somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশু কিশোরদের পাইলস

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাইলস বা অর্শ একটি অত্যন্ত পরিচিত রোগ। পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ দেখা যায় এবং বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশী ব্যক্তির বয়স ৫০ বছরে পৌঁছানোর আগেই পাইলেস আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ধারণা করা হয় বয়োবৃদ্ধির সাথে সাথে পাইলসও বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেকারণে এ রোগ যে যুবক-কিশোর বা শিশুদেরও হতে পারে এটা অনেকেই চিন্তা করেন না। যদিও এ কারণে রোগটি প্রায়শই জটিল আকার ধারণ করে না, তবুও রোগটি বেশ বৃদ্ধি পাওয়ার পরেই সাধারণতঃ রোগী বা রোগীর অভিভাবকদের নজরে আসে। তাই যদি আপনার সন্তান (শিশু/কিশোর) মলদ্বার বা মলদ্বারের পাশে চুলকানি বা জ্বালা-যন্ত্রণার কথা বলে তাহলে সে যে পাইলসেও আক্রান্ত হতে পারে এটা ধারনা করা যেতেই পারে ।

শিশু কিশোরদের পাইলস হওয়ার কারণঃ
কমবয়সী শিশু কিশোরদের পাইলস হওয়ার একমাত্র কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য । যথাযথ খাবার না খাওয়া বা প্রয়োজনীয় ব্যায়াম না করার ফলে শিশু-কিশোরদের মল শক্ত হয়ে যায় এবং মলত্যাগ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে । ফলে তারা মলত্যাগের সময় মলদ্বারে চাপ প্রয়োগ করে (কোঁত দেয়)। এই চাপ সরাসরি মলদ্বারের রক্ত নালীর উপর পড়ে। ফলে পাইলস বা অর্শের উত্পত্তি হয় ।

চিকিত্সাঃ
শিশু-কিশোরদের পাইলসের চিকিত্সা করাটা বেশ কষ্টসাধ্য। প্রথমতঃ শিশু-কিশোররা তাদের সমস্যাগুলো সঠিকভাবে বলতে পারে না। দ্বিতীয়তঃ ঔষধ খাওয়ানো বা প্রয়োগ করাটাও অভিভাবকদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য। তাছাড়া , শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত কোন ঔষধও (সিরাপ বা ছোট ট্যাবলেট) বাজারে পাওয়া যায় না । যেহেতু, প্রায় সকলেরই ধারনা পাইলস বয়োজেষ্ঠদেরই হয়ে থাকে, সেকারণে বয়স্ক রোগীদের পাইলেসর চিকিত্সার জন্য নানাবিধ পদ্ধতি যেমন ঃ খাওয়ার বড়ি , ব্যবহারের জন্য সাপোজিটরি, পাইলস নির্মূল করার জন্য রাবার ব্যান্ড লাইগেশন বা অপারেশন (সার্জারি/লংগো পদ্ধতি)করার সুযোগ থাকলেও শিশু-কিশোরদের জন্য এখনও প্রাকৃতিকভাবে সুস্থতা আনয়নের জন্যই চেষ্টা করা হয়। এগুলোর মধ্যে কার্যকরী প্রক্রিয়া হলো শিশু-কিশোরদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন। যেহেতু, কোষ্ঠকাঠিন্যই শিশু-কিশোরদের পাইলস রোগের উত্পত্তির একমাত্র কারণ ; তাই তাদের সহজ বা কোঁত বিহীন মলত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে - মলকে নরম করে এবং নিয়মিত মলত্যাগে অভ্যস্ত করে।

আঁশযুক্ত এবং প্রচুর তরল (পানি ও জুস) খাবার শিশু-কিশোরদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়। আঁশযুক্ত খাবার (শাক-সবজী), ফল (পাকা পেঁপে,কলা,আম),ফলের রস (বেদানা,আপেল) মলকে নরম করতে সহায়তা করে। তাছাড়া শিশু-কিশোরদের খাবারে তেলের পরিমাণও একটু বেশী থাকা বাঞ্ছনীয়। যেসব শিশু মায়ের দুধ সেবন করে তাদের কদাচিৎ কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। কিন্তু যেসব শিশু বেবি-ফর্মুলা বা গরুর দুধ খেয়ে থাকে তাদের বেবি-ফর্মুলা নির্দেশিকা অনুযায়ী যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে এবং গরুর দুধ খেয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে গরুর দুধ ঘন করে খাওয়াতে হবে।

শরীরচর্চা বা খেলাধুলাও কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে থাকে। সারাদিন বসে থাকলে বা বেশীরভাগ সময় শুয়ে/ঘুমিয়ে থাকলে অন্ত্রের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ব্যায়াম,দৌড়াদৌড়ি-ছোটাছুটি অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি করে ফলে মলত্যাগ সহজ হয়। শুধু তাই নয় শরীরচর্চা ক্ষুধামন্দাও দূর করে , ফলে শিশু-কিশোরেরা সবধরনের খাবারেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।

যদি আপনার শিশুর পাইলস হয়েই যায় তাহলেও দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই , সাধারণ কিছু ব্যবস্থা যেমন-বরফ বা ঠাণ্ডা পানির সেক-তার মলদ্বারের অস্বস্তিকে দূর করার জন্য এবং গরম পানির সেক-তার মলদ্বারকে প্রসারিত হতে ও মলদ্বারের প্রদাহ দূর করতে সহযোগিতা করবে। এদু’টো প্রক্রিয়া পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা যেতে পারে।মলদ্বারে সাবান বা শ্যাম্পু প্রয়োগ করা উচিত নয় ;এগুলো পাইলসের উপসর্গ বৃদ্ধি করে থাকে। এসব প্রক্রিয়ায় শিশু-কিশোরদের পাইলসের উপসর্গ প্রশমিত না হলে এবং মলদ্বার/পাইল্স দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে সত্বর বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।

মনে রাখতে হবে যেহেতু শিশু-কিশোরদের পাইলস সচরাচর দেখা যায় না। তাই শিশু-কিশোরদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে তাকে অগ্রাহ্য না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়াই সর্বোত্তম। যাতে রোগটি গুরুতর অবস্থা ধারণ করার পূর্বেই সময়মত সঠিক চিকিত্সা পাওয়া যায়
সুত্র: ইত্তেফাক
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×