somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অভ্রনীল হৃদয়
সকল অপূর্ণতায় পূর্ণ আমি। সব অসাধারন মানুষের ভীরে আমি অতি সাধারন এক মানুষ। পেশায় ছাত্র, নেশায় মুভিখোর আর বইপড়ুয়া। নিজেকে খুঁজে পাবার জন্য হাঁটতে থাকি। স্বপ্নের সাথে হাঁটি, স্বপ্নের জন্য হাঁটি। আর মাঝে মাঝে হাবিজাবি লেখি আমার ভার্চুয়াল খাতায়।

গল্পঃ ঘাতক

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাস্তার মাঝে জটলা পাকিয়ে দাড়িয়ে আছে কিছু লোক। তাদের কেন্দ্রবিন্দু হলো একটি লাশ। একটা মেয়ে তার বান্ধবীকে বললো,‘দেখেছিস অবস্থা? এখন মানুষ আর মানুষ নেই। পশুর চেয়েও অধম হয়ে গিয়েছে। এভাবে কেউ কাউকে মারতে পারে? তার মাঝে গতকালই এই এলাকায় আরেকটা খুন হলো!’
রাতের অন্ধকারে কে বা কারা যেনো মেরে ফেলে রেখে গিয়েছে রাস্তায়। ভীরের মাঝ হতে একজন বলে উঠলো,‘কেউ পুলিশকে খবর দেন। আর কতক্ষণ এভাবে লাশ পড়ে থাকবে রাস্তায়?’

_এক_

‘এই যে মিঃ! শুনছেন?’,পেছন হতে মধুর কন্ঠের আওয়াজটা ভেসে আসলো।
পাত্তা না দিয়ে আমি আমার মতোই হাটতে থাকলাম। ধরেই নিয়েছি অন্য কাউকে ডাকছে।
‘এই যে হ্যালো!’
এবার আর না থেমে পারলামনা। পেছনে ফিরে তাকাতেই দেখলাম আমার থেকে মাত্র এক হাত দূরে মেয়েটি দাড়িয়ে আছে। এতো কাছ থেকে মেয়েটিকে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দু পা পিছে সরে গেলাম। কারণ এতো কাছ থেকে কখনও কোনো মেয়ের সামনে দাড়াইনি আমি। এবার ভালো করে সামনে দাড়ানো মেয়েটির দিকে তাকালাম। মেয়েটির চেহারায় রয়েছে আশ্চর্য এক কমনীয়তা। সৃষ্টিকর্তা যেন জগতের সব মায়া ঢেলে দিয়েছেন তার চোখ দুটিতে। পরিপাটি করে আঁচড়ানো দীঘল চুল পিঠ ছাড়িয়ে কোমর পর্যন্ত নেমেছে।
‘এই যে! আপনাকে কতক্ষণ ধরে ডাকছি। কানে কি তুলা দিয়ে রাখছেন নাকি। হ্যাঁ?’
দুই কানে ভালো করে খেয়াল করে নিশ্চিত হলাম তুলো নেই। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে জবাব দিলাম,‘নাতোহ।’
‘মানে?’
‘মানে হলো আমার দুই কানেই তুলো নেই। একটু আগেই তো দেখলাম আপনার সামনে।’
‘কিইইই! আপনি কি পাগল?’
‘আমাকে বলছেন?’
‘আপনাকে বলবো না তো কাকে বলব? এখানে আপনি আর আমি ছাড়া আর কেউ কি আছে?’
চারপাশে চোখ বুলিয়ে মৃদু হেসে বললাম,‘নাতো। এখানে আপনি আর আমি ছাড়া কেউ নেই।’
‘তাহলে?’
‘তাহলে বোধহয় আপনি নিজেই নিজেকে পাগল বলেছেন। যাইহোক, আমি যাই তাহলে।’
‘আপনার সাহস তো কম না! আমি নিজে নিজেকে পাগল বলছি? আমি? আমাকে দেখে কি আপনার পাগল মনে হয়। আশ্চর্য! আর হ্যাঁ। এতো যাই যাই করছেন কেনো? হ্যাঁ? কোথায় আপনার সামনে একটা সুন্দরী মেয়ে দাড়িয়ে আছে। তার সাথে একটু সময় কাটানোর চেষ্টা করবেন। তা নয়। শুধু যাই যাই করছেন।’
‘ইয়ে মানে। কিছু মনে না করলে একটি প্রশ্ন করতে পারি?’
‘জ্বি বলুন।’
‘আপনি কি সুন্দরী বলতে আপনাকে বোঝাতে চাইছেন? প্লিজ বলবেননা যে আপনি আপনাকেই সুন্দরী বলেছিলেন। নাহলে আমি আমার হাসি আর চেপে ধরে রাখতে পারবো না।’
‘আপনি। আপনি একটা বদ, ফাজিল, বেহায়া একটা ছেলে। মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় এখনও শিখেননি।’,বলেই সে চলে যেতে যেতে থাকলো। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি মেয়েটির চোখ দুটো ছলছল করছে। যেনো এখনি ঐ হরিণী চোখ দুটো হতে মুক্ত ঝরে পড়বে। এ যেনো বৃষ্টি আসার আগের কালো মেঘের আভাস।
‘মেয়ে!’
হঠাৎই আমার ডাকে মেয়েটি থমকে দাড়ালো।
‘আমি যাই বলিনা কেনো। একটা কথা স্বীকার করতেই হবে। আপনাকে রাগলে সুন্দর লাগে। আর আরো বেশী রাগলে অসম্ভব রকমের সুন্দর লাগে।’, এটুকু বলতেই আমি জিভে কামড় দিলাম।
এতো চেষ্টার পরেও নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলামনা। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে মেয়েটি আমার দিকে ফিরে তাকিয়েছে খেয়াল ই করিনি।
মেয়েটি তার হাসি লুকানোর বৃথা চেষ্টা করছে। তার মায়াবি মুখটুকু ধীরে ধীরে ঈষৎ লাল বর্ণ ধারণ করছে। ‘আচ্ছা মেয়েটি লজ্জ্বায় লাল হয়ে যাচ্ছে নাকি রাগের চোটে লাল হয়ে যাচ্ছে!’ মেয়েটির সুরেলা কন্ঠে আবারো আমার ভাবনায় ছেদ ঘটলো। মেয়েটি আমাকে পাগলকরা হাসি উপহার দিয়ে বলে উঠলো, ‘অ্যাইইই শুনুন!’
আমার পুরো পৃথিবী যেনো এক নিমিষেই থেমে গেলো। আর এক মুহূর্ত ও এখানে নয়। পেছন ফিরে সজোরে দিলাম এক দৌড়। আমি দৌড়াচ্ছি দৌড়াচ্ছি আর দৌড়াচ্ছি। মনে হল যেনো অন্তত কাল ধরে শুধু দৌড়িয়েই যাচ্ছি। এই পথ যেনো আজ শেষ হবার নয়। আমি জানি আর এক মুহূর্ত আমি সেখানে থাকলে মেয়েটির প্রেমে পড়ে যেতাম। উহু! তৃষা হবে। তৃষা নামের মেয়েটির প্রেমে পড়ে যেতাম। কিন্তু তা কখনও সম্ভব না। অন্তত আমি অভ্র নিজেকে তৃষার ওই হরিণী চোখের মায়ার বাধনে আবদ্ধ হতে দিবোনা। মেয়েটি ঠিক কি বলতে চেয়েছিলো তা আজও জানা হলো না। জানার মতো সময় ও অবশ্য এখনো হয়নি। আরো কিছু সময়ের অপেক্ষা এবং আরো কিছু প্রতিক্ষার প্রহর বাকি।
.
রোজকার মতো আজকেও তৃষা তার প্রিয় ডায়েরির পাতায় নাম না জানা ছেলেটিকে নিয়ে লিখছে।
‘আজব একটা ছেলে তো। আজও প্রতিদিনের মতো কিছু বলার সুযোগই দিলো না। ভীতুর ডিম একটা। এমনিতেই আজ প্রায় ছয়দিন পর আসলো। হুট করে কোথায় যে উধাও হয়ে গিয়েছিলো কে জানে। আচ্ছা ও যদি হঠাৎই আসা বন্ধ করে দেয়? নাহ। এবার দেখা হলে সব লজ্জ্বার বাধ ভেঙ্গে যে করেই হোক ওর প্রতি আমার অনুভূতির কথা ওকে বলতে হবে। আমার মনের কুঠিরের সর্বত্র জুড়েই যে ওই একজনের বসবাস।’,ভাবতে ভাবতেই আনমনে হেসে উঠল তৃষা।

_দুই_

পশ্চিমাকাশে সূর্য লালচে আভা ধারণ করেছে। ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছে আলোর রেখা। হালকা আধার ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। জনমানবহীন রাস্তা। রাস্তার পাশেই একটি বিল্ডিং কন্সট্রাকশনের কাজ স্থগিত করে রাখা হয়েছে। প্রতিদিনের মতো আজকেও দূর হতে তৃষাকে হেটে আসতে দেখছি আমি। মেয়েটি আমাকে দেখামাত্রই হঠাৎ করে আমার দিকে ছুটে আসতে লাগলো। মৃদু হেসে মনে মনে বললাম পাখি তাহলে অবশেষে ফাঁদে পা দিয়েছে। ভাবতে ভাবতেই আমার সামনে এসে দাড়ালো তৃষা। আরেকটু হলে আমার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে যেতো। দৌড়ে আসায় তৃষা হাসফাস করছে। চারপাশ কেমন যেনো নিস্তব্ধ হয়ে আছে। আর আমি তার মাঝে তৃষার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসের আনাগোনা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
‘আপনার সাথে আমার কিছু জরুরী কথা আছে।’, একটু থেমে আবার বললো তৃষা, ‘চলুন একটু সাইডে গিয়ে কথা বলি।’
কথামতো দুজনে কনস্ট্রাকশনের দিকে এগিয়ে গিয়ে দাড়ালাম।

_তিন_

গত দেড় মাস আমি তৃষার পেছনে ছায়ার মত লেগে আছি। সে যেখানে যায় আমি তাকে ফলো করি। অনেকবার অনেকভাবে আকার ইঙ্গিতে আমার ভালবাসার কথা জানিয়েছি। আমি ছেলে হিসেবে মোটেও খারাপ না। লম্বা, চওড়া, সুদর্শন, আধুনিকতার ছোয়া। কি নেই আমার মাঝে! তৃষা ইতিমধ্যে আমাকে পছন্দ করে ফেলেছে। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারনে ও আমাকে ঘুরাচ্ছিলো। মাঝে মাঝে মনে হয় ও আমাকে ভালোবাসে। পরক্ষণেই আবার মনে হয় আমার প্রতি ওর কোনো অনুভূতিই নেই। তাই ঠিক করলাম ওর মুখ থেকেই কথা আদায় করে ছাড়ব। আমার হাতে খুব বেশি সময় নেই। ইদানিং ধৈর্য শক্তিও কমে গেছে। যত দ্রুত সম্ভব ওকে দিয়ে “ভালবাসি” বলাতে হবে। এর মাঝে হঠাৎ করেই তিনদিন ওকে ফলো করা বন্ধ করে দিলাম। তিন দিন পর যখন আবার ফিরে আসি ওর মাঝে আমি কেমন যেনো দুশ্চিন্তার ছাপ দেখতে পাই আমি। কিন্তু পরক্ষণেই আমাকে দেখে যেনো ওর মাঝে স্বস্তির অবয়ব ফুটে উঠলো। এরপরেও তৃষা সেই আগের মতোই আচরণ করতে থাকলো। এবার ওকে ফলো করাই বন্ধ করে দিলাম। প্রত্যহ দিনের শেষে এই নির্জন জায়গায় ওর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। ওকে এক নজর দেখার পরেই পড়িমরি করে ছুটে পালাই। শেষ স্ট্যাপ অনুসারে টানা ছয় দিন আসা বন্ধ করে দেই। আর এরপর কালকে ওর মাঝে আমার প্রতি যে আকুতি দেখেছি। তাতেই আমি যা বোঝার বুঝে নিয়েছি। সি ইজ ইন লাভ উইথ মি!

_চার_

‘এই যে শুনছেন?’,সেই পরিচিত কন্ঠে আমার ভাবনার ছেদ ঘটলো।
‘জ্বি বলুন।’,ঢোক গিলে বললাম আমি।
‘যদিও এটা ছেলেদের কাজ। কিন্তু আমি আর এভাবে থাকতে পারছিনা। কোনো ভনিতা ছাড়াই সরাসরি বলছি। আমি আপনাকে খুব খুব খুব ভালোবাসি!’,এক নিশ্বাসে এটুকু বলে থামলো তৃষা।
আমার পেছন হতে ৮ ইন্ঞ্চি তিক্ষ্ণ ফলা বিশিষ্ট ছোড়াটা বের হয়ে আসছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই আমার মাঝে যেনো বিদ্যুৎ খেলে গেলে। আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমার তো এমনটা হওয়ার কথা না। আমি তো জানতামই তৃষা আজকের আমার প্ল্যান মতো তার ভালোবাসার কথা জানাবে। কিন্তু আমার এমন হচ্ছে কেনো? তৃষার ওই ভালোবাসি বলার মাঝে কি যেনো ছিলো। যা আমার মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরণ ক্ষণে ক্ষণে নিস্ক্রিয় করে দিচ্ছে।
শীতের প্রকোপ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এই ঠান্ডার মাঝেও আমি দরদর করে ঘামছি। আমার হাত-পাঁ কাঁপছে। যেকোনো সময় আমার হাত হতে ছুড়িটা পড়ে যেতে পারে।
তৃষা উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে উঠলো,‘কি হয়েছে আপনার? আপনি ঠিক আছেন তো?’
আমি ভীত স্বতন্ত্র চোখে তৃষার দিকে তাকালাম। মেয়েটির সাথে খেলতে খেলতে যে কবে আমিও সেই খেলার ছক বনে গিয়েছি টেরই পাইনি। এই মায়াবী দুটি চোখের অধিকারীণী মেয়েটিকে আমি কিভাবে খুন করতে পারি? এই মুহূর্তে তৃষাকে আমার হিমুর রূপার মতোই মায়াবতী মনে হচ্ছে। মনের মাঝে শুধু একটি গানই বাজছে,
‘আমার ও পরান ও যাহা চায়
তুমি তাই, তুমি তাই গো
আমার ও পরান ও যাহা চায়’

_পাঁচ_

মানুষ খুন করাই আমার পেশা। আমি একজন কন্ট্রাক্ট কিলার। আমি কখনই এমন ছিলাম না। কিন্তু কি করে যে কি হলো। বাস্তবতার করাল আঘাতে আজ আমি এই পেশায় নিয়োজিত। এই কাজ করেই আমার জীবন চলে এখন। কাজটা করবো নাকি করবোনা সেটা নিয়ে বেশ দ্বিধাগ্রস্থ আমি। কাজটা না করলে অনেক সমস্যা হবে আমার জন্য। একবার যদি আন্ডারওয়ার্ল্ডেএই খবর পৌছে যায়। তাহলে আমার এতো বছরের ক্যারিয়ার এ বিরাট বড় ধাক্কা খাবে। কেউ আর সহজে আমাকে কাজ দিতে চাইবে না। কারন এই কাজটা পেয়েছি একজন প্রভাবশালী লোকের কাছ থেকে। তার কাছ হতে ডিল নেওয়ার সময় খুব অবাক হয়েছিলাম। তৃষার ডিটেইলস ও ছবি আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলো,‘মেয়েটিকে এখনি মারতে হবেনা। তোমাকে দুই মাসের সময় দিলাম। এতোদিন তুমি ওকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করবে। ও কার সাথে ঘুরে, কি করে। চারপাশ চোখ-কান খোলা রাখবে। খুব সাবধানে সময় সুযোগ করে মারতে হবে ওকে। আই রিপিট খুব সাবধানের সহিত কাজটা করতে হবে। কেউ যেনো ঘুণাক্ষরেও টের না পায়।’
এই কাজের জন্য অ্যামাউন্ট ও বেশ বড় ছিলো। আমি ভেবে পাইনি এই সাধারণ মেয়েটাকে মারার জন্য কেনোই বা এতো সতর্কতা। আর কেনোই বা এই অদ্ভুত শর্ত! অবশ্য এসব নিয়ে আমিও আর ভাবিনি। আমাকে যেই কাজ করতে দেওয়া হয়েছে সেটা ঠিকভাবে করতে পারলেই হলো। কারো ব্যাক্তিগত ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার কোনো মানে অন্তত আমি দেখিনা। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় মেয়েটিকে আড়ালে আড়াল ফলো করা আমার কাছে একঘেয়েমি হয়ে পড়েছিলো। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম মেয়েটিকে নিয়ে একটি গেইম খেলবো আমি। সেই স্কুল লাইফ থেকেই দেখেছি কোনো এক অজানা কারণে মেয়েরা অল্প সময়েই আমার প্রতি আকর্ষিত হয়ে উঠে। তাই ঠিক করলাম তৃষা নামের এই মেয়েটিকেও আমার ভালোবাসার ফাঁদে ফেলবো। এতে করে আমার একঘেয়েমি ও কেটে যাবে। তার সাথে সাথে মেয়েটিকে খুন করাও আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
কিন্তু এসব করতে গিয়ে যে এখন আমি নিজেই নিজের পাতা ফাঁদে জড়িয়ে গিয়েছি। হ্যাঁ, আমিও নিজের অজান্তেই তৃষাকে ভালোবেসে ফেলেছি। কিন্তু এই কাজটা না করলে নিশ্চয়ই ওরা আমাকে ছেড়ে দিবেনা? তৃষাকে আরো একবার ভালো করে দেখলাম আমি। নাহ। এই মেয়েটিকে খুন করা আমার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। যে যাই করুক, আই ডোন্ট কেয়ার!

_ছয়_

২০ মিনিট পর......
আমি এখন একা একা হাঁটছি। সূর্য ডুব দিয়ে আধার নেমেছে সেই কখন। পেছন হতে রুমাল সহ ছুড়িটা বের করলাম। ল্যাম্পপোস্টের নিয়ন আলোয় রুমালটা বেশ ভালোভাবেই দেখা যাচ্ছে। কি নিখুতভাবে সাদা রঙের রুমালটি লাল রক্তের সমন্বয়ে কারুকার্যময় রূপ ধারণ করেছে। হ্যাঁ, রুমালে মাখা রক্তটুকু আর কারো নয়। স্বয়ং তৃষার। পারিনি আমি তৃষাকে বাঁচাতে। স্বার্থপরের মতো নিজ হাতে খুন করেছি আমার তৃষাকে। আমার মতো মানুষদের মাঝে আবেগ, ভালোবাসা কিচ্ছু থাকতে নেই।
হঠাৎই পেছন হতে কাধে কি যেনো এসে বিধলো। কিছুক্ষণ লাগল বুঝতে যে আসলে কি হচ্ছে আমার সাথে। ঘটনার আকস্মিতায় আমি যারপনাই অবাক হয়েছি। কেউ আমাকে গুলি করেছে। পিস্তলে সাইলেন্সার থাকার কারণে কোনো শব্দ হয়নি। কাছে কোথাও যে আত্মগোপন করবো সেই সুযোগ ও নেই। সবচেয়ে বড় ভুল করেছি আসার সময় আমার পিস্তল না নিয়ে এসে। কাধে হাত দিয়ে পিছু ঘুরে দাড়াতেই পর পর আরো তিনটি বুলেট এসে আমার বুকে বিধলো। দুজন কালো মুখোসধারী পিস্তল হাতে নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি টলে পড়লাম রাজপথের বুকে। এখন বুঝতে পারছি তৃষাকে খুন করতে দেওয়া ডিলার কেনো বারবার আমাকে সতর্ক থাকতে বলেছিলো। বুকের মাঝে চিনচিন করে ব্যাথা করছে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছি আমি। সামনে যেনো তৃষাকে হাতছানি দিয়ে ডাকতে দেখলাম।
‘আসছি তৃষা। আমি আসছি তোমার কাছে!’

--- ০ ---
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৩
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×