somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন আমি নববর্ষ পালন করবো না…………

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নববর্ষ বা বছরের প্রথম দিনটি হলো সৌরবৎসরের প্রথম দিন, চান্দ্রবৎসরের নয়। প্রকৃতিপূজারী প্যাগান বা মুশরিক জাতি, তা হিন্দু হোক বা ইউরোপীয় হোক তারা সূর্যকে দেখেছে প্রকৃতির সবচেয়ে তেজদীপ্ত উপাদান হিসেবে। ফলশ্রুতিতে এই সৌরজগতের একমাত্র দৃশ্যমান শক্তির উৎস সূর্যই তাদের উপাস্য হয়েছে। অদৃশ্য মহান আল্লাহপাক উনাকে তারা তাদের ক্ষুদ্রবুদ্ধির দ্বারা অনুধাবন করতে সক্ষম হয়নি। এই পৃথিবীকে ঘিরে সূর্যের আবর্তনের(অসভ্য প্যাগানরা তাই ভাবত) ভিত্তিতে যে ক্যালেণ্ডার, সেটিই তারা তাদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের সাথে একীভূত করে নেয়। বিপরীতে ইব্রাহিমী তথা মুসলিম সম্প্রদায় কিংবা ইহুদিদের ক্যালেণ্ডার হলো চান্দ্র ক্যালেণ্ডার। খৃস্টান ধর্ম ইউরোপীয় প্যাগানদের থেকে অনেককিছুই নিয়েছে, যাদের মধ্যে সৌর ক্যালেণ্ডারও ছিল। তাই তাদের ক্ষেত্রে চান্দ্র ক্যালেণ্ডারের ব্যবহার দেখা যায় না। তবে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার ধর্মীয় উত্তরসূরীরা চান্দ্র ক্যালেণ্ডারের ধারক এটি স্পষ্ট। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম হচ্ছেন আমাদের তথা মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় পিতা।

অর্থাৎ এই নববর্ষ হলো সূর্যপূজারই একটি প্রকরণ। সৌরবৎসরের প্রথম দিনটি তারা তাদের কথিত সূর্যদেবতাকে স্বাগত জানায়। পারসিক অগ্নিউপাসকরা আগুনের পূজারী হওয়ায় আগুনের পিণ্ড সূর্যই তাদের প্রধান দেবতা, এমনকি ঋগবেদেও এমনটি উল্লেখ রয়েছে। তাই তারা সূত্রপাত করে নওরোজ উৎসবের। এই নওরোজই আজকের নববর্ষের আদিপিতা।
অর্থাৎ মুসলিম হিসেবে আমরা যেহেতু মহান ইব্রাহিমী আদর্শের ধারক, সেহেতু আমরা নববর্ষের মতো একটি অসভ্য প্যাগান উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারি না। একটি বিষয় আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, মানবসভ্যতার যত উন্মাদনা, পাগলামি, অসভ্যতা, ব্যভিচার সেগুলোর ধারক হলো প্যাগান সংস্কৃতি। কারণ প্যাগানরা নিজেদের ধর্মে ব্যভিচার, পরকীয়া, নোংরামি, বীভৎসতাকে আপন করে নিয়েছে। পৌরাণিক কাহিনী, চিতায় মানুষ পোড়ানোর বীভৎসতা কিংবা চৈত্র সংক্রান্তিতে পিঠের মধ্যে বড়শি গেঁথে চড়ক পূজাও প্যাগানধর্মের অন্তর্নিহিত বিকৃত মানসিকতার নিদর্শক।

এ প্রসংগে হযরত ইমাম আবু হাফস কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, নওরোজ বা নববর্ষ উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে তার ৫০ বৎসরের আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে। কেন? কারণ হলো মুশরিকী উৎসব মুসলিমগণ পালন করতে পারেন না। মুসলিমগণ পূজায় অংশ নিতে পারেন না, নিলে তার মুসলমানিত্ব বরবাদ হবে। আর পহেলা বৈশাখ হলো একটি পূজা মাত্র।

পহেলা বৈশাখে প্যাগানদের যেসব উৎসব রয়েছে সেগুলো হল

১) হিন্দুদের ঘটপূজা
২) গণেশ পূজা
৩) সিদ্ধেশ্বরী পূজা
৪) ঘোড়ামেলা
৫) চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা
৬) চড়ক বা নীল পূজা বা শিবের উপাসনা ও সংশ্লিষ্ট মেলা
৭) গম্ভীরা পূজা
৮) কুমীরের পূজা
৯) অগ্নিনৃত্য
১০) ত্রিপুরাদের বৈশুখ
১১) মারমাদের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব
১২) চাকমাদের বিজু উৎসব
(ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের উৎসবগুলোর সম্মিলিত নাম বৈসাবি)
১৩) হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা
১৪) মজুসি তথা অগ্নি পূজকদের নওরোজ


তাছাড়া এই পহেলা বৈশাখের আগের কয়েকটি দিন হলো ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এই সময়টিতে ইলিশ ধরার কারণে দেশের ইলিশসম্পদের চরম ক্ষতিসাধিত হচ্ছে। এই সময়টিতে ইলিশ না ধরলে বাকি বছরটা কমদামে ইলিশ পাওয়া সম্ভব হবে, এরকমই অনেক মৎস্যবিশেষজ্ঞের মন্তব্য। ফলে নববর্ষের অনুষঙ্গগুলো বর্জন করাটা মুসলিম হিসেবে আমাদের জাতিগত দায়িত্বের মধ্যেতো পড়েই, দেশের সম্পদ রক্ষার স্বার্থেও এই নববর্ষ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আমাদের বর্জন করাটা অতীব জরুরী।
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×