somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কবিতা পুরোনো হয়না-পর্ব ২

২০ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্বঃ যে কবিতা পুরোনো হয়না-পর্ব ১

প্রথম পর্ব দেবার পর সোৎসাহে শুরু করলাম দ্বিতীয় পর্ব। এই ফাঁকে পুরোনো অনেক কবিতা নতুন করে পড়া হচ্ছে। সবার আগ্রহে নিজের কবিতা মুখর অতীতটাকে নেড়ে চেড়ে দেখতে গিয়ে খুলে যাচ্ছে মরচে পড়া স্মৃতির দুয়ার। জীবনটা একেবারে হেলায় কাটাইনি। তাই একসময় দল গড়ার বয়সে নিজের নাম দিয়েছিলাম 'শব্দশিকারি'। ঘুরে ঘুরে লিটল ম্যাগাজিনের জন্য কবিতা সংগ্রহ, ছাপাখানায় নির্ঘুম রাত, জেগে জেগে প্রুফ দেখা, চায়েতে ভিজিয়ে পাউরুটি...সিগারেট...কবিতা...!

এ পর্বের কবিতাগুলোঃ
===============
৮. কবর-জসীম উদ্দিন
৯. অমলকান্তি-নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
১০. আয়না-অমিয় চক্রবর্তী
১১. অনির্বাণ-নচিকেতা চক্রবর্তী
১২. সেই গল্পটা-পুর্ণেন্দু পত্রী
১৩. মেজাজ-শুভাষ মুখোপাধ্যায়
১৪. পরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৫. চিঠি দিও-মহাদেব সাহা
১৬. যাতায়াত-হেলাল হাফিজ



৮. কবরঃ
কবর কবিতাটি প্রথম দিন শুনে বিষন্ন হয়ে গিয়েছিলাম। অপূর্ব কথার গাঁথুনীতে ছোট্ট বধুর আগমন আর চির প্রস্থানের গল্প বলা হয়েছে।

কবর
(জসীম উদ্দিন)

এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!
সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি
লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও পথ ধরি।
যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত
এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।
এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।

বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।
শাপলার হাটে তরমুজ বেচি পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।
দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,
সন্ধাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে!
হেস না হেস না মোন দাদু, সেই তামাক মাজন পায়ে,
দাদি যে তোমার কত খুশি হত দেখিতিস যদি চেয়ে!
নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, এতদিন পরে এলে,
পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখি জলে।
আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়,
কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালা!
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু,আয় খোদা! দয়াময়,
আমার দাদরি তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।

তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি
যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।
শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,
গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।
এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,
গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে।
মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি, মাটিতে মিশায়ে বুক,
আয়-আয় দাদু, গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।

এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,
কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু! পরাণ যে মানে না।
সেই ফালগুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি,
বাজান, আমার শরীর আজিকে কী যে করে থাকি থাকি।
ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,
সেই শে শোয়া তার শেষ হবে তাহা কী জানিত কেউ?
গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে,
তুমি যে কহিলা বা-জানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?
তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,
সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!

তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দুহাতে জড়ায়ে ধরি,
তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিতে সারা দিনমান ভরি।
গাছের পাতার সেই বেদনায় বুনো পথে যেতো ঝরে,
ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো-মাঠখানি ভরে।
পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,
চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।
আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,
হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।
গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,
চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।

ঊদাসিনী সেই পল্লী-বালার নয়নের জল বুঝি,
কবর দেশের আন্ধারে ঘরে পথ পেয়েছিল খুজি।
তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,
হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।
মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, বাছারে যাই,
বড় ব্যথা রল, দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;
দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষ্মী আমার ওরে,
কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।
ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন জলে,
কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণ ব্যথার ছলে।

ক্ষণপরে মোর ডাকিয়া কহিল আমার কবর গায়
স্বামীর মাথার মাথালখানিরে ঝুলাইয়া দিও বায়।
সেই যে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,
পরাণের ব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু ছায়,
গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায় লুটায়ে পড়েছে গায়।
জোনকি মেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,
ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, রহমান খোদা! আয়;
বেহেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়!
এখানে তোর বুজির কবর, পরীর মতন মেয়ে,
বিয়ে দিয়েছিনু কাজিদের বাড়ি বনিয়াদি ঘর পেয়ে।
এত আদরের বুজিরে তাহারা ভালবাসিত না মোটে,
হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত ঠোঁটে।
খবরের পর খবর পাঠাত, দাদু যেন কাল এসে
দুদিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির দেশে।
শ্বশুর তাহার কশাই চামার, চাহে কি ছাড়িয়া দিতে
অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক শীতে।
সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে ফোটে না সেথায় হাসি,
কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিছে ভাসি।
বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত দিন,
কে জানিত হায়, তাহারও পরাণে বাজিবে মরণ বীণ!
কী জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল না ফিরে,
এইখানে তারে কবর দিয়েছি দেখে যাও দাদু! ধীরে।

ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,
কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।
বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,
পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়।
আমার বুজীর তরেতে যেন গো বেস্ত নসিব হয়।

হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,
রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।
ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,
অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!
ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,
তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।
বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।

একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।
সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।
কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।
আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,
দাদু! ধর¬ধর¬ বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।
এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,
কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুম¬ভোলা মোর যাদু।
আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,

ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিয়ে ঘন আবিরের রাগে,
অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িত বড় সাধ আজ জাগে।
মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।
জোড়হাত দাদু মোনাজাত কর, আয় খোদা! রহমান।
ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু ব্যথিত প্রাণ।

৯. অমলকান্তিঃ
অমলকান্তি হতে চাইনি; এমন কথা বলাটা অন্যায় হয়ে যাবে। ছোটবেলায় বরং রোদ্দুর হবার ইচ্ছেটাই আমাকে বেশি টানতো।

অমলকান্তি
(নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী)

অমলকান্তি আমার বন্ধু,
ইস্কুলে আমরা একসঙ্গে পড়তাম।
রোজ দেরি করে ক্লাসে আসতো, পড়া পারত না,
শব্দরূপ জিজ্ঞেস করলে
এমন অবাক হয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে থাকতো যে,
দেখে ভারী কষ্ট হত আমাদের।

আমরা কেউ মাষ্টার হতে চেয়েছিলাম, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল।
অমলকান্তি সে-সব কিছু হতে চায়নি।
সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিল!
ক্ষান্তবর্ষণ কাক-ডাকা বিকেলের সেই লাজুক রোদ্দুর,
জাম আর জামরুলের পাতায়
যা নাকি অল্প-একটু হাসির মতন লেগে থাকে।

আমরা কেউ মাষ্টার হয়েছি, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল।
অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।
সে এখন অন্ধকার একটা ছাপাখানায় কাজ করে।
মাঝে মধ্যে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে;
চা খায়, এটা-ওটা গল্প করে, তারপর বলে, “উঠি তাহলে।”
আমি ওকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি।

আমাদের মধ্যে যে এখন মাষ্টারি করে,
অনায়াসে সে ডাক্তার হতে পারত,
যে ডাক্তার হতে চেয়েছিল,
উকিল হলে তার এমন কিছু ক্ষতি হত না।
অথচ, সকলেরই ইচ্ছেপূরণ হল, এক অমলকান্তি ছাড়া।
অমলকান্তি রোদ্দুর হতে পারেনি।
সেই অমলকান্তি–রোদ্দুরের কথা ভাবতে-ভাবতে
ভাবতে-ভাবতে
যে একদিন রোদ্দুর হতে চেয়েছিল।

১০. আয়নাঃ
এই কবিতাটি পড়ার আগে নিজেকে কবিতা পড়ার জন্য প্রস্তুত করে নেই প্রতিবার। হারানো ছড়ানো পাগলের এই ঝিল্লি বাজনা কতদিন বেজেছে এই মনের মধ্যে!

আয়না
(অমিয় চক্রবর্তী)

হারানো ছড়ানো পাগল খুঁজচে
ফিরে সে আপন হবে।
আলোর টুকরো দীপ্তি চোখের;
ভাঙ্গা-গান-ভাসা গানের কানকে ;
সেই নাক,যার সুরভি বোধটা
চামেলি বকুলে গেলো কোথায় ;
ফিরে- ফিরে চায় তাই
হায় হায় তার চেতনা-জড়ানো
কত দিনরাত পিছু ডাকে কেঁদে- কেঁদে ।
হারানো ছড়ানো পাগল ।

জানে তার হাড় ধুলোয় উড়বে,
কিছুই দেহের থাকবে না প্রাণকথা ;
আরো আরো বুক সবই খ'সে ঝ'রে
মিশে যায় মেঘে হাওয়ায় জলে ।
নিভে যাবে মন আরো ।
এখনই কোথায় লক্ষ ক্ষণের ছবি ?
হাজার দুপুর, বেগুনি সন্ধ্যা, ভোরে নীল হাওয়া, তামসীর চাঁদ
খেয়ালী খেলায় পাল তুলে গেছে পার ।
ফিরিয়ে তবুও রাখবে, বাঁধবে, ঢাকবে,
সাধবে-ভাবচে পাগল ।
হারানো ছড়ানো পাগল ।

হারানো ছড়ানো পাগল একলা
দাঁড়ালো মাঠের ধারে-
দূরে বুড়ো বট ঝিমন্ত-জাগা,
ঝাঁ-ঝাঁ রোদ-লাগা, সবুজ ছন্দে স্থির ।
একটু হাওয়ার মন্ত্র ।
দেখচে পাগল প্রকাণ্ড চাকা
নীল আঁকা বাঁকা দিগন্তের;
প্রখর যন্ত্রে শুনচে ঝিল্লি বাজনা ।
উঁচু সূর্যের অপারে শূন্য, সোনায় সাজানো;
চেনা গ্রাম ঐ ঘোর অচেনার
বিপুল আবেগ আনলো ।
ঝনঝন ক'রে সৃষ্টিসুদ্ধ ভাঙচে, গড়চে, চলচে-
কোথায় তুমুল শব্দ ?
মাঝখানে তারি হঠাৎ পাগল মুখ দেখে চেনে আয়নায়
আকাশে তাকিয়ে হাসে ।

ভরা সন্ধ্যায় চুপ ক'রে ব'সে থাকে
হারানো ছড়ানো পাগল ।

১১. অনির্বাণঃ
অনির্বাণের কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই! সেই যে, চুরি যাওয়া আলোয় যে দেখা দিয়েছিলো দ্বিতীয়বারের মত! সেই গান থেকে ছেঁকে নেয়া কবিতাটা কি অসাধারণ!

অনির্বাণ
(নচিকেতা চক্রবর্তী)

অনির্বাণ আমার বন্ধু।
অনির্বাণের সাথে যখন আমার দ্বিতীয়বার দেখা হয়েছিল,
তখন সময়টা ছিল বড় অদ্ভুত!
আমরা হাইওয়ের উপর দিয়ে, অনেক দূরে একটা অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছি;
লাল আকাশ, সন্ধ্যে হয়ে আসছে-দুপাশে ফাঁকা মাঠ
আমরা চা খাব বলে গাড়িটা দাঁড় করিয়েছি
একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত চায়ের দোকানে;
এমন সময় দেখতে পেলাম, লাল আকাশকে পেছনে রেখে,
একটা ছেলে মাঠ পার হয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।
আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললঃ 'চিনতে পাচ্ছিস'?
আমি বললামঃ 'না'।
ও বলেঃ 'ভালো করে দেখ'।
আমি সেই চুরি যাওয়া আলোতে ওকে চিনলাম-
আমার বন্ধু অনির্বাণ।
আমার চোখের সামনে পুরনো দিনগুলো ছায়াছবির মত ভেসে উঠছে।
আমি ওকে প্রশ্ন করলামঃ 'অনির্বাণ, তুই এখানে!'
ও বললোঃ 'তাইতো কথা ছিল বন্ধু। আমাদের তো এখানেই থাকার কথা ছিল।'
আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে।
আমি খুব বোকার মত ওকে প্রশ্ন করলামঃ 'অনির্বাণ, কি করছিস এখন'?
ও বললোঃ 'যা কথা ছিল বন্ধু; মানুষের মাঝখানেই আছি'।
আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিনা। একটা অপরাধ বোধ আমাকে গ্রাস করছে।
ও বললোঃ 'তোর দেরি হয়ে যাচ্ছে'।
আমি গাড়িতে গিয়ে বসলাম।
ও জানালার কাছে এসে বললোঃ 'এখন তো তোর নাম হয়ে গেছে-তুই তো বিখ্যাত হয়ে গেছিস! সুখেই আছিস, কি বল?'
আমার গাড়ি স্টার্ট নিয়ে নিয়েছে,
অনির্বাণ আমার জীবন থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে।
অনির্বাণের শেষ কথা গুলো আজোও আমার কানে আলপিনের মত বেঁধে-
সুখেই আছিস...
সুখেই আছিস...

১২. সেই গল্পটাঃ
পাহাড় আর মেঘের ভালোবাসার গল্পটা শ্বাশ্বত। যে গল্পটা আজো চলছে অবিরত। সেই পাহাড়...সেই মেঘ...আড়িপাতা ঝরনা...!

সেই গল্পটা
(পূর্ণেন্দু পত্রী)

আমার সেই গল্পটা এখনো শেষ হয়নি
শোন,পাহাড়টা, আগেই বলেছি ভালোবেসেছিল মেঘকে
আর মেঘ কিভাবে শুকনো খটখটে পাহাড়টাকে
বানিয়ে ফেলেছিল ছাব্বিশ বছরের ছোকড়া।
সে তো আগেই শুনেছো
সেদিন ছিল পাহাড়টার জন্মদিন
পাহাড় মেঘকে বলল, আজ তুমি লাল শাড়ি পড়ে আসবে
মেঘ পাহাড়কে বলল, আজ তোমাকে স্নান করিয়ে দেব চন্দন জলে
ভালোবাসলে নারীরা হয়ে যায় নরোম নদী
পুরুষরা জ্বলন্ত কাঠ।
সেইভাবেই সেইভাবেই মেঘ ছিল পাহাড়ের আলিঙ্গনের আগুনে
পাহাড় ছিল মেঘের ঢেউ জলে
হঠাৎ আকাশ জুড়ে বেজে উঠল ঝড়ের জগঝম্প
ঝাকড়া চুল উড়িয়ে ছিনতাইয়ের ভঙ্গিতে ছুটে এল এক ঝাঁক হাওয়া
মেঘের আঁচলে টান মেরে বলল
ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে।
এখনও শেষ হয়নি গল্পটা
বজ্রের সঙ্গে মেঘের বিয়ে হয়ে গেল ঠিকই
কিন্তু পাহাড়কে সে কোনদিনই ভুলতে পারলো না
বিশ্বাস না হয়তো চিড়ে দেখতে পারো পাহাড়টার হাড়-পাজর
ভেতরে থৈ থৈ করছে শত ঝরনার জল।


১৩. মেজাজঃ
এই কবিতাটি একটি রূপক কবিতা। শাসকের স্বেচ্ছাচারিতা আর শাসিতের মৌন প্রতিবাদ...শেষে কিন্তু জিতলো শাসিতই। কালো ছেলের নাম রাখা হবে আফ্রিকা।

মেজাজ
(সুভাষ মূখোপাধ্যায়)

থলির ভেতর হাত ঢেকে
শাশুড়ি বিড় বিড় ক'রে মালা জপছেন;
বউ
গটগট করে হেটে গেল।
আওয়াজটা বেয়াড়া ; রোজকার আটপৌরে নয়।
যেন বাড়িতে ফেরিওয়ালা ডেকে
শখ করে নতুন কেনা হয়েছে।


সুতরাং
মালাটা থেমে গেল ; এবং
চোখ দুটো বিষ হয়ে
ঘাড়টাকে হেলিয়ে দিয়ে যেদিকে বউ যাচ্ছিল
সেইদিকে ঢ'লে পড়ল।
নিচের চোয়ালটা সামনে ঠেলে
দাঁতে দাঁত লাগল।

বিলক্ষণ রাগ দেখিয়ে
পরমুহূর্তেই শাশুড়ির দাঁত চোখ ঘাড় চোয়াল
যে যার জায়গায় ফিরে এল।
তারপর সারা বাড়িটাকে আঁচড়ে-আঁচড়ে
কলতলায়
ঝমর ঝম খনর খন ক্যাঁচ ঘ্যাঁষঘিঁষ ক্যাঁচর ক্যাঁচর
শব্দ উঠল।
বাসনগুলো কোনদিন তো এত ঝঁঝ দেখায় না -
বড় তেল হয়েছে।

ঘুরতে ঘুরতে মালাটা দাঁড়িয়ে পড়ল।
নোড়া দিয়ে মুখ ভেঙ্গে দিতে হয় -
মালাটা একবার ঝাঁকুনি খেয়ে
আবার চলতে লাগল।
নাকে অস্ফুট শব্দ ক'রে
থলির ভেতর পাঁচটা আঙ্গুল হঠাত
মালাটার গলা চেপে ধরল।
মি্নসের আক্কেলেরও বলিহারি !
কোত্থেকে এক কালো অলক্ষুণে
পায়ে খুরঅলা ধিঙ্গি মেয়ে ধ'রে এনে
ছেলেটার গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে চলে গেল।
কেন ? বাংলাদেশে ফরসা মেয়ে ছিলনা ?
বাপ অবশ্য দিয়েছিওল থুয়েছিল -
হ্যাঁ দিয়েছিল !
গলায় রসুড়ি দিয়ে আদায় করা হয়েছিল না ?

এবার মালাটাকে দয়া ক'রে ছেড়ে দেয়া হল।
শাশুড়ির মুখ দেখে মনে হচ্ছিল
থলির ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে এইসময়ে
কী যেন তিনি লুকোচ্ছিলেন।
একটা জিনিস -
ক'মাস আগে বউমা
মরবার জন্যে বিষ খেয়েছিল।
ভাশুরপো ডাক্তার না হলে
ও-বউ এ-বংশের গায়ে ঠিক চুনকালি মাখাত।
কেন ? অসুখ ক'রে মরলে কি হয় ?
ঢঙ্গী আর বলেছে কাকে !

হাতে একরাশ ময়লা কপড় নিয়ে
কালো বউ
গটগট গটগট ক'রে সামনে দিয়ে চলে গেল।
নাঃ আর বাড়তে দেওয়া ঠিক নয়।
'বউমা - '
'বলুন।'
উঁহু, গলার স্বরটা ঠিক কাছা-গলায়-দেওয়ার মত নয়
বড্ড ন্যাড়া।
হঠাত এই দেমাগ এল কোত্থেকে ?
বাপের বাড়ির কেউ তো
ভাইফোঁটার পর আর এদিক মাড়ায় নি ?

বাড়িটা যেন ঝড়ের অপেক্ষায়
থমথম করছে।
ছোট ছেলে কলেজে ;
মেজোটি সামনের বাড়ির রোয়াকে ব'সে
রাস্তায় মেয়ে দেখছে ;
ফরসা ফরসা মেয়ে -
বউদির মত ভুশুন্ডি কালো নয়।
বালতি ঠনঠনিয়ে
বউ যেন মা-কালীর মত রণরঙিণী বেশে
কোমড়ে আঁচল জড়িয়ে
চোখে চোখ রেখে শাশুড়ির সামনে দাঁড়ালো।

শাশুড়ির কেমন যেন
হঠাত গা ছমছম করতে লাগল।
তাড়াতাড়ি থলের মধ্যে হাতটা লুকিয়ে ফেলে
চোখ নামিয়ে বললেন: আচ্ছা থাক, এখন যাও।
বউ মাথা উঁচু ক'রে
গটগট ক'রে চলে গেল !

তারপর একা একা পা ছড়িয়ে ব'সে
মোটা চশমায় কাঁথা সেলাই করতে করতে
শাশুড়ি এ-ফোঁড় ও-ফোঁড় হয়ে ভাবতে লাগলেন
বউ হঠাত কেন বিগড়ে গেল
তার একটা অন্তত তদন্ত হওয়া দরকার।

তারপর দরজা দেবার পর
রাত্রে
বড় ছেলের ঘরে আড়ি পেতে
এই এই কথা কানে এল -

বউ বলছে : 'একটা সুখবর আছে।'
পরের কথাগুলো এত আস্তে যে শোনা গেল না।
খানিক পরে চকাস চকাস শব্দ,
মা হয়ে আর দাঁড়াতে লজ্জা করছিল।
কিন্তু তদন্তটা শেষ হওয়া দরকার -
বউয়ের গলা ; মা কান খাড়া করলেন।
বলছে : 'দেখো, ঠিক আমার মত কালো হবে।'
এরপর একটা ঠাস করে শব্দ হওয়া উচিত।
ওমা, বউমা বেশ ডগমগ হয়ে বলছে :
'কী নাম দেব, জানো ?
আফ্রিকা।
কালো মানুষেরা কী কান্ডই না করছে সেখানে।'

১৪. পরিচয়ঃ
রবিঠাকুরের পরিচয় নিয়ে অনেক কবিতাই আছে। তার মধ্যে এই কবিতাটিই সম্ভবত সবচে বেশি মানুষের প্রিয়'র তালিকায় আছে। আর এই কবিতার সাথে আমার আছে নাড়ি ছেঁড়া স্মৃতি। কতশত নির্ঘুম রাত আউড়ে কাটিয়েছি- 'আমি তোমাদেরই লোক'।

পরিচয়
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে
বসন্তের নূতন হাওয়ার বেগে,
তোমরা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি
'পরিচয় কোনো আছে নাকি,
যাবে কোনখানে'?
আমি শুধু বলেছি,'কে জানে'!

নদীতে লাগিল দোলা,বাধঁনে পড়িল টান-
একা,বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান।
সেই গান শুনি
কুসুমিত তরুতলে তরুণ-তরুণী
তুলিল অশোক-
মোর হাতে দিয়া কহিল,'এ আমাদেরই লোক'।
আর কিছু নয়।
সে মোর প্রথম পরিচয়।

তার পরে জোয়ারের বেলা
সাঙ্গ হল, সাঙ্গ হল জোয়ারের খেলা;
কোকিলের ক্লান্ত গানে
বিস্মৃত দিনের কথা অকস্মাৎ যেন মনে আনে;
কনক চাপার দল পড়ে ঝুরে,
ভেসে যায় দূরে,
ফাল্গুণের উৎসবরাতির
নিমন্ত্রণলিখনপাঁতির
ছিন্ন অংশ তারা
অর্থহারা।।

ভাঁটার গভীর টানে
তরীখানা ভেসে যায় সমুদ্রের পানে।
নূতন কালের নবযাত্রী ছেলেমেয়ে
শুধাইছে দূর হতে চেয়ে,
'সন্ধ্যার তারার দিকে
বহিয়া চলেছে তরণী কে?'
সেতারেতে বাঁধিলাম তার,
গাহিলাম আরবার,
'মোর নাম এই'বলে খ্যাত হোক,
আমি তোমাদেরই লোক,
আর কিছু নয়-
এই হোক শেষ পরিচয়।

১৫. চিঠি দিওঃ
শেষ কবে চিঠি পেয়েছেন কিংবা লিখেছেন? মনে আছে কি? এমন কি হতে পারেনা যে কবিতার এই কথাগুলোর খুব কাছাকাছি সময়ে চলে এসেছি আমরা?

চিঠি দিও
(মহাদেব সাহা)

করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
খামে ভরে তুলে দিও আঙ্গুলের মিহিন সেলাই
ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও,
তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।

চুলের মতন কোনো চিহ্ন দিও বিস্ময় বোঝাতে যদি চাও ...
বর্ণনা আলস্য লাগে তোমার চোখের মতো চিহ্ন কিছু দিও!

আজও তো অমল আমি চিঠি চাই, পথ চেয়ে আছি,
আসবেন অচেনা রাজার লোক
তার হাতে চিঠি দিও, বাড়ি পৌঁছে দেবে ....
এমন ব্যস্ততা যদি
শুদ্ধ করে একটি শব্দই শুধু লিখো, তোমার কুশল! ...

করুণা করে হলেও চিঠি দিও,
ভুলে গিয়ে ভুল করে একখানি চিঠি দিও খামে
কিছুই লেখার নেই তবু লিখো একটি পাখির শিস
একটি ফুলের ছোট নাম,
টুকিটাকি হয়তো হারিয়ে গেছে
কিছু হয়তো পাওনি খুঁজে
সেইসব চুপচাপ কোন দুপুরবেলার গল্প
খুব মেঘ করে এলে কখনো কখনো বড় একা লাগে, তাই লিখো

করুণা করে হলেও চিঠি দিও, মিথ্যে করে হলেও বোলো, ভালবাসি !

১৬. যাতায়াতঃ
হেলাল হাফিজের এই কবিতাটা কেমন যেন বিষন্ন করে দেয়! মানুষের মনের দীর্ঘ আকুতি যেন ফুটে আছে প্রতিটি পংক্তি ধরে। "শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক!"

যাতায়াত
(হেলাল হাফিজ)

কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো ।

কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না
রাত কাটে তো ভোর দেখি না
কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না; কেউ জানেনা ।

নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম
পেছন থেকে কেউ বলেনি করুণ পথিক
দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও,
কেউ বলেনি ভালো থেকো। সুখেই থেকো!
যুগল চোখে জলের ভাষায়, আসার সময় কেউ বলেনি
মাথার কসম আবার এসো ।

জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো
শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক,
চৈত্রাগুণে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি
বললো না কেউ; তরুণ তাপস, এই নে চারু শীতল কলস ।

লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম ।

ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয়
আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই
দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শুশ্রূষাহীন ।
কেউ ডাকেনি তবু এলাম,
বলতে এলাম-
ভালোবাসি!


কৃতজ্ঞতাঃ বাবুই
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:৪৬
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×