somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমজনতার রামরাজত্ব

২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কয়েক বছর আগে এক ভদ্রলোকের কিছু ‘প্রগতিশীল’ ও ’সুচিন্তিত’ লেখা পড়ে ভাল লাগল। এরপর হতে তার লেখা চোখে পড়লে পড়তে শুরু করলাম। হালকা প্রতিক্রিয়াও জানাতে থাকলাম।
মাঝে একদিন আমি কোলকাতায় ভাগে মাছ কেনা, নিত্য পণ্যের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগা বিক্রীর প্রশংসা করে, এবং, আমাদের এখানে ভাগা কেনা নিয়ে হীনমন্যতাজনিত ফুটানি নিয়ে একটি লেখা লিখলাম।
এই ‘ভদ্রলোকে’র আঁতে খুব ঘাঁ লাগল।
ফুটানী বাঙালদের প্রতিনিধি হয়ে তিনি তার দেয়ালে বাঙালদের চিরায়ত জমিদারিত্ব, অতীত গৌরব, আভিজাত্য, এবং আমার মতো “ভাগা’র প্রশংসাকারীদের বেশ এক হাত নিয়ে ভাগায় মাছ কেনার মতো ফকির যে বাঙালীরা কোনো যুগেই ছিল না, বাঙাল যে যুগ যুগ ধরে নবাবের জাত-তার ইতিহাস তুলে ধরে বেশ কড়া ভাষায় (কার্যত আমাকেই) বেশ এক হাত নিলেন।
এমনকি, লেখাটা নিয়ে তাকে যখন ইনবক্সেও আকারে ইঙ্গিতে সামান্য লিখলাম, তিনি তার অবস্থান হতে সামান্য নড়লেন তো না-ই, এমনকি একজন মানুষকে ইঙ্গিত করে অভব্য ভাষায় লিখেও, আর, একটি ভুল ধারনাকে ভুল ভাবে উৎসাহিত করবার ভুল করেও তিনি বিন্দুমাত্র কুঞ্চিত হলেন না।
তার প্রগতিশীলতা নিয়ে আমার ভুল ভাঙল। পরমতসহিষ্ণু নয়-এমন প্রগতিশীলতায় আমার পোষায় না।
একই রকম প্রগতিশীল আমার আরেকজন সুহৃদ ছিলেন। ছিলেন বলতে, তিনি মরে যান নাই, যাস্ট এখন আমি আর তার সুহৃদ নেই। এমনিতে দেখতে, শুনতে সবই ঠিকঠাক। গড়পড়তা বাঙালি যেমন হয়, তার বেশি কিছু না। ভাত খান, সুন্দর লেখেন, সুন্দর বলেন, (সুন্দর গেলেন কিনা জানতাম না।) মেয়ে মানুষও ভালোবাসেন, পর্দানশীন সাকিবপত্নির এ্যডভোকেসিও করেন, ছ্যাড়কাড়কেরও গালাগাল করেন, জনতাকেও কিঞ্চিত বেইল দেন-এই আরকি। বেশ প্রগতিশীল একটা হাইড আউট। তার ভেতরে ঘাঁপলা।
ভদ্রলোক একদিন একখানা বেশ আবেগী ও চিন্তার উদ্রেককারী লেখা প্রসব করলেন। লেখার বিষয়, ‘সমাজটা উচ্ছনে গেল।”
কীভাবে গেল?
না, তার অফিসে আজ হতে বহু যুগ আগে রোজার সময় শুনশান (শ্মশানের) নিরবতা থাকত। যারা রোজা রাখত না, আর যাদের রোজা রাখার নেই (এক কথায় ভোজদার), তারা খুব চুপেচাপে, চামেচিকনে, অত্যন্ত সংকোচের সাথে (হয়তো দুইহাত জড়ো করে পশ্চাৎদেশে চেপে) কোথাও চিপায় চাপায় গিয়ে তড়িঘড়ি দু’টো মুখে দিত। কেউ জানতও না।
উটকো কেউ “রোজা আছেন নি?” জিজ্ঞেস করলে ’পাপী’ ভোজদাররা ভয়ে, শরমে থতমত খেয়ে একটা ঢোঁক গিলে বলত, “হ্যা, হ্যা, নিশ্চয়ই।” সামাজিক বিশুদ্ধতার চাপে অফিসের হরগোবিন্দ বাবুও ভয়ে পানিও খেতেন না। (মানে অফিসের সমাজে বেশ একটা নুরানী সেন্সরশিপ ছিল তখন।)
ভদ্রলোকের আক্ষেপ হল, কয়েক দশক পরে ‘ইদানিং’কার অফিসে, সোশ্যালে মানুষজন খুব ’বেয়াদব’, ’কুফফার’, ’মোরতাদ’ হয়ে গেছে। সে কী ঔদ্ধত্য মানুষের! সব দলবেঁধে, বুক ফুলিয়ে চা-কফি প্রকাশ্যে খাচ্ছে। ব্যালকনীতে তামুক ফোঁকা চলছে। দুপুরে দলবেঁধে লাঞ্চে যাচ্ছে। এসব অধঃপতন তিনি মেনে নিতে পারছেন না। সমাজটা গোল্লায় গেল।
তা, এই সমাজেরই আরেকটি অংশ যখন তারই যেকোনো কাজকে গোল্লায় যাওয়া ভেবে হা হুতাশ করে, তখন তার কেমন লাগে; বা তাদের সেই লাগাকে তিনি কীভাবে নেন-তা জানতে খুব ইচ্ছে করে।
এমনিতে ভদ্রলোক বেশ কট্টর, পরমতঅসহিষ্ণু, অভিজাত ঘরানার সমর্থক। যার তার সাথে মেশেন না, যার তার কাজকে, কথাকে, মতামত ও শিক্ষাকে গোণায় ধরেন না। কথায় কথায় একে, ওকে, তাকে বেকুব, ছাগল, নিকম্মা, নিচুজাতের তকমা দিয়ে বসেন। এই যে, মানুষের ব্যক্তিমতকে অশ্রদ্ধা করবার প্রবণতা যার ভেতরে, তার এই ধর্মবোধ তার জন্য ৭০ হুরের স্বর্গে যায়গা নিশ্চিত করবে তো?
আমার আরও জানতে খুব ইচ্ছে করে, এই দেশের বাঙালরা ইউরোপ, আম্রিকায় যখন পাড়ি জমায়, তখন সেখানে তাদের সংযম ও ঈমান মুহুর্তে মুহূর্তে আহত-নিহত হয় কিনা?
সেখানকার ধর্মচারীরা তাহলে সেখানে টেকেন কীভাবে-সেই নিয়ে জনাব অমি রহমান পিয়াল সাহেবের এক লেখা পড়ে আমি এই বিষয়টা নিয়ে আরও চিন্তায় পড়ি। তিনি বঙাল দেশের ঈমানদারদের প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, যে, এই দেশের মানুষের রোজা এত সহজে আঘাত পায় কী করে? কাউকে পানি খেতে দেখলেই তাদের রোজা হালকা হয়ে যায় কেন? আর বিপরীতে তারা ইউরোপের নগ্নতার দেশে কীভাবে তাহলে এত সংযম রাখেন?
যাহোক, ভাগা ঘৃনক ভদ্রলোকের গরম পোস্ট পড়ে বছর তিনেক হয়তো কেটেছে।
আমি আজ যদি ওই ’ভদ্রলোক’কে বাঙাল মূলকে অহরহ ভাগায় মাছ কেনা হতে শুরু করে আড়াইশো গ্রাম গোমাংস বিক্রীর মচ্ছব ও তার প্রতি জনঅভিনন্দনের বন্যাটা সামান্য দেখাতে পারতাম, তাহলে মরেও একটু শান্তি পেতাম। অবশ্য, ফুটানির লুঙ্গি পুরোনো হয়ে গেলে সেটার অস্থানের ফুটো দিয়ে কালো বা ধলো পশ্চাৎদেশ দৃশ্যমান হলে আর আগের মতো শরম মালুম হবার কথা না। কয়েক বছর ধরে আমাদেরকে যেভাবে ধনী দেশের তাবিজ গেলানো হচ্ছিল, আর আমরাও বেকুবের মতো সেই দিবাস্বপ্নকে মিথ্যা জেনেও তাকে বিশ্বাস করে নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত হয়েও ধনীগীরি উপভোগ শুরু করেছিলাম, অকাল ক্ষণপতন তখনই ললাটে লেখা হয়ে গিয়েছিল।
বাংলা, বিহার, ওড়িষ্যার চিরায়ত নবাব বাঙালরা এখন বেশ সোনামুখ করেই ভাগা কিনছে। ফুটানিতে বাধছে না। বাঙালরা চিরকালই ঋন করে ঘি খাবার সমঝদার। এঁরা আম্বানীদের বেশুমার খরচ নিয়ে টিপ্পনি কাটে, উপদেশ ঝাড়ে। আবার এরাই নিজের বিয়েতে নিজ আয় ও সঞ্চয়ের দশগুন ধার করে মেজবান করে।
যাহোক, কথা হল, বাঙালি ভাগা ও মাছের ঝুটা কিনছে। সাধারন মানুষ যেমন কিনছে, কয়েক যায়গায় পড়লাম, যে, ধনীরাও নাকি দিব্যি কিনছে। কারওয়ান বাজারে পাঙাসের ঝুটা কাঁটা কেনা নিয়ে তো এক মহা ফেসবুককাব্যই রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। (যদিও এই ভাইরালের অন্যতম মাজেজা ভারত বয়কটের হাইপের মতোই হাইপ মাত্র।)
কাল আবার দেখলাম, এক ভদ্রলোক, ওসব কাঁটা, গিলাকলিজির ভাগা যে মানুষ অভাবে পড়েই কিনছে-সেই পপুলার ধারনাকে ভুল প্রতিপন্ন করে লিখেছেন, ওসব তথাকথিত উচ্ছিষ্ট বরাবরই একদল ভোজন রসিকের নন-কনভেনশনাল রেসিপির জন্য আরাধ্য ছিল, আর, আজকাল সৌখিন মধ্যবিত্ত ও ধনীরা তাদের সখের বেড়াল কুকুরের খানার জন্য ওগুলো কিনছেন। ফলে চাহিদা বাড়ায় সরবরাহ ও দাম বেড়েছে। তার মতে, ঝুটা-কাঁটার মহাকাব্যিক শোকগাঁথার রহস্য আসলে অভাব না, বাস্তবতা ও সৌখিনতার মিশেল। সাধু সাধু। বাঙালি, কোনো কিছু ভাইরাল করবার আগে সামান্য ভেবে দেখবার মতো মাথাটা ঘামাতে চায় না।
বলছিলাম, যে, কয়েক বছর আগে সাধারন মানুষ নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম।
কথায় কথায় আমরা ‘সাধারন মানুষ’ ও ‘গরীব মানুষ’ নামের ভুল সমবেদনা ও এ্যলিবির খুব ব্যবহার করি। যেন এই দেশের সাধারন মানুষ আর গরীব মানুষ সব ফেরেশতা। যদিও আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস হল, আমাদের দেশের সিংহভাগ মানুষ (#সবাই১ না)ই অসৎ, চরিত্রহীন ও ন-মানুষ। তবুও, সুধীজনের মতামতকে সম্মান দিয়ে ধরে নিই, যে, দেশে ’সাধারন মানুষ’ নামে একটি নিরীহ ও ভাল মানুষের উপস্থিতি আছে।
এই সাধারন মানুষেরা নাকি ব্যাপক কষ্টে আছে। গতকালই পড়লাম, দেশের ৪ কোটি মানুষ খাদ্য যোগাড়ের জন্য নাকি ঋন করে চলছেন। অবশ্য অনলাইন মাধ্যমে প্রাপ্ত ৯৯% তথ্য ও তত্বই ভুয়া। এটাও ভুয়া কিনা জানি না। অবশ্য, যেই দেশে খোদ রাষ্ট্রই নিজে ভুয়া ও বানোয়াট পরিসংখ্যান প্রসব করে, ইনকিউবেট করে, সেখানে তথ্যের সততা সুদূর পরাহত।
তো, এহেন কষ্টে থাকা সাধারন মানুষদের একখানা, না না, দু’খানা ফিরিস্তি দিই। ফিরিস্তি বিশ্বাস না হলে মিরপুর ১০ হতে মিরপুর ১ এর দীর্ঘ দুই কিলোমিটার সড়কের দুপাশের বিপুলায়তন ভ্যান হুসেন গ্যালারী ও ফুটারী প্লাজার ঈদ বাজারের মৌমাছির মতো ভীড়টা একটু নজরে আনুন।
গতকাল রাতে আমি আর নিটোল হেঁটে বাসায় ফিরছি। বাসার সামনেই একটি ভ্যানে পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও আলু বিক্রী হচ্ছে। আমরা সামান্য পেঁয়াজ ও আদা কিনলাম। হঠাৎ দেখি, তার ভ্যানে দুটি মিষ্টি কুমড়ো। বাজার করতে যারা মোটামুটি অভ্যস্ত, তারা জানবেন, পেঁয়াজ ও রসুন যারা ভ্যানে বিক্রী করেন, তারা সাধারনত সব্জি বিক্রী করেন না। তা-ও আবার এই রাতে। দাম জিজ্ঞেস করলাম-মাত্র ২০ টাকা কেজি, যদি আস্তটা নিই। ওজন করলাম। ৫.৩ কেজি। ১০০ টাকা হলেও নিটোলের দামাদামিতে ৮০ টাকায় দিয়ে দিলেন। কুমড়োটা নিলাম।
বাসায় আসতে আসতে একটা ভিন্ন চিন্তা মাথায় এলো। নিটোলকে বললাম, দেখো, বাজারে মিষ্টি কুমড়ো এখনো ৪০-৫০ টাকা কেজি। ভ্যানে সাধারনত দাম আরেকটু বেশিই থাকে। উল্টো মাত্র ২০ টাকা কেজি। তাতে আবার পেঁয়াজের ভ্যানে মিষ্ট কুমড়ো। ব্যাপারটা বেশ ব্যতিক্রমী; আর, সন্দেহজনক না হলেও কৌতুহলদ্দীপক তো বটেই।
আমার ধারনা, ওই ‘সাধারন’ ভ্যানওয়ালা মিরপুর পল্লবীতে বিদ্যানন্দ্য’র উদ্যোগে যে ‘আল্লার দান’ কৃষক বাজারটা খোলা হয়েছে, যেখানে সরাসরি মাঠ হতে কৃষকের কাছ হতে কেনা সব্জি ৫-১০ টাকা দামে উন্মুক্তভাবে বিক্রী হয় (প্রান্তিক কৃষকদের অবিক্রীজনিত ক্ষতি হতে রক্ষা করতে তাদের এই উদ্যোগ।), সেখান হতে সস্তায় কিনে এনে এই লোক কুমড়ো দুটো আবার রি-সেল করছে। যেহেতু অতি সস্তায় কেনা, তাই বাজার হতে অনেক কমে সে বিক্রী করে দিচ্ছে। কারন, তারপরও মোটা লাভ। অথচ, বিদ্যানন্দ্যের ওই বাজার ব্যবসায়ী মনোভাবকে সহায়তা করতে নয়, কৃষককে বাঁচাতে, আর সাধারন ক্রেতা, যারা উচ্চমূল্যে কিনতে পারেন না, তাদেরকেও কম দামে পণ্য দেয়ার জন্য; মোট কথা, কৃষক ও দরিদ্র অথবা মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের ব্রিজিং করে উভয়কে উপকৃত করাই তাদের নিয়তে ছিল।
এই ভ্যানের তথাকথিত ‘সাধারন’ নামের অসাধারন বাঙালদের রিসেল করে ধান্দা করার জন্য না। অথচ সে করছে (আমার ধারনামাত্র।)
মজার ব্যাপার হল, মাত্র গতকালই এক ভদ্রলোকের লেখা পড়ছিলাম। উনি এলাকার ‘সাধারন’ ক্রেতাদের উপকার করবার জন্য নিজের খামাদের উৎপাদিত ডিম এনে এলাকায় ন্যায্য ও কম দামে ক্রেট (খাঁচি) ধরে বিক্রী করতে শুরু করেন। একজন দু’জন করে ব্যাপারটা বেশ ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে আসতে থাকে। সবচেয়ে বেশি আসতে থাকে এলাকার ধনী মানুষেরা, যারা বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খুবই কষ্টে আছেন।
এর মধ্যেই এক মহিলা ঘন্টাখানিক আগেই এক ক্রেট ডিম নিয়ে যাবার পরে আবার এসেছেন ডিমের জন্য। একজনকে এক ক্রেটের বেশি বেচা হবে না জানিয়ে তাকে এত দ্রুত আবার আরেক ক্রেট ডিম কিনবার কারন জিজ্ঞাসা করায় তিনি বললেন, আগেরটা আমার দোকানের জন্য নিয়েছি। এই ক্রেটটা আমার ভাইয়ের দোকানে বিক্রীর জন্য।
ভাবুন অবস্থা। একজন মানুষ ‘সাধারন’ মানুষদের উপকারের জন্য ন্যায্য ও কম দামে ডিম বিক্রী করছেন। আর ’সাধারন’রা সেটা হতে ফায়দা লোটার ধান্দা করছে।
এই হল আমাদের সাধারন জনতা। যারা নাকি আবার বাংলা, বিহার, ওড়িষ্যার নবাবের বংশধর। ইদানিং ‘জালিম ছ্যড়কাড়ের’ কারনে খুব কষ্টে আছে।
অনেকে আবার আমার সেই অভিজাততন্ত্রে বিশ্বাসী দুই সাবেক সুহৃদের মতো বিশ্বাস করেন, যে, আজকাল সমাজটা পঁচে গেছে। সেই ‘আগের’ দিনগুলোই ছিল স্বর্ণযুগ।
সে এক কল্পিত স্বর্ণযুগ, যার সত্যিকারের অস্তিত্ব কখন, কোন দাপর যুগে ছিল-কেউ জানে না।
তবে আমি, মানে এই অপাংক্তেয় ও দুরাচার মানুষটা, বাঙালদের সেই স্বর্ণযুগের অস্তিত্ব কোনোকালেই দেখি না; যেই যুগে বঙ্গদেশের সকলে পীরে মোদাচ্ছের ছিল।
বরং, আমি তো দেখেছি, সেই ৪৫ বছর আগের বাংলাদেশেও আমার তীর্থযাত্রী চাচা আমার বাবার অংশের ৩ শতক ভিটেবাড়িও দখল করে নিয়ে পরের বছর তীর্থযাত্রা করে এসে বাড়ির ইবাদতালয়ের নেতা বনে গিয়েছিলেন।
আর সেই যুগেই আমাদের কলোনীতে কাজ করা ‘সাধারন মানুষ’, ‘গরীব মানুষ’ কাজের বুয়া শরিফার মা ও তার সন্তানেরা দিনের বেলায় আমাদেরই বাসায় ‘মুরগা’র সালুন দিয়ে সহানুভুতি ও সাম্যবাদের ভাত খেত, আর রাতেই তারা দলবল বেঁধে আমাদের খামারের মুরগীগুলো চুরি করে নিয়ে যেত। নিক, আহা, গরীব মানুষ! আহা, সাধারন মানুষ!
সেই গরীব মানুষ, যারা রেলের মালগাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সেটাতে লুট করে; বাজারে আগুন লাগলে দোকানে লুট করে। সেই সাধারন নামের অসাধারন মানুষ, যারা আগুন লাগলে পানি না ছিটিয়ে, কিংবা গাড়ি দুর্ঘটনা হলে মানুষকে হাসপাতালে না নিয়ে কিংবা না নিতে দিয়ে মোবাইলে কনটেন্ট বানাবার ধান্দায় ভিডিও করে।
আহা স্বর্ণযুগ! আহা সাধারন মানুষ!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×