বদিউজ্জামান | আপডেট: ১৭:০৭, এপ্রিল ১৪, ২০১৬
২Like
স্ত্রী জর্জিয়ার সঙ্গে বর্ষবরণ উৎসবে লি (প্রথমে)। সঙ্গী শাকিল আহমেদ ও হেমন্ত ভিনসেন্ট (ডানে)। আজ আবাহনী মাঠে। ছবি সৌজন্য‘আইল আইল আইল রে, রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইল রে..।’ আবাহনী মাঠে কনসার্টে বাজতে থাকা গানের কথাগুলো হয়তো এতটুকুও বুঝতে পারেননি। কিন্তু সুরটা দারুণ মন কেড়েছে লি টাকের। যস্মিন দেশে যদাচার। আজ বাংলা বর্ষবরণে মেতে উঠেছেন আবাহনীতে খেলতে আসা ইংলিশ ফুটবলারও।
সকালে উঠেই পাঞ্জাবি পরে ঘুরতে বের হন স্ত্রী জর্জিয়ার সঙ্গে। স্ত্রীকেও পরিয়েছেন লাল-সাদা থ্রি পিচ, এই দিনটার প্রতীকী রং যে হয়ে উঠেছে এটাই। জর্জিয়া অবশ্য শাড়ি পরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঙালি মেয়েদের মতো সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দেওয়ার লোকই নাকি খুঁজে পাননি!
জাতীয় দলের মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস এবং রাইটব্যাক শাকিল আহমেদের সঙ্গে সকাল এগারোটায় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন ইংলিশ ফুটবলার দম্পতি। রমনার বটমূল, ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর হয়ে আবাহনী মাঠে এসে কনসার্ট দেখেছেন। বাঙালি খাবারে এখনো ততটা অভ্যস্ত হননি। তবে আজ সকালে ঠিকই ইলিশ ভাজা ও পান্তা ভাত খেয়েছেন।
ঢাকায় আসার আগে ব্যাংককে দুই মৌসুম খেলেছেন। সেখানেও থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী অনেক অনুষ্ঠানে ঘুরেছেন। কিন্তু লি টাক বাঙালির বর্ষবরণেই আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন বেশি, ‘এখানে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। সকালেই ভেবে রেখেছিলাম আজ ঘুরতে বের হব। এরপর হেমন্ত, শাকিলদের নিয়ে নানা জায়গায় ঘুরলাম। বাঙালি সংস্কৃতি দারুণ উপভোগ করছি।’
আজ আবাহনীর কোনো অনুশীলন নেই। আগামী ১৭ এপ্রিল স্বাধীনতা কাপের পরের ম্যাচে আবাহনী খেলবে আরামবাগের সঙ্গে। অনুশীলন ছিল না বলে বেশ নির্ভার হয়েই ঘুরতে বেরিয়েছেন লি, ‘অনুশীলনের তাড়া নেই। তা ছাড়া এমন চমৎকার অনুষ্ঠান তো আর প্রতিদিন পাব না। এই শহরের উৎসবপ্রিয় মানুষগুলো দেখে ঘরে বসে থাকতে পারলাম না।’
আবাহনীর সতীর্থ হেমন্তও খুশি লিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘোরাতে পেরে, ‘ধানমন্ডির ফ্ল্যাট থেকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে লি সকাল বেলা ক্লাবে চলে এল। এসেই বলল, আমরা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখব। এরপরই ওদের নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। আমাদের বাঙালিয়ানার এমন জমজমাট উৎসব দেখে লি খুবই রোমাঞ্চিত।’
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে সব সময়ই আফ্রিকান ফুটবলারদের আধিপত্য। এবারই প্রথম স্রোতের বিপরীতে বাংলাদেশে খেলতে এসেছেন ইংলিশ কোনো ফুটবলার। লির খোঁজ পেয়েছিলেন আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস। গত বছর আবাহনী কিংস কাপে খেলতে গিয়েছিল ভুটানে। সেখানে থাইল্যান্ডের ক্লাব নাখন রাচাসিমার হয়ে খেলেছিলেন। এরপর আবাহনীতে খেলার প্রস্তাব দিতেই রাজি হয়ে যান এই স্ট্রাইকার। গত কয়েক মৌসুম ধরেই গোলদাতার অভাবটা বেশি ভুগিয়েছে আবাহনীকে। এবার লি-সানডে-কামারা ত্রয়ী স্বাধীনতা কাপে দুর্দান্ত খেলছেন। সর্বশেষ বিজেএমসিকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার ম্যাচেও লি গোল করেছেন একটি। আবাহনীর স্কোরিং সমস্যার প্রসঙ্গ তুলতেই লি বললেন, ‘আমি এই দেশের ক্লাবকে সাহায্য করতেই এখানে এসেছি। আশা করি আবাহনীকে এই মৌসুমে লিগ শিরোপা উপহার দিতে পারব।’ ছবির ক্যাপশন: স্ত্রীর সঙ্গে লি টাক (কালো পাঞ্জাবি পরিহিত)। আবাহনী মাঠে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১