বেড়াতে যান বোটানিক্যাল গার্ডেন
ঢাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ঐতিহ্যবাহী ও আর্কষণীয় স্থান এবং পুরাকীর্তি। এসব স্থান পর্যটকদের আকর্ষণ করে দারুণভাবে। এর একটি হচ্ছে বোটানিক্যাল গার্ডেন। আপনিও অবসরে সপরিবারে যেতে পারেন সেখানে।
ঘুরে বেড়াতে কে না ভালোবাসে-আর এই বেড়ানোটা যদি হয় ছুটির দিনে তাহলে তো কথাই নেই। পরীক্ষা, ল্যাব ও নানান কাজের টেনশন থেকে মুক্তি পেতে এবং নতুনবোটানিক্যাল্যমে পরবর্তী সপ্তাহের জন্য কান্ত মনকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে একটি সুন্দর ও মনোরম স্থানে বেড়ানো সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। ঠিক তেমনি একটি বেড়ানোর স্থান হলো জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন।
বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিচিতি
১৯৬২ সালে (বাংলা ১৩৭৫ সাল) ঢাকার মিরপুরে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের অর্থাৎ (বোটানিক্যাল গার্ডেন নামে যার বর্তমান পরিচিতি) স্থাপনার কাজ শুরু হয়। স্বাধীন দেশের মাটিতে দেশের একমাত্র উদ্ভিদ উদ্যান, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানটি যাতে পূর্ণাঙ্গ অর্থেই একটি পরিপূর্ণ বোটানিক্যাল গার্ডেনের মর্যাদা পায়, সে ব্যাপারে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান তার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
'৭০ এর দশকেই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের আন্তর্জাতিক সেকশনে (সেকশন নং-৮ ও ১০) বিদেশী গাছের বীজ, চারা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়। ছড়িয়ে থাকা জলাধারসমূহে বিচিত্র সব শাপলার সংগ্রহ, পদ্মা-পুকুর, ভেষজ উদ্ভিদের বাগান, বাঁশবাগান, গোলাপ বাগান ইত্যাদি স্থাপনার কাজসহ অন্যান্য দুষ্প্রাপ্য বিরল উদ্ভিদের সংগ্রহের কাজ শুরু হয়।
প্রাথমিকভাবে ১৩৭.৬৫ হেক্টর (৩৪০ একর) জায়গার উপর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানটি গঠিত হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমানে ৮৪.২ হেক্টর (২০৮ একর) জায়গায় ৫৭টি সেকশনে প্রায় ৫৬০০০ উদ্ভিদ সংগ্রহ, সংরক্ষণ করা হয়েছে। ১১৫টি উদ্ভিদ পরিবারভুক্ত, ৯০৮টি প্রজাতির গাছপালা নিয়ে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যোন (ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন) এখন একটি জীবন্ত সংগ্রহশালা। এখানে ২৫৫ টি প্রজাতির ২৮২০০টি বৃক্ষ, ৩১০ টি প্রজাতির ৮৪০০টি গুল্ম, ৩৮৫টি প্রজাতির ১০৪০০ টি বিরুৎ জাতীয় গাছ আছে। এছাড়া জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে প্রায় ৬০ প্রজাতির বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের সংগ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে বাঁশপাতা, চন্দন, রাজা অশোক, ক্যামেলিয়া, আমাজান লিলি, আগর, রামবুতাম, তমাল, ভূর্জ্জপত্র, উদল, স্টারকুলিয়া, ক্যাকটাস, অর্কিড অন্যতম।
উদ্ভিদসহ আরও যা রয়েছে
ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনে উদ্ভিদ-এর পাশাপাশি দর্শনার্থীদের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করার কথা চিন্তা করে এ উগ্যানের বিভিন্ন স্থানে আঁকাবাঁকা কৃত্রিম লেক সৃষ্টি করা হয়েছে। লেকের মাঝখানে রয়েছে কৃত্রিম দ্বীপ, তাতে বাহারি উদ্ভিদ বাগান তৈরি করা হয়েছে। লেকে দর্শনার্থীদের জন্য নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ ডেক তৈরি করা হয়েছে। দর্শনার্থীগণ উপভোগ করতে পারবেন সৃদৃশ্য লাল গোলাপের বিশাল বাগান। রয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত। লেকের উপর ব্রীজ সম্বলিত তিনটি ডেক রয়েছে। দর্শনার্থীরা ডেকে দাঁড়িয়ে লেক, চারপার্শ্বের প্রাকৃতিক দৃশ্য, কৃত্রিম জলপ্রপাত দেখার সুব্যবস্থা রয়েছে। শীতকালে ২১ পৃষ্ঠায় দেখুন ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনে দেখতে পাওয়া যায় হাজার হাজার অতিথি পাখি। মনে হবে যেনো, কোনো পাখির মেলায় বসে আছি।
কিভাবে যাবেন
গুলিস্তান থেকে বিআরটিসি বাসসহ আরো অনেক বাস পাবেন। মতিঝিল থেকে ও বিআরটিসি, আজমেরী, পাঞ্জেরীসহ বেশ কয়েকটি বাস আছে মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন যাবার জন্য।
প্রবেশমূল্য
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫ টাকা, অপ্রাপ্তদের ২ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ৩ টাকা।
জানেন কী
ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশেই হলো জাতীয় চিড়িয়াখানা। ইচ্ছে হলে প্রকৃতির উদ্ভিদের সঙ্গে বন্যপ্রাণীও দেখে আসতে পারেন। বলতে পারেন, কলা বিক্রি এবং রথ দেখা-একই সঙ্গে হলো, এই আর কি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১০ সকাল ৯:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




