somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

Subdeb ghosh
হাজার হাজার ব্লগারের ভীড়ে আমি এক নগন্য ব্লগার।আমি ভালোবাসি কিছু লিখতে তাই বলে আমি লেখক নই।যখন যা দেখি,যা মনে দাগ কাটে তাই লেখার চেস্টা করি।

কান্না সব জমতে থাকুক

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাকে নিরন্তর চলতে হয়।
তাই নানা রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করি।
প্রতি ক্ষণে ক্ষণে আমার সুখ-দুঃখ মোকাবিলা করতে হয়।
দুঃখটাই বেশি থাকে।
সুখ থাকে সামান্য।
তাতেই আমি মহা খুশি থাকতে চাই।
আমি শৈশবেই জেনে গিয়েছিলাম জীবন বড় কঠিন।
বিশেষ করে অর্থনৈতিক দৈন্যতা মানুষকে ধীরে ধীরে অনেক খাটো করে ফেলে।
আমার মনে পড়ে প্রায় পনের বছর আগে আমার পরিবারের একজন সদস্য এক
আত্নীয় এর নিকট হতে ত্রিশ হাজার টাকা ধার করেছিলো।
সুদসহ টাকাটা সময় মতো দিতে পারে নি বলে কতটা
যে অকথ্য ভাষায় কথা বলেছে
তার সীমারেখা নেই।আমি আড়ালে থেকে শুনছিলাম।
আর কাঁপছিলাম। তখন খুব কান্না পাচ্ছিলো।
আমি কাঁদতে পারি নি।
কাঁদতে পারলে হয়তো এতদিনে ভুলে যেতে পারতাম।
দ্বিতীয় ঘটনা।
আমার বাবা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরি করেন।
মাস শেষে সামান্য কিছু অর্থ পান, আমরা কখনো সে ভাবে জীবন-যাপন করতে পারি নি।
বিশেষ করে পোশাক-আশাকে।
খাবার-দাবার যা কিছু হতো
মায়ের হাতে ছিলো অমৃত।
তাই খাবার-দাবারের
কোনো আক্ষেপ আমার নেই।
আমি তখন ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র,
একদিন আমি আর মা যাই এক ঘনিষ্ট আত্মীয়ের বাড়ি।
সেই আত্মীয়ের বাড়িতে ওই সময় মেয়ে পক্ষের লোকজন আসবে ছেলের বাড়ির ঠায়-ঠিকানা দেখতে।
যতক্ষণ মেয়ে পক্ষের লোকজন ছিলো ততক্ষণ আমার অবস্থান নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় স্টোর রুম।
কারণ,আমার পোশাক ছিলো খুবই নিম্ন মানের।
কতটুকু বয়স আমার তখন।
খুব কষ্ট পেয়েছিলাম আমার ঘনিষ্ট আত্মীয়ের ওই আচরণে।
এ কথা আর কেউ জানে না।
শুধু আমি জানি,
সেদিনও আমি কাঁদতে পারি নি।
তাই আজও ওই ঘটনা আমার চোখে জ্বলজ্বল করে।
আমার সকল সত্তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে সে কথা আমাকে প্রতি নিয়ত জানান দেয়।
এমন আরও বহু ঘটনা আমার জীবনে ঘটেছে বলা
যায় বিনা দোষে।
কঠিন শাস্তি পেয়েছি আমি।
যা আমাকে পাবার কথা নয়।
তৃতীয় ঘটনা,
প্রায় পাঁচ ক্রোশ পথ হেঁটে
আমাকে বিদ্যালয়ে যেতে হতো।
রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পথ চলতে হতো।
কাছে বিদ্যালয় থাকা সত্বেও সেখানে পড়তে পারিনি,কারনটা,স্কুলের বেতন।
ভাইবোনদের স্কুলের বই,খাতা,কলম, ফি বাবা ঠিকমত দিতে পারতো না।
পরিক্ষার ফি আর স্কুল ড্রেসের জন্য স্যারদের অনেক
কটু কথা শুনতাম।
পরিক্ষা এলেই আমার খুব খারাপ লাগতো,
স্কুলের বারান্দায় দাড়িয়ে স্যারের অনুমতিপত্র নেবার জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষার প্রহর।
কখনো কখনো আধা ঘন্টা অতিক্রম হবার পরে
পরিক্ষা দিতাম,কখনো বা
বাড়ি ফিরে আসতাম।
দূরে দাড়িয়ে দেখতাম সহপাঠিরা পরিক্ষা দিচ্ছে।
অন্যরা টিকা টিপ্পনি
কাটতো প্রকাশ্যেই।
খুব কস্ট পেতাম মনে মনে,
বাড়ি ফিরে কখনো কখনো দু তিন দিনে বাড়ির জল পযন্ত স্পর্শ করতাম না।
অভিমানে বাড়ির কারও সাথে কথা বলতাম না।
বড়বোন জানতে চাইলে,
কোন উত্তর দিতে পারতাম না।
আমি কাঁদতে পারি নি।
কারণ,আমাকে জীবনভর এই
ঘটনা মনে রাখতে হবে।
প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নয়।
অতটা নির্বোধ আমি নই।
কোনো বোধহীন মানুষকে যে কোনো আঘাত করে আমি অস্পৃশ্য হয়ে পড়ি।
তবে আমি মনে রেখেছি।
আমি মনে রাখবো মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত। লড়াই করে যাবো অবস্থার পরিবর্তন আনার জন্য।
আমার ভাগ্য আসলে খারাপ।
আমার সাথে যারা এসেছে শেষ পর্যন্ত আমার হয়ে থাকতে পারে নি।
তারা আমার চেয়ে অন্যকে
বেশি পছন্দ করতো।
কিন্তু প্রকৃত তাদের আপনজন আমি ছিলাম।
বলা হয়ে থাতে সত্য কঠিন।
সেই কাঠিন্য সবাই মানতে পারে না।সহ্য করতে পারে না।
যারা অবাস্তব স্বপ্ন দেখাতে পারে তাদের
কাছে সব বিসর্জন দিয়ে বসে।
আমার কাছে যদি সামান্য পুঁজি থাকতো তবে এ ধরণের অবস্থায় আমাকে পড়তে হতো না।
আজও আমি সেই সঙ্কটকাল পার করছি।
অনেক ঘা আছে যা সহজে সেরে যায় না।
কখনও কখনও মৃত্যু ডেকে আনে।
আমার কই মাছের প্রাণ,সহজে মরি না।
গরম কড়াইয়ের উপরও নাচতে থাকি।না নেচে উপায় নেই।
আজ এমন একটি ঘটনার সম্মূখীন হতে হয়েছে যার জন্য আমাকে চিৎকার করে কাঁদা উচিত।
আমি আজও কাঁদিনি।
হাঁসি মুখে ব্যথা লুঁকানোর চেস্টা করি।জমতে থাকুক না কান্না যত কাহিনী আছে।
একদিন সব কান্না বুকে করে কাউকে কাউকে কাঁদিয়ে চলে যাবো চিরতরে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×