(ফেসবুকের একটা গ্রুপে এগুলো লিখেছিলাম। বাংলা লেখা শেখায় আমার অবস্থা সেই শিশুটির মতো, যে নাম লিখতে শেখার কারনে সব দেয়াল তার নামে নামে ভরে গেল।)
Panacea:
You’re sick when we cure
ডিসেম্বর ১৯৯৮, পৃথিবীতে গুরুত্বপূর্ণ কি কি ঘটিয়াছিল, সেটা জানিবার মত সাধারণ জ্ঞানী আমরা নই। তবে কিছু অসাধারন জ্ঞানীদের সমাহার যে ঘটিয়াছিল উহা ভুলিবার নয়। যাহারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য কাবিলিয়াতির জন্য আজো আমাদের মনে এইমাত্র পরিস্কার করা কমোডের মত জ্বল জ্বল করিতেছেন। যাহাদের মাথায় আইডিয়ার কোনো অভাব ছিল না, এবং সেগুলো বাস্তবায়নের করিতে অলসতাকে তাহারা কখনই প্রশ্রয় দেন নাই। আহা, এমন বন্ধু থাকলে বিপদের আর অভাব কি?
PANACEA- সর্বরোগের মহাঔষধ নামটি নেয়া মূলতঃ জাতির মহান স্বার্থে। জাতির তরুণ সমাজ যখন আতলামী আর নদু রোগে আক্রান্ত, সেই সময়ে আমাদের ট্রিটমেন্টে কত ভুক্ত ভুগি যে আইডিয়া প্রসবা হয়েছেন সে হিসেব রাখার সময় আমরা পাইনি। শুধু একটা ব্যপার নিশ্চত, সারা জীবন গালি দিয়েও সে ঋণ তারা শোধ করতে পারবেন না।
প্যনাসিয়ানঃ আমাদের আনিস ভাই।
নাহ, আমাদের আনিস ভাই অত খারাপ না। সে খুবই নম্র, ভদ্র, অমায়ীক, নাদান এবং কালচার সম্প্রদায়ের ছেলে। ভালো ছবি আঁকেন, দিল খোলা, খরচের ব্যাপারে তার হাত কয়েক কাঠি সরেশ।
কিন্তু মানুষ তাকে বুঝতে পারে না। ছোট বেলা থেকেই মানুষ শুধু তাকে ভুল বোঝে। শুধু এই ভুল বোঝাবুঝির কারণেই তাকে অগুনিতবার স্কুল থেকে বের করে দেয়ার চেস্টা করা হয়েছে, কিন্ত পারে নাই। কারণ ভালো মানুষের জয় সবসময় হয়।
সে খুবই সিরিয়াস টাইপের স্টুডেন্ট, সারা সেমিস্টার জুড়ে বিভিন্ন কাজের চাপে পড়াশোনা করার সময় পান না এই যা সমস্যা। কিন্তু পরীক্ষার আগের রাতে তার মত সিরিয়াস পড়ুয়া ইহজগতে মেলা ভার। সারা রাত পড়েন, সারা সকাল পড়েন, সিরিয়াস ভঙ্গিতে পরীক্ষা দিতে যান এবং পরীক্ষার হলে লিখতে লিখতে ঘুমিয়ে পরেন।
স্যারেরা তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন, তিনি হাত মুখ ধুয়ে, করিডোরে জগিং করে সিরিয়াস ভঙ্গিতে লিখতে বসেন। কিন্তু কোন লাভ হয়না। ইসিজি টাইপের লেখা স্যারেরা পড়তে পারেন না বলে তিনি ফেল করেন। ভীষন অন্যায়।
ঘুমের কারনে প্রতি সেমিস্টারে তিনি ফেল করেন। কমপক্ষে একটা কোর্স। কিন্তু রাত ভর পড়ার লোভ তিনি সামলাতে পারেন না। জ্ঞানের প্রতি প্রচন্ড তৃষ্ণা নিয়ে জন্মালে যা হয় আর কি...
একবার বাসায় ব্যাপক সিকুরিটি ক্রাইসিস শুরু হলো। যে-সে যারে-তারে থ্রেট দেয়। এই আরাজকতা মোকাবিলার জন্য সবাই দলে দলে মার্কেটে গিয়া রিভলবার কিনে নিয়া আসল। রিভলবার ভর্তি সাদা প্লাস্টিকের গুলি। আনিস ভাই নবাবী কায়দায় কিনা নিয়া আসলেন প্লাস্টিকের তরবারী। সে তরবারী নিয়া উনি বাথরুমে যেতেন। কারণ বাথরুমেই নিরাপত্তাহীনতা সবচেয়ে বেশি, বাথরুমে তিনি একা।
অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সবাই ক্যাম্পাসে যেতেন। কারো কথা পছন্দ না হইলে, কুনো কথা নাই, ব্যাগ থিকা রিভলবার বাইর কইরা- ঠাঁশ...
তবে ভার্সিটির প্রথম দিকে নাকি আনিস ভাই ব্যাট বল নিয়া ক্যাম্পাসে যাইতেন এবং ক্লাস আউয়ারে খেলার প্লেয়ার খুজতেন। তবে ক্লাশ আউয়ারে গুটি কয়েক কুত্তা ছাড়া আর কেউ না থাকায় খেলা জমত না। তার কোন দোষ নাই, কুত্তারা তার সংগে খেলতে রাজী হয়নি। সম্ভবতঃ তখন থেকেই কুত্তা প্রজাতির প্রতি তার গভীর দূর্বলতার সৃষ্টি হয়। কুত্তা দেখলেই তিনি ঢিল মারতেন।
পরবর্তিতে এই লীলার জের ধরে একটি দেওয়ানা কুত্তা তাকে কামড়ে দেয়। এবং আনিস ভাইয়ের নাম পরিবর্তিত হয়ে ‘ঘেঊ আনিস’ হয়ে যায়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কুত্তাটি পুরুষ ছিল এবং কোনো এক গোপন আক্রোশে কুত্তাটি এ কাজ করেছিল। এবং এই নির্বুদ্ধতার ফলাফল কুত্তাটি সংগে সংগে পেয়ে যায়। আনিস ভাইকে কামড়ে দেয়ার ফলে কুত্তাটির দেহে জ্বলাতংক রোগ সংক্রামিত হয় এবং সেই রোগেই কুত্তাটি মারা যায়।
একবার বাংলা ছবির দূর-ভবিষ্যৎ বিষয়ে তার গভীর আগ্রহের সৃষ্টি হলো। ‘রসে ভরা বাঈদানী’ টাইপের বাংলা ছবির অত্যন্ত সমঝদার দর্শক হিসেবে সিডির দোকান গুলোতে তিনি এতটাই বিখ্যাত হয়ে উঠলেন যে সিডি’র দোকানদারেরা আর আমাদেরকে সিডি ভাড়া দিত না। কারণ আনিস ভাইকে দেয়া সিডি গুলো তারা কোনদিন ফেরত পায়নি। এতে আনিস ভাইয়ের কনো দোষ নাই, এত এত সিডি, কার কাছ থেকে কোনটা এনেছেন এইটা যদি মনে রাখতে পারতেন তাইলে তো বার্থডে ভুলে যাওয়ার কারণে কাউকে ছ্যাকা খাইতে হইত না।
তবে সিডি সমস্যারও তিনি এক সহজ সমাধান বের করেছিলেন। অত ঝামেলায় না গিয়ে সবচেয়ে কাছের দোকানদারকে তিনি সব সিডি দিয়ে আসতেন।
প্যানাসিয়ার সবচেয়ে নম্র, ভদ্র, সহজ, সরল, নাদান সদস্য হিসেবে আমরা তাকে সারাজীবন শ্রদ্ধা এবং আতংকের সাথে স্মরণ করব। সবাই চলে আসবার পরও, স্যারদের গভীর চক্ত্রান্তে তাকে প্যানাসিয়ায় যেতে হয়েছে এবং তার আসাটা আমাদের কাছে ছিল উৎসবের মত, কারণ তিনি একগাদা সিগারেট নিয়া আসতেন, পারলে আমরা ভাতের বদলে সেই সিগারেট খেতাম...
ভার্সিটি তাকে সার্টিফিকেট দিতে তালবাহানা করলেও চাকরি দেনেওলারা করেনি। পাস করার আগেই তিনি এক বিদেশী কোম্পানীর ইঞ্জিয়ার বনে যান।
আনিস ভাই আজ এই শহরের একজন কন্সাল্টেন্ট। মজা হচ্ছে ভাবী একজন ভার্সিটি শিক্ষিকা। আশা করি তার ভার্সিটিতে আর কনো আনিসকে ভুলবুঝার ঘটনা ঘটবে না।
জয়তু আনিস ভাই।
প্যনাসিয়ানঃ পলাশ ভাই
আমাদের পলাশ ভাই অত্যন্ত ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট কিন্তু ইনভার্সিতে এনভারনমেন্ট ইঞ্জিয়ারিং পড়তে আসাটাই তার কাল হয়ে দাড়লো। প্রকৃতির সাথে গোপন এক গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন তিনি। কিন্তু মুশকিল হলো, সে সম্পর্ককে মোটেও মধুর বলা যায় না।
ব্যপারটা খুলেই বলি, লেখাপড়ার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ থাকা সত্বেও পিএল এর আগে পড়তে বসাটা তার আত্মসম্মানে বাধতো। কিন্তু পিএলে পড়তে বসেও কি আর শান্তি আছে?
প্রকৃতি হলো হাড়ে হাড়ে বজ্জাত।
উদাহরন চান? ধরুন সে যথাযথ ভাব গাম্ভির্যের সাথে নিজের ঘরে পড়তে বসেছে। পড়ার প্রতি মনযোগেরও কোনো অভাব নাই। এমন সময় ঘরের বাইরে ডাকল একটা ব্যঙ।
ব্যঙের এই অহেতুক ডাকাডাকি যে তার পড়াশোনার প্রতি গভীর মনযোগ ভেঙ্গে গুরাগুরা করার অপ প্রচেষ্টা- এটা বুঝতে কারো আর বাকি থাকেনা। কিন্তু তিনিও দমে যাওয়ার পাত্র নন। টর্চ আর মোমবাতি হাতে সদলবলে বেড়িয়ে পরেন ব্যঙকে 'সাইজ' করতে। অনেক খোঁজাখুজির পর ব্যঙের বিষদাঁত ভেঙ্গে ক্লান্ত হয়ে ফেরেন রুমে। সেদিনকার মত লেখাপড়া ওখানেই অফ।
কিন্তু বর্ষাকালে এই সহজ কাজটাই অনেক জটিল হয়ে যেত, কারণ ব্যঙের সংখ্যা তখন কয়েকগুণ এবং তাদের ডাকাডকিও সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যেত। বেধে যেত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
বলতে পারেন অতকিছু না করে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখলেই হয়... কিন্তু কথায় আছে না, ঘরের শত্রু বিভীষণ।
দরজা জানালা বন্ধ করেই পড়তে বসেছেন পলাশ দা। এমন সময় ঘরের পেটমোটা টিকটিকি টা কিটকিট করে ডেকে উঠবে। কেন?? টিকটিকিকে ডাকতে হবে কেনো???
টিকটিকি যখন একগাদা পোকামাকড় খেয়ে পেট ফুলিয়ে হাটে তখন কি পলাশ দা কিটকিট করে ডাকেন??
সুতরাং টিকটিকিকে শায়েস্তা করতে হবে।
এই শায়েস্তা যজ্ঞে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা কতকিছু পরে, এরই ফাকে পরে টিকটিকির লেজটা।
মেঝেতে লাফাতে থাকা টিকটিকির লেজের ঘটনায় আইডিয়াবাজদের সমাবেশ ঘটে। এরই মাঝে একজন বলে উঠেনঃ টিকটিকির লেজ ভেজে সিগারেট দিয়ে খেলে নেশা হয়।
এর পরের ঘটনা খুবি সিম্পল। দুইদিন ধরে সবাই বেহুশ। যাই খান, সেখানেই টিকটিকির গন্ধ, হোক সেটা ভাত বা কোক। কিসের ক্লাসে যাওয়া, এ ঘর থেকে ও ঘরে যেতে গিয়ে মনে হয় টিকটিকির মত সরিস্রিপ হয়ে গেছেন। হামাগুড়ি দিয়ে ছাড়া হাটা যায় না।
প্রকৃতির এই প্রবল অসহযোগীতার কারনে তিনি ফার্স্ট সেমিস্টারে যুগান্তকারী রেজাল্ট করে বসেন। সবগুলো কোর্সে কৃতিত্বের সাথে পাশ করে তিনি সি মাইনাস পান, যা কিনা পরবর্তিতে শাপমোচন হিসেবে কাজ করে। অনেক ভালো লেখাপড়া করেও প্রকৃতির সে ঋণ তিনি শোধ করতে পারে নি।
তিনি ছিলেন বাসার পারমানেন্ট ম্যানেজার। বিভিন্ন জনকে ফাঁফড় এবং বিচিত্র সব নোটিশ জারির ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার। যেগুলোর অধিকাংশের শিকার ছিলেন আনিস ভাই। আনিস ভাই অবশ্য এগুলোকে ভ্রান্ত, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বলে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং দিতেন।
পাশ করে এসে তিনি এক প্রাকৃতিক ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিলেন। মধুপুরে খাল লিজ নিয়ে তিনি কুমিরের চাষ করবেন। বিদেশে কুমিরের মাংস এবং চামড়ার অনেক দাম। পরবর্তিতে এলাকাবাসী তার চামড়ার দরদাম শুরু করায় তিনি সে ব্যবসায় ক্ষান্ত দেন।
কিন্তু ততোদিনে তার নাম কুমির পলাশ হয়ে গেছে।
তিনি ইটিপি প্রজেক্ট পরামর্শদাতা, রিসেন্টলি বিয়ে করেছেন, ফেসবুকে দেখলাম তার বিয়ের ছবি। কিন্তু সে ছবিতে ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের বোতল ছাড়া আর কোনো অতিথির চেহারা চোখে পড়লো না।
প্যানাসিয়ানঃ তাপস ভাই
(এই ব্লগ লেখার সময় তিনি সুদূর ফিলিপাইন থেকে আমাকে শাষিয়েছেন। কাজেই তার সমন্ধে বেশী কিছু লিখব না। তাছাড়া তার বউ 'নাইন্টি সিক্স' আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুগুলোর মধ্যে একজন যার মাথার স্ক্রু বিপদজনক ভাবে ঢিলা, আমাকে বেকায়দা ট্রিটমেন্ট দিয়া জান ছেড়াবেড়া করা তার জন্য অসম্ভব কিছুই না। কাজেই এ ব্যপারে জানের রিক্স নেয়া সমিচীন হবে না।
টাকার অভাবে এখনো লাইফের ইন্সুরেন্স করতে পারিনি।)
তার নাম ব্যঘ্র তাপস। তবে রয়েল বেংগল টাইগার না, রিতিমত আফ্রিকান চিতা বাঘ। সে চিতা বাঘ হয়ে ওঠার কাহিনীটা বেশ মজার।
তাপস ভাই রাত ভর লেখাপড়া করতেন এবং মাঝরাতে ক্ষুধা লাগলে উনি ফ্রিজের সব মাছ মাংস ভেজে খেয়ে ফেলতেন। সংগে গরম পরটা তার ফেভারিট ছিল। কিন্তু পৃথিবীর একটা বাজে নিয়ম হচ্ছে, মাছ মাংস গরম তেলে দেয়ার সংগে সংগে গরম তেল চারিদিকে ছুটতে থাকে। যার ফলে রান্না নামক শিল্পটা হয়ে ওঠে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক কাজ। এ দূর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য তিনি যেটা করতেন সেটা হচ্ছেঃ দূর থেকে মাংস ছুড়ে মেরেই দিতেন দৌড়। এভাবেই একদিন পরোটা ছুড়ে মেরে দৌড়ে এসে দেখেন গরম তেল তার সারা গায়ে। গরম তেলে পুড়ে যাওয়া জায়গা গুলো কালো হয়ে যাওয়ায় তিনি চিতা বাঘ হয়ে যান।
নেহায়েৎ কপালের ফের, তার সিমটাতে কি যেন সমস্যা ছিল, ভোর বেলা ঘুমোতে যাওয়ার একঘন্টা পর থেকে তার মোবাইলে আসত উড়ো কল। 'ভাই, অমুকে এত লাখ টাকার মাল বাকিতে চায়, দিব নাকি?' এজাতীয় প্রশ্নের উত্তরে দাতা হাতেম তাঈ তার কাছে ফেল মারতো।
কেমিক্যাল ইঞ্জিয়ার হওয়ায় তাকে একবার ১০০% পিয়র এ্যলকোহল নিয়ে রিসার্চ করতে হয়েছিল। সে রিসার্চে ভার্সিটির আড়াই লাখ টাকার এ্যালকোহল খরচ হলো, আশে পাশের মানুষের হলো জন্ডিস। সে জন্ডিস রিপোর্টে একটা কথাই স্পষ্ট করে লেখাঃ ''ক্রণিক এ্যালকোহলিজম''
(ফিলিপিনে তাপস ভাই অনেক মজায় আছেন। তার বন্ধু পত্নী অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে অনেক মজার মজার খাবার রান্না করেন, সে গুলো খেয়ে তিনি অনেক কষ্টে বমি চেপে রাখেন।চিনি দিয়ে মাছ রান্নার কথা শুনলেই আমার ভেজেটারিয়ান হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। তবে ফিলিপিন দেশটা মজার আছে, ৭০% মেয়ে, কেমন জানি কামরূপ কামাক্ষা কামাক্ষা ভাব। ভাবতাছি থাকবো না এই দেশে।
প্যানাসিয়ানঃ রংগন ভাই
অনেক ভালো শিক্ষক ছিলেন। পাঠ্য বিষয়গুলো অনেক ভালো বুঝতেন। এ নিয়ে তার যেমন গর্বের সীমা ছিলনা, তেমনি ছিলো না তাকে নিয়ে শিক্ষকদের হিংসার পরিসীমা। পরীক্ষা দিয়ে এসে তিনি যখন বলতেনঃ এ পরীক্ষার বি প্লাস তো অবশ্যই পাবেন, তখনি আমরা বুঝে যেতাম এই পরীক্ষায় তার ফেল কেউ ঠেকাতে পারবেনা।
একজন সফল শিক্ষকের মত তিনি যাদের পড়াতেন, তারা পেত এ প্লাস... আর তিনি ঐ কোর্সে করতেন ফেল। বলাবাহুল্য, সবই হিংসুটে শিক্ষকদের ষড়যন্ত্রের ফল।
প্যানাসিয়ানঃ সুমন ভাই।
ঘুমের প্রতি প্রবল দূর্বলতা নিয়ে জন্মেছিলেন এই ভদ্রলোক। নিন্দুকেরা বলে একবার বাথরুমে কমোডের ফ্লাসবক্স ধরে ঘুমিয়ে পরেছিলেন তিনি। সৌভাগ্য বশতঃ বাথরুমের দরজা লাগাতে ভুলে গেছিলেন। আপনারা নিশ্চয় আশা করেন না ওই সময় কাপড় চোপড় পরে বাবু সেজে বসে থাকবেন তিনি।
আমাদের টাইগার রনি।
যেকোনো বিষয়ে বিজ্ঞ মতামত ওকেই দিতে হত। যদিও কেউ সে মতের পাত্তা দিত না। তাতে কি? যেকোনো প্রশ্নের দাঁত ভাঙ্গা জবাব সেই দিত পারত। কারন ওর সামনের একটা দাঁত অর্ধেক ভাঙ্গা ছিল।
এখন আর সে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে পারে না। কারন তার দাঁতে ক্যাপ জাতীয় কি যেন পরিয়ে নিয়েছে।
মিঠু ভাইয়ের ব্যপারেও বলার ছিল, কিন্তু এমন কোনো জুনিয়র নেই যে তার ঝাড়ি বা মার খেয়ে চূড় হয়নি। কিন্তু এ ব্যপারে কারো কিছু বলার নেই। কারণ তিনি যে আদরটা করতেন সেটা একেবারেই নির্ভেজাল এবং খোলামেলা। পৃথিবীতে জাতির পিতা টাইপের কিছু মানুষ জন্মগ্রহন করেন, দায়িত্ববোধ যাদের তাড়া করে ফেরে। উনি ওই প্রজাতির। এতগুলা আউলার মাঝে তার এই অতিরিক্ত দায়িত্ববোধ নিয়ে অনেক মজার কৌতুক প্রচলিত আছে। কিন্তু সে গুলো বলে নিজের চামড়ার প্রতি দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার পরিচয় না হয় নাই দিলাম।
বিধাতা মিলাছিল বটে। দিনগুলো ছিল অদ্ভুত সুন্দর।
মানুষকে যন্ত্রণা দেয়া যে শিক্ষার এক মহান অনুসংগ ওখানে না গেলে বুঝতাম না।
প্যানাসিয়ানরা জানেন, একদিন আমাদের বন্ধুরা এসে কেঁদে বলবেঃ দোস্ত, একটু যন্ত্রণা কর, জীবনটা একদম বোরিং হয়ে গেছে। ওদের এই কথা শুনে আমি হেসে ফেলব। সে দেখবে আমার সব দাঁত পরে গেছে, কিন্তু সেই হাসিটা এখনো আছে।
ও জেনে যাবে, এই হাসিটাই আসল, বাকি সব যাতনা মিথ্যা।
প্যানাসিয়া বিষয়ক ফটোজ
দেশ টিভি কর্তৃক প্যানাসিয়ানদের ইন্টারভিউ
দিদারের দাড়ি বিষয়ক জটিলতা
হাউজ অব প্যানাসিয়া
মাউস ইজ নট ইনাফ
যে পথ আজো পিছু ডাকে... কানে কানে
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




