বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকে কিছু সাহায্যের আবেদন দেখতাম সম্বলিত পোষ্টার । যার মুল আবেদন থাকত চিকিৎসার জন্য টাকা চেয়ে আবেদন । ওইসময় দেখেছিলাম , যাদের জন্য সাহায্য চাওয়া হত তাদের একটা বড় অংশ থাকত মেডিকেল কলেজের ছাত্র/ছাত্রী । যখন ২য় বর্ষে উঠলাম , তখন আমাদের এক বন্ধু খুব অসুস্থ হলো যার চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেয়া দরকার ছিলো আর তার পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় বহন করার সামর্থ্য ছিলো না ।
এরপর অনেক ভবিষ্যৎ ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ারসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের দেখেছি এমনি রোগে আক্রান্ত হতে । আর এইসব রোগের চিকিৎসা আমাদের দেশে হয় না । এর জন্য যেতে হয় ভারতে ।
আজ এত বছর পার হয়ে গেলো , এই সামান্য চিকিৎসা আমরা আবিষ্কার করতে পারলাম না । এখনো অন্যদেশের উপর নির্ভর করতে হয় । যারা ভারতে চিকিৎসা নিয়েছে তাদের ভাষ্যমতে সেটা চিকিৎসার আড়ালে এক মারাত্মক ব্যবসায় ।
আমাদের দেশেও চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসায় এর অভিযোগ রয়েছে , বিনা কারনে বিভিন্ন পরীক্ষা করানো , অতিরিক্ত ফি আদায় , নরমাল ডেলিভারি না করে সিজার করানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে । কিন্তু ভারতে এর থেকেও ভয়াবহ অবস্থা ।
অনেক উচ্চ ডিগ্রিধারী চিকিৎসক আছেন , যাদের অনেকেই দেশে বিদেশে বেশ খ্যাতিমান । কিন্তু এত কিছুর পরও আমাদের কেন এই দৈন্যদশা । আমাদের রাষ্ট্রপতি , মন্ত্রীরা সামান্য অসুস্থ হলেই চলে যান সিংগাপুরে । কিন্তু আম জনতার কি সাধ্য আছে মাউন্ট এলিজাবেধে চিকিৎসা নেয়ার ?
আচ্ছা যে মানুষটা জীবনের শুরুতেই চিকিৎসার জন্য ভিক্ষুকের মত মানুষের কাছে হাত পেতেছে , সে জীবনে অনেক বড় ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হলেও কি তার মনে হিনমন্যতা কাজ করবে না । করাটাই স্বাভাবিক । কারন সবাই ডক্টর আতিউর রহমান এর মত মনের অধিকারী হবে না ।
দেশ অনেক এগিয়েছে , আরো আগাবে । যদি চিকিৎসাব্যবস্থা আরো সমৃদ্ধ করা যায় তবে আরো আগাবে । হয়ত কোন একজন মন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি বের হয়ে আসবেন যিনি ঘৃণা ভরে মাউন্ট এলিজাবেধকে দূরে রেখে বাংলাদেশে তৈরি করবেন মাউন্ট এলিজাবেধ এর থেকে উন্নত কোন চিকিৎসাকেন্দ্র ।