তথাগত গৌতমবুদ্ধ প্রায়ই শারিরীক এবং মানসিক অন্তঃস্থলে বসবাসরত তিনশুত্রুর কথা জোড় দিয়ে জনমানুষদের সচেতন করার প্রায়শে নিজেকে আত্মনিবেদিত করে রাখতেন। এর জন্য অবশ্যই নিজেকে আগে প্রস্তুত করতে হয়েছিল, যার জন্য ৬বছর কঠোর সাধনার মাধ্যমে পরিশ্রম করতে হয়েছে। সমাজ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হয়েছে -পারিবারিকবন্ধনকে ছিন্ন করতে হয়েছে শুধুমাত্র জগতে গতিকয়েক সত্যকে অনুধাবণ করার প্রায়শে। তাহাঁর আবিষ্কৃত সত্যগুলোর মধ্যে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, সব দূঃখের মূল কারণ যদিও আমরা বাহ্যিক কোনোকিছুকে দায়ী করে থাকি, বাস্তবিক অর্থে তা সত্য নয়। লোভ - দ্বেষ এবং মোহের কারণে মানুষ দূঃখ পেয়ে থাকে। দূঃখের মূলকারণগুলো হচ্ছে আমাদের মনের ভিতরে বসবাসরত তিন আন্তঃশত্রু, যারা অনবরত আমাদের মানবিক গুণাবলীগুলোকে হত্যা করে চলেছে। আমরা অবুঝের মতো তাদেরকে অনুসরণ করছি। যারদরুণ সহজে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকি, দূঃখ পেয়ে থাকি। হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করতে এগিয়ে যায়। লোভের তাড়নায় বশঃবতী হয়ে অন্যকে হানী করার প্রয়াসে নিজেকে আত্মনিবেদিত করি। দ্বেষ ভয়ংকররুপে বৃদ্ধি পেতে থাকে আর কোনো একসময় ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর দেখা যায়। মানুষ মোহের কাছে হেরে গিয়ে সকল অন্যায়ের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে। অবুঝ হওয়াতে বারবার হেরে যায় সেসব মূর্খ্য ব্যক্তিগণ। মানুষ নিজের স্বার্থের জন্য নিজেকে বড় বানাতে গিয়ে অন্যদের তুচ্ছগোত্রের একজন ও বানাতে কুন্ঠাবোধ করেননি। ভালোবাসা নামে হিংসা-বিদ্বেষকে ছড়িয়ে দিয়েছিল। তাইতো আদৌ বিশ্বজগৎ এতোই কান্না-হাহাকারে পরিপূর্ণ। মানুষ লোভের কাছে হেরে গিয়ে জয়ের নেশায় মত্ত হতে গিয়ে ইতিহাসখ্যাত অমানবিক যুদ্ধ-বিদ্রোহ করেছে, হত্যা করেছে লাখো নিরীহ জনমানুষ। অশান্ত পৃথিবীর গড়ার মাঝে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। যতদিন প্রতিটি মানুষ নিজেদের এই তিন আন্তঃশত্রুর সাথে যুদ্ধ করে জয়ী পারছে না মানুষ হেরে যেতে থাকবে সর্বদা। তাই প্রয়োজন হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে ভালোবাসার পথে এগিয়ে যাওয়া, যেনো আর কোনোরকম ধ্বংসলীলা দেখতে না হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৪৪