২রা বৈশাখ ছিল সেদিন। দুপুর তিনটা বা এর
কাছাকাছি হবে হয়তো। দুইটা আইটেম পেন্ডিং খেয়ে
মন খারাপ করে বসে আছি। হঠাৎ বাসা থেকে ফোন।
ভাবলাম, এ সময় তো ফোন আসার কথা নয়। যাই হোক,
অনিচ্ছাভরে ফোন তুললাম। মা কথা বলতে শুরু করলেন।
কিছুক্ষণ কথা বলার পর মা জিজ্ঞাসা করলেন খেয়েছি
কিনা!
বললাম 'না'..
ওপাশ থেকে যেন একটু কান্নার শব্দ ভেসে আসলো।
'কি হল! কাঁদছো কেন?' ; আমি কিছুই বুঝে উঠতে
পারছিলাম না।
মা বললো, " এখনও খাস নি? মাসের প্রথম দিন। সবাই
একসাথে; একটেবিলে খাচ্ছি। তুই শুধু নাই। যা খেতে
যা।"
ফোনটা কেটে গেল।
প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে আমারও চোখটা যেন ধরে
এল। চোখের সামনে প্রত্যেকটা মানুষ, খাবারের টেবিল,
মায়ের হাতের খাবারগুলো নিয়ে আসতে চেষ্টা করলাম।
তারপর এক দৌড়ে খেতে গেলাম। অদ্ভুতভাবে সত্য যে,
মনটা নিমেষেই ভাল হয়ে গিয়েছিল।
'মা'- কথাটি সবসময় আবেগের না। মাঝে মাঝে
অনুপ্রেরণার। আপনি বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন, পুরো পৃথিবী
আপনার বিপক্ষে!! আপনি হয়ত ভুলে গেছেন আপনার
সবচেয়ে বড় আশ্রয়ের কথা! যিনি সবসময় আপনার উপর
থাকেন ছায়া হয়ে। 'কোথায় যেন একটু ধারনা
পেয়েছিলাম টেলিপ্যাথি সম্পর্কে। আপনি কোন সময়
কেমন থাকেন, মনের অবস্থা, আনন্দ, বিষাদ সবকিছুই
মায়ের জানা। এর জন্য তার কোন টেলিপ্যাথি বা
বিজ্ঞান দরকার হয় না।
ছোটবেলায় মায়ের মুখেই প্রথম শুনেছিলাম
ডাক্তারিতে পড়ার কথা। যেদিন সুযোগ হলো, সবার
আগে জড়িয়ে ধরেছিলাম বাবাকে। আমার এই পর্যন্ত
পুরোটা পথই বাবার হাত ধরে পার করা। মাকে জড়িয়ে
ধরে একটা কথাই বলেছিলাম, ' মা' আমি পেরেছি!'
অনেকে বলে, 'don't believe in Love at first sight..' কিন্তু,
জন্মের পর যে প্রথম দেখায় ভালবাসতে পারেনা, সে
সবচেয়ে অভাগা। আর কি বলবো! ঐ ছোট্ট কবিতা দিয়েই
শেষ করা যাক-
''মা কথাটি ছোট্ট অতি, কিন্তু জেনো ভাই;
ইহার চেয়ে নাম যে মধুর, ত্রিভূবনে নাই।।