somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই ঘটনাকে যে যার মন মত ব্যখ্যা করে গনহারে সাধারন শিক্ষার্থীদের উপড় দায় চাপানোর একটা অপপ্রয়াস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবার অনেকে ডক্টর ইউনুস সরকারকেও এই ইস্যূতে ব্যার্থ হিসেবে দাড় করাতে চাইছে। যারা বিগত স্বৈরাচারের দোসর , তাদের এই হীন প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য খুবই ভালভাবে বোঝা যায়। আবার আরেক পক্ষ যারা লুটপাঠের ক্ষমতা পেতে মরিয়া , তারাও এই ঘটনা থেকে ফায়দা তুলতে চাচ্ছে। তারা বোঝাতে চাইছে যে, এই জাতীয় খুনে শিক্ষার্থীদের গনআন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার পতনের ক্রেডিট দেয়াটা একেবারেই ঠিক হয়নি। স্বৈরাচার হটানোর মুল ক্রেডিট আসলে তাদের!! কিন্ত আমরা সাধারন জনগন যেন ভুলেও বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতিবিদদের পাতা ফাদে পা দেবার মত ভুল না করি, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকা দরকার। আসুন জানার চেষ্টা করি যে , দুই হলেই আদতে কি ঘটেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক হলের সাধারন শিক্ষার্থীর বরাতে জানা গেছে যে, ঘটনার দিন হলে ক্রিকেট ও ফুটবল খেলা চলছিল বিধায় হল মোটামোটি ফাকা ছিল। এফএইচ হলের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুইজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন,গেস্টরুমে চোর সন্দেহে লোকটিকে কয়েক দফা পে*টা*নোর পর ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে জোর করে বেশি পরিমাণে ডাল খেতে বাধ্য করা হয়। ক্যান্টিন থেকে গেস্টরুমে এনে আবার পেটানো হয়। মার খেতে খেতে সে শুয়ে যায়। এসময় তাকে আবার নাচতে জোর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। অথচ সেসময় লোকটার পিঠ থেকে রক্ত ঝরছে।জানা গেছে, লোকটাকে আহত অবস্থায় হল থেকে বের করা হয় রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে। অথচ নয়টার কিছু পরেই ঘটনাস্থলের (গেস্টরুম) বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল টিম এবং কয়েকজন হাউজ টিউটর উপস্থিত ছিলেন। ঐ মানুষটিকে যখন পৌনে আটটার দিকে ধরে এফএইচ হলের মেইন গেস্টরুমে আনা হয় সেটার ফুটেজ এবং সবশেষে যখন ১০টা ৫৭ মিনিটে সেই গেস্টরুম থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় বের করে মোবাইল টিমের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেটির সিসিটিভি ফুটেজ হাতে এসেছে। সুত্র ঃDU news

বেসরকারি সংবাদমাধ্যম চ্যানেলে কথা বলেন তোফাজ্জলের মামাতো বোন বলেছেন - '' তোফাজ্জলের মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ নাই। রাত ১১টার সময় আমার বাবাকে ফোন দেওয়া হইছে। আপনি কি তোফাজ্জলের মামা? আমার আব্বা ফোন ধরছে। তখন বলছে, ওরে (তোফাজ্জল) আমরা আটকাইছি, হলেই আছে, ওরে নিতে হলে টাকা দিতে হবে ৩৫ হাজার। ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ওরে ছাড়াই নেন, না হলে আমরা ওরে ছাড়ব না, আরও মারবো।’'তোফাজ্জলের মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ নাই। রাত ১১টার সময় আমার বাবাকে ফোন দেওয়া হইছে। আপনি কি তোফাজ্জলের মামা? আমার আব্বা ফোন ধরছে। তখন বলছে, ওরে (তোফাজ্জল) আমরা আটকাইছি, হলেই আছে, ওরে নিতে হলে টাকা দিতে হবে ৩৫ হাজার। ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ওরে ছাড়াই নেন, না হলে আমরা ওরে ছাড়ব না, আরও মারবো।’ সুত্র ঃ ইত্তেফাক

হামলার বেশ কিছু দৃষ্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যে নারকীয় কায়দায় লোকটিকে পিটানো হয়েছে , সেটা একমাত্র বুয়েটের আবরার হত্যাকান্ডের সাথেই মিলে। ছাত্রগুলোর চেহারাও সাধারন শিক্ষার্থিদের মত নয়। নিহত তোফাজ্জেলের মামাতো বোন যে ছাত্রদের কিডন্যপিং কায়দায় টাকা চেয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সেটাতো খুবই ভয়ঙ্কর অভিযোগ। ধৃত একজন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের নেতা ছিল। মুলত সেই সবাইকে মারতে উৎসাহ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।।দেখুন যে কি বর্বর কায়দায় তোফাজ্জলকে মারা হয়েছে !

কতিপয় বর্বর , খুনে সন্ত্রাসীর অপকর্মের দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন ছাত্রদের উপর চাপানো কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। তাছাড়া যে প্রশ্নটা সবার করা উচিত সেটা হচ্ছে , হল প্রসাষন ঐ ঘটনার সময় কি করছিল? প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বয়ানে যে এসেছে নয়টার কিছু পরেই ঘটনাস্থলের (গেস্টরুম) বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল টিম এবং কয়েকজন হাউজ টিউটর উপস্থিত ছিলেন, তারা সেখানে নিষ্ক্রিয় ছিল কেন? এই সম্পূর্ণ সময় এবং হ*ত্যাকা*ণ্ডের পুরো রাত পেরিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে আসেননি হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম। ঘটনার সময় বা এর পরে তাকে কয়েকবার ফোন দেওয়া হয়েছেও বলে জানান শিক্ষার্থীরা। তারপরও রিচ করা যায়নি প্রাধ্যক্ষকে। প্রশ্ন উঠা কি উচিত নয় তার এমন দ্বায়িত্ব অবহেলার কারন কি? বিগত পনের বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাষন নীল দলের শিক্ষকদের দখলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যরই কেবল পরিবর্তন হয়েছে , সার্বিকভাবে প্রসাষনে এখনও আগের ব্যক্তিরাই রয়ে গেছে।

জাহানাগীরনগরে ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় নেতৃত্বে ছিল ছাত্রদলের নেতাকর্মী ।বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ ভূঁইয়ার নির্দেশে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আতিককে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। সুত্র ঃ যুগান্তর

উন্নত দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার মুল দায় বর্তায় প্রতিষ্ঠানের প্রসাষনের উপড়।দেশ এখন স্বৈরাচারমুক্ত। কাজেই দুই বিশ্ববিদ্যালয়েই সংঘটিত সকল হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হোক এবং প্রসাষনের গাফিলতির বিষয়েও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হোক। দুটো ঘটনাই পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত সকল অপকর্মের জন্য দায়ী হচ্ছে লেজুরভিত্তিক দলীয় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি। বর্তমান সরকারের কাছে দাবী যে দেশের সকল শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র/ শিক্ষক রাজনীতি সম্পুর্ন নিশিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারী করা হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৭
১১টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। অন্য দেশে চলে যাচ্ছে গার্মেন্টসের অর্ডার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:২০




এবার বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অর্ডারের একটি অংশ প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তানসহ অন্য দেশের বাজারে চলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পতন এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশের সবচেয়ে বড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

অ্যাকশন মুভি সিরিজ - ডাই হার্ড ফ্র্যাঞ্চাইজি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩০




আমার পছন্দের অভিনেতাদের একজন হচ্ছেন ব্রুস উইলিস। তার অভিনীত অসংখ্য সিনেমার মধ্যে আমি অল্প কিছু দেখেছি। সেগুলির মধ্যে ডাই হার্ড ফ্র্যাঞ্চাইজিটি আমার বেশ পছন্দের। বিশেষ করে ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম কয়েকটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ভারতের উদ্বেগ!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


ভালোভাবেই শেষ হলো সনাতনীদের বৃহৎ উৎসব দুর্গাপূজা কিন্তু দুর্গাপূজা ভালো ভাবে শেষ হওয়ায় অনেকেই বড্ড হতাশ হয়েছে; পূজা নিয়ে তারা ট্রামকার্ড খেলতে চেয়েছিল কিন্তু ট্রামকার্ড খেলার পরও সফল হতে পারেনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সংস্কৃতি সংকরায়ন

লিখেছেন বিষাদ সময়, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:১৬

কোথায় চলছে আমাদের সংস্কৃতি!! একদিকে পাড়ায় পাড়ায় মাদ্রাসা, অপরদিকে মহল্লায় মহল্লায় ক্লাবে মদ্যপান, জুয়ার আড্ডা। হজ, হিজাবের উত্থানের সাথে দুর্নীতি, অবৈধ প্রণয়ের মহোৎসব। ভারত খেদাওদের মুখে হিন্দি গান, লুঙ্গি ড্যান্স... ...বাকিটুকু পড়ুন

"গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রি" ব্যতিত জাতির বাঁচার পথ নেই।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫



"নতুন স্বাধীনতা" আসার সময় বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে এনার্খী এসেছে সমাজে, প্রশাসনে, রাজনীতিতে ও ব্যবসায়; তাতে গার্মেন্টস'এর সাপ্লাইচেইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা, এবং হয়েছে; উহাকে রিকোভার করার দায়িত্ব কার? দায়িত্ব ড:... ...বাকিটুকু পড়ুন

×