somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষ চিন্তা করে তাই ভালবাসে ----ডারউইনএর বিবর্তনবাদ ,যৌন পরিতোষ , রোম্যান্টিক লাভ এবং ভ্যালেন্টাইন ডে।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভ্যালেন্টাইন দিবস এবং ডারউইন দিবসের মধ্যে মাত্র ৪৮ ঘন্টার পার্থক্য। কিন্তু ধারণাগত ভাবে এ দু'টোর অবস্থান দুই মেরুতে। একটায় উদযাপিত হয় আবেগ ,ভালোবাসা , নৈকট্য ,রোমান্টিসিজম এবং অন্যটায় আবেগ বর্জিত যুক্তি-যুক্ততা এবং প্রতিযোগীতা মূলক সংগ্রামের তত্ত্ব।

সত্যি ঘটনা হচ্ছে ভ্যালেন্টাইন দিবসএর রোম্যান্টিক লাভ এবং ডারউইনএর বিবর্তনবাদ অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। রোম্যান্টিক ভালোবাসার সাথে যুক্তিযুক্ত চিন্তা ভাবনা অথবা rational thinking এবং সারভাইভাল অফ দ্যা ফিটেস্ট তত্ত্ব অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ভাবে সংযুক্ত। মানুষ চিন্তা করতে পারে তাই সে ভালোবাসতে পারে। একটা ছাড়া অন্যটা সম্ভব নয়। Man thinks ,therefore he loves .

কিতাবী গল্প --ওল্ড টেস্টামেন্ট : বুক অফ জেনেসিস


ঈশ্বর আদমকে পাঠালেন ইডেন উদ্যানে। প্রথম মানবকে ঈশ্বরীয় উদ্যানের সব বৃক্ষের ফল খাওয়ার অনুমতি দিলেন ,একটি মাত্র বৃক্ষ ছাড়া। সেই বৃক্ষ জ্ঞান অর্জনের -ভাল এবং মন্দের জ্ঞান। ঈশ্বর হুঁশিয়ারি দিলেন : জ্ঞান বৃক্ষের ফল খেয়েছো তো মরেছো ! আদম বাধ্য বান্দা , ঈশ্বরের হুকুম মেনে চলে। স্বর্গীয় এই উদ্যানে সে একাকী , ঈশ্বরের করুণা হলো , তিনি সৃষ্টি করলেন সঙ্গিনী হিসাবে ইভকে। উদ্যানের সর্প ইভ কে প্রলোভিত করলো সেই নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার , বেকুব ইভ নিজেও খেলো ,আদমকেও খাওয়ালো। ঈশ্বর জানতে পেরে ক্রোধে অগ্নিশর্মা। আদম চতুর লোক , সমস্ত দোষ চাপিয়ে দিলো ইভের ঘাড়ে। ক্রোধে লাল ঈশ্বরের ইভকে অভিশাপ : তোমার সন্তান জন্ম দেওয়ার যন্ত্রণা কয়েকগুন বাড়িয়ে দেওয়া হলো , তোমার সন্তানরা জন্ম নেবে তোমায় তীব্র যন্ত্রণা দিয়ে , তা সত্ত্বেও সন্তানের প্রতি আকাঙ্ক্ষা তোমার কোন দিন কম হবে না !

জ্ঞানবৃক্ষের ফল খাওয়া এবং তার প্রতি দানে যন্ত্রনাময় প্রসব --বড়োই বিদঘুটে শাস্তি -যাইহোক ঈশ্বরের ব্যাপার স্যাপার ,প্রশ্ন করে কেডা ??

কিন্তু ঘটনা হচ্ছে ডারউইনএর তত্ত্বও যে এরই কাছাকাছি !

ডারউইনএর বিবর্তনবাদ বলছে মনুষ্য প্রজাতির দ্বি-পদে বিবর্তনের সময় কালে মগজের আয়তন ছিল খুবই ছোট। পরবর্তী মিলিয়নস বছর ধরে শরীরের অনুপাতে মগজের আয়তন বাড়তে থাকে , দু-পেয়েরা বুদ্ধিমান হতে থাকে। মগজের আয়তন কেন বাড়তে থাকে সে নিয়ে নানা মুনির নানা মত -পরিবেশগত পরিবর্তন , ইকোলজি হাইপোথিসিস , সামাজিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ইত্যাদি ইত্যাদি।


আমরা মনুষ্য প্রজাতিরা জীবজগতে আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী শিম্পাঞ্জী ,গরিলাদের থেকে মোটামুটি তিন -থেকে পাঁচ গুন বড় মাথা বহন করি , সত্যি কথা বলতে কি আমাদের ঘাড় এবং স্পাইনাল কর্ড এত বড় মাথা বহন করার মতো শক্তিশালী নয়। ওই প্রবাদেই আছে না ,যত বড় ঘাড় নয় তত বড় মাথা !



কিন্তু বড় মাথা , বেশী গ্রে-ম্যাটার -এবং বেশী বুদ্ধি মাগনায় এলো না ---এর জন্য মূল্য চোকাতে হলো প্রচুর। সবথেকে বেশি মূল্য দিলো মহিলারা। শিশু জন্ম দেওয়ার কষ্ট বাড়লো কয়েকগুন। এক মা-শিম্পাঞ্জী অথবা এক মা-গরিলার থেকে এক মা-মানুষের সন্তানের জন্মদান অনেক অনেক বেশী যন্ত্রণার এবং কষ্টের।

কিতাবের ঈশ্বর জ্ঞান অর্জনের ফল খেতে নিষেধ করেছিল --যত বেশী জ্ঞান অর্জন ,ততবেশী বড় মাথা ,সে অনুপাতে বৃদ্ধি সন্তান প্রসবের যন্ত্রণার। কিন্তু ইভ কথা শোনেনি , ঈশ্বর অভিশাপ দিল , দুনিয়ার তাবৎ মায়েরা তার মূল্য চোকাচ্ছে ---ঈশ্বরের এটা বড়ই অবিচার !!

বিবর্তনবাদ বলছে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে মানবশিশুর মাথার আয়তন বাড়তে থাকে কিন্তু দু-পেয়ে হয়ে যাওয়ার কারণে মা-মানুষদের বার্থ-ক্যানাল, পেলভিস সেই ভাবে বাড়তে পারেনি। ফলঃ মা-মানুষের যন্ত্রনাময় প্রসব। শুধু তাই নয় প্রি-ম্যাচিউর প্রসব। হ্যাঁ ,ঠিকই পড়েছেন ,প্রি-ম্যাচিউর প্রসব। উন্নত প্রজাতির সমস্ত জীবজন্তুর মধ্যে মানব শিশুই সবথেকে বেশি অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেয়।জন্মের পর তার ম্যাচিউর হতে সবথেকে বেশি সময় লাগে কারণ তার জন্মই হয় অপরিণত মাথা নিয়ে। সদ্যোজাত থেকে পরিণত হওয়া কালীন মানবশিশুর মাথা বাড়ে প্রায় তিনগুন ,একটা শিম্পাঞ্জীর বাড়ে মাত্র ৪০ শতাংশ।

মায়ের গর্ভে শিশুর মাথা আর বড় হওয়া সম্ভব ছিল না , কারণ তাহলে মা তাকে প্রসবই করতে পারত না। এখন প্রসব তো হলো কিন্তু জন্মের পর দীর্ঘকাল ধরে তার দরকার নিবিড় লালন পালন কারণ তার অপরিণত মাথা পরিণত হবে অনেক সময় নিয়ে।

মা হওয়া কি মুখের কথা ?

খোকা মাকে শুধায় ডেকে-- "এলেম আমি কোথা থেকে, কোন্‌খানে তুই কুড়িয়ে পেলি আমারে?"
মা শুনে কয় হেসে কেঁদে, খোকারে তার বুক বেঁধে--"ইচ্ছা হয়ে ছিলি মনের মাঝারে…..
……আমার চিরকালের আশায়, আমার সকল ভালোবাসায়, আমার মায়ের দিদিমায়ের পরানে—"


আদিম প্রিমিটিভ সময়ে ,হিংস্র পরিবেশে, একলা মায়ের এই অসহায় শিশু পালন ছিল ভীষণই কষ্টকর এবং অসম্ভব। মানব শিশুর বেঁচে থাকার হার ছিল অনেক অনেক কম। মিলিয়নস অফ বছরে হোমো সেপিয়েন্সের সংখ্যা কয়েক হাজারও ছাড়ায় নি। অসহায় সেই মায়ের দরকার ছিল স্থায়ী এক পুরুষ সঙ্গীর। তার প্রতি মনোযোগী এক পুরুষ বাচ্ছার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে কয়েক গুন। কিন্তু এটা হতে গেলে নারী এবং পুরুষটির মধ্যে গড়ে ওঠা দরকার এক দীর্ঘস্থায়ী বন্ধন। শুধুমাত্র যৌন পরিতৃপ্তি এই দীর্ঘস্থায়ী বন্ধনএর গ্যারান্টি দিতে পারে না। এই বন্ধন তখনই স্থায়ী হবে যখন তাদের মধ্যে গড়ে উঠবে এক রোম্যান্টিক ভালোবাসা।

যৌন পরিতৃপ্তি থেকে রোম্যান্টিক ভালোবাসা কিন্তু একদিনে তৈরী হয়নি। এটি এসেছে লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তন এবং বিভিন্ন পার্মুটেশন -কম্বিনেশনের ফলে।
সন্তান প্রসব বন্ধ হওয়ার দীর্ঘদিন পরও মানুষ-মায়ের যৌন সক্ষমতা ধরে রাখতে পারা সেই বিবর্তনেরই আরেক দিক।

আদিম মা-মানুষকে প্রজনন ক্ষমতা হারানোর দীর্ঘদিন পরও যৌন সক্ষমতা ধরে রাখতে হত সঙ্গী পুরুষটির জন্য কারণ তার যে বাচ্ছা "মানুষ" হতে অনেক সময় লাগে। অন্য মা-প্রাণীদের সেই ঝঞ্ঝাট নেই !!

ব্যাপারটা যত সরল ভাবে বর্ণনা করা হল বাস্তবে ততটা সরলভাবে হয় নি। যৌন পরিতোষ থেকে নারী -পুরুষের রোম্যান্টিক লাভ এক দিনে তৈরী হয় নি , সময় লেগেছে লক্ষ লক্ষ বছর। কিন্তু এটাও সত্যি এই রোম্যান্টিক ভালোবাসার রঙ-বাহারী সৌধ কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকে যৌন পরিতোষের স্তম্ভের ওপর।

তবে এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় বৃহৎ কিন্তু অপরিণত মাথা নিয়ে জন্মানো মানব শিশুকে বাঁচিয়ে রাখা রোম্যান্টিক লাভ উদ্ভব হওয়ার অনেক কারণের মধ্যে একটা।

এই রোম্যান্টিক ভালোবাসা না আসলে আমাদের আদিম জনক -জননী দের মধ্যে দীর্ঘ্স্থায়ী বন্ধন তৈরী হতো না , সন্তান জন্মগ্রহন করলেও হতোনা তাদের লালন পালন , বড় মাথা এবং বুদ্ধি নিয়ে জন্মেও হোমো -সেপিয়েন্সরা হারিয়ে যেত সময়ের কাল-চক্রে যেমন হারিয়ে গেছে অনেক প্রজাতি।

ভালোবাসার উৎস সন্ধানে : তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’— সখী, ভালোবাসা কারে কয় ?

কল্পনা করুন লক্ষ বছর আগের কোন এক দিন। আফ্রিকার গহীন জঙ্গলে আমাদের পূর্বপুরুষদের কয়েকজন গেছে শিকারে। দিনের শেষে শিকার নিয়ে তারা গুহা প্রত্যাগত। পড়ন্ত সূর্যের আলোতে গাছের নিচে ফুটে থাকা কিছু বন্য ফুল ঝিকমিক করছে। সভ্যতার সেই ঊষালগ্নে ভাষার উদ্ভব হয় নি কিন্তু পৃথিবীর বুকে তখন হয়তো ঋতুচক্র শুরু হয়েছিল , হয়তো বসন্ত আসতো। দলের মধ্যে সবথেকে নবীন যে যুবকটি সে দৌড়ে গিয়ে তুলে নিয়ে এলো কিছু ফুল এবং দ্রুত গুহায় গিয়ে তার সঙ্গিনীর হাতে তুলে দিলো ফুলগুলি। ভাষাহীন সেই যুবক তার সঙ্গিনীকে আই লাভ ইউ অথবা হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে বলে নি কিন্তু তাদের ভালোবাসার অনুভূতির তীব্রতা আজকের থেকে নিশ্চয়ই কম ছিল না।

রোম্যান্টিক ভালোবাসা কোনও সামাজিক নির্মাণ বা পশ্চিমা সংস্কৃতির আমদানী নয় , এর মূল গ্রোথিত আছে মিলিয়ন বছর আগে হোমো-সেপিয়েন্সদের বিবর্তনের উদ্ভবের সময় থেকে।

সবাইকে বিলেটেড হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন দিবস এবং ডারউইন দিবসের শুভেচ্ছা !
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪৩
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×