও নিজেদের জোটে রাজাকার নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে তাদের কোন বক্তব্যই নেই। ঠিক যেমনটি টালবাহানা করছে বর্তমান সরকার।
প্রশ্ন ৫ : কথায় কথায় দুই দল একে অপরের বিরোধীতা করলেও আসলে তাদের চরিত্র কি কোন পার্থক্য নির্দেশ করে?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×