somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিৎ কাত, ব্লাইন্ড এবং মাইন্ড গেম

১৬ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




(ডিসক্লেইমারঃ এই লেখাটি আমার খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর জুয়া ভাগ্য নিয়ে লেখা। জুয়া খেলাকে একসময় সে মাইন্ড গেম হিসেবে নিয়েছে। তাঁর জুয়া ভাগ্য এতটাই সুপ্রসন্ন ছিল যে, শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে সে জুয়া খেলা ছেড়ে দেয়। আজ প্রায় ৬ বৎসর হতে চলল। তাঁর মন্তব্য বিনাশ্রমে অন্যের পকেট থেকে এত টাকা নিজের পকেটে চলে আসলে কাঁহাতক আর সহ্য করা যায়!

এই লেখার মাধ্যমে কাউকে জুয়া খেলায় উৎসাহিত করা হচ্ছে না, বরং জুয়া কিভাবে বিরক্তিকর একটি খেলায় পরিণত হতে পারে তার দৃষ্টান্ত আঁকার চেষ্টা করা হচ্ছে।)
-----------------------------------------------------------------------------
দোস্ত চল চিৎ কাত খেলি।
বন্ধু সোহেলের রুমে গিয়েছি আড্ডা দিতে। খাটের উপর এক সেট কার্ড এলোমেলো ছড়ানো। কার্ডগুলো গুছাতে গুছাতে সোহেল আমাকে উদ্দেশ্য করে চিৎ কাত খেলার অফার দেয়।

ভার্সিটিতে তৃতীয় বর্ষে উঠেছি। নব্বুই সালে এরশাদ হটাও আন্দোলন চলছে সারা দেশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিবির নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই আন্দোলন জোরালো হয়নি। কিন্তু ক্যাম্পাসে একটা থমথমে ভাব এবং চাপা আতঙ্ক। তৃতীয় বর্ষের শুরু বিধায় ক্লাশ তেমন একটা হচ্ছে না। পড়াশুনার চাপ নেই। রাজনৈতিক তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকায় অনেকটা বেকার হয়ে আছি। মাঝে মাঝে বিকালের শাটল ট্রেনে চেপে শহরে যাই আবার রাতের ট্রেনে ফিরি। হাতে অফুরন্ত সময় নিয়ে ক্যাম্পাসের সর্বত্র ঘুরে বেড়াই। ফ্যাকাল্টিতে জারুল তলায় বসে কিংবা হাসানের চায়ের দোকানে বন্ধু বান্ধব নিয়ে আড্ডা মারি। এভাবে একসময় হাঁপিয়ে উঠি। নিরস আড্ডাবাজিতে আর মন বসে না। তাই সোহেলের রুমে গিয়েছি নতুন এক আড্ডায়।

সোহেল আমাকে চিৎ কাত খেলার নিয়ম কানুন শেখানোর উদ্যোগ নেয়। বিছানায় পড়ে থাকা এলোমেলো কার্ডগুলো গুছিয়ে হাতে নেয়। একটি প্যাকেটে চার ধরনের তেরটি করে সর্বমোট বায়ান্নটি কার্ড থাকে- এ তথ্যটুকু আমার জানা। সোহেল কার্ডগুলোর মাঝামাঝি ভাগ করে গুছিয়ে দুই হাতে ধরে দক্ষতার সাথে শাফলিং করে। তারপর আমার দিকে কার্ডের সেটটা বাড়িয়ে ধরে বলে নে এবার কেটে দে। আমি অনুমান করে মাঝখান দিয়ে কার্ডগুলো দুই ভাগ করে দেই। এটাকে কার্ড কাটা বলে। দ্বিতীয় ভাগ থেকে সোহেল একটি কার্ড আমাকে দেয় আর ও একটি রাখে। এভাবে পর্যায়ক্রমে আরও দুটি করে কার্ড বেটে দেয়। আমার ভাগে পড়া উপুড় হয়ে থাকা তিনটি কার্ড দেখে আমি নতুন একটি খেলার কৌশল রপ্ত করার রোমাঞ্চের গন্ধ পাই।

এবার চিৎ কর বলে সোহেল নিজেই ওর ভাগের তিনটি কার্ড চিৎ করে বিছানার উপর ফেলে। আমিও অনুরূপ করি। এইচএসসি পরীক্ষা শেষে ভার্সিটিতে ভর্তির আগে গ্রামের বাড়িতে সর্বপ্রথম আমার কার্ড খেলায় হাতে খড়ি। আমরা কয়েক বন্ধু কার্ড দিয়ে টুয়েন্টি নাইন, কলব্রিজ খেলেছি। তবে এই খেলার প্রতি তেমন আসক্তি জন্মেনি। সেই সূত্রে বায়ান্ন কার্ডের সাথে আমার পরিচিতি ঘটেছে আগেই এবং এগুলোর নাম এবং মানও জানি। কিন্তু চিৎ কাত খেলার নাম কখনো শুনিনি এবং নিয়মটাও জানি না। সোহেল আমাকে উৎসাহ ভরে নিয়ম-কানুন শেখাতে থাকে।

বেটে দেওয়া তিনটি কার্ডের মধ্যে আমার ভাগে পড়েছে স্পেডের (ইস্কাবন)টেক্কা, ক্লাবস (চিরতন) এর গোলাম এবং হার্টসের (হরতন) আট। সোহেলের ভাগে পড়েছে ডাইসের (রুহিতন) সাহেব, হার্টসের (হরতন) দশ এবং ক্লাবস (চিরতন) এর ছয়। সোহেল আমাকে বুঝায় কার্ডের মান হিসেবে আমার ভাগের কার্ডগুলো সোহেলের চেয়ে বড়। এভাবে কয়েক দফায় ও আমাকে চিৎকাত খেলায় দক্ষ করে তোলে। আমি শিখে যাই চার ধরনের কার্ড থেকে একই মানের তিনটি কার্ড পড়লে তাকে বলে ট্রয়। এই খেলায় সবচেয়ে বড় হচ্ছে টেক্কার ট্রয়।

একই ধরনের কোনো কার্ড ক্রম অনুযায়ী পড়লে তাকে বলে রানিং। যেমন- ইস্কাবনের টেক্কা, সাহেব, বিবি এক হাতে পড়লে সেটা টপ রানিং। রুহিতনের সাহেব বিবি গোলাম একত্রে পড়লে ফ্যামিলি রানিং ইত্যাদি ইত্যাদি। ভিন্ন ভিন্ন কার্ড ক্রম অনুযায়ী পড়লে তাকে বলে রান। ক্রম ব্যতিত যে কোন মানের একই কার্ড তিনটি পড়লে তাকে বলে কালার। ভিন্ন ভিন্ন কার্ডের তিনটির মধ্যে যে কোনো দুইটি এক হলে সেটা পেয়ার বা জোড়া। সোহেলের বদান্যতায় এভাবে আমি চিৎ কাত খেলায় পারদর্শী হয়ে উঠতে থাকি।

আমাদের এই নির্দোষ প্র্যাকটিসের মাঝে আরও দু' বন্ধু আড্ডাস্থলে উপস্থিত হয়। আচমকা সোহেল আমাকে বলে চল আমরা প্রতি বোর্ড ২ টাকা করে খেলাটা খেলি। শুধু চিৎ কাত খেলবো। নবাগত দুই বন্ধু উৎসাহ দেখায়। কৌতুহল থেকে আমি সোহেলের প্রস্তাবে সায় দিই। পকেটে মোটামুটি গোটা বিশেক টাকা আছে। দুই টাকা করে খেললে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। এই সহজ খেলায় ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে পাঁচ-দশ টাকা জিতেও যেতে পারি। একটা অজানা রোমাঞ্চ থেকে আমি চিৎ কাত খেলায় সম্মতি দিই।

ভাগ্যটা আমার সুপ্রসন্ন বলতে হবে। জীবনের প্রথম চিৎ কাত খেলায় আধা ঘন্টার মধ্যে আমার পকেটস্থ বিশ টাকা বেড়ে ষাট টাকা হয়ে যায়। আমার মনে লোভের মাত্রা চাড়া দিয়ে উঠে। এবার সোহেল তার কূট কৌশল চালে। চল এবার আমরা ব্লাইন্ড খেলি। অপর দুই বন্ধুও তাতে সাড়া দেয়। ঐ দুই বন্ধুর হাবভাবে বুঝা যায় ওরা আগে থেকেই এ খেলায় অভ্যস্ত। পকেটে আমার চল্লিশ টাকা বাড়তি আছে। আমি না করতে পারি না। ওয়ার্ম আপ হিসেবে ছোট্ট করে এক দান ব্লাইন্ড খেলি। খেলার কৌশলটা তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে বুঝে নেবার চেষ্টা করি।

ব্লাইন্ড খেলার নিয়ম হলো সবাই দুই টাকা করে বোর্ড দিবে। তারপর ব্লাইন্ডে এক টাকা করে মারবে। এভাবে কমপক্ষে তিনবার মারার পর যে কেউ ইচ্ছে করলে কার্ড দেখতে পারবে। তিনটি কার্ড মিলানোর পর কেউ যদি মনে করে অপর তিনজনের চেয়ে তার কার্ড বড় তাহলে সে সিনে ২ টাকা বোর্ডে মারবে। যে সিনে যাবে তার ডান পাশের জন ১ টাকা ব্লাইন্ড মারবে এবং বাধ্যতামূলকভাবে অপরজন আবার সিনে যাবে। সে যদি মনে করে তার কার্ডও বড় সে ২ টাকা মারবে। এভাবে চক্রাকারে খেলা চলতে থাকবে। সবাই সিনে চলে গেলে এর মধ্যে কেউ ইচ্ছে করলে ২ টাকা দিয়ে পাশের জনের সাইড দেখতে পারবে। দুর্বল কার্ডধারী বসে যাবে। সর্বশেষ দুই জন ইচ্ছে করলে বোর্ডে টাকা ফেলে খেলা চালিয়ে যাবে বা মনস্তাত্বিক দুর্বলতা থাকলে শো করে দেবে। শেষোক্ত দুজনের মধ্যে যার কার্ড বড় সে পুরো বোর্ডের টাকা পাবে।

ওয়ার্ম আপের প্রথম দানটা নবাগত বন্ধুদের একজন পায়। আমি উৎসাহিত হই। দ্বিতীয় দানের জন্য কার্ড বাটা হয়। বাধ্যতামূলক তিনবার ব্লাইন্ড মারার পর আমি ডিফেন্সিভ খেলার সিদ্ধান্ত নেই। তিনটি কার্ড উঠিয়ে চোখের সামনে ধরি। রানিং পড়েছে। আমার মনোভাবটা বুঝতে দেই না কাউকে। নতুন খেলোয়ার আমি। ইতস্তঃত ভাব নিয়ে বোর্ডে টাকা দেই। ভাবটা এমন কেউ সিনে আসলেই আমি বসে পড়বো। আমার ফাঁদে পা দেয় বন্ধুরা। বোর্ডে তিনজন সিনে থাকে সর্বশেষ। গোল হয়ে বসা আমাদের মাঝখানে ১ টাকা ২ টাকার স্তুপ জমতে থাকে। শেষমেষ দুর্বল প্রতিপক্ষ শো করে । আমি পেয়ে যাই। আরেব্বাস! একবারেই অনেক টাকা আমার প্রাপ্ত দানে উঠে আসে। আমি ক্রমশঃ লোভের জালে আটকে যেতে থাকি।

খেলা চলতে থাকে ধুমসে। উত্তেজনায় আমার রক্ত সঞ্চালন হতে থাকে দ্রুত। বুকটা ধরফর করছে। আবার দ্বিতীয় দান খেলি। এবার অন্য কেউ পায়। তৃতীয় দান, চতুর্থ দান, পঞ্চম দান...এভাবে খেলা চলতেই থাকে। দরজা বন্ধ করে সোহেলের রুমে আমরা নিষিদ্ধ এক নেশায় মেতে থাকি। মাঝে মাঝে ভাগ্য খুলে যায়। পরপর কয়েক দান পাই। আবার একসময় ভাগ্যটা চরম বিট্রে করতে থাকে। প্রতি দানই হারছি। ওরা তিনজনের কেউ না কেউ পাচ্ছে। মনে জেদ চাপতে থাকে। ভাগ্যকে ঘুরাতে হবে যে কোন উপায়েই হোক। একদান পাই তো দশ দান অন্যরা পায়। একসময় আমার পকেটের বিশ টাকাও ফুরিয়ে যায়।

জুয়া খেলায় টাকা ফুরিয়ে গেলে ফতুর বা লাড়ি বলা হয়। এক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে উঠে চলে যাওয়া। আমার রুমে লকারে টাকা আছে। এক ছুটে গিয়ে নিয়ে আসতে পারি। কিন্তু এতদূর রুমে গিয়ে টাকা আনতে ইচ্ছে করছে না। এতক্ষণ পর্যন্ত খেলে মাত্র কুড়ি টাকা হেরেছি। সেই সন্ধ্যায় বসেছি। রাত নটা বাজে প্রায়। নিষিদ্ধ খেলার তীব্র আকর্ষণ উপেক্ষা করে আমি খেলা ছেড়ে উঠে যেতে চাই। আমি উঠে গেলে খেলা ভেঙ্গে যাবে। আমি তখনও বুঝতে পারিনি ওরা তিন জুয়ারী আমাকে তীব্র নেশায় আটকে দেবে। সোহেল আমাকে পরদিন সকালে ফেরত দানের প্রতিশ্রুতিতে বিশ টাকা ধার দেয়। প্রথম দিন এবং নবীশ খেলোয়ার বিধায় সোহেল আমাকে কৃপা করে। আমি সোহেলের কাছে কৃতজ্ঞ হই। ধারকৃত টাকা নিয়ে আবারও খেলতে থাকি অবিরাম। কখনো পাই। কখনো পাই না। পেলে উৎসাহ বোধ করি। না পেলে আফসোস জাগে। ভাবি এই বিশ টাকা শেষ হলেই চলে যাবো। কিন্তু যাওয়া হয় না। একসময় ভাগ্যটা ঘুরে আমার দিকে চলে আসে। খেলার মাঝে আরও কিছু নিয়ম-কানুনের সাথে পরিচিত হই। স্প্রিং, থ্রিসিক্সনাইন, দুইতিনপাঁচ, স্কোয়াড্রিল, ট্রয়ের খেলা ইত্যাদি নামের আরও কিছু টার্মের সাথে পরিচিত হতে থাকি অভিজ্ঞ জুয়ারী বন্ধুদের বদান্যতায়।

উত্তেজনাকর এই খেলা আমার সমস্ত সময়কে থমকে দেয়। রাত ক্রমশঃ বাড়তে থাকে। সার্বক্ষণিক একটা উত্তেজনার মধ্যে আছি তাই সময়জ্ঞান থাকে না। রাত দশটা পর্যন্ত খেলা হবে মর্মে সময় নির্ধারিত হয়। শেষ দিকে আমার জুয়া ভাগ্য দ্রুত আমার দিকে ঘুরতে থাকে। আমার খুব আনন্দ হয়। হায় হায় এই মজার খেলা এতদিন কোথায় লুকিয়ে ছিল। আমাদের চারজনের মধ্যে কখনো কখনো চারজনের হাতেই ভালো কার্ড উঠে। হিট ওভার হিট হয়ে বোর্ডে ১ টাকা ২ টাকা ৫ টাকা নোটের স্তুপ হয়ে যায়। কখনো কখনো ১০-২০ টাকার নোটও স্তুপে জমতে থাকে। দান পেলে টাকা গোণার সময় হয় না। দুমড়ানো মোচরানো টাকা কোলের কাছে টেনে এনে পরবর্তী দানের জন্য প্রস্তুতি নেই। ভালোভাবে কার্ড শাফলিং করাটাও রপ্ত করে ফেলেছি ততক্ষণে।

ব্লাইন্ড খেলে দান না পেলে ভাগ্যকে দোষারোপ করি। ভাবি নিশ্চয়ই এর পরের দানে আবার পাবো। বাধ্যতামূলক তিনবার ব্লাইন্ড খেলার পর কেউ কার্ড উঠিয়ে বসে যায়। সর্বশেষ দু'জন থাকি। ব্লাইন্ড খেলি। এখানে ভাগ্যটা যেহেতু অর্ধেক অর্ধেক তাই রিস্ক নেই। ভাগ্য যখন খারাপ হয় তখন দান পাই না। ব্লাইন্ড খেলে অনেক টাকা চলে যায়। ব্লাইন্ড প্রাপ্তির নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আবার পরবর্তী দানে খেলা চালিয়ে যাই।

প্রথম দিন ভাগ্যের সহায়তায় বেশ কিছু টাকা জিতি। সোহেলের কাছ থেকে ধার নেওয়া বিশ টাকা ফেরত দিয়ে দেই। আমার মূলধন বিশ টাকা আলাদা করে রাখি। তারপরও প্রায় শ'খানেক টাকার মতো হাতে থাকে। নব্বুই দশকের প্রথম দিকে শ'খানেক টাকা মানে অনেক টাকা। দু'বেলায় ছয় টাকা করে বারো টাকার ডাইনিং চার্জ এবং তিন টাকা সকালের নাস্তা। সর্বমোট ১৫ টাকায় অনেক ছাত্রের এক দিন চলে যায়। পাঁচ ছয়শ টাকা দিয়ে দিব্যি মাস পার করে দেওয়া যায়। ডাইনিংয়ে খাবার শেষ হয়ে যায় রাত আটটার মধ্যেই। বেশি রাত হয়ে গেলে আবার হোটেলেও খাবার পাবো না। আমি জিত অবস্থায় আছি বিধায় ওরা সময় বাড়াতে চায়। খেলে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছাটাকে দমন করে আমাদের ঠিক করা টাইমেই উঠে পড়ি। পরবর্তী দিন এই সময়ে আবারও আসবো প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে উঠতে হয়। আসলে আমি ওদের পাতানো ফাঁদে নিজের অজান্তে পা দেবার প্রতিশ্রুতিই মূলত দিয়ে আসি।

খেলা শেষে শ'খানেক টাকা লাভ আমার মনে অন্য কোনো ভাবনাকে পাত্তা দিতে চায় না। শখের বসে আড্ডাজনিত চিৎ কাত খেলা যে শেষমেষ নিরেট জুয়া খেলায় পরিণত হয়ে গেছে সেটা আমার ভাবনায় আসে না। মাত্র বিশ টাকা বিনিয়োগ করে একশ টাকা প্রাপ্তিতে প্রচণ্ড আনন্দ নিয়ে রুমে ফিরি। বন্ধুদের মধ্যে দু'জন হেরেছে। ওদের মলিন মুখ আমার মনে ছায়াপাত করে না। বিনা শ্রমে স্রেফ ভাগ্যের সহায়তায় এতগুলো টাকা জিতেছি। ওদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ওরাও জিততে পারতো। তখন আমার মনের অবস্থা নিশ্চয়ই হেরে যাওয়া বন্ধুদের মতোই হতো। এ ভাবনাকে দূরে সরিয়ে দেই। বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করি। ঘুম আসে না। চোখ বুজলেই ট্রয়, রানিং, রান চোখে ভাসতে থাকে আর ভাসতে থাকে স্তুপীকৃত টাকা। এই টাকা আমার অজান্তে আমার রক্তে এক অদম্য নেশার বীজ বপন করে দেয়।

(পরবর্তী পর্বে ব্লাইন্ড গেম থেকে মাইন্ড গেম..)
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×