somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকতা ভয়ংকর ব্যাধি, বিশ্বাস ও পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবের সংমিশ্রণে রোগটির সঠিক কারণ জানা আসলেই খুব দরকার

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটা কথা কোথায় জানি শুনেছিলাম, মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি জানলে নাস্তিক হয় আর তার থেকেও বেশি জানলে সৃষ্টিকর্তাভীরু হয় তথা ঈশ্বরভীরু হয় । প্রফেসর স্টিফেন হকিং বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা একজন বিজ্ঞানী ও পেশায় বর্তমান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা গবেষণার পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন ।

তার দেয়া বক্তব্য কোনসময়ই ঈশ্বরতত্ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল না । বরং তাঁর "A Brief History of Time" বইতে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির পেছনে একজন ঈশ্বরের প্রয়োজন থাকার দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন । কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত "The Grand Design" বইতে বলেছেন,

“Because there is a law such as gravity, the universe can and will create itself from nothing. Spontaneous creation is the reason there is something rather than nothing, why the universe exists, why we exist. It is not necessary to invoke God to light the blue touch paper and set the universe going.”

অর্থাৎ এর বাংলা করলে দাড়ায়ঃ
যেহেতু গ্রাভিটি নামক একটা বিষয় রয়েছে, সেহেতু মহাবিশ্ব নিজে নিজেই তৈরি হতে পারে এবং সেটার উৎস কোন কিছুই না । স্বতঃস্ফূর্ত সৃষ্টিসমূহই একমাত্র কারণ যে শূন্য ছাড়া আর কিছুই নেই, এটাই কারণ যে এই মহাবিশ্ব আজও টিকে আছে, আমরা আজও টিকে আছি । ঈশ্বরের মত কোন কিছুই দরকার নেই নীল কোন কাগজে আলো ধরার এবং এই মহাবিশ্ব চালিয়ে নেওয়ার ।



তার মানে প্রফেসর হকিং-এর আগের বক্তব্যের সাথে বর্তমান বক্তব্য সাংঘর্ষিক হয়ে যাচ্ছে। আজ বাদে কাল আবার নতুন কিছু যে বলবেন না – তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অথচ হালের নাস্তিকরা তড়িঘড়ি করে তাঁর এই বক্তব্যকে "ঈশ্বরের অভ্রান্ত বাণী" ধরে নিয়ে ধর্মীয় বিশ্বাসধারীদের বিশেষ করে মুসলিমদেরকে আক্রমণ করেছে এই বলে যে, মুসলিমরা বিজ্ঞান মানে না ! প্রফেসর হকিং-এর এই বক্তব্য নাকি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য ! এমনকি বাংলা নাস্তিকদের কাছে অনেকটাই পীরতুল্য রিচার্ড ডকিন্স তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন এভাবে:

“Darwinism kicked God out of biology but physics remained more uncertain. Hawking is now administering the coup de grace.”

অর্থাৎ এর বাংলা করলে দাড়ায়ঃ
ডারউইনিসিম জীববিজ্ঞান থেকে ঈশ্বরতত্ত্বকে প্রথমেই নাকচ করে দিয়েছে কিন্তু পদার্থবিদ্যায় সেই বিষয়টাই অনেকটাই অনিশ্চয়তায় ঘেরা ছিল । হকিং এবার সেখান থেকেও ঈশ্বরতত্ত্বকে বিদায় করেছে ।

অথচ স্টিফেন হকিং নিজেও বিষয়গুলোতে "হয়তো", "হওয়া উচিৎ", "স্বাভাবিক" ইত্যাদি শব্দগুলোর ব্যবহার করেছেন । তাছাড়া কয়েকদিন আগেই পত্রিকায় পড়েছিলাম, তিনি বলছেন, মৃত্যুর পরের স্বর্গ বা নরকের যে ধারণা সেটি নাকি নিতান্তই অমূলক । অর্থাৎ জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়েই নাকি সবকিছু শেষ । আবার আজ বলছেন, কৃষ্ণগহ্বরে কিছুই হারিয়ে যায় না । কোন জিনিস কৃষ্ণগহ্বরে পড়ে গেলে সেটি নাকি অন্য কোন জায়গায় তথা মহাবিশ্বে গিয়ে পৌঁছায় । আসলেই কতটা ফাউল কথাবার্তা । তিনি নিজেই কোন মহাকাশযানে উঠে এই কথার সত্যতা প্রমাণ করেন না কেন ? আমি ব্যক্তিগতভাবে লোকটাকে বেশ পছন্দ করতাম কিন্তু এই শেষ বয়সে এসে হঠাৎ করে তিনি কেন উল্টাপাল্টা বকা শুরু করলেন, তা আমার মোটেও বোধগম্য হচ্ছে না ।

অনেকেই ভাবতে পারেন, তার নাস্তিকতা বিশ্বাসের কারণেই তার প্রতি আমার ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে । সত্য কথা বলতে গেলে, সেটা ঠিক । তবে আরও অনেক কারণ রয়েছে । তার মত এত বড় মাপের একজন বিজ্ঞানী কেন এভাবে সাংঘর্ষিক কথাবার্তায় জড়াবেন ? আর তার নতুন এই থিউরিগুলো কি তার নতুন বইয়ের বিক্রি বাড়ানোর কোন কৌশল ? যাই হোক, পুরোপুরি সত্যতা প্রমাণ করা ছাড়া এভাবে এই কথাগুলোকে তথা থিউরিগুলোকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ সতর্কতা বজায় রাখতে হবে, সেটা কিন্তু পরিস্কারই ।

খবর সূত্রঃ প্রথম আলো ও বিভিন্ন বিশ্লেষণধর্মী ব্লগ ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:১৭
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×