somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেরিন্জিয়া আখ্যানঃ পুরাতন থেকে নতুন বিশ্বে মানব-অভিবাসনের যোগসূত্র

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সূর্য উঠতে তখনও ঢের বাকী। আড়মোড়া ভেঙ্গে গুহা বাড়ি থেকে বাইরে এসে দাড়ালো উলা।

রাতের শেষ প্রহরের বিভিন্ন রকমের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে, যেটা একান্তই রাতের; দিনের আলোয় এই শব্দগুলো একেবারেই পাওয়া যায় না। বাতাসে ভেসে আসছে কেমন একটা সোদা সোদা গন্ধ। মন মেজাজ ভালো থাকলে এই গন্ধটাও খুব ভালো লাগে ওর, তবে এখন লাগছে না। মেজাজ চরম আকারে খারাপ হয়ে আছে। শীতের শুরু হতে এখনও অনেক দেরী, তারপরেও এই সময়ের বাতাস কেমন জানি একটা শীতল পরশ বুলিয়ে যায় আপাদমস্তকে। হঠাৎ হঠাৎ শিউরে ওঠে শরীর! মাথা ঝাকিয়ে ঘোৎ করে একটা বিদঘুটে শব্দ করলো ও। ঘুম তাড়ানো জরুরী, এখন কোন আরাম আয়েশের সময় না। ধীরে ধীরে আরও কয়েকজন এসে জড়ো হলো। শিকারে যাওয়ার সময় হয়েছে।

নিঃশব্দে প্রায় আধা ঘন্টা হেটে একটা ছোট্ট হ্রদের ধারে এসে পৌছুলো দলটা। যার যার হাতিয়ার শক্ত করে ধরে অপেক্ষায় থাকলো শিকারের। এই সময়ে জীবজন্তুরা পানি খেতে আসে এখানে। আস্তে আস্তে আকাশ ফর্সা হতে শুরু করলো। সূর্যদেবতা উঠি উঠি করছে। আর শিকারের সুযোগ নাই। আজ চতুর্থ দিন। চারদিন ধরে ওরা কোন শিকার পাচ্ছে না। দলের সবাইকে হতচকিত করে রাগে-দুঃখে-ক্ষোভে বিকট শব্দে চিৎকার করে উঠলো উলা। নিজের ঘরে দু'টা কোলের শিশু। ওদের গোত্রেও আরো অনেক শিশু আছে। গত চারদিন ধরে লতা-পাতা খেয়ে আছে সবাই। শরীর গরম রাখার জন্য, শক্তির জন্য ওদের প্রচুর পরিমানে মাংস চাই। গোত্রের প্রধান হিসাবে শিকারের যোগান দেয়া ওর দায়িত্ব। সেটা করতে পারছে না। এভাবে আর চলতে পারে না।

পূবের আকাশের দিকে তাকালো উলা। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। আরো পূর্বদিকে সরে যেতে হবে ওদেরকে। বন্য প্রানীদের পালগুলো ওদিকেই যাচ্ছে। কতো পুরুষ ধরে এখানে ওদের আবাস জানা নাই উলার, তবে এখন আর এসব চিন্তা করারও কোন মানে নাই। শীতের আগেই নতুন জায়গায় না যেতে পারলে মরতে হবে সবাইকে।

আজ থেকে কম-বেশী ত্রিশ হাজার বছর আগে ঘটা উলার ঘটনাটা……..বুঝতেই পারছেন আমার মনের মাধুরী মেশানো কল্পনা। তবে, ঘটনা মোটামুটিভাবে এমনটাই ছিল। সে'সময়ে মানুষের অভিবাসনের প্রধানতম কারন ছিল খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরন, আবহাওয়া তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না। আবার এটাও মাথায় রাখতে হবে, এ'ধরনের অভিবাসন ঘটেছে হাজার হাজার বছর ধরে, কাল্পনিক উলার মতো কোন একক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে না। একটা বিশাল এলাকা জুড়ে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন গোত্রের গোত্রপতি ''উলা'' এভাবেই জায়গা বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

এমনই একটা অভিবাসন বিজ্ঞানীদেরকে যুগের পর যুগ ভাবিত করেছে। সেটা হলো, নতুন বিশ্ব বা আমেরিকা মহাদেশে (উত্তর এবং দক্ষিণ) মানবসম্প্রদায় ঠিক কবে থেকে বসতি স্থাপন করে। আরো ভাবিত করেছে, এরা কোত্থেকে এসেছিল, আর কিভাবেই বা এসেছিল। তবে, আমেরিকার আদিবাসীদের জিন বিশ্লেষণ করে তারা নিশ্চিত ছিল যে, এরা এশিয়া থেকেই মাইগ্রেট করে আমেরিকায় আসে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজতে গিয়েই বেরিন্জিয়ার বিষয়টা তাদের সামনে চলে আসে। বেরিন্জিয়াকে বলা হয়ে থাকে, ''একটা ডুবে যাওয়া সেতু যার আকার ছিল মহাদেশের সমান''।


অভিবাসনের অনুমিত রুট

আচ্ছা, আপনাদের সামনে পৃথিবীর সে'সময়ের একটা চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা যাক।

ত্রিশ হাজার বছর আগে পৃথিবীর চেহারা স্বভাবতঃই আজকের মতো ছিল না। চলমান শেষ বরফ যুগের সর্বোচ্চ পর্যায় ছিল তখন, যেটা বিজ্ঞানীদের কাছে ''লাস্ট গ্লেসিয়াল ম্যাক্সিমাম'' নামে পরিচিত। উত্তর আর দক্ষিণ মেরুর হিমবাহগুলি সহ পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশই কঠিন বরফের নীচে ঢাকা পড়েছিল, কোথাও কোথাও বরফের পুরুত্ব ছিল এমনকি দুই মাইলের মতো। পানি বরফ আকারে আটকে থাকার কারনে তখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আজকের চাইতে অন্ততঃ ১২০ মিটার নীচে ছিল। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে অনেক বিশাল বিশাল ভুখন্ড যেগুলো আজ সমুদ্রের নীচে চলে গিয়েছে, সেখানে গাছপালা ছিল, ছিল মানুষ আর জীবজন্তুদের অবাধ বিচরন। তেমনিভাবেই সাইবেরিয়া থেকে আলাস্কা পর্যন্ত একটা বিশাল ভুখন্ড, যা ছিল আয়তনে একটা মহাদেশের সমান; উত্তর-দক্ষিণে ১,৬০০ কিলোমিটার আর পূর্ব-পশ্চিমে ৪,৮০০ কিলোমিটার দের্ঘ্য-প্রস্থবিশিষ্ট এই ভুখন্ড বর্তমান কানাডার ম্যাকেন্জি নদী থেকে শুরু করে রাশিয়ার ভারখোয়ান্স্ক পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বিজ্ঞানীরা একে বেরিন্জিয়া বলে থাকেন।


বেরিন্জিয়ার ব্যাপ্তি

১৯৩৭ সালে এরিক হুল্টন নামে একজন সুইডিশ (উদ্ভিদ বিজ্ঞানী এবং জিওগ্রাফার) জানান, আলেউশিয়ান দ্বীপমালা এবং বেরিং প্রণালী অঞ্চলের আশেপাশে তুন্দ্রা অন্চলের অনুরূপ গাছপালা ছিল যা মূলত আলাস্কা এবং চুকোটকার মাঝামাঝি একটি বর্তমানে নিমজ্জিত ভুখন্ড থেকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভুখন্ডটাকে তিনি ভিটাস জোনাসেন বেরিং এর নামে নামকরন করেন বেরিন্জিয়া। জোনাসেন ছিলেন একজন ডেনিশ কার্টোগ্রাফার এবং এক্সপ্লোরার যিনি রাশান নৌবাহিনীর হয়ে ১৭২৮ সালে সর্বপ্রথম ওই অন্চলে ভ্রমন করেন।

এই পুরো অন্চলটাই হিমবাহের আওতামুক্ত ছিল।

বেরিন্জিয়া-সম্পর্কিত গবেষণারত বিজ্ঞানীরা তাত্বিকভাবে একমত হন যে, এশিয়া থেকে মানুষ বেরিন্জিয়াতে বসতি স্থাপন করে। কিন্তু শুধু একমত হলেই তো হবে না, এটাকে প্রতিষ্ঠিত করতে মানুষের উপস্থিতির শক্তপোক্ত প্রমাণ চাই। এ'সম্পর্কিত প্রথম সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে ২০০১ সালে রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের প্রত্নতত্ত্ববিদ ভ্লাদিমির পিটুলকোর হাত ধরে। রাশিয়ার বর্তমানের সাইবেরিয়ার ইয়ানা নদীর ধারের বিখ্যাত ইয়ানা সাইটগুলিতে (Yana Rhinoceros Horn Site, যা একসময় পশ্চিম বেরিন্জিয়ার অন্তর্ভূক্ত ছিল) খনন করার সময় পিটুলকো এবং তার দল প্রচুর (প্রায় ২,৫০০) প্রাচীণ আইভরি আর্টিফ্যাক্ট পান। তিনি রেডিও কার্বন ডেটিংয়ের জন্য একটি নমুনা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠান। ফলাফল ছিল বিস্ময়কর, নমুনাটি ২৭,০০০ থেকে ২৮,০০০বছর আগেকার! ফলে বরফযুগের সময়গুলোতে এ'অন্চলে মানুষের উপস্থিতির একটা বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। বেরিন্জিয়ার হারিয়ে যাওয়া অতীতের সন্ধানকারী বিজ্ঞানীদের অন্যতম একজন হলেন ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর ইনস্টিটিউট অফ আর্কটিক অ্যান্ড আলপাইন রিসার্চ-এর প্রত্নতাত্ত্বিক এবং মানব-পুরাতত্ত্ববিদ জন হফেকার। ইনি অনুসন্ধানে যথাযথ প্রমানের অভাবে একপর্যায়ে একটু হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। এই আবিস্কারে হফেকারের প্রতিক্রিয়া ছিল, আকাশের চাদ হাতে পাওয়ার মতো। তবে একইসঙ্গে তিনি এটাও জানান…...আরো প্রমাণের জন্য অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে হবে।


ইয়ানা সাইট


গন্ডারের শিং দিয়ে তৈরী বর্শা

এদিকে ২০০৭ সালে বেরিন্জিয়া সংক্রান্ত গবেষণায় আরেকটা পালক যুক্ত হয়। এস্তোনিয়ার তারতু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনেটিক বিশেষজ্ঞ এরিকা ট্যাম আর তার ২০ জন সহকর্মী ৬০১ জন আদিবাসী আমেরিকান এবং ৩,৭৬৪ জন আদিবাসী এশিয়ানদের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ তথ্য বিশ্লেষণ করেন। তাদের গবেষণা পিএলওএস ওয়ান (PLOS One) জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণার ফাইন্ডিংস অনুসারে, নতুন পৃথিবীতে যাত্রার আগে প্রাচীন এশীয় অভিবাসীরা মধ্যবর্তী কোথাও দীর্ঘকাল আবাস গেড়েছিল। আমেরিকাতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য অর্জনকারী নতুন জিনগত বংশ বিকাশ কোন স্বল্পকালীন বিষয় না। জিন মিউটেশানে বিস্তর সময়ের প্রয়োজন। এখানেই বেরিন্জিয়ান স্ট্যান্ডস্টিল মডেল বা হাইপোথেসিসের ইন্ট্রো ঘটে। এই মডেল অনুসারে আমেরিকায় অভিবাসনকারীরা এশিয়া থেকে সরে আসতে আসতে অভিবাসনের পূর্বে এমন কোন একটা জায়গায় হাজার হাজার বছরের জন্য স্থায়ী হয়, যার ফলশ্রুতিতে তাদের জেনেটিক মেইক আপের পরিবর্তন ঘটে। এটাই ছিল এরিকা ট্যামের গবেষণা অনুযায়ী এশিয়ান আর আমেরিকান আদিবাসীদের জেনেটিক পার্থক্যের মিসিং লিঙ্ক।

এই দুই অগ্রগতিতে উৎসাহিত হয়ে হফেকার একটা সমন্বিত জোড়ালো অনুসন্ধানের তাগাদা অনুভব করেন। এই উপলব্ধি থেকেই অনুসন্ধান আর গবেষণা জোরদার করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে মার্কিন জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে হফেকার ব্রেইন স্টর্মিং এর জন্য বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বেরিন্জিয়া বিজ্ঞানীদের কলোরাডোতে নিয়ে আসেন। সবাই সেখানে মোটামুটিভাবে বেরিন্জিয়ান স্ট্যান্ডস্টিল মডেল নিয়ে একমত হন এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

এরই মধ্যে বেরিন্জিয়া-গবেষণায় আরেকটা উল্লেখ করার মতো অগ্রগতি হয়। কানাডার য়্যুকানে (যা পূর্ব বেরিন্জিয়ার অন্তর্ভূক্ত ছিল) ব্লুফিশ কেভ নামে তিনটা গুহায় বেশকিছু প্রাচীণ আর্টিফ্যাক্ট পাওয়া যায় সত্তুরের দশকে। তখন এগুলোর রেডিওকার্বন টেস্টও করা হয়, এবং বলা হয় এগুলো ২৪,০০০ বছরের পুরানো। তবে এই পরীক্ষা বিতর্কিত হয়ে পড়ে। ২০১৭ সালে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আবার পরীক্ষা করে পূর্বের পরীক্ষার সত্যতা পাওয়া যায়। এর ফলে এটা প্রতিষ্ঠিত হয় যে বেরিন্জিয়ার পূর্ব কিংবা পশ্চিম, সব অংশেই মানুষদের বসতি এবং আনাগোনা ছিল।


ব্লুফিশ গুহায় এসব পাথরের অস্ত্র-শস্ত্র পাওয়া গিয়েছে

ইয়ানা সাইট আর ব্লুফিশ গুহার প্রাপ্তি, এরিকা ট্যামের গবেষণা আর বেরিন্জিয়ান স্ট্যান্ডস্টিল হাইপোথেসিসের উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন যে, এশিয়ার অন্য অন্চল থেকে আগত অভিবাসীরা নতুন বিশ্বে পাকাপোক্তভাবে মাইগ্রেট করার আগে বেরিন্জিয়াতে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ হাজার বৎসরকাল অতিবাহিত করে, যা তাদের জেনেটিক মিউটেশান বা ডিএনএ সিকোয়েন্স পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট ছিল।

এখানে উল্লেখ্য যে, আমি যে সময়টার কথা বলছি তখন বেরিন্জিয়ার আবহাওয়া আজকের মতো ছিল না। এখন পর্যন্ত ওই অন্চলে প্রাপ্ত জীবাশ্ম এবং পোলেন এভিডেন্স অনুসারে এটি তখন কোনও হিমশীতল বন্ধ্যা ভূ-ভাগ ছিল না, বরন্চ সেখানকার আবহাওয়া অনেকটাই বর্তমানের আলাস্কার মতো ছিল। গ্রীষ্মে এখানে গাছপালাতে ফুল-ফলাদি হতো আর প্রাগৈতিহাসিক বাইসন, উট, ঘোড়া, হাতি, হরিণ এবং গণ্ডারের মতো প্রাণী বিচরণ করতো। এদেরকে তাড়া করে ফিরতো হিংস্র বাঘ, ভালুক, সিংহ…….আর দু'পেয়ে হিংস্রতর আরেকটা প্রাণী…….হোমো সেপিয়েন্স তথা মানুষ। উত্তর গোলার্ধের বেশিরভাগ অংশ যখন পুরু বরফে ঢাকা, বেরিন্জিয়ার বেশিরভাগ অন্চল তখন বরফমুক্ত ছিল।


শিল্পীর কল্পনায় তখনকার বেরিন্জিয়া


সাইবেরিয়ায় ম্যামথের এই আইভরি পাওয়া গিয়েছে

আজ থেকে প্রায় ১২,০০০ বছর আগে শেষ বরফ যুগের অবসানের পর পৃথিবীর তাপমাত্রা আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করে, ফলে দুই মেরুর জমাট বাধা বরফও আস্তে-ধীরে গলতে শুরু করে। এর ফলশ্রুতিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকে এবং একসময়ে বেরিন্জিয়ার ভূমির পরিমান কমতে কমতে আজকের পর্যায়ে চলে আসে, আর বেরিং প্রণালীর সৃষ্টি হয়। এখানে জানিয়ে রাখি, আপনি চাইলেই প্রাচীণ মানুষদের মতো করে হেটে এশিয়া আর আমেরিকার মধ্যে যাতায়াত করতে পারেন, তবে শুধুমাত্র শীতকালে। যাই হোক, যা বলছিলাম। লাস্ট গ্লেসিয়াল ম্যাক্সিমাম এর সময়টাতে বর্তমান কানাডার অধিকাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাংশ পুরু বরফে ঢাকা ছিল। সেগুলো গলতে শুরু করার সাথে সাথে পশু আর মানুষের দলও ধীরে ধীরে নতুন বিশ্বের বিভিন্ন অন্চলে ছড়িয়ে পরে। আর এভাবেই মূলতঃ পৃথিবীর এই অংশে মনুষ্য আবাদের সূচনা হয়।


২১,০০০ বছর ধরে সমুদ্র-পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে এভাবেই বেরিং প্রণালীর সৃষ্টি হয় (পরিবর্তনের ধাপগুলো দেখুন)

বেরিন্জিয়া নিয়ে অনুসন্ধান আর গবেষণা এখনও চলছে, হয়তো আরো দীর্ঘকাল ধরে চলবে। যেহেতু বেরিন্জিয়ার একটা বড় অংশই বর্তমানে পানির নীচে, তাই বর্তমানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পানির নীচেও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। আমরা আশায় থাকতেই পারি আরো চমকপ্রদ নতুন নতুন আবিস্কারের।

তবে, এশিয়ান আদিবাসী পূর্বপুরুষদের ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদের জন্য আমরা ইওরোপিয়ান হানাদারদেরকে কোনদিনই ক্ষমা করতে পারবো না। অন্ততঃ এশিয়ান হিসাবে আমরা এই সান্তনাটুকু পাইতেই পারি যে, ২৫-৩০ হাজার বছর আগেই গোটা আম্রিকা এশিয়ানগো আছিল!!! =p~


ব্লগার জুন আপা আমারে ধৈর্য্য সহকারে খোচাখুচি না করলে এই পোষ্টটা আলোর মুখ দেখতো কিনা……..আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তাই সঙ্গতকারনেই পোষ্টটা জুন আপাকে উৎসর্গ করা হইলো। কারো এ'সংক্রান্ত কোন আপত্তি থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে জানানোর জন্য অনুরোধ করা যাইতেছে!!! :-B

শিরোনামের ছবিটা ডুবে যাওয়া অংশসহ বেরিন্জিয়ার। সবগুলো ছবি আর তথ্যের কৃতিত্ব গুগল মামার। এগুলোকে একজায়গায় জড়ো করার কৃতিত্ব আমার, আর খোচানোর কৃতিত্ব জুন আপার।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৩
৪৩টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×