আমার বউ জানে যে, আমি কবিতা পড়ি না। তারপরেও আজ সকালে অফিসে ফোন করে মেইল চেক করতে বললো। বললো, ''একটা কবিতা আর কবিতার লিঙ্ক পাঠিয়েছি। কবিতা না পড়তে চাইলে যাতে শুনতে পারো''। কবিতাটা শুনতে শুনতে কেন যেন চোখে পানি চলে এলো। আপনারা ইতোমধ্যে অনেকেই নিশ্চয়ই পড়ে ফেলেছেন বা শুনেছেন। তবুও ভাবলাম ব্লগে শেয়ার করি। সবারই নিশ্চয়ই পড়া বা শোনা হয় নাই!!!!
গোল্ডফিশের কান্না
লেখা: রওশন আরা মুক্তা
একটা বিল্ডিং-এর মূল্য
তোমার ছেলের জীবনের চেয়ে অনেক বেশি।
একটা ওভারব্রিজের দাম
তোমার হাজার ছেলের লাশ দিয়েও কি চুকাতে পারবে?
একটা মেট্রোস্টেশন কি গর্ভে ধরতে পারবে তুমি?
...
যেদিন তোমার পেটে ধরতে পারবে
আস্ত একটা মেট্রোরেল,
যেদিন তোমাদের কোলে দোলাতে পারবে
একটা গোটা দেশের ডেটা সেন্টার,
যেদিন তোমার স্তন থেকে দুধ না
ঝরবে বিটিভির বাম্পার ফলনের সংবাদ,
যেদিন তোমরা মানুষের বাচ্চা না,
জন্ম দিবে বাস-ট্রাক, ওভারব্রীজ
সেদিন বুঝতে পারবে,
একটা বিল্ডিংয়ের মূল্য
তোমার রক্ত-মাংসের সন্তানের চেয়ে
আসলেই অনেক বেশি।
তখন চুমু খেয়ো ঐ ইট সিমেন্টের শরীরে
গাড়িগুলোকে পাশে শুইয়ে দিও হাত বুলিয়ে
পদ্মাসেতুটাকে পাঠিও ভার্সিটিতে,
পাবলিকে নাহয় প্রাইভেটে
আর রাতে ঘরে ফেরার অপেক্ষা করো
প্রিয় ওভারব্রীজ-টার, স্টেশন-টার।
মুখে ভাত তুলে খাইয়ে দিও বিটিভি-টাকে।
'বাবা' বলে ডেকো শখের মেট্রোরেল-টাকে।
আর ভুলে যেও, সব ভুলে যেও।
রক্ত মাংসের কোনো ছেলে ছিল তোমার
পেটে ছিল পিঠে ছিল কোলে ছিল
ভুলে যেও, তুচ্ছ নগণ্য ঐ মনুষ্য সন্তান
কখনও তোমাকে মা ডেকেছিল
তোমার ঘরে এখন বিটিভি,
তোমার বিছানায় এক্সপ্রেসওয়ে
তোমার আচল ধরে আছে মেট্রোরেল
আর কী চাই তোমার?
যাও চুমু খেয়ে নাও ভবনটাকে, চেয়ারটাকে, হেলিকপ্টার-টাকে!
তারপর ঘুমিয়ে যাও
সকালে আবার তোমার বিল্ডিংগুলোর ক্লাস আছে।
শুনতে পারেন এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



