খুব আগ্রহ করে অপেক্ষা করেছিলাম এইবার ঈদে NTV তে মুস্তফা কামাল রাজ এর ছায়াছবি "তারকাটা" দেখবো। তিন দিন আগে থেকে আমার স্কাই বক্সে রেকর্ড দিয়ে রেখেছিলাম, কারণ যে সময় ছবিটি দেখাবে তখন থাকব অফিসে। আগ্রহের আরেকটি কারণ ছিলো মুস্তফা কামাল রাজ এর নির্মানশৈলী। কারণ আমার ধারণা রাজ হচ্ছেন এই প্রজন্মের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ নির্মাতা। তাই তার ছবি দেখার জন্য ছিলো আলাদা একটি আকর্ষণ।
আজ ছিলো ছুটির দিন। তাই সারাদিন সবধরনের সাংসারিক কাজকর্ম শেষ করে, এমনকি সন্ধ্যা একটি ফ্রেন্ডস গেটটুগেদারও বাতিল করে দিয়ে গিন্নি আর বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে বসে গেলাম ছিনেমাটি দেখতে। উচ্চাশা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে ফেসবুকেও ছবিটির নাম ট্যাগ করে একটি স্টেটাসও দিয়ে দিলাম।
কিন্তু প্রথম দৃশ্য দেখেই খেলাম এক ধাক্কা। নায়ক আরেফিন শুভর এন্ট্রি এক বিশাল রড কাটার হাতুড়ি হাতে, তারপর একটি খুন। দেখে মনে হলো এটা রাজ এর কোনো ছবি নয়, বরং একটি বস্তা পঁচা হিন্দি ছবি। তারপর খড়ার উপর মড়ার ঘা OFCOM এর কাটাকাটি। কোন্টিনিউইটির পুরাই বারোটা। তাও যতটুকু বুঝলাম ছবিটির কাহিনী অনেক আগেই ধরাশায়ী হয়েছে। অনেক কষ্ট করে ছবিটি পুরা দেখে আমার মত এক অধম দর্শকের ধারণা হচ্ছে, জনাব মুস্তফা কামাল রাজ মনে হয় ইদানিং বস্তা পঁচা হিন্দি ছবির সাথে সাথে তেলেগু ছবি দেখাও শুরু করেছেন এবং এর দ্বারা উনি যথেষ্ট পরিমানে প্রভাবিতও। কারণ এই পোড়ার ফেসবুকের কল্যানে বন্ধুদের শেয়ার দেয়া কিছু তেলেগু ছবির উদ্ভট কাটপিসের সাথেও দেখি রাজ ভাইয়ের "তারকাটা"র যথেষ্ঠ মিল!!!!
আসলে আমাদের চলচিত্রের মনে হয় আর কোনদিনই স্বকীয়তা আসবে না। মাঝে মাঝে মুস্তফা কামাল রাজ অথবা ইফতেখার আহমেদ ফাহমির মত উজ্জ্বল নক্ষত্ররা আসবেন এবং কালের পরিক্রমায় খুব তাড়াতাড়ি ব্যবসায়িক লাভ গুনতে গিয়ে নকলবাজির নর্দমায় পতিত হবেন। আমরা সাধারণ দর্শকরা কিছুদিন মাতামাতি করবো তারপর আবার ফুটো বেলুনের মত চুপসে যাবো। কয়েকদিন পরে হয়ত দেখবো "শুনতে কি পাও" এর মত অসাধারণ একটি শর্টফিল্ম এর নির্মাতা, আমার এককালের সতীর্থ, সায়মন ভাইও কোনো বস্তা পঁচা হিন্দি ছবির কাটপিস বানানো শুরু করেছেন । কিছুই বদলাবে না।
ঐযে কথায় আছে না, কুত্তার পেটে ঘি সহ্য হয় না।