ছবি : নিজের তোলা
"ফিরে এলাম বিসর্জন গল্পের অসমাপ্ত অংশ নিয়ে । আশাকরি প্রথম অংশটির মতো এই অংশটিও পাঠকদের ভালো লাগবে।- ধন্যবাদ ।"
| দ্বিতীয় অংশ |
আনন্দ উল্লাসে কাটছে দিনটি । তিথীর বাবা-মায়ের সঙ্গে অপরিচিত একটি মেয়ের পরিচয় হল সেখানে । মেয়েটির নাম রুপা। তিথীর ছোট খালার বয়সী এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী - আত্মনির্ভরশীল একটি মেয়ে । সহজেই অন্যের সঙ্গে মিশে যেতে পারে । তিথীর সঙ্গে অনেকটা বন্ধুর মতোই মিশে গেল রুপা । ফলে রুপার সঙ্গে খানিকটা সময় একা ঘুরে বেড়াচ্ছিল সে ।
কিছু সময় অতিক্রম হবার পর তিথি লক্ষ্য করলো হঠাৎ করেই কেমন যেন থমকে গেল চারপাশের জমজমাট পরিবেশ । সবার মধ্যে কেমন যেন এক অজানা প্রশ্ন ! সে কিছুই বুঝতে পারলো না । কিন্তু বয়সে বড় এবং বুদ্ধিমতী রুপা যেন কিছু বুঝতে পারল। তিথির হাত ধরে বলল,
- তুমি আমার সঙ্গেই থাকবে , বুঝেছ ?
হঠাৎ করে সদ্য পরিচিত মেয়েটির এরূপ সর্তকতা সহজভাবে মেনে নেয় তিথী । কেননা , সহজ-সরল স্বভাবের বলে পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজন সকলেই তার খুব খেয়াল রাখতো তাই সদ্য পরিচিত মেয়েটির এরূপ আচরণ অস্বাভাবিক মনে হয়নি তিথীর কাছে । কারণ এত মানুষের ভিড়ে একা ঘুরে বেড়ালে হয়তো কোন বিপদও হতে পারে ।
এমনই সময় তিথীর ফোন বেজে উঠল । বাবার ফোন। বাবা বলল ,
- তোমরা কোথায় আছো ? তুমি কি রুপার
সঙ্গে আছো ?
সংক্ষিপ্ত উত্তর দিলো তিথী ,
- জ্বি ।
বাবা। - কোথায় আছো এই মুহূর্তে ?
তিথী - এইতো হাঁটতে হাঁটতে প্রায় মেইন গেটের
কাছাকাছি চলে এলাম ।
বাবা - আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনো, তোমার দাদু হঠাৎ করে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আমাদেরকে শীঘ্রই রওনা দিতে হবে ।তোমার মাকে নিয়ে আমি রওনা দিয়েছি এবং তুমি রুপার সঙ্গে দ্রুতই দাদুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দাও , এক মুহূর্তও দেরি করবে না ।
বলেই উত্তরের অপেক্ষা না করে ফোন কেটে দিল বাবা। তিথী বুঝতে পারল তাকে এক্ষুনি রওনা হতে হবে । আর এক মুহূর্ত দেরি নয় এবং বাবা-মা তার পূর্বেই দাদুর বাড়ি পৌঁছে যাবে ।
বাইরে যাবার পথে এসে সে খানিকটা অবাক হল । ছোট বাহির পথটি দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে হুড়মুড়িয়ে বের হতে চাইছে মানুষ । অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে মনে অজানা প্রশ্ন নিয়ে ! দুর্ঘটনা এড়াতে ছোট বাহির পথটি দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো করে বের হচ্ছে সবাই ।
কি হচ্ছে তা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই তিথীর । তাকে বাবার আদেশ পালনে তাড়াতাড়ি রওনা দিতে হবে । গেটের কাছে থাকায় দ্রুত বের হয়ে আসার সুযোগ পেয়ে যায় তিথী ও রুপা। বের হয়ে আসার সময় ভিতরে লাইনে দাঁড়ানো অপেক্ষমান মানুষদের স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে । ঠিক এমনই সময়ে তিথীর চোখে পড়ল লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষমান মানুষদের মধ্যে বাবা- মা! খানিকটা উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে তাদের এবং খানিকটা পিছনেই আছে তারা দুজন । কিছুটা অবাক হল সে । রুপার হাত ছেড়ে দিয়ে বাবা-মার কাছে যেতে চাইল কিন্তু এত মানুষের ভিড়ে একবার বের হয়ে গেলে ভিতরে প্রবেশ করা অসম্ভব । দূর থেকেই চোখাচোখি হল বাবা-মার সাথে । একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও তিথীকে বের হতে দেখে কিছুটা আশ্বস্ত হলো তারা । রুপা তাড়াহুড়ো করে বলল,
- তুমি আমার সঙ্গে চলো ।
তিথী - একটু অপেক্ষা করে বাবা-মার সঙ্গে একসাথেই
রওনা দেই।
রুপা - এখানে অপেক্ষা করা যাবে না , সবাইকে বের
হয়ে যেতে বলা হচ্ছে । তোমার বাবা-মা খুব
শীঘ্রই বের হয়ে আসবেন, চলো এবার ।
তিথী - সবাই কেন বের হচ্ছে ?
রুপা - জানিনা । তুমি চলো আমার সঙ্গে।
দ্রুত প্রস্থানের কারণটা বুঝতে না পারলেও তিথী জানত দাদুর অসুস্থতার কথা শুনে বাবা-মাও খুব দ্রুতই বের হয়ে এসে রওনা হবে এবং তাকেও এই মুহূর্তেই অপেক্ষা না করে চলে যেতে হবে । তাই রুপার সঙ্গে প্রস্থান করল তিথী ।
....................................................
…….........................................................
.............................................................. ।
- ধন্যবাদ ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৪৬